somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি প্রেমের মিনি উপন্যাস: একগুচ্ছ প্রেমপত্র এবং অতঃপর ...

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১.
হে আগন্তুক,
আমি সবসময় তোমাকে ভালবেসেছি।
হয়তোবা এ বিষয়টা এখনও তোমার অজানা।
সবারই অজানা।
কেউ জানে না, কেবল আমি ছাড়া।
তাই আমি এখন আমার এতোদিনের লজ্জার মাথা খেয়ে এ কথাটি তোমাকে বলতে চাই।
আমি তোমাকে ভালবাসি।
সবসময়।
কিন্তু তুমি আমাকে কখনো খেয়ালই কর না।
২.
আমি দূর থেকে তোমাকে দেখছি। লুকিয়ে লুকিয়ে।
কারণ, তোমার চারপাশে তোমার বন্ধুরা।
কারণ, আমি একটা ভীতুর ডিম।
তোমার কাছে গিয়ে মনের কথা বলার মতো ওতো সাহস আমার নাই।
কারণ আমি জানি,
তোমার দ্বারা আমাকে ভালবাসা প্রায় অসম্ভব।
৩.
আমি তোমার পাশ দিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।
তুমি তোমার বন্ধুদের নিয়ে মাঠে খেলছ।
তোমাকে কি যে ভয়ানক হ্যান্ডসাম লাগছে।
এটাই তোমার সাথে আমার পার্থক্য।
আমি মোটেও রূপবতী না, আর তুমি ভয়াবহ হ্যান্ডসাম।
তুমি কি আর আমাকে ভালবাসবে?
৪.
আজ আমার মন ভীষণ খারাপ।
দুদিন ধরে তুমি স্কুলে আসছো না।
আমি নিশ্চিত তুমি আমাকে পছন্দ কর না।
করলে কখনো স্কুল মিস দিতে না।
আমাকে দেখার জন্য হলেও স্কুলে আসতে।
আমি যেমন করে প্রতিদিন স্কুলে আসি। পড়ার জন্য না। তোমাকে দেখার জন্য।
তুমুল জ্বর থাকলেও আসি।
৫.
ভালবাসা নাকি খোলা দরজা।
এটা কি সত্যি?
সত্যি কি ভালবাসা একটা খোলা দরজা? যে কেউ তাতে প্রবেশ করতে পারে?
নাহ! আমার বিশ্বাস হয় না।
৬.
কাল রাতে তোমাকে স্বপ্নে দেখলাম।
তোমার পরনে ছিল একটা কাল টি-শার্ট আর ব্লু জিনস।
আমি একটা সাদা জামা পরেছিলাম।
তুমি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়েছিলে।
আমি হাসিমুখে এগিয়ে যাচ্ছিলাম।
কিন্তু, না। আমি তোমার কাছে কিছুতেই পৌছাতে পারছিলাম না।
আমি হাটছিলাম আর হাটছিলাম।
তুমি এতো দূরে দাঁড়িয়েছিলে!
রাস্তা ফুরোবার আগেই আমার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল।
এটা কি তবে ইশ্বরের পক্ষ থেকে কোন সতর্কবার্তা ছিল?
ইশ্বর কি আমাকে জানিয়ে গেলেন আমার এই প্রাপ্তিহীন ভালবাসা থেকে যেন আমি পিছু হটে যাই?
কী জানি!
৭.
আমার বন্ধুরা বলতো, তোমার প্রতি আমার ভালবাসা আসলে নাকি সত্যিকারের ভালবাসা নয়!
একে নাকি মোহ বলা হয়।
আমিও নিজেকে অনেকবার প্রশ্ন করেছি।
মন প্রতিবারই উত্তর দিয়েছে-
না মেয়ে, তুমি তাকে আসলেই ভালবাস।
৮.
আমি একটা প্রেমের গল্প পড়েছি।
প্রেম বুঝি কেবল বেদনাময়?
গল্পটা কেন যে পড়লাম!
এখন আমি বুঝতে পারছি, আমার এ ভালবাসা কখনোই সত্যি হবে না।
হায় প্রেম! ভাংচুর প্রেম!
আমি তো তোমার চোখে কখনোই পড়ব না!
না এখন, না ভবিষ্যতে।
কখনোই না।
৯.
আমার বাবা আমাকে আর মাকে নিয়ে গেলেন একটা বাড়ী দেখাতে। উনি সেটা কিনতে চান।
ঘরটা দেখলাম।
গোলাপি রঙের সেই ঘর।
ভ্যালেন্টাইনের মতো গোলাপি রং।
গোলাপি রঙটা আমাকে তোমার কথা মনে করিয়ে দিল।
আমি বাবাকে নিষেধ করলাম বাড়িটা কিনতে।
উনার পছন্দ হলেও যেন না কিনে বাড়িটা।
গোলাপি যার রঙ।
গোলাপি বাড়িটা আমাকে যে তোমাকে পাওয়ার সম্ভাবনাহীনতার কথা মনে করিয়ে দিল।
১০.
বিষয়টা নিয়ে আমি অনেক ভেবেছি।
যেহেত বাবা বাড়িটা পছšদ করেছিলেন আমার নিষেধ করাটা উচিত হয় নি।
হয়তোবা আমার উচিত ছিল বাড়িটাতে থাকার আর যতোবার ওটা তোমার কথা আমাকে মনে করিয়ে দিত ততোবার আমার সেই না পাওয়ার কষ্টটা অনুভব করার।
এভাবে কষ্ট সইতে সইতে হয়তো বা তোমাকে আমার সেই গোলাপি বাড়িতে নিয়ে আসতে পারতাম।
তারপর হয়তোবা গোলাপি ভালবাসায় আমরা দুজনে দিন কাটাতে পারতাম।
হয়তো বা!
১১.
হাতাশা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল।
তাই আমি গুগল এর দ্বারস্থ হলাম। ভালবাসার কিছু পঙক্তি খুঁজে পড়ার জন্য।
ভেবেছিলাম পংক্তিগুলা আমার হাতাশা কটিয়ে দিবে।
কিন্তু সেটা ঘটল না।
আমি কয়েক ঘন্টা ধরে কাঁদলাম।
কারণ হয়তোবা আমার প্রিয় নাক ফুলটা খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
হয়তোবা তোমার কথা ভাবতে ভাবতে আমার হাতের আইসক্রিমটা গলে পড়েছিল বলে।
হয়তোবা কেঁদেছিলাম এই জন্য..
এই জন্য যে ভালবাসার সকল পঙক্তিই শুধু বিষাদের কথা বলে, বিরহের কথা বলে।
এই জন্য যে গুগল করে বের করা সকল কথামালাই কেবল তোমাকে না পাওয়ার কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল।
ভালবাসা কেন এতো কাঁটাময়?
স্কুলে যদি ভালবাসা নামের কোন বিষয় থাকতো তবে আমি কখনোই তাতে পাশ করতে পারতাম না।
কারণ আমি ভালবাসতে জানি না। ভালবাসা প্রকাশ করতে জানি না।
কারণ আমিই সেই মেয়ে যার ভালবাসার মানুষটা আমার অস্তিত্ব সম্পর্কেই জানে না।
চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৩৬
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×