somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সেঞ্চুরিয়ান পোষ্ট

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





না দেখতে দেখতে না, অনেকটা দেরী করেই যেভাবে বর্ষার পরে শীত আসে তারচেয়েও অনেক দেরী করে সামু ব্লগে আমার আজকের এই পোষ্টটির মধ্য দিয়েই পূর্ণ হল শততম পোষ্ট।

ব্লগে কিভাবে কি জন্য এসেছিলাম সেকথা এতদিন পরে আর মনে নেই। মনে থাকার কথাও না কারণ আমি সামুতে একাউন্ট ওপেন করেই লাপাত্তা হয়ে যাই । একাউন্ট কবে খুলেছিলাম সেটা ঠিক মনে নেই, সম্ভবত ২০১৫ শেষ বা মাঝামাঝি দিকে। এরপরে হয়ত ব্লগে এসেছি কিন্তু লগইন আর করা হয়নি। তাই আমি জানতামও না আমার ব্লগের কি হালচাল, সেটা সেফ নাকি জেনারেল না কি অবস্থায় আছে। আসলে ঐ সময়টাতে কিছুটা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কিছু সমস্যা ছিল। সবকিছু মিলিয়ে আমি আবার এই সামু ব্লগে ফিরে এলাম ২০১৬ এর মাঝামাঝি। অর্থাৎ একাউন্ট খোলার প্রায় ১ বছর পরে!
ততদিনে আমি সেফ ব্লগার। কিছু লিখলে সেটা ১ম পাতায় চলে যাচ্ছে, অন্যরা দেখছেন, মন্তব্য করছেন, লাইক দিচ্ছেন; আমার কাছে এটা একটা বিরাট পাওয়া।
যেহেতু আমার অজান্তেই জেনারেল থেকে সেফ ব্লগার হয়ে গেছি তাই আমি জানি না জেনারেল স্ট্যাটাস থাকলে কতটা হতাশা কাজ করে!

২০১৬, ব্লগে আমি তখন কাউকেই চিনি না। মনে পড়ে ভ্রমরের ডানাকে একবার মন্তব্যে আপু বলে ডেকেছিলাম; এটা মনে পড়লে এখনো হাসি আসে।


ব্লগে কি করি:

একবার আমার এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
বলো তো, মাটির লবনাক্ততা বাড়ায় কোন উপাদান?
ছাত্রের সহজ উত্তর: লবণ, স্যার !


ঠিক তাই, ব্লগে আমি করি? ব্লগে ব্লগিং করি!

আমার মতে ব্লগিং এর কয়েকটা ধাপ আছে। যেমন লেখা, পড়া, মন্তব্য দেয়া, মন্তব্যের উত্তর দেয়া,সমালোচনা করা।

আমি কোন পোষ্টে কি ধরনের মন্তব্য করব সেটা নির্ভর করছে ব্লগারের সাথে ব্লগিক ও ব্যক্তিগত পরিচয় এবং লেখার কোয়ালিটির উপর। তবে চেষ্টা করি কূটনৈতিক কোন মন্তব্য না করে লেখা পড়ার পরে যেটা মাথায় আসে সেটাই লিখে দিতে। আসলে সত্যি বলতে অনেক ব্লগারকেই দেখেছি তারা যেন লেখা পড়ার সময় একটা লিস্ট তৈরি করতে থাকেন;ভুলের লিস্ট। তারপর সেই লিস্ট ধরে মন্তব্য করতে থাকেন। এটাকে আমি সমালোচনা পর্যায়ে নিয়ে সাধুবাদ জানাই। তবে মাথায় রাখতে হবে আপনার সমালোচনার তীব্রতার কারণে এই যেন ব্লগে লেখাই বন্ধ করে না দেন। এখন কে কতটা সমালোচনা সহ্য করতে পারবেন সেটা বুঝে তবেই মন্তব্য করা উচিত।

এইতো গেল, সমালোচনা এবার আসা যাক, স্তুতিমূলক মন্তব্যে।

ধরা যাক, আমি একটা কবিতা লিখেছি। কবিতাটা ভাল হয়নি। বা ভাল হলেও অতটা ভাল হয়নি। সেখানে এসে কেউ যদি মন্তব্য করেন, খুব ভাল লাগলো কবিতাটি পড়ে আপ্লুত হয়ে গেলাম। এই ধরনের কবিতা বাংলা সাহিত্যের জন্য সম্পদ।
সেক্ষেত্রে আমাকেই বুঝে নিতে হবে উনি তৈলমর্দন করতে খুব পটু।
সর্বদা চেষ্টা করি মন্তব্যের উত্তরগুলো যথাসম্ভব ভাল করে দিতে। কেননা, আমি যখন অন্য কারো ব্লগে মন্তব্য করি তখন আমি আশা করে থাকি আমি যেন ভাল একটা প্রতিউত্তর পাই। ভাল বলতে বিশদ নয়, যিনি মন্তব্য করেছেন তিনি যেন তুষ্ট থাকেন।

