হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, আমাদের অনুরোধে, ই-মেইলে যে প্রাথমিক খবর পাঠিয়েছেন তা আতঙ্কিত হবার মতো: এ রোগের কারণে ওর কোমরের দুটো জয়েন্টই নষ্ট হয়েছে, অস্ত্রপচার করে না-বদলানো পর্যন্ত ও আর উঠে দাঁড়াতে পারবে না। দু’চাখের রেটিনা আক্রান্ত, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দরকার। দু’পায়ের হাঁটুর জয়েন্টও আক্রান্ত, অদূর ভবিষ্যতে বদলাতে হতে পারে। শরীরের সমস্ত হাড় ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছে, ক্ষয়ে যাচ্ছে। রোগটি এখন সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে, আরও নানাভাবে ওকে আক্রান্ত করবে। যথাদ্রুত চিকিৎসা শুরু করা আবশ্যক।
ডাক্তাররা চিকিৎসা-ব্যায়ের হিসাব যোগ করে একটা অংকও আমাদের জানিয়েছেন। প্রায়-স্বাভাবিক জীবনে শাশ্বতকে ফিরিয়ে আনতে লাগবে এখন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। আর আজীবন ওকে কয়েক হাজার টাকার ওষুধ খেয়েই যেতে হবে। চিকিৎসা মুলতবি রেখে আগামী ৮ তারিখ নাগাদ ট্রেনে চেপে কোলকাতা হয়ে বাবাসহ সে দেশে ফিরে আসবে। যদিও ডাক্তার ট্রেন বা বাসে ভ্রমণ করতে বারণ করেছেন। বলে দিয়েছেন নিতান্ত প্রয়োজন হলে কোনো একজন নিকটাত্মীয়সহ বিমানে যাতায়াত করতে।
আমরা, বিভাগের সকলে একজন প্রতিশ্রুতিশীল সন্তান হারানোর গুরুতর উদ্বেগের মধ্যে আছি। উদ্যোগও গ্রহণ করেছি বটে, কিন্তু কতোটুকু আর আমাদের সামর্থ্যে কুলোবে, যদি সবাইকে সাথে না-পাই!
আপনারা জানেন, ২টি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে আমরা অর্থ সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি: শাশ্বত চিকিৎসা সহায়তা, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: ৩৪২৬০৪৯৮ অগ্রণী ব্যাংক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, রাজশাহী এবং সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: 135-101-33705.
Swift Code: DBBL-BD-DH-100
Dutch-Bangla Bank Ltd
রাজশাহী শাখা। আর আমাদের সাথে সামেহোয়ার ইন কর্তৃপক্ষ এবং অন্য বন্ধুদের তৎপরতা তো আছেই।
এর মধ্যে বগুড়া থেকে আমরা ভালো সাড়া পেয়েছি। বিভাগের উদ্যোগে সেখানে একটা সাংস্কৃতির সন্ধ্যার আয়োজন করা হয় গত ৩০শে জুন। আমাদের আমন্ত্রণে উদিচী ও রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলনী পরিষদ-এর বগুড়া শাখা অনুষ্ঠান পরিবেশন করে শাশ্বতর জন্য। আর বগুড়ার ব্যবসায়ীরাও আমাদের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়েছে। সবমিলিয়ে সেখান থেকে আমরা দেড় লক্ষ টাকা পাচ্ছি।
এদিকে সবগুলো ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় আমাদের কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে ছিল। তাছাড়া শাশ্বতর চেক-আপও চলছিল- ওখানকার ডাক্তারদের চূড়ান্ত মতামতের জন্যও আমরা অপেক্ষা করছিলাম। আমরা এখন ডাক্তারদের মতামত পেয়েছি- মোট কত টাকা লাগতে পারে, কোন চিকিৎসাগুলো এখনই করতে হবে সেসম্পর্কে। এখন এমাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ টাকা-টা তোলার জন্য আমরা ব্যাপকভাবে কাজে নেমে পড়ব।
ইতোমেধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকাতে আমাদের বিভাগের প্রাক্তণ শিক্ষার্থীরাও ক্রমে কাজ শুরু করেছে। আর আমরা এখানে রাজশাহী ক্যাম্পাস ও শহরে দুটো রালি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। ৭/৮ তারিখের ভিতরে আমরা এটা করবো। এছাড়া ক্যম্পাস ও শহরে আমরা শাশ্বতকে নিয়ে তৈরি একটা ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রজেকশনের ব্যবস্থাও করছি। ১২-২০ জুলাইয়ের ভিতর ক্যাম্পাসে একটা ফিল্ম-ফেস্টিভাল ও পথনাটক উৎসবও করা হবে।
আর শাশ্বত ফিরে এলেই আমরা ওকে নিয়ে বিভাগের উদ্যোগে একটা প্রেস-কনফারেন্স করবো ১১ বা ১২ তারিখে। সামহোয়ার ইন এর ব্লগার বন্ধুদেরকে আমরা এদিন রাজশাহী আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি- আসার জন্য প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করছি। প্রেস-কনফারেন্সে ব্লগার বন্ধুদের উপস্থিতি চাইছি দুটো কারণে: ১। শাশ্বতকে আপনারা দেখতে পাবেন, কথা বলতে পারবেন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে; ২। প্রেসের উপস্থিতিতে আপনারা ইতোমধ্যে সংগৃহীত টাকার চেক তার হাতে তুলে দিতে পারবেন। ফলে প্রেস-কনফারেন্স কেন্দ্রীক আমাদের সমাবেশ ভালো মিডিয়া কাভারেজো পাবে- যা শাশ্বত'র জন্য বাকি টাকা তোলার কাজ সহজ করে দেবে।
ক্যাম্পাসগুলো খুলে যাওয়ার সুযোগে আপডেটেড মেডিক্যাল রিপোর্ট হাতে নিয়ে এখন আমরা শাশ্বতর জন্য ডেসপারেট ড্রাইভ দিতে প্রস্তুত হয়েছি ... আর আপনারাতো আমাদের উদ্যোগে সামিল হয়েই আছেন, সবাই মিলে যেন আমরা শাশ্বতকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারি ... এই প্রত্যয়ে অঙ্গীকারাবদ্ধ হই।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৪৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



