somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো সে আত্মহত্যা করবে

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লেখাটির জন্য প্রথমে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচিছ। সমাজের দর্পন এই লেখাটি।

ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্র আলিফ প্রাণী বিদ্যা বিভাগে প্রথম বর্ষের ছাত্র। কাকলি ঐ একই বিভাগে পড়াশুনা করে। তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সেই ভার্সিটি জীবনের প্রথম থেকেই। গ্রুপ স্ট্যাডি প্রাইভেট সবখানে আলিফ আর কাকলি একসাথে। একজন আরেকজনকে তুই তুকারি করে ডাকে। মাঝে মধ্যে তুমি করে একে অপরকে ডেকে ভালোবাসার জানান দেয়। বন্ধু কাম ভালোবাসার মানুষ। কিন্তু কেউ কাউকে খোলাশা করে কিছু বলে না।


সকাল বেলা কাকলিকে সাথে নিয়ে আলিফ ক্যাম্পাসে যাবে এটা যেন রুটিন ডিউটি এবং সাথে করে নিয়ে আবার রুমে ফিরিয়ে দেয়া। কাকলি থাকে মেসে আলিফ স্থানীয় ছেলে। ছেলেরা এমনিতে সাহসি মেয়েদের বেলা একটু সমস্যা সমাজ তাদের অন্য নজরে দেখে বিশেষ করে যারা ছেলেদের সাথে বেশি সখ্যতা দেখিয়ে পথ চলে। সে হিসেবে কাকলির কোন ভয় নেই কারন তার বাবা-মা কেউ থাকে না তার কাছে, সে বলতে রশি ছাড়া খোলা গাভি।


মোবাইলে কাকলির একজনের সাথে প্রায়শই কথা হয় তার সাথে প্রেমও হয়ে যায়। আলিফ জানতে পারে বিষয়টি। এবার আলিফ রেগে যায় এবং ভাবে কাকলিকে যেভাবেই হোক তার হাত ছাড়া করা যাবে না।


দুইদিন আলিফের কোন খোঁজ নাই। ইদানিং কাকলিও তার আর খোজ খবর নেয় না তেমন। একদিন কাকলিকে ফোনে আলিফ জানায় সে অসুস্থ বাসায় শুয়ে পড়ে আছে, একটু বাসায় আসতে পারবে কিনা? কাকলি কোন কিছু না ভেবে আলিফের বাসায় গিয়ে নক করে। ভিতরে থেকে আলিফের এক বন্ধু অর্থাৎ কাকলিরও বন্ধ এসে বলে তুই এসেছিস? ভিতরে আয়।
: কি রে কি হয়েছে। হুট করে অসুস্থ হয়ে পড়লি। কিছু খেয়েছিলি নাকি? মানে মদ গাজা ভাং !!
: না, কিছু খাই নাই। কিন্তু আজকে খাবো।
: আমিও খাবো।
: তুই আমাকে খা।
: কেন তোকে কেন খাবো। আমি চর্বি ওয়ালা গোস খাই না।
এই বলে কাকলি হাসতে থাকে। এমনি সময় আলিফ বিছানা থেকে উঠে কাকলিকে বুক দাবা করে। জড়িয়ে ধরতেই কাকলি বলে উঠে-
: এই কি করছিস! ছাড়! বাসায় তোর আম্মা আছে না, দেখে ফেলবে তো।
: বাসায় কেউ নেই।
এবার কাকলি সত্যি ভয় পেয়ে যায়। কিছু বলবে কিন্তু মুখ দিয়ে কোন শব্দ বা চিৎকার কোনটাই সে বের করতে পারে না। এদিকে যে বন্ধুটি ছিলো সে দরজা বাহির থেকে আটকে দিয়েছে। কি করবে সে ভেবে পায় না।
: দেখ, আলিফ ভালো হবে না কিন্তু। তুই কি এজন্য আমাকে তোর বাড়িতে ডেকেছিস। তুই মিথ্যা অসুস্থতার কথা বলে আমাকে বাড়িতে ডেকেছিস? তোর কাছে আমি এটা আশা করি নি। দরজা খুলতে বল আমি চলে যাবো।
আলিফ নাছোরবান্দা সে ছাড়ার মানুষ নয়। আবার সে কাকলিকে জড়িয়ে ধরে
: তুই অন্যের সাথে প্রেম করবি আর আমি ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকবো?
: তার মানে !
: আমি বুঝি কিছু বুঝি না।
: আলিফ ভালো হবে না কিন্তু। আমি তোকে শুধু বন্ধু ভাবি। আর তুই .... প্লিজ আমাকে ছেড়ে দে বলছি!


