somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার মৃত্যুগাথা . . .

১০ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


যখন কোন মানুষ খুব বেশি প্রিয় হয়ে যায় তখন তারা কেমন যেন নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো হয়ে যায়। আমিতো আমার হাত-পা অথবা চোখকে আলাদা করে ভালবাসতে পারবো না। কিন্তু হাত-পা বা চোখটা হারালে একটা দিক থেকে সম্পূর্ণ অথর্ব হয়ে যাবো। ঠিক সেরকম একটা সম্পর্ক ছিল আমার... যেটা হারিয়ে যাবার পর আমার অস্তিত্বে চরম নাড়া পেয়েছিলাম...

ছোট থেকে থেকে একজন মানুষ আমার সওওওব কিছুতে পাশে পাশে ছিল। তার পায়ের পাতার ওপর খুব ছোট্ট পা রেখে হাঁটতে শিখেছিলাম আর তারপর থেকে আমার কোন্ স্মৃতিটা আছে যেটাতে সে নেই! আমার ধর্মশিক্ষা থেকে গান শোনা সব তার থেকে পাওয়া!

আমার দাদুটা আমার বন্ধু-বান্ধব বা বাকিদের দাদুদের থেকে একদম অন্যরকম ছিল। এখন পর্যন্ত আমার দেখা সবচেয়েএএএ স্মার্ট মহিলা। ঢাকার একটা কলেজে শিক্ষকতা করতো দাদু। বেশিদিন পারে নি, প্রচন্ড প্রানশক্তিতে ভরা মানুষটার হার্ট বোধহয় অস্থির হয়ে থেমে গিয়েছিল মাত্র ৪৭ বছর বয়সে। তারপর ইন্জিন (পেইসমেকার) দিয়ে চালাতে হতো চার কম্পার্টমেন্টের গাড়িটাকে। কিন্তু দাদুকে দেখে কেউ ভুলেও বুঝতো না যে মানুষটার ভেতরের সবচে' স্পর্শকাতর অংশটা কৃত্তিম!

আমার হাঁটাচলার পর থেকে সব ব্যপারে দাদুর অংশ ছিল। মা-বাবা দু'জন ডাক্তার হওয়ার পর-ও এক সেকেন্ড এর জন্যও একাকিত্ব বোধ করি নি। স্বরে-ও স্বরে আ ক খ ,আ বা কা ডা, সা রে গা মা পা - সবকিছুর শুরু দাদুর থেকে। আল্লাহ-র সাথে কথা বলার ব্যপারটা আমার মধ্য ঢুকিয়ে দিয়েছে দাদু। "শোন, কোন হুজুরকে কখনো বলবি না যে আমার জন্য আল্লাহ্-র কাছে দোয়া করে দাও। তুই যেভাবে আল্লাহর কাছে চাবি, হুজুর কখনো সেভাবে চাইবে না। সবসময় সরাসরি সম্পর্ক রাখবি আল্লাহ্‌র সাথে। ক্ষ্ট, ভয় বা কিছু ব্যপারে দ্বিধায় আল্লাহ্-র সাথে কথা বলবি আর বলবি যে তোর অধিকার আছে তাঁর সাহায্য পাওয়ার, কারন তুই কোন শক্তিকে বিশ্বাস না করে একমাত্র তাঁকে বিশ্বাস করেছিস। সাহায্য করতেই হবে তোকে আল্লাহ-র তখন। আর যখনি কোন প্রশ্ন আসবে আমাদের ধর্ম নিয়ে, তখন-ই যে ধর্মের ব্যপারে তোর চে' বেশি জানে তাকে জিজ্ঞেস করবি। অন্ধবিশ্বাস করতে হবে এমন কোন কথা কিন্তু নাই!" আমি সেই তখন থেকে এখন পর্যন্ত কোন বিপর্যয়ে পড়লেই বিড়বিড়িয়ে কথা বলি আমার আল্লাহ্-র সাথে!

