somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রান্নাঘর ২: মাছ রান্না-১

০২ রা জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। ইলিশ চাই সবার আগে

সরিষা ইলিশ
উপকরণ: ইলিশ মাছ (বড়) ৮ টুকরা, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, পোস্তদানা বাটা ২ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি দেড় কাপ, কাঁচা মরিচ ৮-১০টি, শুকনা মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ পরিমাণমতো, সরিষার তেল পৌনে ১ কাপ, টকদই ৩ টেবিল চামচ, পানি দেড় কাপ।
প্রণালি: তেল গরম করে পেঁয়াজ নরম করে ভেজে সমস্ত বাটা মসলা ও গুঁড়া মসলা কষিয়ে লবণ, দই, পানি দিতে হবে। ফুটে উঠলে মাছ দিতে হবে। তেলের ওপর এলে কাঁচা মরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে নামাতে হবে।

ইলিশ ভাজা
উপকরণ: ইলিশ মাছ (পরিষ্কার করে পেটি ও গাদাসহ কেটে ধুয়ে পানি ঝরানো) ৮ টুকরা, রসুন বাটা আধা চা চামচ, ধনে গুঁড়া ১ চা চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, সিরকা ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ময়দা আধা কাপ।
প্রণালি: ময়দা বাদে মাছ সব উপকরণ দিয়ে মাখিয়ে ৫-৬ ঘণ্টা রেফ্রিজারেটরে রাখতে হবে। ১ টুকরা করে মাছ ময়দায় গড়িয়ে অল্প তেলে ভাজতে হবে।

ভাপে ইলিশ
উপকরণ: ইলিশ মাছের পেটি গাদা একসঙ্গে রাখা বড় করে টুকরা ৮ পিস, টকদই সিকি কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, সরিষা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সিকি চা চামচ, পোস্তদানা ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: কাঁচা মরিচ, পোস্তদানা, সরিষা একসঙ্গে মিহি করে বেটে টকদই ফেটিয়ে নিতে হবে। মাছের গায়ে হলুদ, গুঁড়া মরিচ, লবণ, চিনি, তেল, পেঁয়াজ দিয়ে মাখিয়ে ২০-২৫ মিনিট রাখতে হবে। এবার মাছের মিশ্রণের সঙ্গে দইয়ের মিশ্রণ মিলিয়ে সামান্য পানি দিতে হবে। প্রেসারকুকারে সামান্য পানি দিয়ে মাছের পাত্র বসিয়ে মুখ বন্ধ করে ৫-৬ মিনিট চুলায় রেখে নামাতে হবে।

ইলিশ পাতুড়ি
উপকরণ: ইলিশ মাছ বড় করে কাটা ৬ টুকরা, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচ ৮টি, সরিষার তেল ৪ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া সিকি চা চামচ, লাউপাতা ৮-১০টি।
প্রণালি: লাউপাতা গরম পানিতে এক মিনিট ভাপ দিয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। মাছ ধুয়ে পানি ঝরিয়ে লবণ, হলুদ মাখিয়ে রাখতে হবে। তেল গরম করে পেঁয়াজ-মরিচ গরম করে ভেজে নিতে হবে। ভাজা পেঁয়াজ-মরিচ ভালো করে চটকিয়ে লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মাখিয়ে মাছের গায়ে ভালো করে লাগাতে হবে। মসলা মাখানো মাছ লাউপাতায় ভালোভাবে মুড়িয়ে একটি সসপ্যানে সুন্দর করে সাজিয়ে ঢেকে গরম পানির ভাপে এক ঘণ্টা রাখতে হবে। প্রেসারকুকারেও করা যায়।


২। ইলিশই, তবে একটু আলাদা

বেকড হিলসা
উপকরণ: বড় ইলিশ মাছ ১টি, ভিনেগার ১ টেবিল চামচ, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, ওয়েস্টার সস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস ৫ টেবিল চামচ, শুকনা মরিচ টেলে গুঁড়ো করে ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়ো আধা চা চামচ, লবণ সামান্য, তেল ৪ টেবিল চামচ। মাখন ২ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, ব্রেড ক্র্যাম্ব ১ কাপ।
প্রণালি: মাছের আঁশ ছাড়িয়ে মাথা কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে দুই পিঠের মাছ মাঝের কাঁটা থেকে ছুরি দিয়ে আস্ত ছাড়িয়ে নিতে হবে।
ভিনেগার, ফিশ সস, ওয়েস্টার সস, ২ টেবিল চামচ টমেটো সস, ২ টেবিল চামচ তেল, মরিচগুঁড়ো এক সঙ্গে মিশিয়ে মাছের গায়ে মাখিয়ে দুই ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
মাছ অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে ১৮০০ সে. তাপে ২৫-৩০ মিনিট বেক করে ওভেন থেকে বের করে স্মোকড হিলসার মতো কাঁটা বেছে নিতে হবে।
এবার মাছের গায়ে বাকি টমেটো সস, লবণ, গোলমরিচের গুঁড়ো লাগিয়ে আধাঘণ্টা ফ্রিজে রাখতে হবে।
ডিম ফেটিয়ে মাছ ডিমে ডুবিয়ে টোস্টার গুঁড়োয় গড়িয়ে ওভেন প্রুফ ডিশে রেখে ২ টেবিল চামচ তেলের সঙ্গে মাখন গরম করে মাছে ওপর ঢেলে দিয়ে প্রি হিটেড ওভেনে ১৮০০ সে. তাপে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বেক করতে হবে।


