এতদিন কিছুটাকা গরীব দুখিদের দিয়ে নিজেকে হাজী মহসিন মনে হতো। বাবা আইফোন আর দামী ক্যামেরা কিনে দিলেন না বলে নিজেকে গরীব মনে হতো বন্ধুদের সামনে। আসলে আমার মনের দিক থেকে যে কত গরীব আমি আজ বুঝতে পারলাম।
ফারুক মিয়া রাবার বাগানের শ্রমিক কিন্তু ওই এলাকায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্টান নাই যে বাচ্চারা পড়া শুনা করবে। ফারুক তার বন্ধুদের সাথে শলা পরামর্শ করলো যারা সবাই রিকশাওয়ালা ফেরিওয়ালা ও দিনমজুর। তাদের সাথে নিয়ে দিন রাত পরিশ্রম করে ওভার টাইম করে ৭০ হাজার টাকা জোগার করে ফারুক ও তার বন্ধুরা। তা দিয়ে তারা স্কুল বানায়। কিন্তু স্কুলের ঘর কোথায় পায় আর টাকাও অত নেই। ফারুক নিজের শেষ সম্বল ঘর ভিটা ছেড়ে দিয়ে সেখানে স্কুল চালায়। আর নিজে থাকে পরিবার নিয়ে রান্নার খুপড়ি ঘরে।
রাবার শ্রমিক ফারুক তুমি তো রাহবার। তোমার মত মানুষের পায়ের ধুলার সমান যোগ্যতা আমার নাই। আজ নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। এই ছেলে কোথা হতে আসলে আজ আমাকে এত নিচে নামাতে।
একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধ মানুষ লোকমান। যতদিন তার চাকরি ছিল তার বন্ধু, আত্নীয়- স্বজন, ছেলে মেয়ে সবই ছিল। রোড এক্সিডেন্টে পঙ্গু হওয়ার পর তাকে তার সন্তানেরা ছেড়ে চলে গেছে, তার দেখার কেও নেই।
তিনি অনেক কষ্টে হুইল চেয়ারে করে ফেরী করে জীবন চালান। সেখানেই রাতে ঘুমান। পঙ্গু মানুষ , বাথরুমে যেতে কষ্ট হয় বলে দিনে ১ বার খান তিনি। সাহায্য করার মত কেউ নেই। সমাজে অনেক (বিবেকবান?) মানুষ থাকা ষত্বেও তার দিকে কেও ভুলেও দৃষ্টি দেয়নি।
অসহায় এ মানূষটিকে নিজের বাবার মর্যাদা দিয়ে বৃদ্ধের তীব্র আপত্তি সত্ত্বে ও ঘরে নিয়ে আসে রিকসাওয়ালা রফিক। তাদের পরিবারে যেখানে নিজেরাই খেতে পায়না সেখানে এই বৃদ্ধকে নিজে কোলে করে চলাফেরা করায়। তার সব কিছু দেখাশোনা করে ।
রাস্তায় কত মানুষ কষ্টে আছে দেখি দেখে না দেখার ভান করে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে পিজা হাটে চলে যাই। হাজার টাকা বিল দিয়ে ফূর্তি মেরে ফিরে আসি। ক্লাবের ডিস্কো পার্টিতে যখন নেচে নেচে ক্ষুধার্ত তখন দামি খাবার গিলি। দামি ডিং গিলি। বাইরে আজকে কত শিশু না খেয়ে আছে খোজ নেয়ার চেষ্টা ও করিনা।
গার্লফ্রেন্ড কথা না বললে নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে দুখী মানুষ মনে হয়। ছি ছি নিজের প্রতি ঘেন্না হচ্ছে
অনেক শিক্ষিত আর ডিগ্রিধারী হয়েছি...
ও রিকসাওয়ালা লোকমান তোমার মত কেন মানুষ হতে পারলাম না।