somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নান্নামুন্না ফটিকচান পর্ব ১!!

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ভোর ৬:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইহা একটা বিশাল বড় ক্যাচাল লাগানিয়া পোস্ট। যারা সাইজ দেইখা পড়তে চাইবেন না তাদের জন্য আমার প্রিয় একটা গান। শুনেন আর মজা নেন। এই গান শুনার একটাই শর্ত সেইটা হইলো স্যারাউন্ড সাউন্ডে হাই বেস।



এখন আসি আসল কথায়।
আমি এই পোস্ট নাম উল্লেখ করলাম না। নাম উল্লেখ করলে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে। যেহেতু আমাকে ব্যাক্তি আক্রমন করা হইছে, তাই আমি তাদের ধর্মের ওপর আক্রমন করবো না। আমি এখানে সেই মহান মানুষ কথাটা ব্যাবহার করবো। যারা বুঝার তা বুঝে নেন।

সেই মহান মানুষ কি আসলেই মূর্খ ছিলেন?

আসেন প্রথমেই আমরা দেখে নেই মক্কায় অবতীর্ন সূরা আল আরাফের ১৫৭ ও ১৫৮ নম্বর আয়াতে কি বলা আছে তবে ছবি আকারে। কারন বাংলাদেশের সব কয়টা অনলাইন অনুবাদে সেই মহান মানুষের নিরক্ষরতার কথা চেপে গেছে সবাই।



তাই আমি এর আসল অনুবাদ জানতে লীডস ইউনির কোরানিক ভাষার ওপর বিশেষ সাইটের শরনাপন্ন হলাম। এখানে ক্লিক করলে দেখবেন সেই মহান মানুষকে সকল অনুবাদকই নিরক্ষর হিসাবে অনুবাদ করেছে। তবে বাংলা ইবনে কাথীরের যে কটা বইয়ের সংকলন আছে সেখানে সেই মহান মানুষের নিরক্ষরতার সঠিক অনুবাদ করা হয়েছে। তবে অনলাইনে ইংলিশ থেকে আমি এখান থেকে তফসীরটাঅনুবাদ করলাম। যারা ইংলিশ পড়েন বোঝেন তারা এই লিংকে ক্লিক করতে পারেন। আমি এখানে উপরোক্ত ছবিটা ক্বাথীরের তাফসীরের বাংলা অনুবাদ থেকে নিয়েছি আপনাদের সবার বোঝার স্বার্থে।

এখন আপনারা আরবী শব্দের অনুবাদ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন তাই আমি তাফসীর লিংকও দিয়ে দিলাম। এখন আমরা মদীনায় অবতীর্ন সূরা আল জুমুআহ র ২ নম্বর আয়াতের অর্থ দেখি:

তিনিই নিরক্ষরদের মধ্য থেকে একজন রসূল প্রেরণ করেছেন, যিনি তাদের কাছে পাঠ করেন তার আয়াতসমূহ, তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হিকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিল ঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।


তার মানে ওপরের মাক্কী ও মাদানী দু ধরনের সূরার আয়াতেই দেখতে পেলাম যে সেই মহান মানুষ নিরক্ষর ছিলেন। এবার হাদিসের দিকে তাকাই আসলেই সে কতটা নিরক্ষর ছিলো।

সহী আল বুখারী ভলিউম ১, খন্ড ৩ হাদিস নম্বর ৬৫:
আনাস বিন মালিক বর্নিত একদা নবী মোহাম্মদ একটা চিঠি লিখলেন অথবা একটা চিঠি লেখার ব্যাপারে ভাবলেন। সেই মহান মানুষকে বলা হয়েছিলো যে তাহারা (শাসকগন) সীলমোহরবিহীন চিঠি পড়েন না। তাই সেই মহান মানুষ একটা রৌপ্য নির্মিত রিং নিয়ে তাতে "সেই মহান মানুষ আল্লাহর রাসুল" কথাটা খোদাই করলেন। যেনো আমি সেই মহান মানুষের হাতে একটা সাদা দ্যুতি দেখতে পাচ্ছিলাম।

এই হাদিসের প্রমান স্বরূপ এই লিংকে ক্লিক করলে দেখতে পাবেন সেই মহান মানুষ বেশ কিছু চিঠি লিখেছিলেন হুদায়বিয়ার সন্ধি চুক্তির পর এবং কিছু চিঠিতে নিজের প্রতিচ্ছবিও একেছিলেন। এসব চিঠি যে ওনারই রেফারেন্সে তার সুস্পষ্ট বর্ননা আছে। তার মানে প্রমানিত হয় যে আসলে তিনি নিরক্ষর ছিলেন না।