আমার ভেতরে ছন্দ অথবা গানের প্রতি নেশাটাও দাদুর একটা অবদান! দাদু রবীন্দ্র, নজরুল, তপন চৌধুরী, ভূপেন, কিশোরকুমার, কুমার বিশ্বজিৎ, সুমনা, লতা, বাউল, মোহাম্মদ রাফি, পঙ্কজ, শচীনদেব, এ্যাবা, মাইকেল জ্যাকসন...কি না শুনতো !!! প্রিয় ছিল অমিতাভ বচ্চন..প্রায় ই বলতো... " ইস্! দেখ লোকটার কি ফিগার! তোকে এমন লম্বু একটার সাথে বিয়ে দিতে হবে!" আমি যেতাম রেগে..."হ্যা! ওমন লম্বু বিয়ে করবো তারপর আমাকে নিয়ে "জিসকো বিবি ছোটি"...গান গাবে!" দাদু ফিক করে হেসে দিতো। সে সময়টায় আমার পাগল প্রিয় ছিল ডেভিড ডুকভ্‌নি (এক্স ফাইল্স) আর টম ক্রুজ। মা অথবা বাবা একদিন রাতে পড়াশোনার জন্য এক্স ফাইল্স না দেখতে দিলে আমার জীবন রাখা দায় মনে হতো। দাদুকে জড়িয়ে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলতাম , "তুমি আমাকে এক্স ফাইল্‌সের সময়টা কোন কাজে ডেকো তো। আমাকে ওরা দেখতে দিতে চায় না। আমার কি হবে পড়ালেখা করে যদি আমি মোল্ডারকে না দেখি!" দাদু খুব-ই গম্ভির হয়ে বলতো, "হুম...তা তো ঠিক-ই। চিন্তা করিস না, পড়তে যা সময় মতো ডাক দিবো।" ঠিক সময়ে ডাক পেয়ে যেতাম, "এই শুনে যা তো, রিমোট টা কাজ করে না কেনো!" মা-বাবা-ও মুচকি হাসতো!

এছাড়াও দাদু কখনো বসে থাকতো না। সারাক্ষণ প্ল্যান করায় আর সবার সময় মেলানোয় ব্যস্ত। একটা দিন আমার দুই ফুপ্পি আর চাচ্চুরা সহ আমাদের সবার সময় মিললেই ঘুরতে বের হয়ে যাওয়া। হৈ-চৈ-লাফালাফি... উৎসব লেগেই থাকতো আমাদের ফ্যামিলি পিকনিকগুলোতে! আমরা সওব ভাই-বোন মিলে দাদুকে ধরতাম,,,"প্লিজ একটা প্ল্যান নাও না! কত্তদিন ফ্যান্টাসি যাই না!" আমরা ভাই-বোন মিলে হাউমাউ করতে করতে ফ্যান্টাসিতে গিয়ে লাফালাফি করছি আর দাদু বেশ খুশিমাখা চোখে তাকিয়ে আছে...এমন দৃশ্য-ও বিরল ছিল না। দাদু পেসমেকারটার জন্য কোন রাইড-এ উঠতে পারতো না, আমাদের আনন্দটাই তার জন্য সব ছিল। এছাড়া-ও সারা রাস্তা গান গাওয়া, লাফালাফি, রাস্তার ইটালিয়ান হোটেলে চা খাওয়া... এসব তো ছিলোই! আর যদি অতদূর যাওয়া না হয় তাহলে ঢাকা-ই ঘুরাঘুরি-র ব্যবস্থা হয়ে যেত...হয়তো কোন সিনেমায় বা এক্সিভিশনে!

