~শান্তিপূর্ণ একটা আন্দোলন দিন দিন অসহযোগ আন্দোলন এ পরিণত হচ্ছে। এমনটা হচ্ছে কেন? এগুলো একমাত্র কর্তৃপক্ষের অদক্ষতার ফলাফল। আজকের আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণভাবে চলছিলো। কিন্তু দুপুরে হঠাৎ ঝিগাতলায় ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগের অতর্কিত হামলায় তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
~যারা আপনারা ব্লগে এবং বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রদের আন্দোলনে ব্যবহৃত কিছু প্ল্যাকার্ড এ অশ্লীল কিছু কথা লেখা ছিল সেগুলো নিয়ে নাচানাচি করেছেন। আপনারা কয়টা অশ্লীল প্ল্যাকার্ড দেখছেন? ৫ টা, ১০ টা, ১৫, ২০ টা? ২০ টার বেশিতো কেউ বলতে পারবেন না। সমগ্র অনলাইন জগত (ফেবু, ব্লগ, মিডিয়া) চা পানের দোকান হাটার রাস্তায় পর্যন্ত এই ১৫/২০ টা প্ল্যাকার্ড নিয়ে আমরা মেতে রয়েছি। অথচ এই আন্দোলনে প্ল্যাকার্ড, শ্লোগান ছিল হাজারো হাজারো। কই সেগুলো নিয়ে তো কোন কথা বলেন নি, আপনাদের গো*রে মাথায় এই কয়েকটা প্ল্যাকার্ড স্থান পেয়েছে কারণ আপনাদের মস্তিষ্কটাই অশ্লীল। তাই আন্দোলনের প্ল্যাকার্ডের ভাষা বুঝতে ব্যর্থ হয়ে আপনারা শব্দচয়ন নিয়ে পরে আছেন।
~আরে রাখেন আপনার সুশীলতা, সুশীলতা বেইচ্চা মুড়ি খান। বাস্টার্ডের সাথে মোকাবেলা করার জন্য এমন কিছু শব্দ ব্যবহার করাটাকে আমি শ্রেয় মনে করি।
~তারপরের খবর আমরা সবাই জানি। ঝিগাতলায় হামলার খবর কোন মিডিয়া কাভারেজ (দুইএকটা ছাড়া) না পেলেও আমরা ফেবু এর মাধ্যেমে অনেক খবর ই জেনেছি। অনেকেই আবার সত্যতার প্রশ্ন নিক্ষেপ করছেন। কেন ভাই লাশের ছবি দেখে আপনাদের মনে হয়না এগুলো আজকের, এগুলো রিয়াল? আহারে আমদের সত্যান্বেষী জনগণ!!! দুঃখ লাগে আপনাদের জন্য, সত্যি অনেক দুঃখ লাগে!!!আপনারা আমাদের মিডিয়া গুলোকেও চিনেন নাই!
~আজকে দুপুরে বাসা থেকে বের হয়ে সাইন্সল্যাব যাই হেটে হেটে (আমার বাসা থেকে যেতে বাস ভাড়া ২০ টাকা।) যেয়ে সেখানেই আক্রমনের খবর শুনতে পাই। একজন ছেলের কাছ থেকে জেনেছি, ওর কথাগুলো শুনেনঃ
আমরা সর্বশেষ প্রায় ১০/১২ জন আটকা পরে যাই, আমার সামনেই তখন দুইজন মারা গেছিলো। আমরা নিজেদের শেষটুকু দিয়ে রক্ষাপেতে চেষ্টা করেছি। শেষ পর্যন্ত ওদের আক্রমণে আমি প্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কিছুক্ষণের মধ্যেই কিভাবে যেন একটা সেফ জায়গায় চলে আসলাম। আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে কাধে করে ঐখান থেকে রক্ষা করে। এরই মধ্যে আমার কলেজের একটা মেয়ে প্লাস আমার খুব ক্লোজ কলেজ ফ্রেন্ডের ছোটবোনসহ ৫ জনকে (মেয়ে) ধানমণ্ডির ওদের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সাথে ওরা পাবলিক প্লেসে আমাদের ফ্রেন্ডদের রেপ করে (৪ জনকে।) শেষ পর্যন্ত ৪ জন স্টুডেন্টস মারা যায়। তাদের সাথে পুলিশ ছিল, পুলিশ ও রাবার বুলেট স্টুডেন্টসদের উপর নিক্ষেপ করে(কথাগুলো বলেছিলেন আব্দুর রউফ কলেজের একাদশ শ্রেণীর একজন ছাত্র। আমি নিজে তার নামটা গোপন রাখছি।) তারপর সেই খবর আরো কয়েকজন স্টুডন্টসদের কাছ থেকে শুনেছি, যারা নিজেরা তখন সেখানে উপস্থিত ছিল। জেনে রাখুন, চোখের পানি কখনো মিথ্যা বলেনা! যেই ছেলের বোনকে নিয়ে গিয়েছিলো লীগের কার্যালয়ে সেই ছেলের সাথে কথা বলতে পারিনি, ও সম্পূর্ণ ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিল। কথা বলার পরিস্থিতিতে ছিলোনা।
~তারপর বিচ্ছিন্নভাবে কয়েক দফা হামলা করা হয় ছাত্রদের উপর। ঝিগাতলার সেই হামলা ধীরে ধীরে সাইন্সল্যাব হয়ে ল্যাবএইড এর সামনে পর্যন্ত সে। তখন ৫ টা ৩০ বাজে। ওদের হামলার শিকার তখন আমি নিজেও হয়েছিলাম। আমরা সবাই ল্যাবএইড এ আশ্রয় নিয়ে নেই। এক ছাত্র ল্যাবএইড এর সামনের ফুটওভার ব্রীজে আটকা পরে। ওর অবস্থা তখন অনেক খারাপ করে ফেলেছিল, প্রায় ৭/৮ জন মিলে। গাছের ডাল বিভিন্ন লাঠি দিয়ে তারা আক্রমণ করে। এছাড়া আরো দুই একজন তখন হালকা আক্রমণের শিকার হয়েছিলো ওদের নিক্ষিপ্ত ইট, লাঠির দ্বারা। ওদের সাথে পুলিশ ও ছিল!!!
সাধারণ জনগণের, লেখক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী শ্রেণীর কবে হুঁশ ফিরবে? কর্তৃপক্ষের টনক নড়বে!!!
~একটি পত্রিকার রেফারেন্সঃ জিগাতলায় দফায় দফায় ‘ছাত্রলীগের’ হামলা
ছবি সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫৪