somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কলি'র কনিষ্ঠ(!) কাহিনী

১৩ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম ভালোলাগা

বৃষ্টি ভেজা নায়িকা দেখে অহরহই নায়ক ধুপ করে প্রেমে পড়ে, সত্যিকার জীবনেও যে তেমনি খুবই সাধারন দর্শন ছেলেকে দেখে এমনটা হবে তা চিন্তাই আসেনি কলি'র। জ্বর ছিলো বলে মন ভার করে ওদের আড্ডার বারান্দায় বসে বসে ঝুমবৃষ্টিতে দলবলে বন্ধুদের ছোটাছুটি দেখছিলো আর সব্বার প্রয়োজনীয় জিনিষ আগলে বসেছিলো। কোথা থেকে চোখ ঝাপসা করা বৃষ্টির মাঝ দিয়ে অনু যখন এগিয়ে আসছিলো ওর দিকে, কি ঘোর যে চোখে লাগল আশপাশ সব সিনেমা স্টাইলে স্লো মোশনে চলতে লাগল। কাছে এসে হাত বাড়িয়ে কি কি সব বলছিলো ও পুরোটা মাথায়ই ঢুকেনি, অবাক হয়ে ভাবছিলো স্লো মোশনের ব্যাপারটা ঘটলো কি করে!! সেদিনের পর থেকে মনটা ধপাস করে আছাড় খেলো ওঠার আর নামই নাই।
মনের কথা আছে মনে, সেদিনের জ্বর কেটে গেছে কিন্তু সেই ঘোর আর কাটেনা। বন্ধুদের আড্ডায় লতায়পাতায় পরিচয় হয় অনেকের সাথে তবে বন্ধুত্বতা হবার মতো চেনাজানা হয়ে ওঠে কমজনের সঙ্গেই। কেউ যেন বুঝতে না পারে তাই ধীরস্হিরে খোজঁখবর করতে লাগল, কার মাধ্যমে ওদের আড্ডায় যোগ দিয়েছে, মানুষটা কেমন - ইত্যাদি।

বাড়ী থেকে আজ বের হয়েছে অনুকে মনের কথা জানাবে স্হির করে। কলি'র জন্মদিনের হই-হুলোড়ের আয়োজনে আজ আড্ডা সরগরম, কিন্তু‌ অনু'র দেখাই নেই। অন্যদের সাথে নানান কথায় সবার ব্যাচ নিয়ে কথা উঠতেই জানলো অনু ওর কয়েক ব্যাচ ছোট!! বন্ধুদের জানানো জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিচ্ছিলো আনমনে, হতবাকের নাকি কষ্টের ঘোর কাটছিল না ওর, এরই মাঝে কখন অনু পাশে বসেছে টেরই পায়নি। ঘোরটা কাটল যখন ধাক্কা দিয়ে বলল - "কিহে খালাম্মা, কততম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবো তোমাকে?"