প্রতি বৃহস্পতি রাতে কিছু না কিছু একটা হতো আমাদের বাসায়। সেটা লুডু বা কার্ড বা ডমিনোজ বা মনোপলি কম্পিটিশন...যেকোনো কিছু হতে পারে! তাতে আমি বা আমার বোন কেউ জিতে গেলে দাদু পরদিন খাওয়াতো। আমি হেরে গেলে দাদুর শর্ত ছিল, আমাকে একটা গান গাইতে হবে নির্ভুল লিরিক আর স্কেলে। কত চেষ্টা করেছি আমরা দু'বোন মিলে জেতার! কিন্তু বেশিরভাগ সময় দাদুই জিতে যেত! মাঝে মাঝে আমরা জিতে গেলেও বুঝতাম না যে ওটা দাদু ইচ্ছা করেই জিতিয়ে দিয়েছেন! কি ঝগড়া যে করতাম মাঝে মাঝে কত তুচ্ছ কারনে! তারপর গিয়ে স্যরি-ও বলতাম...জড়াজড়ি করে কান্নাকাটি-ও হতো। আমার ফুপ্পি বা চাচ্চুরা দাদুকে অনেক বলতো ওদের বাসায় থাকতে কিন্তু দাদু কারো বাসায়-ই আমাদের দু'বোন ছাড়া বেশিদিন থাকতে পারে নি! সময়ে-অসময়ে দাদুর সাথে আড্ডা দিতাম। আমার এমন কোন গোপন কথা ছিল না যা দাদুকে বলি নি! সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিটা মুহুর্তকে প্রান দিয়ে রঙিন করে রাখতো দাদু!

২০০৪ এর বৃহস্পতিটা আমাদের বাসার বৃহস্পতির রুটিনটা মানে নি। সবসময়ের জন্য ভেঙে গিয়েছিল রুটিনটা! গত চার বছর আমি দাদুর প্রিয় গানগুলো শুনি নি... কারন যে গানগুলো একটা সময় ছন্দের গল্প শোনাতো সেগুলা কেমন অভিশাপের মতো লাগে শুনতে!...গত চার বছরে আমাদের কোন ফ্যামিলি পিকনিক হয়নি... কেন যেন সময় আর মেলে না সবার আর একসাথে! আমাদের বাসা থেকে উৎসবের বা ঝগড়া-অভিমানগুলোর শব্দগুলোও মুছে গেছে সবসময়ের জন্য!

আমার আঠারো বছরের পর থেকে জুলাই মাসটাকে আমি পাগলের মতো ভয় পাই! দাদুর পেসমেকার চতুর্থবারের মতো বদলে দেয়া হলো জুন এ। তারপর দাদু বেশ থমকে গেলেন... এমন মানুষগুলো থেমে গেলে সময় থেমে যায়। আমি দাদুর নার্সিং এর ব্যপারটা দেখতাম। অক্সিজেন দেয়া বা নেবুলাইজ করা এসব বেশ দক্ষ ভাবেই করতে পারতাম বাবার শিখিয়ে দেবার জন্য। জুলাই এর আট তারিখ আমার বেশ ভাল লাগছিলো যে দাদুকে আজকে বেশ সুস্থ দেখলাম। সন্ধ্যায় কোচিং থেকে ফিরে দাদুর সাথে কথা হলো...গান শুনলাম, টিভি দেখলাম। তারপর বললাম..."দাড়াও কাপড়টা বদলে আসি।" দাদু বললো, "তুই হলি আমার অক্সিজেন, বুঝলি! শোন্, তুই এসে আমার খাবারটা দিতে বল। আজকে ভাল লাগছে না টিভিটা!" আমি একটা "আচ্ছা" দিয়ে দৌড় দিলাম। নরম খিচুরিটা রেডি করে আমার চাচ্চি বললো আজকে সেই খাইয়ে দিবে। আমি সায় দিয়ে চলে আসলাম। দাদু এক চামচ খিচুরি খেতে না খেতে-ই চরম কাশি শুরু হলো। তারপর দাদু নিথর হয়ে গেলো...বাবা ছুটে আসলো। দাদুর পাল্স, হার্টবিট বা চোখের মণিটার রিফ্লেক্সন কিছুই পাচ্ছিলো না বাবা। কিন্তু ব্যপারটা বাবা বুঝলো না একজন বেশ দ্ক্ষ ডাক্তার হয়েও... এক হার্ট স্পেশালিস্ট কে ফোন করার পর সে বেশ অবাক হয়েই বাবা-কে বললো... "তুমি বুঝতে পারছো না কি হয়েছে?" বাবা বললো যে বাবা কিছুই বুঝতে পারছে না। ঐ ডাক্তারকে আমাদের বাসায় আসতে হলো ব্যপারটা বোঝানোর জন্য। আমার ডাক্তার বাবা-ও আমার মতোই তাঁর মা-র মৃত্যুর ব্যপারটা ভাবতেই পারে নি। আমি ঐ সময়টা খুব স্বাভাবিকভাবেই দাদুকে অক্সিজেন দিয়ে গিয়েছি ক্রমাগত...আর মেডিক্যল টর্চ ফেলে পাগলের মতো মানুষটার চোখের মণিটার পরিবর্তন দেখতে চেয়েছি। আমার মাথায় নেয়া সম্ভব ছিল না পরিস্থিতিটা। এটা বুঝতে পেরেই কিনা জানি না, আমার এক দুঃসম্পর্কের খালা আমাকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়ে একটা কাজে লাগিয়ে দিলেন। তখন কিচেনে চুলোর ওপর বড়ই আর নিমের পাতাগুলো বিশাল দুটো হাড়ির পানিতে উথাল-পাথাল হয়ে ডুবছিলো আর ভাসছিলো।

