আমি আর কত কাদঁবো নিরঞ্জন
ছেলে বেলায় মাকে হারিয়ে
আমার ঘর হয়ছে গোরস্থান।
সকালে কেঁদেছি মার কবরে, বিকেলে
কোলে বাবার
আমার কান্না দেখে অনাত্মীয় স্বজনের বুক
করতো হা হা কার।
মামীমা আমাকে বলেছিলেন
কাঁদিস না খোকা তোকে আদরে রাখবো।
মা নেইতো কি হয়েছে
আমি তোর মা হয়ে থাকবো।
সেই মামীমা আমাকে গিয়েছিল
ভুলে
নিজের সংসারের ঘানি টানতে
আমি তখন বুক ভাসিয়েছি দুই নয়নের
জলে।
অবুঝ বালক কে কত জনে দিয়েছ
সান্তনা
আকাশের তারা দেখিয়ে
কত ব্যাথা ছিল আমার ছোট মনে
তুমি জানো না ।
বাবা আমাকে মায়ের গল্প শোনাতে
বুকে জড়িয়ে
নিঃশব্দে চোখের জল আমার কত
গেছে গড়িয়ে।
কত আপন পরের কাছে যে
গিয়েছিলাম
যে আপনার জন ফিরিয়ে তাকায়নি
আমরা কি তাদের কাছে কিছু
চেয়েছিলাম?
সবার খুশির জোয়ারে বইয়ে যেত
ঈদের দিনে
লাল জামা টুপি লাঠাই ঘুড়ি নয়
আমি কেঁদেছি একলা শুণ্য ঘরে
মা বিনে।
স্কুলের মাষ্টার মশাই আমায় দিয়েছিল
ধিক্কার
নেংরা ইউনিফর্মের জন্য
বাবার চোখের জলে সে কাপড় হয়েছিল
পরিস্কার।
যে রমাদিদি মণিকে মায়ের আসনে
বসিয়েছিলাম
সেই আমাকে অপয়া বলেছিল বলে
সারা রাত চোখের জলে বালিশ
ভিজিয়েছিলাম।
ভালবেসে মাধবী আমার নিতে চেয়েছিল
সব কান্না
নিরজ্ঞন তুমি কি জানো?
সব ছিল তার মিষ্টি কথার নাটুকে
প্রতারনা।
আমার এখন বুকে কষ্ট জল নেই
দুই চোখে
ত্রিশ বছর পার করেছি
শশ্মানের আগুনে পুড়ে
ধুকে ধুকে।
বাবার চোখও শুকিয়ে গিয়েছে
নেই আর পানি
ধুসর চোখে প্রতিক্ষায় থাকে
সেই চোখে বাবা ঝাঁপসা দেখে
পড়েছে এখন ছানি।
বাবা বললেন খোকা আমি চলে যাব
তুমি পড়ে রবে
ও নিরঞ্জন তুমি বল
এই জীবনে আমাকে আরও কতটা
কাঁদতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৪