আমি সামহোয়্যারে আসার আগে কখনো জানোয়ার - যেমন, কুকুর-বিড়াল-ছাগলদের এমন সরব-সরগরম ইন্ট্যারাকশন দেখি নি!
এখানে শেষ দু'বছর অনেক কুকুর-বিড়ালের অহেতুক আক্রমন দেখেছি। ছাগলদের আস্ফালন দেখেছি। ছাগল তাড়ানোর নামে আরো একদল গরগরর করা পশু দেখেছি। আবার ধর্মের দু-এক শুনলেই চুলকানি উঠে যায় এমন গ্রুপ দেখেছি। পাবলিক-প্রাইভেট দ্বন্দ্বে বিনোদিত উত্তেজিত দল দেখেছি। ইভটিজিং করে বেড়ানো শূয়োর দেখেছি, আবার সে শূয়োর তাড়ানোর নামে আরেকগ্রুপ হাইপোক্রাট-ও দেখেছি! কথা বলতে না শেখা অপ্রকৃতস্থ জানোয়ারদের ঘেউঘেউ-মিউমিউ তর্কের হাস্যকর প্রচেষ্টা শুনেছি!
আরেকটা দল দেখেছি, তারা মানুষ!
শুধুমাত্র এই শেষ গ্রুপটার জন্যই প্রচন্ড আকাঙ্ক্ষিত হয়ে গেল সামু! এরা সংখ্যায় খুব কম। এঁদের হাতে বা প্রতিটা আঙুলে এতোই ক্ষমতা যে এরা ঐ সংখ্যাগরিষ্ঠ জানোয়ারগুলোর অহেতুক ঐ চিৎকারগুলো ঢেকে দিতেন। এঁরা কেউ সাহিত্য লেখেন, তো কেউ লেখেন জীবনকথা। কেউ বা শুধুই নিজের বিশাল মনটা নিয়ে আসেন একটা অদ্ভুত আত্মীয়তা গড়ে তুলতে! আর আশ্চর্য হলেও সত্যি যে তাঁরা সেটা পারেন। কারো গল্প বা কবিতাটা নিজেদের সময়টা বদলে দেয় তো কারো জীবনকথা পড়লে আমরা কখনো কষ্টে বা কখনো হাসতে হাসতে বা হয়তো তার প্রতি আশীর্বাদেই সরব হই!
এই মানুষগুলো কখনোই জানোয়ারদের চিৎকারে থাকেন না। আমি কখনো দেখি নি থাকতে।
হঠাৎ করে দেখি মানুষগুলোর ঘরে এসে জানোয়ারেরা হাউকাউ শুরু করেছে - ট্যাগ দিয়ে বা অযৌক্তিক ঘেউঘেউ দিয়ে। মানুষেরা জানোয়ারের ভাষা বোঝেন না। তাই তারা তাদের কাজ করে গেলেন। কেউ কেউ এই ঘেউঘেউ এড়াতে এখানের ডেরা ছাড়লেন [উদাহরন : অগাণিতিক]। যারা ছেড়ে গেলেন তারা হারালেন কম, আমরা ব্লগের অবশিষ্ট মানুষেরা হারালাম অনেক। একটা একটা করে অসাধারণ স্বপ্নদরজা আমাদের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। জানোয়ারদের উল্লাস বেড়ে-কমে সমান থাকলো। কারন তাঁদের ওসব হারানো-পাওয়া বোঝার ক্ষমতা থাকলে তো!
এখনের সময়টায় একটা অদ্ভুত ব্যপার লক্ষ্য করলাম! এটা বোধহয় সামহোয়্যারেই সম্ভব!
হঠাৎ এখানকার মানুষদের একসাথে হয়ে সরব হতে দেখলাম। জানোয়ারদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়িতে বিরক্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তারা নিজেদের হাত নোংরা না করে ঐ জানোয়ারদের রাখালগ্রুপটাকে বললেন জানোয়ার সামলাতে! কিন্তু দেখো কান্ড! মানুষেরা বুঝতেই পারেনি যে রাখালগুলোও জানোয়ারদের সাথে তাল মেলাতে মেলাতে মানুষের ভাষা ভুলে গেছে! তারা নিজেরাও এখন জানোয়ারদের ভাষা ছাড়া মানুষের ভাষা বোঝে না! তারা মানুষদের সাথেও জানোয়ারদের মতোই ব্যবহার শুরু করলো!
মানুষগুলোর কথাবার্তা এখন জানোয়ারের দাপটে ঢাকা। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের রক্ত মানুষদের। জানোয়াররা মানুষে পরিণত হয় হয়তো, তবে মানুষের পক্ষে জানোয়ার হওয়া তো সম্ভব না! তাই এই খোঁয়াড় থেকে একজন একজন মানুষ ঝড়ে পড়া শুরু হলো বলে!
বছর দুয়েক পর এপথ দিয়ে হেটে গেলে ঘেউঘেউ-মিউমিউ-ভ্যাভ্যা-র সাথে হয়তো চাপা পড়ে যাওয়া বিদেশী কুকুর-বিড়ালের শব্দও পাওয়া যাবে! একটা কথা সত্যি! কুকুর সত্যি প্রভুভক্ত, তবে পাগলা কুকুরগুলো শুনেছি মালিকদেরকেও কামড়ে দেয়! এখানের রাখালেরা বরং সেদিনটা গুনুক!
হ্যাপি ব্লগিং !!!
হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা হা !!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