আমি খানিকক্ষণ পরে এসি রুমটায় ঢুকে দেখি দাদু শুয়ে আছে, নাকে তুলা গোঁজা। আমি এগিয়ে গিয়েই তুলা খুলে দিয়ে তীব্র চোখে বাবার দিকে তাকিয়ে বলেছিলাম, "তুমি জানো না দাদু এসিতে থাকতে পারে না? সাফোকেশন হয়? নাকে তুলা কেনো দিলা?" তারপর অক্সিজেন মাস্কটা পরিয়ে মিটার ঘুড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিছুই হলো না, আমাকে বোঝানো হলো দাদুর এখনের কন্ডিশন ভাল না, তুলাটা খোলা যাবে না। আমি পাশে বসে মুখ থেকে কাপড়টা সরিয়ে দিলাম তারপর আলতো করে কপালটা ছুঁয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্টের মতো চমকে উঠলাম! কি ভয়াবহ নিষ্ঠুর-নৃশংস ঠান্ডা !!! এমন ঠান্ডার সাথে পরিচিত ছিলাম না তো আগে! আমি মানসিকভাবে ঐ ঠান্ডাটা নিজের ভেতর নিয়ে ফেলেছিলাম! এখন-ও ঐ দিনটার প্রতিটা মুহুর্ত, সেই ঠান্ডাটা টের পাই ...যদি স্মৃতিটা খুঁড়ে আনি! সারারাত-ই দাদুকে ছুঁয়ে স্থির হয়ে হয়ে ছিলাম... এক ফোঁটা কাঁদিনি, একটু-ও ফোঁপাই নি! পরদিন জুম্মার পর দাদুকে নিয়ে যাওয়া হয়, আমি একটুও টের পাইনি। কারন ওটা দেখার মতো জ্ঞান-ই আমার ছিল না ঐ সময়টায়।

সন্ধ্যাবেলায় একটু গুছিয়ে নেবার পর সবাই দেখলো আমি সম্পূর্ণ মানসিক রোগীর মতো আচরণ করছি। সবাইকে সন্দেহ করতাম আশেপাশের। চারপাশে দাদুর গন্ধ পেতাম, রাত-বিরাতে দাদুর ঘরে গিয়ে নাকি দাদুর সাথে কথাও বলেছি! ঘুমের মধ্যও আমার নাকি একভাবে হাতের আঙুলগুলো কাঁপতো! পরের প্রায় ৩-৪ মাস আমি মানসিকভাবে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত ছিলাম। পড়াশোনা করেছি, অন্যকিছুও ঠিক ছিল... কিন্তু আমার আশে-পাশে দাদুর কাল্পনিক বিচরণ ছিল...যেটা আর কারো ছিল না। একটা সময়ের পর বাস্তবতা বুঝতে শিখেছিলাম যেটা না বুঝলেই ভাল হতো হয়তো। দাদুর শূন্যতাটা ভেতরে টের পেতাম, ভেতরের একটা অংশ কেমন যেন ভয়ংকর খালি হয়ে গিয়েছিল। কারো খুব বেশি আপন কেউ হারিয়ে না গেলে এটা কেউ বুঝবে না। আর আমি খুব গভীরভাবে চাই যে আমার সবচে বড় শত্রুর-ও যাতে ঘুণাক্ষরেও এই অনুভূতিটা পেতে না হয়! বাসার প্রতিটা কোনে তিনি ছড়িয়ে ছিলেন। এই সুস্থ হবার পরের সময়টায় আমি কেঁদেছিলাম। মাথা ছিঁড়ে ফেলা যন্ত্রণাময় কান্না...তারসাথে তীব্র চিৎকার দিয়ে আল্লাহ-কে বকে যেতাম! আর ঠিক করে ফেলেছিলাম যে কারো সাথে যেন জীবনে কখনো যেন এমন গাঢ় সম্পর্ক না হয়। যে হারিয়ে গেলে নিজের অস্তিত্বে এভাবে নাড়া লাগে।

