১।
চিতায় লাশের ওপর কাঠ সাজিয়ে রেখে বৃদ্ধ চন্ডাল ভাবে না, রবিবার সন্ধ্যায় সেও মরে যেতে পারে।
সে জানে না মরে গেলে মানুষ ছাই হয়ে যায়, ভস্ম থেকে জন্ম নেয় ফিনিক্স পাখি।
শুধু রাতে ঘরে ফেরার পথে ফুল দোকানটি খোলা থাকুক, এই তার প্রার্থনা।
ফুল দোকানে তেরো বছর বয়েসি একটি মেয়ে থাকে, তার নাম বেলি।
বৃদ্ধ চন্ডালের খুব ইচ্ছে হয় মেয়েটির মৃতদেহে যত্ন করে কাঠ সাজিয়ে রাখার।
চন্ডাল ভাবে,
মেয়েটিকে পোড়ালে নিশ্চয়ই বেলি ফুলের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়বে সবটুকু শ্মশান জুড়ে।
(চণ্ডাল/২৪ জুন, ১৬)
২।
কাটা মাংসের ঘ্রাণ ডোমের একমাত্র মাদক;
মাংসের ঘ্রাণ শুঁকে তিনি বোলে দিতে পারেন, কত কেজি দুঃখ একটি দেহে লেপ্টে থাকে।
ডোম অপেক্ষায় থাকে লাশের জন্য, মাংস কেটে দুঃখ গুলো তিনি বাড়ি নিয়ে যান।
মাংস না কাটতে পারলে, একজন ডোম জগতের সকল মানুষের অপমৃত্যু কামনা করেন।
(ডোম/ ২৩ জুন, ১৬)
৩।
নরকের আগুনে কয়েকটি মাছ সাঁতরাচ্ছে;
এই দৃশ্যের পর, আমার মগজে ঢুকে পড়ল পৃথিবীর জরায়ু।
কয়েকজন কবি সেখান থেকে বেরিয়ে দৌড়ে ঝাঁপ দিলো আগুনে।
তৎখনাত দেখতে পেলাম উনারা কয়েটি মাছ হয়ে আগুনে সাঁতরাতে লাগলেন।
(কবি/ ২০ জুন, ১৬)
৪।
ক্রিস্টোফারের বাবা অপেক্ষা করে আছে এখনো, অভিমান ভেঙে ক্রিস্টোফার আর ফেরেনি।
জঞ্জালে ভরা একটি মিনিবাসের ভেতরে;
ভুল করে বিষাক্ত পাতা খেয়ে, মরে যাওয়ার আগে চোখ ঝাপসা হয়ে এলো তাঁর,
সেই ঝাপসা চোখের পাতায় নিদারুণ ভাবে ভেসে উঠলো কৈশরের ম্যারি এ্যানের মুখ।
অথচ
তাঁর বাবা প্লেটে খাবার নাড়ছেন আর কাঁদছেন।
আর ক্রিস্টোফার;
যে কিনা পৃথিবীর তাবৎ নিয়মকে অবজ্ঞা করে ম্যারি এ্যানের যৌনিতে ডুবে গ্যালো।
(মর্মবেদনা/ ১৬ জুন, ১৬)
৫।
সকালে,
ছেলেটির বাবা মারা গেলো, দুপুরে মা।
বিকেলে কেউ মারা যায় নি,
বিয়োগান্তক রাত নেমে এলো, যখন সে দেখলো পোষা কুকুরটি মারা গেলো।
এরপর মধ্যরাতে নিজের অনাগত মৃত্যুর অপেক্ষায় বসে,
ছেলেটির চোখে ভেসে উঠলো অন্তিমতা,
তার নিষ্প্রাণ দেহে দুটি মাছি মন খারাপ করে আছে; মরে যাওয়া কুকুরটির জন্য।
(অন্তিমতা/ ১৭ এপ্রিল, ১৬)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুলাই, ২০১৬ রাত ৩:১৩