একটি ঘরে একটি ছেলের সামনে একটি মেয়ে কতটা নিরুপায় যখন ছেলেটি হিংস্র বাঘের মত গরগর করছিল শিকারীর উপর ঝাপিয়ে পড়ার অপেক্ষায়। যা হবার তাই হলো। একটি মেয়ে তার সতীত্ব হারানোর পর কতটা ভেঙ্গে পড়তে পারে তা বলার বাকি থাকে না।


রুমে ফিরে সেই যে ডুকরে ডুকরে কাঁদতে শুরু করলো আর কান্না থামে না কাকলির। বান্ধবিরা জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে কাউকে কিছু বলে না। কিভাবে বলবে? বলেই বা কি হবে? পৃথিবীটা তখন তার কাছে দূর্বিষহ হয়ে উঠে। যেন বেঁচে থাকার শেষ ইচ্ছাটাও তার মধ্যে অবশিষ্ট নেই। এমনি সময় ফোন বেজে উঠলো। কে ফোন করেছে? নিশ্চই বাড়ি থেকে নতুবা ঐ কুত্তাটা ফোন করেছে এমন ভাবছিল কাকলি। কিন্তু ফোনটি হাতে নিয়ে দেখে না তার মোবাইলে যে ছেলেটির সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সে। এবার একটু সাহস পায় কাকলি। ভাবে তাকে বিষয়টি খুলে বলবে। সব কিছু শুনে রুবেল তাকে শান্তনা দিয়ে বলে, “কোন ব্যাপার না, তুমি বাসায় চলে আসো”।


কাকলি পরের দিন সকাল বেলা কাউকে না জানিয়ে বাসায় চলে আসে। এদিকে রুবেলকে কাকলি ফোন করে কিন্তু রুবেল কেনজানি ইদানিং তাকে ইগনোর করছে বলে মনে হয়। ফোন বেজেই যায় কিন্তু রিসিভ হয় না। এর আগে একটি মিসকলই যথেষ্ট ছিল। বেশ কয়েকদিন কেটে যায় আলিফও আর ফোন দেয় না সম্ভবত ভয়ে রুবেলও এড়িয়ে চলছে কাকলিকে। বাড়িতেও কিছু বলতে পারছে না কাউকে। কাকলিকে যে বিষয়টি বারবার ভীত করে তুলতো তা হলো তাকে আরো ৩টা বছর সেই আলিফের এলাকায় থেকে পড়াশুনা করতে হবে। কিভাবে সে কি করবে ভেবে কুল কিনারা খুজে পায় না। এমনি করে অনেক দিন বাসায় থেকে পরীক্ষার জন্য ক্যাম্পাসে যেতে হবে বিধায় আবার মেসে ফিরে এলো।


কাকলি এখন মোবাইল ব্যবহার করে না। বান্ধবিদের নাম্বার থেকে বাড়িতে যোগাযোগ করে। কারন সে খুব ভালো করে জানে নাম্বার থাকলে আবার সেই কুত্তাটা তাকে বিরক্ত করবে। ক্যাম্পাসে সেদিন ফরমফিলাপের ডেট ছিল। আলিফ দুর থেকে দেখে একটি মেয়ে বোরখা পড়ে আসছে। চিনতে সমস্যা হয় না কারন অনেক দিনের পরিচিত হাটা দেখেই বুঝা যায়।
: কি রে কেমন আছিস?
কাকলি কোন উত্তর দেয় না।
: বললি না যে কেমন আছিস? তুই তো শেষ।
: কুত্তার বাচ্চা একটা কথাও বলবি না।
: শুন, তোকে একটা জিনিস দেখাবো। যাওয়ার সময় দেখা করিস।
মনে মনে কাকলি ভাবে কি এমন দেখাবে আলিফ তাকে। ক্যাম্পাসের যাবতীয় কাজ শেষ করে রুমে ফেরার পথে পথ আগলে দাড়ায় আলিফ।
: একটা জিনিস দেখ, ভালো লাগবে এই বলে সেদিনের রুমে নিয়ে গিয়ে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়েছিল আলিফ তারই ভিডিও ফুটেজ দেখায় কাকলিকে।


কাকলির মাথায় এবার যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। তার পায়ের মাটি সরে যেতে থাকলো। জীবনে সে এমন একটি সময়ে এসে পড়বে কোনদিনও ভাবতে পারে নি। অনেক কষ্টে দুলতে দুলতে রুমে ফিরে এলো সে। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো সে আত্মহত্যা করবে - (চলবে)

কেন মেয়েটিকে নষ্টা গালি শুনতে হয় বারবার !! (পর্ব-১)


কেন মেয়েটিকে নষ্টা গালি শুনতে হয় বারবার !! (পর্ব-২)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:০৯


ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।

ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×