ইলিশ কাবাব
উপকরণ: ইলিশ মাছ আকারের সাইজের ২টি, আলু, মাঝারি আকারের ২টি, টোস্টের গুঁড়ো ১ কাপ, পেঁয়াজ, বেরেস্তা আধাকাপ, টমেটো সস এক কাপ, পনির গুঁড়ো আধা কাপ, লেমন রাইন্ড ১ চা চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, সিরকা ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ বাটা ১ চা চামচ, সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, সয়াবিন তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণ মতো, মাখন ৪ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ইলিশ মাছের আঁশ ছাড়িয়ে পেটের ও মাথার ময়লা পরিষ্কার করে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
মাথার সঙ্গে মাছের কাঁটা রেখে ছুরি দিয়ে দুই পিঠের মাছ সাবধানে তুলে নিতে হবে, যেন মাছের কাঁটা না কাটে।
কাঁটাসহ মাছের মাথা বড় হাঁড়িতে নিয়ে লবণ, সিরকা ও অল্প পানি দিয়ে সেদ্ধ করে পানি শুকিয়ে গেলে নামাতে হবে।
অল্প পানি, লেবুর রস ও লবণ দিয়ে মাছ সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে ২ টেবিল চামচ মাখন দিয়ে ভাজতে হবে।
আলু সেদ্ধ করে চটকিয়ে ২ টেবিল চামচ মাখন দিয়ে ভাজতে হবে।
২ টেবিল চামচ তেল গরম করে টোস্টের গুঁড়ো অল্প ভেজে নিতে হবে। ২ টেবিল চামচ বেরেস্তা গুঁড়ো করে টোস্টের গুঁড়োর সঙ্গে মেলাতে হবে।
এবার মাছের কিমা, সেদ্ধ আলু, বাকি বেরেস্তা, কাঁচামরিচ বাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, পেঁয়াজ, বেরেস্তা, লেমন রাইন্ড, ১ টেবিল চামচ টমেটো সস, পনির গুঁড়ো, লবণ এবং ৩ টেবিল চামচ টোস্টের গুঁড়ো এক সঙ্গে মাখাতে হবে।
বেকিং ট্রেতে ফয়েল সিট বিছিয়ে কাঁটাসহ মাছের মাথা ফয়েল সিটের ওপর রাখতে হবে। পরে মাছের মিশ্রণ কাঁটার ওপর ইলিশ মাছের আকারে চেপে চেপে বসিয়ে টোস্টের গুঁড়ো ছিটিয়ে দিতে হবে। সাবধানে উল্টিয়ে মাছের পিঠে ও মাছের মিশ্রণে চেপে চেপে বসাতে হবে। মাছের গায়ে টমেটো সস লাগিয়ে টোস্টের গুঁড়ো দিয়ে সমান করে চেপে দিন। এরপর চামচ দিয়ে মাছের ওপর আঁশের মতো দাগ কেটে প্রিহিটেড ওভেনে ১৮০০ সে. তাপে ২৫-৩০ মিনিট বেক করতে হবে।
ইলিশ রোস্ট, পোলাও, ভুনা খিচুড়ি, পরোটা অথবা সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।


ইলিশ মাছের মালাইকারি
উপকরণ: বড় ইলিশ মাছের পেটি সাদাসহ ৮ টুকরা। পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা চামচ, পোস্ত বাটা ১ টেবিল চামচ। জিরা বাটা আধা চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ। শুকনা মরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, কাঁচামরিচ ৫-৬টি, লবণ পরিমাণমতো। তেঁতুলের মাড় ১ টেবিল চামচ, তেল ১ কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, মশলার গুঁড়া আধা চা চামচ, চিনি স্বাদমতো।
প্রণালি: কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা করে অর্ধেক বেরেস্তা উঠিয়ে রাখতে হবে। এবার কড়াইয়ে বেরেস্তার ভেতর এক কাপ করে সব বাটা ও গুঁড়ো মসলা কষিয়ে লবণ ও নারকেলের দুধ দিতে হবে।
ফুটে উঠলে মাছ দিতে হবে, ঝোল কমে এলে নারকেলের মিষ্টি বুঝে চিনি দিতে হবে। বেরেস্তা হাতে ভেঙে গুঁড়ো করে দিতে হবে।
তেঁতুলের মাড়, গরম মসলার গুঁড়ো, কাঁচামরিচ দিয়ে কিছুক্ষণ চুলায় রেখে নামাতে হবে।


