somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওয়ার অন টেররের ভারতাগমন এবং মুম্বাই সন্ত্রাসের রাজনৈতিক মাজেজা

০১ লা ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গোলমালে মাথা ঘোরে বলে সবকেই গোল লাগে আর মালও খোয়া যায়। মুম্বাই সন্ত্রাসের পর এমন গোলমালই চারদিকে ঠাহর করা যাচ্ছে। ৯/১১ এর ধাক্কা এখনও দুনিয়াবাসীর হাড্ডিতে বাজছে, মুম্বাইয়ের ধাক্কা যে কোথায় গিয়ে বাজে, সেটা এখন দেখার অপেক্ষা।
প্রতিটি ঘটনারই একটা পটভূমি থাকে। মুম্বাই সন্ত্রাসও ঘটেছে বিশেষ একটা পটভূমিতে। এর কিছুদিন আগেই বিশ্বে জঙ্গিবাদের একচেটিয়া খেতাবে ভাগ বসিয়েছে হিন্দু জঙ্গিবাদ। মালেগাঁও, নান্দেদ, আজমীর, পাটনা, সমঝোতা এক্সপ্রেস, আহমেদাবাদসহ গত কয়েক বছরের আলোচিত বোমা হামলাগুলোর পেছনে বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের হাত আবিষ্কৃত হয়েছে। একজন সন্ন্যাসিনী ও কর্মরত কর্ণেল প্রসাদ পুরোহিত ও সাবেক মেজর রমেশ উপাধ্যায়কে জেরা করে ভারতজোড়া জঙ্গিবাদী নেটওয়ার্ক ক্রমশ উন্মোচিত হচ্ছিল। সংঘ পরিবারের তরফে বাংলাদেশে হিন্দুদের নির্যাতনের প্রতিশোধে হিন্দু জঙ্গিবাদের শাখা খোলার সংবাদও প্রকাশ হয়। (টাইমস অব ইন্ডিয়া ২৪ নভেম্বর, ২০০৮)। বেরিয়ে আসছিল তাদের বিভিন্ন মিলিটারি স্কুলের কথা। বিভিন্ন রাজ্যের প্রশিণ শিবিরের কথা। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো, হিন্দু জনজাগরণ মঞ্চ, পানভেলের সান্তনা আশ্রম এবং ১৯৩৫ সালে হিন্দু উগ্রবাদী বি.এস. মুঞ্জে প্রতিষ্ঠিত সেন্ট্রাল হিন্দু মিলিটারি এডুকেশন সোসাইটির ভোনশালা মিলিটারি স্কুল। এসব অভিযোগ ও আলামত ভারতে সন্ত্রাসবাদের নতুন মুখচ্ছবি সাজিয়ে তুলছে। বিজেপি'র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে একে বলা হচ্ছে, 'হিন্দু সন্ত্রাসবাদ'। রমেশ উপাধ্যায় বলেছেন, কেবল এই দুজনই নয়, ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্তরে আরো হিন্দুত্ববাদী রয়েছেন। সব মিলিয়ে বিজেপি বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও গুজরাত গণহত্যা করেও এতটা ভাবমূর্তির সংকটে পড়েনি, যতটা এসবে পড়েছে। সামনে পাঁচটি রাজ্যে নির্বাচন। জঙ্গিত্বের দায়ে সেই নির্বাচনে বিজেপির মার খাওয়ার ভয় ছিল। তা ঠেকাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুসলিম জঙ্গিবাদ দমনে কঠোরতার অভাব এবং সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে বিজেপি ভোটারদের কাছে নালিশ করে সাম্প্রদায়িক জাদু দিয়ে ভোটজয়ের আঁটঘাট পাকা করছিল। সেরকম সময়েই ফাঁস হলো হিন্দু জঙ্গিবাদ, তথা হিন্দু ফ্যাসিবাদ। একেই বলে বাড়া ভাতে ছাই ঢালা। মুম্বাই বোমা আবারো পরিস্থিতিকে একতরফা ভাবে তাদের পক্ষে নিয়ে গেল। ইতিমধ্যে নির্বাচন পিছিয়ে নেয়া হয়েছে এপ্রিলে। অতএব কেল্লা ফতে।

