ফ্রয়েডের মতে, প্রেম বা ভালোবাসা যেনো কামেরই আরেক নাম বা কামেরই ফলাফল। আসলেই কি ভালোবাসা বা কাম মনের পৃথক কোন অনুভূতি, নাকি প্রেম বা ভালবাসা শুধুমাত্র কামকে উজ্জীবিত করার সাধারণ একটা পথ মাত্র। বিজ্ঞানীরাও এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন। কিন্তু উত্তরটা নিয়ে তারাও হিমশিম খাচ্ছিলেন। তবে সামপ্রতিক এক বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্ভবত অমীমাংসিত এসব প্রশ্নের উত্তর দিলো। এমনকি ফ্রয়েডের তত্ত্বের বিপক্ষেই যেনো কথা বললো কিছুটা।
সমপ্রতি কয়েকজন নিউরো বিশেষজ্ঞ কিছু নৃতত্ত্ববিদ এবং কয়েকজন সামাজিক মনোবিজ্ঞানী এই গবেষণা পরিচালনা করেছেন। এই গবেষক দল 17 জন নারী ও পুরুষের উপর এই পরীক্ষা চালিয়েছেন, যারা সমপ্রতি পরস্পরের প্রতি গভীরভাবে প্রেমে পতিত হয়েছে। এসব নারী-পুরু ষদের কিছু প্রশ্নের উত্তর পূরণ করতে দেয়া হয়েছিলো, যখন তাদের প্রত্যেকের মাথায় ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং সিস্টেম সংযুক্ত করা হয়েছিলো। তাছাড়া এ সময় তাদেরকে নিজ নিজ প্রেমিক-প্রেমিকার ছবিও দেখানো হয়েছিলো। পরীক্ষা শেষে অবাক করা ফলাফল পাওয়া গেছে, গবেষক দলকেও তা কম অবাক করেনি। এতকাল মনে করা হতো যৌনতা ও প্রেমের মধ্যে একটি অগ্রাহ্যকর সম্পর্ক বিদ্যমান। কিন্তু এই পরীক্ষায় প্রথম ধরা পড়লো মানুষের মস্তিষ্ক স্পষ্টত:ই যৌনতা ও প্রেমকে পৃথক পৃথকভাবে সনাক্ত করে।
চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে যে, গভীর ভালোবাসা বা প্রেমের অনুভূতির সময় আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশ উচ্চমানের ডোপামাইন দ্বারা সক্রিয় হয়। এখানে বলে রাখা ভালো ডোপামাইন হচ্ছে মস্তিষ্কের একটি রাসায়নিক উপাদান যা মানুষের আবেগ অনুভূতিতে প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে যৌনতা বা কামের অনুভূতি মস্তিষ্কের বাম পাশর্্বকে সক্রিয় করে তোলে। অবশ্য প্রেমের সম্পর্কের সময়সীমার উপর মস্তিষ্কের নিউরাল কার্যকারিতা পরিবর্তিত হয়। এ সম্পর্কে আলর্বাট আইনস্টাইন কলেজ অব মেডিসিনের প্রফেসর লুসি ব্রাউন বলেন, প্রত্যেকেই জানে সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের গতিশীলতা বাড়ে। কিন্তু আমরা পরিণত সম্পর্কের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কে ঠিক কি ঘটে তা বোঝার চেষ্টা করছি।
রুটজার বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ববিদ হেলেন ফিশার বলেন, গভীর ভালোবাসা মানুষের অভিজ্ঞতার মধ্যে সবচে শক্তিশালী। তাছাড়া ভালোবাসা বা প্রেম সুনিশ্চিতভাবেই যৌনতা বা কামের থেকে আলাদা এবং নিঃসন্দেহে শক্তিশালী।
এদিকে অন্য আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রেম বা ভালবাসা বঞ্চিত 40% মানুষ প্রচন্ড বিষন্নতায় ভোগে। এ প্রসঙ্গে ফিশার বলেন, সারাবিশ্বের সামাজিকভাবে ভালোবাসা বঞ্চিত মানুষ নিজেকে অথবা অন্যকে হত্যা করে তাদের হতাশার কারণে।
তথ্য সূত্রঃ ইন্টারনেট।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০০৬ রাত ২:১৯