রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় সুন্দরবন হোটেলের সামনের আইল্যান্ডে শোভাবর্ধন বা আকর্ষণ সৃষ্টির জন্য যে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মূর্তিটি বসানো হয়েছিল শনিবার ভোরে সেটি ভেঙে পড়েছে। ঘটনাক্রমে তখন সেখান দিয়ে রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এক রিকশাওয়ালা। দুর্ভাগ্যক্রমে ভেঙে পড়া বাঘের মূর্তিতে চাপা পড়েন ওই রিকশাচালক। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার জানান তার মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে গণমাধ্যম এতটুকু খবরই দিয়েছে।
বাঘের মূর্তি ভেঙে পড়ার ঘটনাটি নিয়ে তেমন কিছু বলার ছিল না, যদি না এ ঘটনায় একজন আদমসন্তানের মৃত্যু না ঘটত। যদিও আদমসন্তানটি রিকশাওয়ালা হওয়ায় এ নিয়ে পানি ঘোলা হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। আবার বিষয়টিকে হালকাভাবে নেওয়ারও কোনো কারণ নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে শোভাবর্ধনের জন্য রাজধানীসহ দেশের নগরগুলোতে, ব্যক্তিপর্যায়ে গড়ে ওঠা পিকনিক স্পট, শিশুপার্ক, অন্য পার্কগুলোকে বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তিতে সাজানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হচ্ছে ভাস্কর্য। রাজধানীর মতো স্থানে নগর সৌন্দর্য বাড়াতে তৈরি করা বাঘটিই যদি বিনা ভূমিকম্পে ভেঙে পড়তে পারে তাহলে অন্যগুলো নিয়ে ভয় হওয়া তো স্বাভাবিক।
এ ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা হচ্ছে, স্থাপনা কিংবা ভাস্কর্য তৈরি বিজ্ঞানসম্মত হতে হবে। বিজ্ঞানকে না মেনে ফাঁকির গাঁথুনিতে বৃহৎ কোনো স্থাপনা গড়ে তুললে তা জনজীবনের জন্য ঝুঁকি হবে বৈকি। পার্ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তার মোড়ের মতো জনসমাগমস্থলে এমন স্থাপনা হলে তা আরও ঝুঁকিপূর্ণ। নান্দনিকতার নামে এমন ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা যাতে গড়ে না ওঠে সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে। আর নজরদারির ফাঁক গলে কেউ যদি এমন স্থাপনা গড়ে তোলে এবং তার পরিণতি এমন হয়, তাহলে স্থাপনার মালিক ও স্থপতিকে আইনের আওতায় আনতে হবে; যাতে ভবিষ্যতে কেউ সৌন্দর্যের নামে মানুষের জান নেয়ার মতো কোনো খড়গ তৈরি করতে সাহস না পায়।
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৮:৪৪