এতদিন মুসলিম জঙ্গিবাদের নামনিশানা দেওয়া এই ছাঁচেরই বিস্তর সংবাদ আমরা পড়েছি। এমনকি ওপরে যে হিন্দু-বোমার কথা বলা হলো, সেসবের জন্য বাংলাদেশ ও পাকিস্তানকে এবং কাশ্মীর ভিত্তিক লস্কর ই তাইয়েবা ও ইন্ডিয়ান মুজাহেদীনের নিশ্চিত দায়স্বীকারের সংবাদও দেখা হয়ে গেছে। অথচ, সেই ভারতীয় তদন্ত কর্মকর্তারাই প্রমাণ করলেন, ভারতে যেমন মুসলিম জঙ্গিবাদ রয়েছে, তেমনি রয়েছে হিন্দু জঙ্গিবাদও। একসময় শিখ জঙ্গিও ছিল, শ্রিলঙ্কায় আছে তামিল জঙ্গি। এরা সবাই আত্মঘাতীও হতো। এর বাইরে উলফা, মাওবাদী, বোড়ো লিবারেশন টাইগার্স ইত্যাদিও রয়েছে। এতসব ছেড়ে কেন তবে মুসলিম জঙ্গিবাদ নিয়ে মেতে থাকা?

The ATS under Karkare had arrested a Hindu Sanyasin and an army Lt. Colonel. Several other retired army personnel and retired Intelligence Bureau officials were also named in the affair. Indian news papers had carried pictures of the Sanyasin sitting with the president of the BJP and the Madhya Pradesh Chief Minister Prithvi Raj Chauhan. Then came the startling revelation that the International General Secretary of Vishwa Hindu Parishad (VHP), had donated money to Abhinav Bharat the organ বিনু ম্যাথিউ
এবার মুম্বাই সন্ত্রাসের দিকে তাকানো যাক। কে করেছে তা নিয়ে অকাট্য প্রমাণ কেউ দিতে পারেনি। তারপরও ভারতীয় মিডিয়ায় ডেক্কান মুজাহেদিনের নাম এসেছে। কারণ তারা ই-মেইল মারফত দায় স্বীকার করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, কেবল এর ভিত্তিতে কিছু কি আসলেই প্রমাণ হয়? আসলে এসব ঘটনার যথাযোগ্য প্রমাণ সঙ্গে সঙ্গে কখনোই মেলে না। তাই আজকের বিশ্বে কোনো দায়িত্বশীল লোকের পক্ষে সরকারি বয়ানকে নিউটনের সূত্রবত প্রমাণিক ভাবা উচিত নয়। তারপরও দেখা যাচ্ছে, একদল লোক ভারতীয় মিডিয়া ও ভারত সরকারের বয়ানকেই বিশ্বাস করতে ভালবাসছেন। ঠিক যেভাবে একসময় তাঁরা ইরাকে সাদ্দামের গণবিধ্বংসী অস্ত্রে বিশ্বাস করেছিলেন, এখনো বিশ্বাস করেন ওয়ার অন টেররের ছককে। তাঁদের সেই বিশ্বাসের ভিত্তি প্রমাণ নয়, যুক্তি নয়; অনুমান ও সরকারি ভাষ্যের প্রতি অনুরাগ। তা না হলে চোখে পড়তো যে, ভারতীয় মিডিয়া ও সরকারি কর্মকর্তারা ঘটনা ঘটার কয়েক ঘন্টা পর থেকে এখন পর্যন্ত যে বয়ান দিচ্ছেন, তা আসলে নানান দিকে ঢিল ছোঁড়া। একবার বলা হচ্ছে, দাক্ষিণাত্যের সন্ত্রাসীদের কথা, আরেকবার বলা হচ্ছে এরা এসেছে গুজরাত-হায়দ্রাবাদ কিংবা পাঞ্জাবের থেকে, আরেকবার বলা হয়েছে কাশ্মীরী জঙ্গির কথা। এখন জোরসে বলা হচ্ছে পাকিস্তানীদের কথা। আবার এক ন্যাভাল অফিসার বলেছেন, এটি কয়েকদিন আগে সোমালি জলদস্যুদের আস্তানা ধ্বংস করা ইন্ডিয়ান নেভির রক্তাক্ত অভিযানের প্রতিশোধ।