স হী বুখারী ভলিউম ৭ বই ৬২ হাদিস ৮৮:
উরসা বর্নিত আয়েশা যখন ৬ বছর বয়সে পদার্পন করলো তখন সেই মহান মানুষ তাদের বিয়ের কাবিন নামা লিখলেন এবং তার সাথে যৌনমিলনে লিপ্ত হলেন যখন তার বয়স ৯ এবং আয়েশা তার সাথে আরও নয় বছর অতিবাহিত করলেন (তার মৃত্যু পর্যন্ত)।

স হী বূখারী ভলিউম ১, বই ৩, হাদিস ১১৪:

উবায়দুল্লাহ বিন আব্দুল্লাহ বর্নিত: ইবনে আব্বাস বলেন যে যখন সেই মহান মানুষের অসুস্থতা খারাপের দিকে যাচ্ছিলো, তখন সে বললো,"আমার জন্য কাগজ নিয়ে আসো এবং আমি তাতে তোমাদের জন্য নির্দেশনামা লিখে যাবো যাতে তোমরা বিপথে না যাও।" কিন্তু ওমর বললো যে নবী গুরুতর অসুস্থ এবং আমাদের কাছে আল্লাহর বই আছে এবং এটাই আমাদের জন্য যথেস্ট।" কিন্তু সেই মহান মানুষের সাথীরা এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষন করলো এবং একটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। এর মধ্যে সেই মহান মানুষ বললেন যে চলে যাও (আমাকে একা থাকতে দাও)। এটা ঠিক নয় যে তোমরা আমার সামনে ঝগড়া করবে। ইবনে আব্বাস এটা বলে বেরিয়ে গেলেন যে এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আল্লাহর সেই মহান মানুষকে লিখতে দেয়া হলো না যা তিনি লিখতে চেয়েছিলেন এই মতানৈক্য ও কোলাহলের কারনে।(যদিও এই হাদিসটি ইবনে আব্বাস নিজে শুনছেন সেটা তিনি অস্বীকার করছেন কিন্তু যখন বলতেন তখন তিনি এভাবেই বর্ননা করতেন।)

বিশেষ ধর্মের স্কলাররা এই হাদিসটাকে এভাবে দেখেন যে উনি কাগজ চাইছিলেন নিজে লেখার জন্য নয়, বরং সুহায়েলকে দিয়ে উনি লেখাতে চেয়েছেন।

এবার আসি স হী মুসলিম বই ১৬ হাদিস নম্বর ৪১২৬:

আবু লায়লা আব্দুল্লাহ বিনতে আব্দ আর রহমান বিন সাহেল বর্নিত যে গোত্রের মুরুব্বীগন সাহেল বিন আবু হাথমাকে জানালো যে আব্দুল্লান বিন সাহেল ও মুহায়সিয়া খাইবার যাবার সময় যে মানসিক চাপের মধ্যে ছিলো তা তাদের প্রভাবিত করেছে। মুহায়সিয়া এসে জানালো যে আব্দুতালাহ বিন সাহেলকে খুন করা হয়েছে এবং তার মৃতদেহ কুয়ায় নিক্ষেপ করে হয়েছে বা পুতে ফেলা হয়েছে। সে ইহুদীদের কাছে এসে বললেন: আল্লাহর কসম, তুমিই তাকে খুন করেছো। তারা বললো আল্লাহর কসম, আমরা তাকে হত্যা করে নাই। সে পরে তাদের লোকজনের কাছে আসলো এবং তাদের কাছে এই ঘটনার কথা বললো। তারপর সে এবং সাথে তার ভাই হুওয়াইসিয়া একসাথে আসলেন। তারপর মুহায়িসা কথা বলতে থাকলেন এবং তিনিই সেই ব্যাক্তি যে কিনা আব্দুল্লাহর সাথে খাইবারে যেখানে সেই মহান মানুষ মুহায়িসাকে বললেন জ্যোষ্ঠদের মহত্ব পর্যবেক্ষন করো। তারপর হুয়ায়িসা বললেন এবং তারপর মুয়ায়িসা বললেন। অতঃপর সেই মহান মানুষ বলেন যে হয় তারা রক্তমূল্য পরিশোধ করবে নতুবা যুদ্ধ হবে। সেই মহান মানুষ এই সম্পর্কে ইহুদীদের লিখে পাঠালেন। তারা লিখলো, না। সেই মহান মানুষ বললেন যে ইহুদীরা তাদের নিস্পাপের ওপর কসম খেতে বললেন। তারা বললেন যে তারা মুসলমান নয়। আল্লাহর সেই মহান মানুষ, অন্যদিকে, নিজে তাদের রক্তমূল্য পরিশোধ করলেন এবং পাঠিয়ে দিলেন ১০০ উট যতক্ষন তারা তাদের ঘরে প্রবেশ করলো, সাহেল বললেন যে একটা লাল মেয়ে উট তাকে লাথী মারলো।

