“বয়ান থেকে নসীহত”
তিনি বয়ানে এক যায়গায় বলেন হযরত ওমর (রাজিঃ) এর কালে মদীনায় এক গ্রাম্য গায়ক বাস করতো। প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রের তালে গান গেয়ে বেড়াতো। যখন ইসলাম এলো। গান-বাজনা নিষিদ্ধ হলো। গান শোনা বিবেচিত হলো মহাপাপে।তারপরও সে লুকিয়ে লুকিয়ে গান গেয়ে বেড়াতো। এটাই ছিল তার পেশা। বার্ধক্যে এসে যখন তার কন্ঠে সুর হারিয়ে গেল তখন মানুষ তাকে উপেক্ষা করে চললো। ফলে তার জীবিকার পথ বন্ধ হয়ে গেলো।জীবন হয়ে উঠলো দুঃসহ। পরে সে একদিন জান্নাতুল বাকীতে (মদীনা মনওয়ারার প্রসিদ্দ কবর স্থান) গিয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে এই বলে কাঁদতে লাগলো- হে আল্লাহ ! যতদিন আমার কন্ঠে মধু ছিল ততদিন মানুষ আমার গান শুনেছে। আমার জীবিকার ব্যবস্থা হয়েছে। আজ আমার কন্ঠে সুর হারিয়ে গেছে। ফলে মানুষ আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। এখন আর কেউ আমার গান শুনে না। অথচ তুমি তো সবার কথাই শোন, সব অবস্থায় শোন। আজ তুমি আমার ডাক শোন। আমাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার কর।
হযরত ওমর (রাজিঃ) তখন মসজিদে নববীতে আরাম করছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর অন্তরে নির্দেশ এলো- আমার এক বান্দা আমাকে ডাকছে। সে বিপদগ্রস্ত। তুমি তাকে সাহায্য কর। হযরত ওমর রাজিঃ সঙ্গে সঙ্গে ছুটলেন জান্নাতুল বাকীর দিকে। তাঁকে দেখেই তো বুড়ো গায়ক পালাতে উদ্যত। হযরত ওমর রাজিঃ ডাকলেন, দাঁড়াও ! আমি আসিনি আমাকে পাঠানো হয়েছে। আমাকে নির্দেশ করা হয়েছে যেন তোমাকে সাহায্য করি। বলো তো তোমার বিষয়টা কি?
বৃদ্ধ গায়ক বললো, কে পাঠিয়েছে আপনাকে?
হযরত ওমর (রাজিঃ) বললেন, আল্লাহ পাঠিয়েছেন।
এ কথা শোনেই সে কাঁদতে লাগলো এবং পুনরায় হাত তুলে দু’আ করতে লাগলো- হে আল্লাহ ! সারা জীবন আমি তোমার নাফরমানী করেছি। আমার জীবনের প্রতিটি রাত, প্রতিটি বৈঠক কেটেছে তোমার অবাধ্যতায়। অজ্ঞতা ও গাফলতের ভেতর দিয়ে কেঠেছে আমার জীবনের প্রতিটি দিন। আজ যখন আমার পায়ের নীচ থেকে জীবনের সকল ভরসা সরে গেছে তখন আশ্রয় চেয়েছি তোমার দরবারে। তোমাকে ডেকেছি। সঙ্গে সঙ্গে তুমি আমার ডাকে সারা দিয়েছো। আমি তোমাকে ভুলেছি, তুমি আমাকে ভুলোনি। এ কথা বলে আকাশ কাঁপিয়ে এক চিৎকার তুলে এবং সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
ফায়দাঃ আল্লাহ তা'লা বান্দার প্রতি বড়ই মেহেরবান ও দয়ালু।
সৌজন্যেঃ কপি পেষ্টঃ
https://k-banglawali-m.blogspot.com/2016/07/blog-post_51.html
তথ্যসূত্রঃ
আলোকিত নারী
পৃষ্ঠা ৬৮-৬৯
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ১:২৬