বিষয়টা সম্পর্কে ব্রিটিশ লেখক ও গবেষক তারিক আলির বয়ান প্রাসঙ্গিক: সম্প্রতি সিআইএ স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, আল কায়েদা য় পাচ্ছে। ৯/১১ এর কাছাকাছি মাত্রার আঘাত ঘটবাবার সামর্থ্য আর তাদের নেই। ওসামা বিন লাদেনও সম্ভবত মারা গেছেন। মার্কিন নির্বাচনের প্রাক্কালে তাঁর স্বভাবসুলভ ভিডিও বক্তৃতাও তাই এবার দেখা যায়নি। তাঁর সহকারি আল জাওয়াহিরিও সুবিধাজনক অবস্থান নেই।
কিন্তু পাকিস্তান কি জড়িত থাকতে পারে না? আফগান যুদ্ধের ধাক্কায় বিপর্যস্ত পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এখন উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশেরর সমস্যায় কাহিল। দেশটির রাজনৈতিক নের্তৃত্বও ভারতের প্রতি মিত্রভাবাপন্ন। আবার এত বড় আয়োজন করবার মতো আর্থিক বন্দোবস্তও তাদের নেই। অন্যদিকে লস্কর-ই-তাইয়েবা কখনোই তাদের কৃতকর্ম স্বীকার করতে লজ্জিত হয় না। তারাও শক্তভাবে মুম্বাই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার দায় অস্বীকার করেছে।'' (গার্ডিয়ান, ২৯-১১-০৮)

অন্যদিক থেকেও বিষয়টার গভীরে প্রবেশ করা যাক না কেন? একটি ঘটনার তাৎপর্য ও দায়দায়িত্ব বুঝতে গেলে প্রথমে দরকার খতিয়ে দেখা যে, এ ঘটনা থেকে কী মোটিফ বেরিয়ে আসে এবং তাতে কাদের লাভ। প্রথমত, ভারতে যে মুহূর্তে হিন্দু জঙ্গিবাদের গুমর ফাঁস হওয়ায় বিজেপি বেকায়দায়, সেই মুহূর্তে ইসলামী সন্ত্রাস ঘটিয়ে বিজেপিকে দায়মুক্ত করবে কোন ব্যাক্কেল মুসলিম জঙ্গিরা? কেন তারা বিজেপিকে দায়মুক্ত করতে চাইবে, যখন সামনেই নির্বাচন এবং বিজেপির পরাজয় প্রায় নিশ্চিত? করবেই যদি, তবে কেন ব্রিটিশ-আমেরিকান-ইসরায়েলিদের জিম্মি করা হলো কিন্তু ভারতীয়দের আটকানো হলো না? তাজ হোটেলের ক সংখ্যা ১ হাজারেরও বেশি। অল্প ক’জন জঙ্গি কীভাবে এত বড় হোটেলকে টানা দুই দিন দুর্ভেদ্য করে রাখতে পারলো? সে সময় ভেতরে কী ঘটছিল? ভারত সরকার কি কিছু লুকাতে চাইছে?
সরকারও স্বীকার করছে যে, এতবড় কাণ্ড ঘটাতে শতাধিক কর্মীবাহিনী দরকার। যদি তারা বহিরাগতই হবে, তাহলে তাদের নড়াচড়া, প্রস্তুতি, হোটেলের ভেতর অতিথির ছদ্মবেশে অস্ত্র মজুদ করা কিছুই কেন ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে পড়লো না? তারা কি ঘেসো বাঘ?
জিম্মি করা হয়েছে এই সরল সত্যটা জানাতে কেন সরকার ২৩ ঘন্টা দেরি করলো? আর কে কবে শুনেছে, আত্মঘাতী বোমারুরা জিম্মি রাখে? এবং জিম্মিদের কোনো তি না করেই নিজেরা টপাটপ মারা যায়? (যে বিদেশিরা মারা পড়েছেন তারা মরেছেন প্রথম আঘাতে, জিম্মি অবস্থায় নয়)