এবার আসি সুনানে আবু দাউদের বই ১৮ হাদিস ২৯২১:

ওমর ইবনে আল খাত্তাব বর্নিত সা'ইদ বলেন যে উমর ইবনে আল খাত্তাব বলেন যে রক্তমূল্য নিহতের গোত্রের জন্য এবং তার স্ত্রী এই টাকা পাবে না। আদ দাহনাক ইবনে সুফিয়ান বলেন আল্লাহর নবী লিখে আমাকে জানালেন যে আমি ঐ টাকার কিছু অংশ আশিয়াম আদ ডুবাদীর স্ত্রীকে দিয়ে দিতাম যেটা তার স্বামীর রক্তের মূল্যে গৃহিত। তাই উমর তার মতামত প্রত্যাহার করলেন। আহমাদ ইবনে সালিহ বলেন আব্দুর রাজ্জাক এই প্রথা আমাদেরকে মা'মার থেকে, আজ জুহরীর সা'ইদের কৃর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানালেন। এই ভার্সনে সে বললো সেই মহান মানুষ তাকে বেদুঈনদের গভর্নর বানিয়ে দিলেন।

সুনানে আবু দাউদের আরেক স হী হাদিস বই ১৯, হাদিস ২৯৯৩: (রেয়াত আল আলবানি)

ইয়াজিদ ইবনে আব্দুল্লাহ বর্নিত: আমরা তখন মিরবাদে ছিলাম। মাথায় উস্কখুস্ক চুল আর হাতে এক টুকরো লাল চামড়া নিয়ে এক ব্যাক্তি আসলেন। আমরা বললাম তোমাকে দেখে বেদুঈন মনে হচ্ছে। সে বললো, হ্যা। আমরা বললাম আমাদেরকে তোমার হাতের চামড়াটা দাও। সে তারপর দিয়ে দিলো এবং আমরা সেটা পড়লাম। ওটাতে লেখা ছিলো:" সেই মহান মানুষ, আল্লাহর নবী হইতে, প্রতি বানু জুহায়ের ইবনে উকায়েশ। যদি তোমরা সাক্ষ্য ব হন করো যে আল্লাহ ব্যাতিত কোনো ঈশ্বর নেই এবং সেই মহান মানুষ আল্লাহর রাসুল, নামাজ আদায় করেন, জাকাত দেন, গনিমতের মালের এক পঞ্চমাংশ পরিশোধ করেন এবং সেই মহান মানুষের ভাগের অংশ এবং তার স্পেশাল ভাগ (শাফি), তোমরা আল্লাহ এবং তার রাসুলের নিরাপত্তায় থাকবে।" আমরা তারপর জিজ্ঞেস করি যে কে আপনার জন্য এই ডকুমেন্ট টি লিখেছেন? সে বললো: আল্লাহর সেই মহান মানুষ।

সুনানে আবু দাউদের আরেক স হী হাদিস বই ৪২ হাদিস ৫১১৭:

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্নিত: সেই মহান মানুষ হেরাক্লিয়াসের কাছে চিঠি লিখলেন:" সেই মহান মানুষ, আল্লাহর নবী, প্রতি হিরাকল (হেরাক্লিয়াস), বাইজেন্টিনের শাসক। শান্তি বর্ষিত হোক অনুসরনকারীদের ওপর।" ইবনে ইয়াহিয়া ইবনে আব্বাসকে রিপোর্ট করলেন যে আবু সুফিয়ান তাকে বলেন: আমরা তারপর হিরাকলের কাছে দেখা করতে আসলাম যে কিনা আমাদেরকে তার সামনে আসন গ্রহন করতে বললেন। তারপর তিনি চিঠিটির জন্য ডেকে পাঠালেন যেটা কিনা সেই মহান মানুষের কাছ থেকে এসেছে। সেখানে লেখা ছিলো," আল্লাহর নামে, যিনি ধৈর্যশীল, দয়াপ্রবন, সেই মহান মানুষ, আল্লাহর নবী হইতে, প্রতি হিরাকিল, বাইজেন্টিনের শাসক। শান্তি বর্ষিত হোক অনুসরনকারীদের ওপর। এগিয়ে যাও।"