আসলে ব্লগের লেখার কোয়ালিটি কেমন এটাকে এত রূঢ় ভাবে দেখার কিছুই নেই আর একটু গঠনমূলক-ভাবে দেখলেই ভাল হয়। কেউ ভাল লেখে নি তার মানে এই না যে তাকে আমি বলব, কি যা তা লিখেছেন। অখাদ্য লেখা!
এখানে মাথায় রাখতে হবে যিনি পোষ্টটি লিখেছেন এটি তার ভাবনা, আমি তার সাথে একমত নাই হতে পারি।
লেখকেরও একটা স্বাধীনতা আছে যে তিনি ইচ্ছে করেই একটু কোয়ালিটি-লেস লেখা লিখবেন। তবে কেউই ব্যর্থ হতে চায় না।


সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগে একটা জিনিস খুব ভাল লাগছে, একজনের গল্পের উত্তরে অন্য একটা গল্প, কবিতার উত্তরে অন্য একটা কবিতা। এই ব্যাপারটা আগেও ছিল। মাঝখানে অনেকদিন একটু দমে গিয়েছিল, এখন আবার সেই পালে হাওয়া লাগছে। এটা নিয়ে আমি বেশ আশাবাদী।



ব্লগে কি লিখব:


একলোক মাছ বাজারে গিয়ে মাছ বিক্রেতাকে বলল,
- এই ভাই মাছের দাম কত করে? একদাম বলবা মাছের বাজারের মত দামাদামি করতে পারব না।


আপনি ঢুকেই আছেন মাছ বাজারে, এসেছেন মাছ কিনতে আর বলছেন কিনা মাছ বাজারের মত দামাদামি করতে পারতে পারবেন না!

ব্লগটা আসলে একটা মাছ বাজার না হলেও মস্ত একটা মাছের পুকুর তো বলাই যায়। অনেক রকম মাছ চাষি এখানে হরেক রকমের মাছ চাষ করে থাকনে। একই পুকুরে রাক্ষুসে মাছ আছে, রুই মাছ আছে আবার পুটি মাছও আছে। আপনি কোন জাতের মাছ চাষ করবেন সেটা একান্তই আপনার ইচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে মাছের পোনা থেকে মাছ বড় হতে যেমন সময় লাগে তেমনি আপনার লেখার মানও ভাল হতে সময় লাগবে। অন্যদের মাছ বড় বড় আর আমার মাছ ছোট ছোট এটা দেখে মনে কষ্ট পেলে হবে না।
আর যাদের মাছ অলরেডি অনেক বড়, ওজনে তিন কেজি চার কেজি তারা যদি সব পুটি মাছ জল থেকে তাড়িয়ে দিতে চান কিংবা রাক্ষুসে মাছ হয়ে খেয়ে ফেলতে চান সেটাও কিন্তু অশোভন ও বেআইনি।


যাইহোক, একজন লেখকের কাছে তার সবগুলো লেখাই যেমন প্রিয় তেমনি পাঠকের কাছেও সব লেখাগুলোই প্রিয় হবে এমনটা ভাবা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। তবে লেখকের উচিত কোয়ালিটি লেখার দিকে নজর দেয়া। লেখা শেষ করার জন্য সময় নেয়া।

ফেসবুক ও ব্লগের মধ্যে সবথেকে বড় তফাত হল, বৃষ্টির দিনে এক লাইনে মেঘ ডাকছে বৃষ্টি হচ্ছে জলের গায়ে জল জমেছে এটা লিখে ফেসবুকে পোষ্ট দিলে আপনি হয়ত ফেসবুকে ১০০ প্লাস লাইক পেয়ে যাবেন কিন্তু ব্লগে এইরকম পোষ্ট দিলে দুই চারটা লাল পতাকা ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।

কি লিখবেন? কেন লিখবেন ? কোন শ্রেণীর পাঠকের জন্য লিখবেন সেটা মাথায় রেখে তবেই লিখবেন।
কেউ কেউ অবশ্য বলে থাকনে এত ভেবেচিন্তে লেখা হয় না; কিবোর্ড হাতে নিলেই লেখা এসে যায়। তাদের অবস্থা কতটা ভাল সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।


আজ আর নাঃ
অলরেডি ৮২৭ শব্দ লিখে ফেলেছি আজ আর নয়। এইগুলো হজম করতে পারলে হয়।
যেহেতু এটা আমার শততম পোষ্ট তাই এখন আমার সময় এসেছে হাত উঁচিয়ে ব্যাট জাগিয়ে সেঞ্চুরি সেলিব্রেট করা !



আপনাদের জন্যঃ

এতক্ষণ যারা মনোযোগ দিয়ে বা না দিয়ে পোষ্টটি পরলেন কিংবা পড়লেন না তাদের সকলের জন্যই রয়েছে ছোট খাট কিছু ভার্চুয়াল উপহার।

নিচের এই QR কোডটি স্ক্যান করেই আপনারা পেয়ে যাবেন যার যার জন্য রাখা নির্ধারিত গিফট। মনে রাখবেন কেউ একটার বেশি নিতে পারবেন না।


QR কোড ১ঃ



QR কোড ২ঃ



QR কোড ৩ঃ



কে কি পেয়েছেন জানাতে ভুলবেন না।


সবাইকে ধন্যবাদ। শুভ অপরাহ্ণ।


শীতের সন্ধ্যায় একটি জমপেশ চায়ের আড্ডার নিমন্ত্রণ রইলো।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩
৫৭টি মন্তব্য ৫৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×