স্মোকড হিলসা
উপকরণ: বড় ইলিশ মাছ একটি, ভিনেগার ১ টেবিল চামচ, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস আধাকাপ, লবণ সামান্য, সাদা গোলমরিচ গুঁড়ো ১ চা চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ১. মাছের আঁশ ছাড়িয়ে মাথা কেটে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে দুই পিঠের মাছের মাঝের কাঁটা থেকে ছুরি দিয়ে আস্ত ছাড়িয়ে নিতে হবে।
২. লবণ, ভিনেগার, ফিশ সস ৩ টেবিল চামচ, টমেটো সস, তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাছের গায়ে মাখিয়ে এক ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।
৩. মাছ অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে ১৮০০ সে. তাপে ২৫-৩০ মিনিট বেক করতে হবে।
৪. ওভেন থেকে মাছ বের করে চপিং বোর্ড বা রুটি বেলার পিঁড়ির ওপর মাছের চামড়ার দিক নিচে রেখে ছুরি দিয়ে মাছের গায়ে তিন-চারটি লম্বা দাগ ও তিন-চারটি তেরছা দাগ কেটে টেনে কাটা বের করতে হবে।
৫. এবার বাকি টমেটো সস, গোলমরিচ গুঁড়ো মাছের গায়ে লাগিয়ে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে মুড়িয়ে কয়লার আগুনে ২০-২৫ মিনিট রেখে রোস্ট পটেটো বা সেদ্ধ সবজি এবং ওয়াইসস দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।


৩। বর্ষায় সেরা ইলিশ
সারা বছর পাওয়া গেলেও ইলিশ খাবার সেরা সময় বৃষ্টি-বাদলার মৌসুম। খিচুড়ি বা সাদা ভাত যা-ই হোক, ইলিশের স্বাদ নিতে দেখতে পারেন ।

স্মোকড হিলশা
উপকরণ: মাঝারি ইলিশ মাছ ১টি, সরিষা বাটা ২ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ৮-১০টি, পেঁয়াজ মোটা কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, সরিষার তেল আধা কাপ।
প্রণালী: মাছ আস্ত রেখে আঁশ ও ভেতরের ময়লা পরিষ্কার করে নিতে হবে। ওপরের সব উপকরণ দিয়ে মাছ মাখিয়ে বড় হাঁড়িতে ২ লিটার পানি দিয়ে চুলায় দিতে হব। হাঁড়ির মুখের ঢাকনা মাখানো ময়দা দিয়ে এঁটে দিতে হবে। চুলায় মৃদু আঁচে ৬ ঘণ্টা রাখতে হবে, ঝোল থাকলে ঢাকনা খুলে ঝোল শুকিয়ে নিতে হবে।
উপকরণ : টোস্টের গুঁড়া আধা কাপ, তেল ১ টেবিল চামচ, টমেটো সস সিকি কাপ, পনির গুঁড়া সিকি কাপ।
প্রণালী: টোস্টের গুঁড়া গরম তেলে অল্প ভেজে নিতে হবে। হাঁড়ি থেকে মাছ বেকিং ডিশে রেখে মাছের ওপর টমেটো সস, টোস্টের গুঁড়া ও পনির গুঁড়া দিয়ে চামচ দিয়ে মাছের গায়ে আঁশের মতো দাগ কেটে নিতে হবে। বেকিং ডিশের এক পাশে ছোট স্টিলের বাটিতে ৫-৬টি জ্বলন্ত কয়লা দিয়ে কয়লার ওপর ১ টেবিল চামচ সরিষার তেল দিয়ে বেকিং ডিশ ওভেনে দিতে হবে। ওভেনের ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট বেক করতে হবে। স্মোক হিলশা সেদ্ধ সবজি দিয়ে পোলাও, ফ্রাইড রাইস, ভুনাখিচুড়ি অথবা গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করা যায়।


পোস্ত ইলিশের ডিমের ঝুরা
উপকরণ: ইলিশ মাছের ডিম ২টি, পোস্ত বাটা ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা চামচ বা পরিমাণমতো, লবণ পরিমাণমতো, টমেটো সস ২ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচের ফালি ৪ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, তেল আধা কাপ।
প্রণালী: ডিমে লবণ, অল্প হলুদ ও অল্প পানি দিয়ে সেদ্ধ করে ভেঙে ঝুরা করে নিতে হবে। তেল গরম করে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ বাদামি রং করে ভেজে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা কষিয়ে ডিম দিয়ে ভুনতে হবে। লবণ ও টমেটো সস দিয়ে কিছুক্ষণ ভুনে লেবুর রস দিয়ে নামাতে হবে।


আনারস ইলিশ
উপকরণ: ইলিশ মাছ ১টি, আনারস ১টি, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা চামচ, মরিচ বাটা ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ, সয়াবিন তেল আধা কাপ, নারকেলের দুধ ২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি।
প্রণালী: মাছ বড় টুকরা করে কেটে হলুদ মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখতে হবে। আনারস সবজি কুরানি দিয়ে অথবা কাঁটা চামচ দিয়ে কুরিয়ে নিতে হবে। গরম তেলে পেঁয়াজ কুচি ভাজতে হবে। পেঁয়াজ নরম হয়ে এলে বাটা মসলা কষিয়ে মাছ দিয়ে ৫-৬ মিনিট ভুনতে হবে। এবার মাছ তুলে রেখে আনারস দিয়ে ভুনতে হবে। পরিমাণ মতো লবণ ও আধা কাপ পানি দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে নারকেলের দুধ দিতে হবে। ফুটে উঠলে মাছ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে চুলার জ্বাল কমিয়ে দিতে হবে। তেলের ওপর এলে নামাতে হবে।


