somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম বিষয়ক প্রতিপাদ্য - ৪

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রেম বিষয়ক প্রতিপাদ্য -৩

নিউমার্কেট থেকে কেনা শক্ত মলাটের বইটা খাকী মোড়ক থেকে বেড় করে বারকয়েক নেড়েচেড়ে দেখল রফিক। অনেকগুলো টাকা বেড়িয়ে গেল এই প্রেসের গন্ধলাগা কাগজস্তুপের পেছনে। সেব্যপারে বিন্দুমাত্র মাথা না ঘামিয়ে নতুন বইএর স্বর্গীয় সুবাসটা আশ্লেষে উপভোগ করতে লাগল। রফিক। পকেটে কয়েকটা টাকা এখনও অবশিষ্ট আছে। একটা ক্যাপ্টেন ব্ল্যাক কিনে কিছুক্ষন খক খক কাশবে নাকি এই সিদ্ধান্তটা লোভীর মত রফিকের চারপাশে ঘুরতে লাগল। দীর্ঘদিন সিগারেট খাবার পরেও ক্যাপ্টেন ব্ল্যাকের ধাক্কা এখনও ঠিকমত সইতে পারে না সে।

কেন যেন, হয়ত চিন্তাগত ঝড়ের জন্যেই , রফিক আনমনে বাহারী সিগারেটের দোকানটা পাশ কাটিয়ে উচু গেট দিয়ে বেড়িয়ে আসল। অসংখ্য রিক্সা ,টুং টুংশব্দ, কাচা ছোলার ফেরিওয়ালার ভীড়েও রফিক উপরের আগ্নেয় নীল মহাকাশের দিকে তাকাল। সুধীন দত্তের উটপাখির কথা মনে পড়ে গেল তার। "নির্মম নীল মহাকাশ"। সেও কি বালুতে মুখ গুজে থাকে? মেরুদন্ডের অনন্ত অভাব আছে তার?

রিকশা ডেকে উঠে পড়ল সে। ভাড়া বেশী চেয়েছিল। আজকে কিছুটা স্বাস্থ্যবান পকেটের সম্মান হিসেবে উৎকট দরদাম টা ক্ষুধায় আক্রান্ত পকেটের দিনের জন্যে রেখে দিল সে।

অনেক গুলি ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তার। কিন্তু যে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার কোন ইচ্ছাই নেই সেই ব্যাপারটি মাথার ফোকরে দিগ্বিদিক লম্ফঝম্প দেয়া শুরু করাতে বিরক্ত হল সে। আরে প্রবলেম কি? মিলি দেখতে খারাপ না। সেইসাথে যৌবনের সব খাজভাগও দৃশ্যমান। কিন্তু একই জেনারেল ক্যারেক্টারইস্টিকস সত্য আরো হাজার হাজার ললনার। বরং স্তনের ইচ্ছাপূর্বক বিস্ফোরন আর নিতম্বের ঢেউ একশতবার দেখা যায় অসংখ্য ভিন্ন পরিস্থিতিতে, পরিবেশে। সেখানে কি কারনে মিলির মিডিওকার দেহসৈষ্ঠব ফ্রয়েডীয় মনস্ত্বত্বে আক্রমন করবে সবার আগে? আরে এই সকল আক্রমন তো অপরিচিত না। সেই ছোট বেলা থেকেই, যখন থেকে পৌরুষ উথিত হওয়া শিখেছে তখন থেকেই নিয়মিত আনাগোনা করে এইসকল নার্ভের ইলেক্ট্রিক পালস। তাদের চক্করে পরে নিয়মিত অন্তর্জাল কে ভালোই কষ্ট দিয়েছে রফিক। সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে তৃপ্তির। মিলি দৃশ্যপটে আসবে কেন? কেন ঐ যে মেয়েটা কানের পাশের চুল ঠিক করছে, আর ওড়না খসে পরে যাচ্ছে, যাকে নিয়ে রফিক আরেকবার ঘুরে আসতে পারে ইমাজিনারী হেরেম থেকে , কেন মিলি এর থেকে আলাদা কোন অনুভুতি উৎপাদন করবে? ধুর শালার মন!

রফিক কষে গোল্ডলীফের নিকোটিন মেশানো বায়ু ফুসফুসে আরো কিছু কৃষ্ণাভ ক্ষত তৈরীর জন্যে পাঠিয়ে দিল। ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় ধাক্কা খেতে খেতে এগোতে থাকা রিক্সায় বসে রফিক নতুন কেনা বইটা খুলে বসে পড়ার ভান করতে লাগল। তার প্রিয় বিজ্ঞানী রিচার্ড ফাইনম্যানের একটা ছবি বইটার প্রথমে দেয়া আছে। সেটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল। তারপর বিক্ষিপ্ত কিছু চিন্তাভাবনার মাঝখানে স্বল্প পরিসরে বইএর একটি বাক্য পড়ার চেষ্টা করতে লাগল।

তখনই উল্টা দিক থেকে হুড ওঠানো একটা রিকশা আসতে লাগল। হাজার রকম মুক্তচিন্তাভাবনা করার পরও গুহাবাসী আদিম স্বত্তার প্রেরণায় রফিক উকি দিল হুডের ভেতরের দৃশ্যের দিকে। মিলির ছোটখাট অবয়ব টা চিনতে মোটেও ভুল হল না তার, আর তার ঠোটে চিরদিনের তৃষ্ণার্তের মত চষে বেড়ানো রিশাদকেও চিনতে ভুল হল না তার।

পলাশীর মোড়ে রিকশা এসে থামল তখন পলাশীতে অনেক ভিড়। ফটোকপি মেশিনের ভোতা শব্দের পাশাপাশি পেয়াজু ভাজার চড়চড়ে শব্দ অদ্ভুত এক সিম্ফোনী তৈরী করেছে। সাদা রং এর একটা গাড়ি থেকে ঠক ঠক শব্দের দ্যোতনা দিয়ে হাইপেন্সিল হিল পড়া , একপাশে গামছার মত করে ঝুলানো কর্মহীন ওড়না, আটসাঁট জামার মধ্য ফুটে ওঠা স্তনের নকশা, প্রায় সোনালী রং এর অবিন্যস্ত চুল, বিশাল একটা নাকফুল পরা একটি ললনা বেড়িয়ে আসল। রফিক স্বীকার করল এরকম ধারালো সামুরাই তলোয়ারের মত সৌন্দর্য সে দেখেনি। রফিকের ইচ্ছা করল মেয়েটার সামনে গিয়ে দাড়াতে, এত কাছে যে মেয়েটির প্যারিস পার্ফিউম কে এড়িয়ে যাতে রফিক নি:শ্বাস না নিতে পারে, অথবা রফিকের দাড়িওয়ালা জনপ্লেয়ারকে এড়িয়ে যেতে মেয়েটি না পারে।

কাছাকাছি দাড়ানোর পর যখন দুরত্ব এতটাই কম হবে যে পলাশীর বারোয়ারি সিম্ফোনী গা ঢাকা দেবে তখন রফিক..................


ঠাস করে মেয়েটার গালে একটা চড় মেরে বলবে
"আই প্রেফার মাই হ্যান্ড, বিচ"

৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×