ওপরের সকল স হী হাদিস থেকে প্রমানিত হলো কোরানে যে অশিক্ষিত সেই মহান মানুষের কথার বলা আছে হাদিস অনুযায়ী আদতে তিনি অশিক্ষিত ছিলেন না। তার চেয়ে বড় প্রমান হলো নব্যুয়ত প্রাপ্তির পূর্বে খাদিজার পুরো ব্যবসার দায়িত্ব তার কাধে ছিলেন। তো স্বভাবতই ব্যাবসায়িক সকল হিসাব নিকাশ তাকেই করতে হতো।

এখন আমরা একটু অন্য রকম আলোচনা করি। প্রথমে শুরু করি মক্কায় অবতীর্ন সূরা ফুরকানের ৫ নম্বর আয়াত:

তারা বলে, এগুলো তো পুরাকালের রূপকথা, যা তিনি লিখে রেখেছেন। এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর কাছে শেখানো হয়।

এর তাফসীর থেকে জানতে পারি যে মক্কায় তখন থেকেই অনরাব ইহুদী সহ খ্রিস্টানরা আরবীতে তাদের ধর্মের প্রচার করতেন।

এখন প্রশ্ন হলো সেই মহান মানুষ আরবের মতো মরুভূমিতে থেকে কোরানে বাইবেল আর তোরাহর গল্প কিভাবে দিলো যদি সে চুরি করেই থাকে?
এখানে সবার আগে যে নামটি আসে সেটা হলো তলোয়ার বানানের ওয়ালা কপটিক ক্রিশ্চিয়ান জাবেরের নাম। কিন্তু তার ব্যাপারে সরাসরি মুসলমানরা অস্বীকার করে। এবার একটা ছবি দেই অস্বীকারের কারন গুলো দিয়ে:



এই ছবি অনুসারে ইসলামিস্টরা জাবেরের সাথে মোহাম্মদের জ্ঞান আনয়নের কথা অস্বীকার কিছু কারন হলো:

১) জাবের অনারব
২) জাবের আরবী জানে না সেখানে সেই মহান মানুষ আরবী বৈ কিছুই জানে না
৩) জাবেরের কথা কোরানে অস্বীকার করছে তাই জাবেরের কাছ থেকে সেই বিশেষ মানুষ কোনো জ্ঞান নেয় নাই।


প্রথম যুক্তি জাবের অনারব। এখন আপনাদের একটা লিংক দেই যেখানে ক্লিক করলে সেই মহান মানুষের কাছে কতজন অনারব বিশেষ ধর্ম গ্রহন করেছেন। এখানে ইসলামের প্রথম মুয়াজ্জীন বেলাল থেকে শুরু করে সালমান ফারসীর নামও আছে। এই সালমান ফারসীর কাছ থেকে বুদ্ধি নিয়ে খন্দকের যুদ্ধে বিশাল পরীখা খনন করে সেই মহান মানুষ কোরায়েশদের বিশাল সেনাবাহিনীকে অল্প রক্তক্ষয়ে রুখে দেন। এরকম আরো ব হু অনারবের নাম পাওয়া যায় যারা একসময় হাদিসও বর্ননা করে সেই মহান মানুষের খাস শিষ্য বনে গেছেন।

এখন আসি জাবেরের ইতিহাস সম্পর্কে অন্যান্য তাফসীরে কি আছে:

১) মওদুদীর তাফহিমুল কোরানের এই লিংকে ক্লিক করুন। সূরা নাহলের ১০৭ নম্বর তাফসীরে বর্নিত যে ঐতিহ্যগত ভাবে অনেক মানুষের নাম বর্ননা করা হলেও তাদের মধ্যে জাবের ছিলেন যার কথা তখনকার মক্কার অবিশ্বাসীরা বলতো। যাই হোউক, একটা কথা অবশ্যই বলতে হয় যে যাদের কথা বলা হয়েছে তারা সবাই ছিলো অনারব ক্রিতদাস। সে যেই হোক না কেন, কাহিনী হলো সে গসপেল আর তৌরাত পাঠ করতো এবং সেই মহান মানুষের সান্নিধ্য লাভ করেছিলো, যার ফলে অবিশ্বাসীরা সুযোগ পায় ভূয়া কথা ছড়াবার জন্য যে মূলত ঐ ক্রিতদাসই কিনা পবিত্র কোরানের আসল লেখক, কিন্তু সেই মহান মানুষ আল্লাহর বানী তাদের সামনে উপস্থাপন করে..........