ভাপা ইলিশ
উপকরণ: ইলিশ মাছের পেটি ও গাদা একসঙ্গে রাখা বড় করে টুকরা ৮টি, টক দই সিকি কাপ, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৫-৬টি, সরিষা ১ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, শুকনো মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, সরিষার তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, চিনি সিকি চা চামচ, পোস্তদানা ১ টেবিল চামচ।
প্রণালী: কাঁচা মরিচ, পোস্তদানা, সরিষা একসঙ্গে মিহি করে বেটে টক দই ফুটিয়ে নিতে হবে। মাছের গায়ে হলুদ, গুঁড়া মরিচ, লবণ, চিনি, তেল, পেঁয়াজ দিয়ে মাখিয়ে ২০-২৫ মিনিট রাখতে হবে। এবার মাছের মিশ্রণের সঙ্গে দইয়ের মিশ্রণ মিলিয়ে সামান্য পানি দিতে হবে। প্রেসার কুকারে সামান্য পানি দিয়ে মাছের পাত্রে বসিয়ে মুখ বন্ধ করে ৫-৬ মিনিট চুলায় রেখে নামাতে হবে।



৪। মাছের কাবাব

ভেটকি মাছের শিককাবাব
উপকরণ: কিউব করে কাটা ভেটকি মাছ ২ কাপ। কাঁচা মরিচ, আদা, ধনেপাতা, পেঁয়াজ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ করে। জিরা, গোলমরিচ, ধনেগুঁড়া ও টমেটো সস ১ চা-চামচ করে। তেল আধাকাপ। শিক ৬টি। টক দই ১ টেবিল চামচ। লবণ ও চিনি স্বাদমতো।
কিউব করে কাটা ক্যাপসিকাম, গাজর, টমেটো ও ছোট পেঁয়াজ (আস্ত) প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: তেল ছাড়া বাকি সব মসলা দিয়ে মাছ ২ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এবার শিকে পরপর মাছ, ক্যাপসিকাম, গাজর, টমেটো ও পেঁয়াজ গেঁথে সাজাতে হবে। এখন চুলায় গ্রিলে কাবাবগুলো বসাতে হবে। এবার হালকা আঁচে অল্প অল্প তেল দিয়ে উল্টে উল্টে রান্না করতে হবে। ১০-১৫ মিনিট পর একটু পোড়া পোড়া হলে নামিয়ে যেকোনো সালাদের সঙ্গে পরিবেশন করতে হবে।

ইলিশ মাছের আস্ত কাবাব
উপকরণ: ইলিশ মাছ ১টি। রসুন ২ কোয়া, পেঁয়াজ ২টি। পুদিনা ও ধনেপাতা অল্প, ২টি কাঁচা মরিচ একসঙ্গে বেটে নিতে হবে। লবণ স্বাদমতো, তেল আধাকাপ। আধা ভাঙা বেরেস্তাগুঁড়া ১ কাপ। ধনে, জিরা ও মরিচগুঁড়া আধা চা-চামচ করে। ঘি ১ টেবিল চামচ। সেদ্ধ আলু ২টি (ছোট)। টোস্ট-বিস্কুটের গুঁড়া ৩ টেবিল চামচ। পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ। টমেটো সস ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: একটু বড় করে মাছের মাথা ও লেজ কেটে হালকা আঁঁচে ভাজতে হবে। যেন মাছের আসল সাদা রং টিকে থাকে। এবার মাঝের মাছ লবণ ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে কাঁটা বেছে নিতে হবে। এবার তেল গরম করে মাছের সঙ্গে সবকিছু দিয়ে রান্না করতে হবে। ভাজা হয়ে মাছের তেল ছেড়ে এলে ওপরে ঘি ও ধনেপাতা দিয়ে নামাতে হবে। এখন একটা ট্রেতে মাছের মাথা ও লেজ বসিয়ে রান্না করা মাছ দিয়ে পুরো শরীর বানাতে হবে। এবার একটা চায়ের চামচ চেপে চেপে মাছের শরীরে আঁশ বানিয়ে পরিবেশন করতে হবে আস্ত ইলিশ কাবাব।


চিতল মাছের কোপ্তা কারি
উপকরণ: মাঝারি আকারের চিতল মাছ ১টি। পেঁয়াজ, আদা, ধনেবাটা ১ চা-চামচ করে। কাজুবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ। ঘি ২ চা-চামচ। কেওড়া জল ১ চা-চামচ। দুধ ২ কাপ। মিষ্টি ও টক দই মিলে ১ টেবিল চামচ। টমেটো সস ১ টেবিল চামচ। চিনি, লবণ ও কিশমিশ প্রয়োজনমতো। এলাচ, দারচিনি সামান্য।
কোপ্তার জন্য: মাছের কাঁটা বেছে তাতে স্বাদমতো লবণ, জিরা ও গোলমরিচের গুঁড়া দিন। ১ টেবিল চামচ বেসন, কাঁচা মরিচ ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে মেখে কোপ্তার আকারে গোল করে ভাজতে হবে।
প্রণালি: ঘি গরম করে সব মসলা অল্প অল্প দুধ দিয়ে কষাতে হবে। কষানো হলে সবটুকু দুধ দিয়ে তিন-চার মিনিট রান্না হয়ে এলে ভাজা কোপ্তা দিয়ে ওপরে কেওড়া জল ও কিশমিশ দিয়ে হালকা আঁচে এক মিনিট রেখে ঘি ওপরে উঠে এলে নামাতে হবে।

