somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মায়ের মত আপন কেহ নাই

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত সপ্তাহে আমার একটা বন্ধু মা হয়েছে। ওকে আমি সেই ছোটবেলা থেকে চিনি। কিন্তু কোন দিন ওকে এত আনন্দিত হতে দেখেনি। ও আমাকে বলে যে, দোস্ত আমার মেয়ের গায়ের গন্ধ আমি যদি গায়ে মাখতে পারতাম! মা যখন তার নিজের অংশকে কোলে নেয় তখন তার যে অসাধারণ অনুভূতি হয় তা আর একবার আমি বুঝতে পারলাম আমার বন্ধুটাকে দেখে।

আমি আমার মায়ের প্রথম সন্তান। আমার জন্মের সময় ডাক্তার বলেছিলেন, যে কোন একজনকে বাঁচানো যাবে। টানা ২৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আম্মু আমাকে জন্ম দিয়েছিল। আমার জন্মের পরও তাকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল আরও ১৬ দিন। এই পরিমানে রক্ত দেয়া লাগছিল যে বাইরে থেকে রক্ত কিনতে হয়েছিল। এই সব কথাই আমার বাবার মুখে শোনা। আম্মু আমাকে শুধু এতটুকু বলে যে, সব কষ্ট মুছে গেল যখন তোমাকে কোলে নিলাম।

একটু যখন বড় হলাম তখন বুঝলাম আমার মায়ের পৃথিবীটা আসলে আমার চারপাশে ঘুরছে। আমার খাওয়া, আমার স্কুল, আমার টিচার, আমার পড়া শুধু আমি আর আমি। সারাক্ষন আম্মু আমার সাথে, ঘুম ভাঙ্গা থেকে ঘুমানো পর্যন্ত। কখনো আদর, কখনো শাসন, কখনো বা অভিমান।

আমি যখন কলেজে পড়ি তখন আমার পক্স হল। সেই কয়েকটা দিন সারাক্ষণ আম্মু আমার পাশে বসে থাকল আর আল্লাহ্‌র কাছে মিনতি করতে লাগল, হে আল্লাহ্‌ তুমি এই কষ্ট থেকে আমার মেয়েকে মুক্তি দাও, ওর পরিবর্তে তুমি আমাকে এই কষ্ট দাও। আমি চেতনা অচেতনার মাঝে আমার মায়ের ব্যথায় কাতর মুখটা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছিলাম।

জার্মানিতে যাওয়ার দিন নিজেকে খুব অসহায় লাগছিল। ভেতরটা ভীষণ শূন্য লাগছিল। ফ্লাইটে বসে বার বার চোখ মুছছিলাম। খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছিল কিন্তু কাঁদতে পারছিলাম না। সেবারই প্রথম মা দিবসে মায়ের জন্য গিফট কিনেছিলাম। পরে শুনলাম যতদিন আমি কাছে ছিলাম না আমার মা নাকি বার বার ঐ গিফটের প্যাকেট খুলে খুলে দেখত আর বলত এইখানে আমার মেয়ের ছোঁয়া আছে। কত ভালবাসা!

গত বছর মা দিবসে আম্মুর জন্য একটা ঘড়ি পেইন্ট করেছিলাম। আমার মা আজো প্রতিদিন সেই ঘড়িতে সময় দেখে। আজো সকালবেলা ডিম খেতে না চাইলে বকা দেয় সেই ছোটবেলার মত। আজো আমি একটু হাঁচি দিলে তার চিন্তার শেষ থাকে না। আজো যদি কখনো খেতে ইচ্ছে না করে তাহলে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। আজো রাতেরবেলা ঘুম থেকে উঠে এসে আমার গায়ে চাদর তুলে দেয়। ঘড়ি তার নির্দিষ্ট নিয়মে চলছে, সময় বয়ে যাচ্ছে কিন্তু আজো আমার মায়ের কাছে আমি সেই ছোট্ট আমিই আছি। মাগো তোমায় অনেক ভালবাসি............

"মায়ের মত আপন কেহ নাই রে মায়ের মত আপন কেহ নাই
মা জননী নাইরে যাহার ত্রিভুবনে তাহার কেহই নাইরে"
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×