২) এবার আসি তাফসীর ইবনে ক্বাথীরে কি আছে। আল্লাহ মূর্তিপূজকদের মিথ্যা, অভিযেোগ এবং কুযুক্তি সম্পর্কে জানায় যখন তারা দাবী করে যে সেই মহান মানুষ যে কোরানের উচ্চারন করে তা আসলে তাকে একজন মানুষ শিখিয়ে দেয়। তারা একজন বিদেশী (অনারব) এর কথা বলে যে কিনা তাদের কোরাইশ গোত্রের কিছু দলের সাথে থেকেছিলো এবং যে কিনা আস সাফার মালপত্র বিক্রয় করেছিলো। হতে পারে সেই মহান মানুষ তার সাথে কিছু দিন কথা বলেছিলো কিন্তু সে তো বিদেশী, তার তো আরবী জানা ছিলো না....

৩) তানউইর আল মিকদাসের মতে জাবেরের মুখের ভাষা ছিলো হিব্রু।

এই জাবেরের কথা আরো বেশ কয়েকটা তাফসীরে আছে যেখান থেকে এটাই প্রতীয়মান যে জাবের একজন ছুতারমিস্ত্রী ছিলো এবং সে তরবারী বানানোতে দক্ষ ছিলো। তার মাতৃভাষা ছিলো হিব্রু এবং সে কপ্টিক খ্রিস্টান ছিলো ও তৌরাত এবং বাইবেল দুটোই পড়তে পারতো এবং সেই মহান মানুষ তার এই বই দুটো পাঠ শুনতেন এবং একান্তে তার সাথে কথা বলতেন।

এখন আসি ইবনে ক্বাথীরের এই লিংকে যে ঘটনাটা সেই মহান মানুষের নব্যুয়ত প্রাপ্তির ৫ বছর আগে মানে যখন সেই মহান মানুষের বয়স ছিলো ৩৫ বছর। এই ঘটনার রেয়াত পাবেন ইবনে ইশাকের এবং ইয়াসীরের। নবী মোহাম্মদের যখন ৩৫ বছর তখন কোরায়েশরা সমাবেত হলো কাবা ঘর পুনর্গঠনের জন্য এবং তারা ছাদটা ঢেকে দিলো। কাবার উচ্চতা তখন এত ছিলো না, এবং এর মধ্যে কিছু ধন সম্পদ চুরি গিয়েছিলো যা কিনা দুয়ায়েক নামের এক মুক্ত ক্রীতদাসের কাছে পাওয়া যায়। কুরায়েশরা তার শাস্তি স্বরূপ হাত দুটো কেটে নেয়। যদিও অনেকে বলেছিলো দুয়ায়েক আসল চোর না, চোরে চুরী করে দুয়ায়েকের কাছে রেখে গিয়েছিলো। যাই হোউক, তার কিছু দিন আগে এক রোমান ব্যাবসায়ী জাহাজে করে এসেছিলেন। কোরায়েশরা তার কাছ থেকে জাহাজটা কিনে তার কাঠ গুলো ক্বাবার পাটাতন বানানোর জন্য কাজে লাগে এবং তখন এক কপ্টিক খ্রিষ্টানের ডাক পড়ে যে কিনা ছুতারের কাজ জানতো।