আমি এখন খুব প্র্যাকটিক্যাল একটা মেয়ে... কারো সাহায্য চাই না, কোন কিছুর খুব গভীর প্রয়োজন বোধ করি না।...কিন্তু এখনো নেশাগ্রস্থের মতো হাতড়ে বেড়াই সেই মৃত সময়গুলো... মাথার ওপর খুঁজে বেড়াই খুব শান্তির একটা ছায়া! আমি এখনো স্থির হয়ে বসলে ছবির মতো দেখতে পাই সেদিনের রাতটা... এখনো থরথর করে হাতটা কেঁপে ওঠে...না জানতেই সেই শূন্যতাটা চলে আসে ভেতরে...আর ভেতর থেকে উথলে ওঠে সেই ধমনী ছেঁড়া কান্নাটা... দাদুকে নিয়ে একটা কবিতা লিখেছিলাম, সেটা দিয়েই লেখা শেষ করছি...

--- বিমূর্ত কষ্ট ---

আমার একটা ঘর ছিল ...
যাতে আমার অপার্থিব-অদ্বিতীয় সব অনুভূতি জমা থাকতো।
আমার ঝগড়ার কিছু কারণ ছিল ...
যাতে সব ভালবাসা-অভিমান মিষ্টিভাবে মিশে থাকতো।
আমার কথার ঝর্ণাটার জন্য বয়ে যাওয়া এক নদী ছিল ...
যাতে ঝরঝর করে মায়ার ধারা ঝড়ে পড়তো।
আমার অজানা আশঙ্কার জন্য বিশাল এক আশ্রয় ছিল ...
যা পৃথিবীর অভিশাপ থেকে আমাকে আগলে রাখতো।
আমার একটা সমৃদ্ধ অভিধান ছিল ...
যা থেকে আমার জ্ঞানের পরিধি কোটিগুণ পূর্ণতা পেতো।
আমার সওওওওবকিছু ভাগ করে নেবার জন্য একটা মন ছিল ...
যাতে আমার আত্মা-প্রান মিশে-মিলে একাকার হয়ে যেত।

প্রায় দু'বছর হলো ...
সময় দ্রুত বদলে গেলো।

আমার সবটুকু দিয়ে ভুলতে চাই আট তারিখের রাত,
অস্বাভাবিক ঠান্ডা হওয়া তোমার কপাল-হাত !

আমার সব অনুভুতি এখন কঠিন দ্বিধা-দ্বন্দ্বের বাঁকে,
ভেতরের জায়গাটায় তারা পাথরের মতো জমে থাকে।
পুরোনো আশ্রয়ের খোঁজে ক্রমাগত না-পাওয়ার ছবি আঁকে!

তুমি জানো ?
চিরস্থায়ী শূন্যতা আর বিমূর্ত কষ্ট বুকে এখনো বেঁচে আছি।
কিন্তু ...
সেই ঘর - নদী - আশ্রয় একদম্‌ হারিয়ে ফেলেছি !!!


৮ই জুলাই, ২০০৬


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৯
৪৫টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×