জঙ্গিদের আসল উদ্দেশ্য কোনটা: ব্রিটিশ-আমেরিকান-ইজরায়েলিদের জিম্মি করে মুজাহেদিনদের মুক্ত করা? স্টেশনে পাখির মতো মানুষ মেরে আতঙ্ক ছড়ানো? বিশ্ব মিডিয়ার নজরে থাকার রোমান্টিক খায়েশ? তার জন্য এত আয়োজন?
আপাতদৃষ্টে জঙ্গিরা ব্যর্থ হয়েছে। একজন বাদে সকলে মারা পড়েছে। (এখনো তাদের নাম-পরিচয় বলা হচ্ছে না কেন?) এ থেকে মনে হয় যে, বিশ্বের নজর কাড়া এবং আতঙ্ক সৃষ্টিই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
এই দিক থেকে দেখলে ঘটনার একটা ধারা চোখে পড়ে। তিন পরাশক্তির নাগরিকদের হুমকির মধ্যে ফেলার মাধ্যমে আসলে ভারতের ওয়ার অন টেররে ব্রিটিশ-আমেরিকান-ইজরায়েলিদেরও জড়িয়ে ফেলা হলো। এর ফল হতে পারে, একে দক্ষিণ এশিয়ার ৯/১১ আখ্যা দিয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো টুঁটি চিপে ধরা। এর সঙ্গে বারাক ওবামার আফগান যুদ্ধের প্রতিশ্রুতিও মিলে যায়। একজন তো বলেইছেন যে, জঙ্গিরা বারাক ওবামার প্রতি মেসেজ পাঠালো যে, তারা এখনো আছে। অন্যদিকে এ ঘটনার পর ভারতে যারা মুসলিম নিধন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার, যারা আমেরিকার অক্ষে ভারতের প্রবেশের বিরোধী তারা চরমভাবে কোণঠাসা হলো।

আরেকটি কাকতাল (?) মনে খটকা বাঁধিয়ে রেখেছে। তাজ হোটেলের ঘটনায় একইসঙ্গে এমন তিনজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মারা গেছেন, যাঁরা বিজেপির হিন্দু জঙ্গিবাদকে উন্মোচিত করার তদন্তে নিয়োজিত ছিলেন। হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরার পরও বুকের মোম স্থানে তিনটি গুলি লেগে মারা যান মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডের প্রধান হেমন্ত কারকারে। তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। তিনি ছাড়া অন্য দুজন ছিলেন সন্ত্রাস বিরোধী স্কোয়াডের সহপ্রধান এবং প্রধান সন্ত্রাসবাদ বিশেষজ্ঞ। আগের দিন দুয়েকদিনের মধ্যেই হেমন্তের বাড়ি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া ও তাঁকে হত্যার হুমকি এসেছিল। তিনিও এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, 'আমি বুঝছি না কেন এই কেসটা নিয়ে ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক চাপ আসছে।' যারাই তাঁকে হত্যা করুক, তাঁর দায়িত্বে যিনি আসবেন তিনি বিজেপির জঙ্গিত্ব তদন্তে ভয় পাবেন। এমনকি কেসটা চাপা পড়ে বা ফালতুও হয়ে যেতে পারে।

করুক বা না করুক, এ ঘটনার থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বিজেপি ও ভারতীয় সেনাবাহিনী। এমনকি বিজেপির দাবি মতো আমেরিকার প্যাট্রিয়ট অ্যক্টের মতো মুসলিম বিরোধী আইনও হয়ে যেতে পারে। হতে পারে পাকিস্তানী জঙ্গি কার্ড খেলে আগামী নির্বাচন জিতে সরকার গঠন। এবং তার মাধ্যমে অহিন্দু মুক্ত ভারত করবার ফ্যাসিবাদী কর্মসূচি এগিয়ে নেয়াও সহজ হয়।
ভারতে জঙ্গিবাদকে কেন্দ্র করে একধরনের ভয়ের রাজনীতি ও সংস্কৃতি দাঁড়িয়ে গেছে। বোমা ফুটলেই পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে দোষারোপ, নাশকতা হলেই মেজরিটি হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক ঘৃণার রসায়নে সিক্ত করে চালনা করার মাধ্যমে তার প্রকাশ ঘটে। এ ঘটনায় সেই রসায়ন আরো ধন্বন্তরি হলো। ইতিমধ্যে মোদী জনগণকে রায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে জাতির ত্রাতার ভূমিকায় নেমেছেন। এই ঘটনায় সর্বভারতীয় নেতা হিসেবে তাঁর অভিযাত্রার সূচনাও দেখা গেল।