তার মানে হিসাবে দেখা যাচ্ছে এই কপ্টিক জাবের বেশ কয়েক বছর ধরেই মক্কায় ছিলো এবং যার মালিক ছিলেন আমর ইবনে হাদরামী। এই আমর বিন হাদরামীর মৃত্যু ঘটে নাখলাতে যখন তিনি, উসমান, নওফেলের ছেলে, ও হিশাম ইবনে মুঘিরার একজন মুক্ত দাস কিছু মালামাল নিয়ে বানিজ্য করতে যাচ্ছিলেন। মুসলমান ডাকাতদের অতর্কিত আক্রমনে তারা নিরস্ত্র থাকা অবস্থায় হতভম্ব হয়ে যায় এবং এই আমর বিন হাদরামী ওয়াকিদ ইবনে আব্দুল্লাহের তীরে মারা যায়। এই ডাকাতিটা ঘটে ৬২৩ সালে। তার মানে দেখা যাচ্ছে যে জাবের বহু আগে থেকেই আমর ইবনে হাদরামীর হয়ে কাজ করতো মক্কায়। এবং |সে পড়তে ও লিখতে বেশ পারদর্শী ছিলো এবং সেই মহান মানুষ তাদের কাছে অডিটের ব্যাপারে সাহায্য চাইতেন।



বইয়ের নাম Prophet Muhammad in French and English Literature: 1650 to the Present, পৃষ্ঠা: ২০৫। গুগল বুকে সার্চ দিলেই পাবেন।


এখন আসি একটা হাদিসের বর্ননা দিয়ে যেটা কিনা স হী বুখারী হাদিস
আনাস বর্নিত একজন খ্রিস্টান ছিলো যে কিনা বিশেষ ধর্ম গ্রহন করেছিলো এবং সুরা বাকারা ও ইমরান পড়তে পারতো এবং সে নবীর হয়ে ওহী লিখতে পারতো। পরে সে খ্রিস্ট ধর্মে ফিরে যায় এবং বলতো যে আমি তার হয়ে যা লিখেছি ওগুলো ছাড়া সেই মহান মানুষ কিছুই জানে না। তারপর আল্লাহ তাকে মৃত্যু দান করে এবং মানুষজন তাকে কবর দেয় কিন্তু সকালে উঠে দেখে তার লাশ কবর থেকে উপরে ফেলা হয়েছে। তারা বলতো এটা নিশ্চয়ই সেই মহান মানুষ ও তার সঙ্গীদের কাজ। তারা আমার সঙ্গীর কবর খুড়ে তার মৃতদেহ বের করে ফেলে কারন সে তাদের কাছ থেকে পালিয়েছিলো। তারা আবার তাকে কবর দেয়। কিন্তু এর পরের দিন আবার দেখে লাশ কবর থেকে বাইরে চলে এসেছে। এরকম তিনবার হয়। পরে তারা বিশ্বাস করে যে যেটা তার লাশ এভাবে ফেলে দেয় সেটা কোনো মনুষ্য দ্বারা সম্ভব নয় এবং ওভাবেই তারা লাশ টা ফেলে রেখে চলে যায়।

যদিও এই হাদিসে নামটা সরাসরি উচ্চারিত নেই।

এরকম শুধু এক জাবের না, বাইবেল এবং তৌরাত জানা ব হু ইহুদী এবং খ্রিস্টান যারা কিনা আরবী ও হিব্রু ভাষায় পারদর্শী ছিলো (খোদ ওয়ারাকা নওফেলও দুটো ভাষাতেই পারদর্শী ছিলো) ইসলাম গ্রহন করে নবীর সাহচার্য লাভ করে তো সেখানে সেই মহান মানুষের পক্ষে অসম্ভব কিছুই না।

সে হিসেবে আমরা কিছু হাদীস দেখি। স হী বুখারীর এই হাদিসে উল্লেখ আছে যে আবু হুরায়রা বর্নিত যে ইহুদীরা তাদের ধর্মগ্রন্থ তৌরাত হিব্রুতে তেলোয়াত করতো এবং পরে তা আরবীতে মুসলমানদের সামনে ব্যাখ্যা করতো। এর প্রেক্ষিতে সেই মহান মানুষ বলেন যে আহলে কিতাবের লোকদের বিশ্বাস করো না বা অবিশ্বাস করো না বরং তাদেরকে বলো যে আমরা আল্লাহতে বিশ্বাস রাখি যা আমাদের সামনে উন্মোচিত হয়েছে (সূরা বাকারা ২: ১৩৬)