তেলাপিয়ার ঝুরি কাবাব
উপকরণ: লবণ ও হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করা কাঁটাবাছা মাছ ২ কাপ। ডিমের কুসুম ২টি। টমেটো কুচি ১টি। টোস্ট-বিস্কুটের গুঁড়া আধাকাপ। ১টি কাঁচা মরিচ, অল্প জিরা ও ২টি পেঁয়াজ কুচি একটু তেলে ভেজে বেটে নিতে হবে। এলাচ, গোলমরিচের গুঁড়া, ধনেপাতা, লবণ ও চিনি স্বাদমতো। তেল ৩ টেবিল চামচ। পেঁয়াজ ভাজা আধাকাপ। কিশমিশ ও কাজুবাদাম সামান্য। ঘি ১ চা-চামচ। দুধ আধাকাপ।
প্রণালি: তেল গরম করে সব মসলা টমেটো সস ও একটু দুধ দিয়ে কষাতে হবে। এবার মাছ, ডিমের কুসুম দিয়ে রান্না করতে হবে। তেল ওপরে উঠে এলে ভাজা পেঁয়াজ, বিস্কুটের গুঁড়া, ধনেপাতা ও কিশমিশ দিয়ে আরও একটু হালকা আঁচে রাখতে হবে। এবার ওপরে ঘি ও বাদাম ছড়িয়ে নামাতে হবে তেলাপিয়া মাছের ঝুরি কাবাব।


৫। সামুদ্রিক মাছের চার পদ

সামুদ্রিক মাছের বৈচিত্র্য যেমন অনেক, এর স্বাদ আর পুষ্টিগুণও দারুণ।
রূপচাঁদা কাবাব
উপকরণ: রূপচাঁদা মাছ ৪০০ গ্রাম, লেবুর রস ১ টেবিল-চামচ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, ডিম ১টি, কাঁচামরিচ বাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, সয়াসস ১ টেবিল-চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো ও তেল প্রয়োজনমতো। সালাদ ইচ্ছামতো।
প্রণালি: মাছ পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে ছুরি দিয়ে একটু চিরে দিতে হবে। এবার লবণ ও লেবুর রস মাখিয়ে রাখতে হবে ৫ মিনিট। তারপর সব মসলা দিয়ে মাখিয়ে ৩০ মিনিট মাছ ফ্রিজে রাখতে হবে। এরপর কাঠ কয়লার আগুনে ৭-৮ মিনিট সোনালি রং করে ঝলসে নিতে হবে এপিঠ-ওপিঠ অথবা শিকে গেঁথে ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপে ওভেনে ১৫ মিনিট বেক করতে হবে। মাঝেমধ্যে মাছের ওপর তেল ব্রাশ করে দেওয়া যেতে পারে। শসা, টমেটো ও চাটনি দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করা যায় মাছের কাবাব।

ভেটকি শাসলিক
উপকরণ: ভেটকি মাছ ১ কাপ (কাঁটা ছাড়া চৌকো করে কাটা), টমেটো ২টি, পনির ১৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ ২টি (বড়), ক্যাপসিকাম ১টি, শসা ১টি, সরিষা ও কাঁচামরিচ বাটা ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ বাটা ১ চা-চামচ, উস্টার সস ১ টেবিল-চামচ, লবণ স্বাদমতো। মাখন বা তেল প্রয়োজনমতো। বাঁশের কাঠি ৫-৬টি।
প্রণালি: মাছের সঙ্গে লবণ, সব মসলা ও তেল মিশিয়ে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর বাঁশের কাঠিতে একটির পর একটি গেঁথে তাওয়ায় তেল দিয়ে শাসলিকগুলো ভাজতে হবে। কিছুক্ষণ পরপর উল্টে দিতে হবে। সেদ্ধ হলে গরম গরম পরিবেশন করা যায় মাছের শাসলিক।

লইট্টা কেক
উপকরণ: লইট্টা মাছ ৩০০ গ্রাম, আদা ও রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচামরিচ বাটা ১ চা-চামচ, গরম মসলা গুঁড়া আধা চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া সিকি চা-চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ৩ টেবিল-চামচ, বেকিং পাউডার আধা চা-চামচ, ডিমের কুসুম ২টি, ডিমের সাদা অংশ ২টি, পাউরুটির গুঁড়া ১ কাপ, লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: কাঁটা ছড়ানো লইট্টা মাছে ডিমের সাদা অংশ ও পাউরুটির গুঁড়া ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মেখে মোটা রুটির মতো বেলে ঝাঁজরিতে (ভাপে) সেদ্ধ করতে হবে ২০ মিনিট। তারপর একটু ঠান্ডা হলে ছুরি দিয়ে চারকোনা করে কেটে ডিমের সাদা অংশে ডুবিয়ে পাউরুটির গুঁড়া মাখিয়ে ডুবোতেলে সোনালি করে ভেজে সালাদ দিয়ে পরিবেশন করা যায় মাছের কেক।


