ইনবক্স অণুকাব্য : ১৬ : হাসান মনজু
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নন্দিনী,সন্ধ্যায় টিপ টিপ বৃষ্টি।এই অগ্রহায়ণেও রাঙামাটির আকাশে জল ভরা মেঘ।যেন বৃষ্টির বেদনা চেপে থমকে আছে আকাশ।তোমার লেখা দু' টি বার বার পড়লাম,সত্যি অসাধারণ।কাব্যময় জগতকে নাড়া দেবে।ভীষণ ভাল লাগল।কি বলব,একান্তে ছুঁয়ে গেছে আমাকে।
=লজ্জা দিচ্ছো,
তুমি যদি হাত ধরে না আনতে,
জীবনটা দীর্ঘ্য হতো,
পূর্ণ হতোনা,
যদি হৃদয়ে না টানতে
এই অপার্থিব অনুভূতি
জানা হতো না
-বাহ্ এতো দেখছি কাব্যে কাব্যে একাকার
তবে আমার কাছে হৃদয়টা মনে হয় কেবল মাত্র রক্ত প্রবাহের অপরিহার্য প্রত্যঙ্গ।সব পিটুইটারীর খেলা বুঝলে।
=সব পিটুইটারীর খেলা নয়, হ্যৃদয় হলো মানসিক বোধ এবং অনুভূতির একমাএ সংবেদনাশীল ইন্দ্রীয়।
মনস্তত্ত্ব আর মেটেরিয়া মেডিকেল কাব্য একসাথে পড়ছো বুঝি?
=এটুকু বুঝতে মনস্তত্ব পরতে হয় ?
-যাকগে,ঢাকার খবর বল,হরতাল কেমন হল?
=সব পুনরাবৃত্তি, অফিস আদালত বাস প্রাইভেট সব চলছে,গণজাগরণ মঞ্চে যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির দাবীতে শ্লোগান হচ্ছে।জুয়োলোজীতে পড়েছিলাম,অ্যামিবার স্বভাব হলো,অ্যামিবা পরিণত হওয়া মাত্রই নিজেকে দ্বিখন্ডিত করে।আমাদের বাঙালী স্বভাবের সাথে অদ্ভুত মিল।অ্যামিবার আরেকটি বৈশিষ্ট হলো,তাদের দেহে মস্তিষ্ক নেই।বাঙালীরা বুদ্ধিমান জাতির অভিধা নিয়েও ঐতিহাসিক কাল থেকে বাঙালী দুই ধরনের অশান্তির জন্ম দিয়ে আসছে।পরাধীন হলে এরা জোট বেঁধে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে।আবার স্বাধীন হওয়া মাত্রই দুই দলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের ধ্বংস করে।দেখো দেশের পেশাজীবী,শিক্ষক,ব্যবসায়ী,আইনজীবী,ডাক্তার,এঞ্জিনীয়ার,সাংবাদিক বুদ্ধিজীবী,কবি ও কেরানী সবাই নিজ পেশায় থেকে রাজনৈতিক মতাদর্শে প্রবলভাবে দ্বিধাবিভক্ত।
সাদা,নীল,স্বাচিপ,ড্যাব,অ্যাব,সাংবাদিক ইউনিয়ন,প্রেসক্লাব,আইনজীবী,ওলামা সবাই রাজনীতির পরিচয়ে দ্বিধা বিভক্ত।
মগজধারীরাও দুই ধরণের।বড় ছোট।ছোট মগজধারীরা ভাবাদর্শিক।তাঁরা রাজনীতি করে বাঁচেন।সব সময় কেন্দ্রের কাঁছে অবস্থানের অাকাঙ্খায় থাকেন।বড় মগজধারীরা বুদ্ধিজীবী।তাঁরা সমাজের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত কিন্তু রাজনীতি করেন না।
দেশে সৎ এবং জ্ঞানী রাজনীতিবিদের অভাব নেই।কিন্তু মুশকিল হলো,বেশীর ভাগ সৎ রাজনীতিবিদরা জ্ঞানী হন না।অনেক জ্ঞানী সৎ হন না।যিনি একই সঙ্গে জ্ঞানী এবং সৎ তিনি রাজনীতির ভিন্নতর কৌশল জানেন না।ফলে রাজনীতির ময়দানে স্থান পান না।
সংকটে দুর্দিনে আমরা অসহায়।রাস্তার ডান পাশে ওরা বাম পাশে এরা মাঝখানে আমরা অসহায়।
-উফ্ মাথা ধরে গেছে এসব সূক্ষ্ণ জটিল জটায়ু আমার মাথায় খেলে না।বরং কিছু কাব্য হোক মাথাটা হালকা হোক।
=আমার আজ কাব্য আসবে না,তুমি কাব্য করো।
-প্রেম,বিরহ,গালিব না জীবন মুখী?
=তোমার ইচ্ছে,আমার সব ভাল লাগে
-ওভাবে দেখোনা প্রিয়ে
হতে পারে নেশা
টুটে যেতে পারে
......
=ধ্যাৎ, এটা আগে শুনেছি,এটা আদি,অন্যকিছু বল
-ফুলগুলো সব জলে ভাসিওনা
কিছু গেঁথে নিও মালা
গলায় জড়িয়ে ভুলে যেও প্রিয়া
না পাওয়ার যত জ্বালা
ইতি উতি খুঁজে কুঁড়িয়ে নিও
পায়ে পেষা কোনো ফুল
বুকে চেপে তারে বুঝে নিও প্রিয়া
কি ছিলো তোমার ভুল
=অর্ক,আজ দুঃখ দাও
করবনা অভিমান
প্রেমের বদলে দাও যদি
আঘাতের প্রতিদান
বন্ধ করেছো কাছে আসার
খোলা ছিলো যত পথ
আঘাতে আঘাতে চূর্ণ করেছো
প্রেমের ইমারত
-প্রিয়,আজ আঘাত দিওনা
তোমার দেওয়া ক্ষতে
মুমূর্ষু আমি আঘাতে আঘাতে
ভালবাসা আজো গচ্ছিত আছে
এই ভগ্ন বুকের কাছে
-নন্দিনী,তোমার প্রত্যাখ্যাম
বিদ্ধ করে বারবার
বুকে ফুটন্ত লাভা নিয়ে
মুখোশের হাসি ধরে রেখেছি
মিথ্যের ভিতে গড়া অবয়বে
রচিত উৎসবে
ছলনার আতসবাজি
তোমার জলসায়
মিথ্যে রাজা সাজি
সেখানে আমার ভালবাসা
জড়োসড়ো তাকায় ইতিউতি
বড্ড অবাঞ্চিত অতিথী
আমি ফুজিয়ামা আর বিষুভিয়াসকে
জড়িয়ে নিয়েছি সাথে
বলেছে ওরা সঙ্গি হবে
মন খারাপের রাতে
= বড্ড ডিভোশনাল,একটা কিছু রোমান্টিক বলে শেষ করো প্লিজ
-নন্দিনী,মাঝে মাঝে ভীষণ হতাশ লাগে,মনে হয় যা ভাবি যা প্রকাশ করতে চাই তা এখনো কাউকে বলতে পারিনি।
তবে আজ রোদ্দুর হোক
আকাশ জ্বলুক
=না বৃষ্টি ঝরুক
আকাশ কাঁদুক
-আমি চাই মেঘলা রদ্দুর
বৃষ্টি ভেজা সমুদ্দুর
অর্ক,আজ দুঃখ দাও হও শুধু আমার কবি
অন্তমিলে আঁকো বেদনার যতো ছবি
চলবে~~~~~~~~~~~~~~~~~~