হামলার হোতারা ভারতীয় মুসলিম হতে পারবে না কেন? ভারতীয় মুসলিমদের দরিদ্র অংশের ওপর চলা পরিকল্পিত নির্যাতন ও সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড ক্রোধ রয়েছে অধিকাংশ মুসলমানের। ২০০২ সালের গুজরাত গণহত্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় প্রশাসনের জড়িত থাকার বিষয়টিও তারা ভুলে যায়নি।
অন্যদিকে কাশ্মীরে ভারতের দখলদারি উপস্থিতি, গণগ্রেফতার, নির্যাতন, হত্যা ও ধর্ষণ। বিভিন্ন রাজ্যে বিনা বিচারে মুসলিম তরুণদের এনকাউন্টারের নামে হত্যা-নির্যাতন-বন্দি রাখা। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার বিনা অপরাধে নির্যাতনে পঙ্গু হয়ে যাওয়া কয়েকজন মুসলমান তরুণকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছে মানবাধিকারকর্মীদের চাপে। যেমন টাডা আইনে আটক ৫ হাজার জনের মধ্যে দোষী করা গেছে মাত্র ১০০ জনকে অর্থাত .২ শতাংশকে। একে কি বলা যাবে আইন না রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস? ভারতে যে নাতসি জার্মানীর ইহুদি নিধনের মতো মুসলিম দলন-পীড়নের কর্মসূচি ষোল আনা পাকা তা প্রমাণে এরকম ভুরিভুরি পরিসংখ্যান হাজির করা যায়, হাজির করা যায় বিজেপি-কংগ্রেস মায় সরকারের বিভিন্ন দলিলপত্র। (এখানে জায়গার অভাবে কিছু নমুনাই কেবল দেওয়া গেল। প্রয়োজনে আরো দেয়া যাবে।)

সুতরাং আমার বলবার কথা এটাই: যে দেশে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো করেই জঙ্গিবাদকে লালন-পালন করা হয় এবং যেদেশে একটি জঙ্গিবাদী দল সরকার গঠন করতে পর্যন্ত পারে এবং সেই দলের প্রধান নিজেই যখন সন্ত্রাস ও গণহত্যায় মদদ এবং বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার দায়ে অভিযুক্ত, যেদেশের মিডিয়া কেবল এমবেডেডই নয়, ঐ দমন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সত্যকে লোপাট করে, সেই দেশ তা মার্কিন, ভারত, ইসরায়েল, ইরান, পাকিস্তান বা বাংলাদেশ যাই-ই হোক, তাদের সরকারি ভাষ্যকে বিনা প্রশ্নে বিশ্বাস করার মতো অন্ধভক্তি আর কী হতে পারে?

পুনশ্চ: যারা উপমহাদেশে বাস করছেন, তারা বুঝছেন পরিস্থিতি কত দ্রুত চরমে চলে যাচ্ছে এখানে। বাংলাদেশে জাতিসংঘের ব্লু হেলমেটের আগমণ পথ প্রশস্ত হচ্ছে, পাকিস্তান এক লেজুড় ও ভঙ্গুর রাষ্ট হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বিচলিত ভারত বৈশ্বিক ফ্যাসিবাদী উত্থানে সামিল হচ্ছে উপমহাদেশে হিন্দু ফ্যাসিবাদ কায়েম করবার পথে। এর জন্য যে মতাদর্শিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সামর্থ্য লাগে সেটা এশিয়ায় ভারত ও চীনেরই আছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক ইসলাম প্রতিরোধের আবরণে জাগ্রত হচ্ছে। একদিকে আধুনিক ফ্যাসিবাদ অন্যদিকে ধর্মীয় প্রতিক্রিয়াশীলতার উত্থানের মাছে জনগণের ভূত-ভবিষ্যত বলি হচ্ছে। এরকম সময়ে ম্যাট্রিক্সের ঐ মনোজগত থেকে বেরিয়ে সাম্রাজ্যিক ভাইরাস মুক্ত মস্তিষ্কে দুনিয়াও দিকে তাকানো দরকার। বিবিধ শত্রুর বিবিধ চেহারার মধ্যে মিল-অমিল খুঁজে কর্তব্য নির্ধারণ দরকার। মুম্বাইয়ের ঘটনা ভারত তথা উপমহাদেশের জনগণের জন্য যে হুমকি বয়ে আনছে, তার সার্বিক বিশ্লেষণ ছাড়া আজকে পথ খুঁজে পাওয়া কঠিন।

লেখাটা তড়িঘড়ি দাঁড় করানো, ফলে কিচু ত্রুটি রয়ে গেল। এ নিয়ে বির্তর্কটা পাবেন এখানেএখানে রবি, ২০০৮-১১-৩০ ০০:১০)

দ্রষ্টব্য:
কে এর পেছনে? Click This Link

সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৮
৩৫টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×