কোরাল মেয়োনেজ
উপকরণ: কোরাল মাছ ৭-৮ টুকরো, মেয়োনেজ আধা কাপ, ময়দা ২ টেবিল-চামচ, মাখন আধা কাপ, দুধ আধা কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ঢ্যাঁড়স ৭-৮টি (আস্ত), টমেটো ১টি, কাঁচামরিচ ৪-৫টি (ফালি)। গোল গোল করে কাটা পেঁয়াজ ১টি (বড়), লবণ স্বাদমতো। লেবুপাতা ৪-৫টি।
প্রণালি: মাছে লবণ ও গোলমরিচ গুঁড়া মাখিয়ে মাখন দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। একটি বাটিতে মেয়োনেজ, ময়দা, গোলমরিচ গুঁড়া, ১ টেবিল-চামচ দুধ, ও মাখন দিয়ে একটি ঘন মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। তারপর একটি স্টিলের (ঢাকনাযুক্ত) বাটিতে ১ চা-চামচ মাখন মাখিয়ে এর মধ্যে ভাজা মাছগুলো ঘন মিশ্রণে মেখে বাটিতে সাজিয়ে দিতে হবে। ঢ্যাঁড়স, টমেটো, পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচ মিশ্রণে মেখে মাছের ওপর সাজিয়ে দিতে হবে। এবার ঢাকনা বন্ধ করে প্রেসার কুকারে ভাপে সেদ্ধ দিয়ে ৩টি হুইসেলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ঠান্ডা হলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।


৬। মাছের নানা রকম:

আস্ত রসুনে কই মাছের দোপেঁয়াজা [পাঁচজনের জন্য]
উপকরণ: কই মাছ ৫টি, আস্ত রসুনের কোয়া ২০-২২টি, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরা বাটা আধা চা-চামচ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল-চামচ, কাঁচামরিচ (ফালি) ৩-৪টি, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো, পানি অল্প।
প্রণালি: মাছ কেটে ধুয়ে তাতে লবণ, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া ও রসুন বাটা মেখে তেল দিয়ে লাল করে এপিঠ-ওপিঠ ভাজুন এবং তুলে রাখুন। কড়াইয়ে পরিমাণমতো তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ বাটা, মরিচ গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, জিরা বাটা, লবণ ও সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। কষানো হলে ১ কাপ পানি দিন। আস্ত রসুনগুলো দিন। পানি ফুটে উঠলে ভাজা কই মাছগুলো দিন। ঝোল ঘন হয়ে এলে ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ দিয়ে নামিয়ে নিন।

মাছের ডিমের পুঁই খিলি [আটজনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: মাছের ডিম (যেকোনো) ১ কাপ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, সরিষা বাটা আধা চা-চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, পুঁইপাতা ১০-১২টি, টুথপিক ১০-১২টি, ময়দা ১ কাপ ও তেল ভাজার জন্য।
প্রণালি: ডিম (মাছের) পরিষ্কার করে ধুয়ে তাতে হলুদ, মরিচ, সরিষা বাটা, লবণ ও লেবুর রস মাখিয়ে নিন। একেকটি পুঁইপাতা পানের খিলির মতো করে তাতে মাছের ডিম ভরে দিন এবং টুথপিক দিয়ে পাতার মুখ বন্ধ করে ময়দা, পানি ও লবণ দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে তাতে খিলিগুলো ডুবিয়ে ডুবো তেলে বাদামি করে ভেজে তুলুন। পরিবেশনের সময় টুথপিকগুলো খুলে চায়ের সঙ্গেও পরিবেশন করা যায়।


কলমি-চিংড়ি ভাজা [ছয়জনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: কচি কলমি শাক ৩ আঁটি, চিংড়ি মাছ ১০-১৫টি (মাঝারি), নারকেল বাটা ১ টেবিল-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল-চামচ, রসুন কুচি ২ কোয়া, কাঁচামরিচ ফালি ৩-৪টি, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: কলমি শাক ধুয়ে কুচি করে নিন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে চিংড়ি মাছ ভেজে তাতে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, নারকেল বাটা, হলুদ গুঁড়া, কাঁচামরিচ ও লবণ দিয়ে একটু কষিয়ে নিন। তারপর কলমি শাক দিয়ে ভাজুন। সব মসলা মিশে ভাজা ভাজা হলে নামিয়ে ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।


লাউ-টাকি-বড়ির ঝোল [ছয়জনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: লাউ ২ কাপ (ছোট ডুমো করে কাটা), ডালের বড়ি ৭-৮টি, টাকি মাছ ৪ টুকরা, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল-চামচ, রসুন কুচি ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ (ফালি) ৪-৫টি, তেজপাতা ২টি, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো ও পানি ১ কাপ।
প্রণালি: লাউ ধুয়ে কেটে নিন। বড়ি তেলে ভেজে তুলে রাখুন। টাকি মাছ হলুদ ও লবণ মাখিয়ে তেলে ভেজে কাঁটা বেছে রাখুন। এবার একটি হাঁড়িতে পরিমাণমতো তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, তেজপাতা, হলুদ গুঁড়া, টাকি মাছ, লবণ ও সামান্য পানি দিয়ে কষিয়ে নিন। কষানো হলে লাউ দিন। একটু কষিয়ে পানি দিয়ে ঢেকে দিন। লাউ সেদ্ধ হলে ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ দিন। লাউ মাখা মাখা হলে ভাজা বড়িগুলো দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুুন। লাউ ঠান্ডা হলে ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।