প্রেম


- "কিরে, তোর এখনও কারো গলা কাটতে পারলি না?? হবে না তোরে দিয়া কিচ্ছু হবে না"।
অনেকদিন পর সব বন্ধুদের গেটটুগেদার চলছে। প্রানের বন্ধুগুলো দৈনন্দিন ব্যস্ততায় দেখা সাক্ষাতের সুযোগই পায়না, কত জমানো সুখ, হাসি কান্না, এক ফুৎকারে সামনে আসছে। গ্রুপের প্রেম বিশারদ(!!) মুনিমের পুরানো অভিজ্ঞতার ঝুলি ঝাড়া শুরু করলো।
- "শোন কলি, তোরে কিবা যাদের এখনো কোন সম্পর্ক নাই, তাদের দিয়ে আর প্রেমভালোবাসা হবে না। তোরা হলি ডেট এ্যাক্সপায়ার্ড"।
সবাই তেড়ে এলো, - "ওই, আমরা কি মেডিসিন নাকি জুস, যে ডেট এ্যাক্সপায়ার্ড ?"
- "দোস্তরা রাগিস না। আমার কথার মানে হলো, ভার্সিটি লেভেলের সময় যে আগপাশ চিন্তা না করে কারো জন্য বেতাল হই আমরা, ওটা হলো সত্যিকার কিছু। ওই লেভেল পার করার পর এখন যেটা হবে, তা কিন্তু অনেক বিষয়আশয় বিবেচনা করে, ওটা কি অনেক কিছুর সঙ্গে
সমঝোতার সম্মেলন না? "
- " তোদের দিয়েও হবে না, কারন একটা এ্যাফেয়ার হবার জন্য দুই বেহায়ার প্রয়োজন। ভালোবেসেছি- এই কথাটা জানানোর জন্য নানান ভাব করতে লাগে, কে আগে বলবে বসে না থেকে নিজে সরাসরি বলতে হয়। এক বেহায়ার বেহায়াপনার ফ্রিকোয়েন্সির সাথে অন্য আরেকজনেরটা মিলে গেলেই একটা সফল এ্যাফেয়ার হয়। কি পারবি তোরা?"

মুচকে হাসি নিয়ে ভাবছিলো কলি, তার কিছুই যেন প্রচলিত ধ্যান-ধারনার সাথে চলে না। সারাজীবনে নাক উচাঁ বলে পরিচিত সে, মুনিমের থিউরীর উল্টো মতে হয়ে, ও আকাশ পাতাল ওল্টানো প্রেমে পড়ল কোন সমঝোতা কিবা বিষয়আশয় ভেবে না। "পৃথিবী"'র কথার মমতা যে কি মায়ার বাধঁনে কলিকে জড়িয়েছিলো। চালচুলোহীন, বয়সে মিলে না, স্ট্যাটাসে মিলে না - মানুষটার অন্যের প্রতি মমত্ববোধটা যে তিরতির অনুভূতি এনে দিয়েছিলো, তাতে কোন কিছু চিন্তা না করেই একদিন হুট করে বলে বসেছিলো ওকে। বেহায়াপনার চুড়ান্তই করেছিলো, কিন্তু নিতান্ত ভদ্রলোকের সামনে!


অত:পর ...


আজ কলির বিয়ে। বন্ধুমহলে বাজি ধরাধরি ছিলো, সবসময় বয়সে ছোট কারো না কারো সাথে জড়িয়ে পড়ে কলি, দেখা যাবে বিয়েও করবে ওমন কাউকে। বিয়ের কথাবার্তা যখন চলছিলো, এই ব্যাপারটা আগেই জেনে রেখেছে, নাহ, ছেলে ওর চেয়ে সাড়ে তিন বছরের বড়। তাই বাজিতে ওদের হার নিশ্চিত জানিয়ে বন্ধুদের সাথে অনেক হাসাহাসি।

বিয়েবাড়ির গেটধরাতে তুমুল হৈ চৈ-এর পর বরপক্ষ মাত্র আসতে পারলো স্টেজে। কাজী সাহেবের ভীষন তাড়া, এখানকার কাজ সমাধা করে তাকে আবার ছুটতে হবে অন্য কমিউনিটি সেন্টারে। বরপক্ষ একটু সুস্হির হয়ে বসতেই তিনি শুরু করলেন তোড়জোর। রেজিস্ট্রি খাতায় প্রয়োজনীয় তথ্যাদি লিখছেন, পাত্রেরটা পূরন করে মেয়েটা তথ্য লিখে কপাল কুচঁকে ফেললেন, তাড়াহুড়ায় কি ভুল লিখলেন? মেয়ের মামাকে জিজ্ঞাসা করলেন আবার। উনি বুঝিয়ে দিলেন বিষয়টা, মেয়ের বয়সে বড়ই পাত্র, তবে সার্টিফিকেট এজ অনুযায়ী ছ'মাসের ছোট!!!

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই নভেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৩৮
৬০টি মন্তব্য ৩৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×