এখন এক ইহুদী মহিলার কাছ থেকে জানা কবরের প্রশ্ন সম্পর্কে হাদিস। আয়েশা বর্নিত যে সেই মহান মানুষ আমার ঘরে প্রবেশ করার সময় আমার সাথে থাকা এক ইহুদী মহিলা তাকে বললো তুমি কি জানো যে কবরে তোমাকে প্রশ্ন করা হবে? নবী তা শুনে কেপে উঠলেন এবং বললেন যে এই প্রশ্নের সম্মুখীন ইহুদীদেরকেই করা হবে। আয়েশা বলেন যে আমরা কয়েক রাত অতিবাহিত করলাম এবং সেই মহান মানুষ বললেন যে তুমি কি জানো যে আমার কাছে বলা হয়েছে যে: তোমাকে কবরে প্রশ্নের সম্মূখীন করা হবে? আয়েশা বললেন যে এরপর থেকে সেই মহান মানুষ কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাইছিলেন।

এটা পরিস্কার যে কোরানে যে কবরের আজাবের কথা ঘুনাক্ষরেও উচ্চারন করা হয়নি সেটা কিন্তু সে হাদিসে বার বার বলেছেন। আর সেই মহান মানুষ এটা সম্পর্কে নিজেই শিওর ছিলেন না তবে অনেক চিন্তা ভাবনা করে বা খোজ খবর নিয়ে যখন শিওর হলেন তখন সে সম্পর্কে বলা শুরু করলেন। ইহুদীদের ব্যাবিলোনিয়ান তালমুদ, সাহরেদ্রিন ৪৭বি, বেরাকোথ ১৮বি তে উল্লেখিত হিব্বুত আ ক্বিভার বা কবরের কামড় আর মুসলমানদের কবরের আজাব অনেকটা একই।

আর সীমেনের ব্যাপারটার মূল উৎস ছিলো হিপোক্রিটাস যেটা পরে এ্যারিস্টোটল তার প্রানীবিদ্যা বই তে তার নিজের অবজার্ভেশন লেখে। পরে ডা: গ্যালেন তার ফিজিওলজী নিয়ে পুরো জিনিসটা নিজের ভাষায় লেখে যেটা মূলত এ্যারিস্ট টলের অবজার্ভেশনের সাথেই মিলে। যদিও আরবী শব্দ আলাকের অর্থ জমাটবাধা রক্ত থেকে পাল্টে ইসলামিস্টরা জোকের প্রচলন করতে ব্যাস্ত কিন্তু সেখানেও সমস্যা। তা হলো অস্থি আর মাংসের উৎপত্তি নিয়ে একটা ভজঘট আর তার সাথে আরও কিছু ভজঘট থেকে যায় যেটা মূলত ডা. গ্যালেনের গবেষনার ফল। কিন্তু বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে আমরা এখন স্বচক্ষেই দেখতে পাচ্ছি গ্যালেন সাহেব ভুল করেছিলেন এবং একই ভুল করেছেন সেই মহান মানুষ তারটা কপি করে কোরানে উঠিয়ে দিয়ে।

যদি কেউ ভ্রুন তত্বের আধুনিক মেডিসিন সায়েন্সের বইটা ফ্রিতে পেতে চান হাত তুলতে পারেন। আর এই ব্যাপারটা সেই মহান মানুষ শুধু জাবের নয় তখন আরও ব হু অনারব ক্রিতদাস ছিলো যারা পড়ালেখা জানতো। তাদের কাছ থেকেও জেনে থাকতে পারে।

সেটা খোজাটা অবশ্যই হাস্যকর যেখানে কোরানে বলা আছে সেই মহান মানুষ অশিক্ষিত আদতে তিনি অশিক্ষিত ছিলেন না। তিনি বেশ ভালো শিক্ষাই গ্রহন করেছিলেন এবং সে কারনেই নব্যুয়তের আগের ১৫ বছর খোদেজার বিশাল ব্যাবসা তিনি একাই সামলাতেন। হিসাব কিতাব পড়া লেখা না জানলে সে কিভাবে এত বড় ব্যাবসা সামলান এটা একটা প্রশ্ন।


যাই হোউক, আমি এখানে বিশেষ বদনাম গাইতে আসি নাই, আসছি আমি যা বলছি তার কিছু দলিল দেয়া বাকি ছিলো। যদিও অনেক কথাই সরাসরি বলা উচিত না তাই বলিও নাই। শুধু ডকুমেন্ট রেখে গেলাম। কেউ চাইলে কমেন্টে আলোচনা করতে পারেন।

আবু বকরের কাহিনী, এবং শুকরের গোস্ত কেন গরুর গোস্তের থেকে হাজার গুন ভালো সেটা নিয়ে কথা বলবো এর পরের পোস্টে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৯ ভোর ৫:১৫
৫৫টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×