কাঁচকলা ও ইলিশ মাছের ভর্তা [ছয়জনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: কাঁচকলা ২টি (মাঝারি), ভাজা ইলিশ মাছ ২ টুকরা (কাঁটা ছাড়ানো), শুকনো মরিচ ভাজা ২টি, কাঁচামরিচ কুচি ২টি, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবিল-চামচ, সরিষার তেল ২ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: কাঁচকলা ডুবো পানিতে সেদ্ধ করুন। কলার খোসা ছাড়িয়ে চটকে রাখুন। এবার ইলিশ মাছ, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, লবণ ও তেল একসঙ্গে মাখুন। মাখা হলে কাঁচকলা দিয়ে ভালো করে মেখে গরম গরম পরিবেশন করুন।

শিং মাছে করলার চচ্চড়ি [ছয়জনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: মাঝারি আকারের করলা ২টি, আলু ১টি, শিং মাছ ৪-৫ টুকরা, পেঁয়াজ বাটা ১ টেবিল-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া সামান্য, ভাজা জিরার গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ ফালি ৩-৪টি, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো, পানি ১ কাপ।
প্রণালি: কড়াইয়ে তেল দিয়ে তাতে পেঁয়াজ বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, লবণ ও সামান্য পানি দিয়ে মসলা কষাতে হবে। মসলা কষানো হলে শিং মাছ দিন। একে একে করলা ও আলু দিন। কিছুক্ষণ কষানো হলে ১ কাপ পানি দিন। করলা ও আলু সেদ্ধ হয়ে মাখা মাখা হলে তাতে কাঁচামরিচ ও ভাজা জিরার গুঁড়া দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করুন করলার চচ্চড়ি।

ইলিশ মাছের মুড়িঘণ্ট [আটজনের জন্য পরিবেশন]
উপকরণ: ইলিশ মাছের মাথা ১টি, ভাজা মুগডাল ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, তেজপাতা ২টি, মরিচ গুঁড়া আধা চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা-চামচ, কাঁচামরিচ (ফালি) ৫-৬টি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ টেবিল-চামচ, ভাজা জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল প্রয়োজনমতো, ঘি ১ টেবিল-চামচ।
প্রণালি: মাছের মাথা কেটে টুকরো করে পরিষ্কার করে নিন। লবণ, হলুদ ও মরিচের গুঁড়া মেখে ভেজে রাখুন। সসপ্যানে তেল দিন, একে একে সব মসলা ও সামান্য পানি দিয়ে কষান। কষানো হলে মুগডাল দিন। একটু কষিয়ে পরিমাণমতো গরম পানি দিন এবং মাঝেমধ্যে নেড়ে দিন। ডাল সেদ্ধ ও ঘন হলে মাছের মাথা দিন। একটু নেড়ে ভাজা জিরার গুঁড়া ও পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে নামিয়ে নিন। পরিবেশনের সময় ঘি দিয়ে পরিবেশন করুন।

গ্রিল লেমন ফিশ
যা যা লাগবে: হোয়াইট স্যামন মাছ ২০০ গ্রামের এক টুকরো, হরেক পদের সবজি পরিমাণমতো, স্প্যাগেটি পরিমাণমতো, তেল পরিমাণমতো, মেরিনেট মাস্টার্ড সস এক টেবিল-চামচ, লেবুর রস এক টেবিল-চামচ, ক্রিম দুই চা-চামচ, বাটার অয়েল এক চা-চামচ এবং পরিমাণমতো দিতে হবে হোয়াইট পিপার, অলিভ অয়েল, চিনি, লবণ ইত্যাদি।
প্রস্তুত প্রণালি: প্রথমে সবজি ও স্প্যাগেটি আলাদা সেদ্ধ করে নিতে হবে। লবণ ও তেল দিয়ে স্প্যাগেটি ভেজে নিতে হবে। মেরিনেট করা মিশ্রণটি ভালো করে মিশিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর মাছের টুকরো থেকে কাঁটা বেছে নিতে হবে, যেন টুকরোটি ভেঙে না যায়। এবার মাছের টুকরোটি মেরিনেট দিয়ে মাখিয়ে গ্রিল করতে হবে। এরপর সস, সবজি ও স্প্যাগেটি দিয়ে সুন্দর করে পরিবেশন করতে হবে।



৭। মাছের ঝোল

মলা মাছের আম ঝোল
উপকরণ: মলা মাছ ৫০০ গ্রাম, সরিষার তেল আধা কাপ, কাঁচা আম একটি, বড় করে কাটা পেঁয়াজ দুই কাপ, রসুন কুচি এক চা-চামচ, হলুদ, মরিচ ও ধনে গুঁড়া আধা চা-চামচ করে, কুচি করা টমেটো একটি, লবণ, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা ও পানি স্বাদমতো, জিরা গুঁড়া এক চা-চামচ।
প্রণালি: তেল গরম করে রসুন ফোড়ন দিতে হবে। পেঁয়াজ দিয়ে নরম করে ভেজে গুঁড়া মসলা ও টমেটো একটু পানি দিয়ে কষাতে হবে। মাছ ও লবণ দিয়ে পাঁচ মিনিট রান্না করে পরিমাণমতো ঝোল দিতে হবে। ঝোল মাখা মাখা হলে আম ও কাঁচামরিচ ফালি করে ছড়িয়ে দিয়ে আরও দুই মিনিট দমে রেখে ওপরে ধনেপাতা ও জিরা গুঁড়া দিয়ে নামাতে হবে।


