somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

না আন্দোলন, না সংস্কার——জলপাইরঙা এই জন্তুগুলোর বিরুদ্ধে দরকার একটা সুনামি

০৭ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

'পুলিশের ওপর হামলা' ও 'সরকারি কাজে বাধা দেওয়া'——বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা কৌতুককর দুটি প্রবাদ! রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কাউকে জব্দ করার জন্য এই দুটি অজুহাতের ব্যবহার হয়ে আসছে সম্ভবত বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকেই। আজও তার ব্যতিক্রম হল না। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মানিক মিয়া এভিনিউতে বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে জয়নুল আবদিন ফারুক, পাপিয়া সরোয়ারসহ ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি পুলিশের ওপর হামলা, সরকারি কাজে বাধা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এ ছাড়া তাঁদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুনুর রশিদ, সহকারী কমিশনার বিপ্লব কুমার ও থানার এক উপপরিদর্শককে (এসআই) মারধর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তারও আগে ফারুকের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে ডিএমপির এক অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগে মামলা এবং পরে তদন্ত কমিটি গঠনের সূত্রটি আমাদের অনেকেরই জানা। স্পষ্টই বোঝা যায়, মহানগর পুলিশ কমিশনারের তদন্ত কমিটি কী আবিস্কার করবে! পুলিশের পোশাক পরা মহামান্য ছাত্রলীগ নেতা হারুনুর রশিদ, বিপ্লব কুমার আর পরম শ্রদ্ধেয় কনস্টেবলদের ওপর 'সংঘবদ্ধ হামলার' অভিযোগে উল্টো বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকেই দোষী সাব্যস্ত করা হবে——এটা আগামই বলে দেওয়া যায়।

পুলিশ পারে, কিন্তু কতোটা পারে?
ফারুক যদি গালাগাল কিংবা হামলা করেও থাকেন, তাহলেও রাষ্ট্রের নিম্নপদস্থ কর্মচারী হিসেবে পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার, সহকারী কমিশনার কিংবা কনস্টেবলদের বিন্দুমাত্র অধিকার নেই তার ওপর পাল্টা নারকীয় হামলা করার। তারা মামলা দিতে পারতো, সেই মামলার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনে তাকে গ্রেপ্তার করতে পারতো। বাংলাদেশের ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্স অনুসারে চিফ হুইপের স্থান পঞ্চম। আর খোদ পুলিশের যিনি সর্বেসর্বা, সেই আইজিপির স্থান ১৬ নম্বরে। এই উপকমিশনার আর সহকারী কমিশনাররা গোণাতেই নেই। অনেকেরই যুক্তি, ফারুক লোকটি সুবিধার নয়। হ্যাঁ, আমি ধরলাম যে, লোকটি ডাকাতদলের সর্দার। কিন্তু তবুও কি পুলিশ এই বর্বরতা চালাতে পারে?

এক ছবি সব আমলেই
এর আগে বিএনপি শাসনামলেও আমরা দেখেছি, তারা পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর একইভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম, তোফায়েল আহমেদ ছাড়াও দিলীপ বড়ুয়া, রাশেদ খান মেননদের ওপর বিএনপির পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া—এই সেদিনকার ঘটনা। তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির হরতালের দিনও সরকারের লেলিয়ে দেওয়া এই পুলিশ হামলে পড়েছিল নিরীহ মানুষের ওপর। নিজেই চোখেই দেখেছি, সে কী নির্মমতা! এই অসুস্থ সংস্কৃতি পরিবর্তনের সুযোগ ছিল আওয়ামী লীগের সামনে। তারা সুযোগটা নেয়নি। উল্টো তার অপব্যবহার করেছে মনের সব বিদ্বেষ একত্র করে। কিন্তু এই দিন তো দিন নয়। আওয়ামী লীগ তো নিশ্চয়ই নিশ্চিত নয় যে, তারাই ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে পরবর্তী মেয়াদে। আগামী নির্বাচনে বিএনপিও তো ক্ষমতায় যেতে পারে। তখন যদি এই পুলিশকেই লেলিয়ে দিয়ে সাহারা খাতুন কিংবা শামসুল হক টুকুদের লাঠির আগায় নাচায়? কিংবা আরো ওপরমহলকে চ্যাংদোলা করে যদি নিয়ে যায়?

বলতে দ্বিধা নেই
পুলিশের এই বর্বর হামলা যদি হতো আওয়ামী লীগের চিফ হুইপের ওপর, এমনকি সাহারা খাতুনের ওপরও——অবিকল একই বেদনা স্পর্শ করে যেতো আমাকে, একইরকম ক্ষোভে দগ্ধ হতাম আমরা। আমি কেবল ভাবছি, এইরকম এক পরিস্থিতিতে আমি নিজে কিংবা আমার মতোই কোনো সাধারণ মানুষ যদি পুলিশরূপী এই হায়েনাদের কবলে পড়তো, কী ঘটতো তাহলে? রক্তাক্ত বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ তবু প্রাণ নিয়ে হাসপাতালে যেতে পেরেছেন, কোনো সাধারণ মানুষ কি নিজের প্রাণটা বাঁচাতে পারতো? প্রাণ বাঁচানো গেলেও থানায় নিয়ে কী বর্বর অত্যাচারটাই চালানো হতো! হয়তো ১০১ মামলার আসামিও।

দরকার একটি সুনামি
না, কোনো সংস্কার কর্মসূচি নয়——সে তো শুধুই সময়ের অপচয়। মানবাধিকার শেখানোর কোনো প্রশিক্ষণ কর্মশালা নয়——সে শুধুই আইওয়াশ। এমনকি কোনো আন্দোলনও নয়——সে হল সমস্যাকে আরো বেশি দিন জিইয়ে রাখার পদ্ধতি মাত্র। এই চির অমানুষ বর্বর পুলিশের বিরুদ্ধে দরকার একটি সুনামি—শুধুই একটি সুনামি!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১১ রাত ১০:৫০
২৫টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×