কই-কমলার ঝোল
উপকরণ: কই মাছ ছয়টি, অর্ধেক কমলার রস, পেঁয়াজবাটা দুই টেবিল-চামচ, রসুন ও আদাবাটা আধা চা-চামচ, হলুদ, ধনে, মরিচ ও জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ করে, টমেটো পিউরি দুই টেবিল-চামচ, তেজপাতা দুটি, গরম মসলার গুঁড়া এক টেবিল-চামচ, কাঁচামরিচ কুচি, লবণ ও পানি পরিমাণমতো, তেল তিন টেবিল-চামচ।
প্রণালি: হলুদ ও লবণ দিয়ে মাছ ভেজে রাখতে হবে। এবার ওই তেলেই তেজপাতা ফোড়ন দিয়ে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা অল্প পানি ও কমলার রস দিয়ে কষাতে হবে। লবণ, টমেটো ও মাছ দিয়ে আরও একটু কষাতে হবে। এবার পরিমাণমতো পানি দিয়ে পাঁচ-ছয় মিনিট রান্না করতে হবে। এবার ওপরে কাঁচামরিচ, কমলার রস দিয়ে দুই মিনিট রেখে জিরা ও গরম মসলার গুঁড়া ছড়িয়ে নামাতে হবে কই-কমলার ঝোল।


বোয়াল মাছের দই কস্তুরি
উপকরণ: বোয়াল মাছ ছয় টুকরা, টক দই দুই টেবিল-চামচ, ধনে, হলুদ, মরিচ ও চিনি আধা চা-চামচ করে, রসুন ও আদাবাটা আধা চা-চামচ করে, পেঁয়াজ কুচি এক কাপ, রসুন কুচি সামান্য, তেল আধা কাপ, কুচি করা টমেটো একটি, জিরা গুঁড়া এক চা-চামচ, লবণ, চিনি, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা পরিমাণমতো।
প্রণালি: লবণ ও হলুদ দিয়ে মাছ হালকা ভাজতে হবে। টক দইয়ের সঙ্গে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা ভালোভাবে ফেটতে হবে। এবার তেল গরম করে রসুন ও পেঁয়াজ ভেজে মাখানো মসলা একটু পানি দিয়ে কষাতে হবে। টমেটো, লবণ ও চিনি দিয়ে মাছ দিতে হবে। দুই মিনিট পর পরিমাণমতো পানি দিয়ে পাঁচ-ছয় মিনিট রান্না করতে হবে। এবার ওপরে কাঁচামরিচ দিয়ে হালকা আঁচে দুই মিনিট রেখে ধনেপাতা দিয়ে নামাতে হবে।

রুই-টমেটোর পাতলা ঝোল
উপকরণ: রুই মাছ ছয় টুকরা, টমেটো তিনটি, পেঁয়াজবাটা তিন টেবিল-চামচ, রসুন, আদা আধা চা-চামচ করে, ধনে, হলুদ, মরিচ ও জিরা গুঁড়া আধা চা-চামচ করে, এক চিমটি কালোজিরা, কাঁচামরিচ ও ধনেপাতা একসঙ্গে বাটা এক চা-চামচ, তেল আধা কাপ, রসুন কুচি আধা চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি তিন টেবিল-চামচ।
প্রণালি: লবণ দিয়ে মাছ হালকা ভেজে নিতে হবে। এবার কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে রসুন ও পেঁয়াজ নরম করে ভেজে সব বাটা ও গুঁড়া মসলা একটু পানি দিয়ে কষাতে হবে। মসলার গন্ধ বের হলে মাছ দিয়ে আরও একটু কষাতে হবে। এবার টমেটো ফালি করে পরিমাণমতো ঝোল দিয়ে পাঁচ-ছয় মিনিট রান্না করতে হবে। উপরে জিরা গুঁড়া ছড়িয়ে নামাতে হবে।

মাছের কোপ্তা (খালিছা)
উপকরণ: কাঁটাছাড়া ছোট রুই মাছ ১ কেজি (ফলি বা কার্পজাতীয় মাছ দিয়েও করা যায়)।
আধা চা-চামচ শুকনা মরিচের গুঁড়া, ১ চা-চামচ হলুদের গুঁড়া, ধনে গুঁড়া ১ চা-চামচ, জিরাবাটা, আদাবাটা ও রসুনবাটা ১ টেবিল-চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ৪টি, পেঁয়াজ ১ টেবিল-চামচ, ছোট এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ গুঁড়া ১ টেবিল-চামচ, লবণ অল্প, পেঁয়াজ বেরেস্তা ১ কাপ, ময়দা ২ টেবিল-চামচ, তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: আস্ত মাছ শিলপাটায় বেটে ভেতরের অংশ বের করতে হবে। ওপরের চামড়া আলাদা করে, কাঁটা ছাড়িয়ে নিন। এবার কাঁটাছাড়া মাছের সঙ্গে সব মসলা মেখে ময়ান করুন। এবার মাছের চামড়ায় মাখানো মাছ রেখে হাত দিয়ে মাছের আকৃতি তৈরি করুন। এবার তেল দিয়ে ভালোভাবে ভেজে নিন।

সূত্র: প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১২ বিকাল ৫:২৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×