somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাউবয়

২৯ শে মার্চ, ২০১৮ দুপুর ২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


১.
ছিপছিপে গড়ন, চেহারা উজ্জ্বল শ্যামলা, উচ্চতা ছ'ফিট না হলেও কাছাকাছি। বয়স ত্রিশ-পয়ত্রিশ হবে। নাম সান্তনু দত্ত। বাইরে বের হলে সব সময় স্যুট-টাই পরলেও বাসায় জিন্সের সাথে ফতুয়া কখনো বা সোয়েটার। মুখের পানে দৃষ্টি দিলে একজন সহজ-সরল আর স্বপ্নবাজ মানুষের অবয়ব চোখে পড়ে। মোটা ফ্রেমের চশমা আর চিকন গোঁফটি সারাক্ষণ তার হাসিমাখা চেহারাকে আরো উজ্জ্বল করে মাতিয়ে রাখে। হালকা-পাতলা গড়নে স্পস্টত একটি নিষ্পাপ আর বুদ্ধিদ্বীপ্ত চিন্তাশীল মানুষের ছাপ।

বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায়। পড়াশুনা "ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি রুরকী" সংক্ষেপে আইআইটি রুরকী, উত্তরখন্ড (পূর্বে উত্তর প্রদেশ ছিল)। পেশায় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। দুই বছর তিন মাস হলো লন্ডনে আছেন। পাঁচ বছরের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে লন্ডনে এলেও ছয় মাস হলো নিয়োগদাতা বৃটিশ কোম্পানীটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় চাকরি নেই। প্রতিনিয়ত এখন নতুন চাকরির চেষ্টায় আছেন, কিন্তু ব্যাটে-বলে হচ্ছে না। এদিকে ঘর ভাড়া, খাওয়া খরছ আর টুকটাক শপিং করে হাতের জমানো শেষ সম্বল পাউন্ড স্টারলিং প্রায় শেষ। থাকেন সাউথ ইস্ট লন্ডনের 'ফরেস্ট হিল' স্টেশনের পেছনদিকের পুরাতন একটি ফ্লাটে।

পরিচয়টা এভাবে-
-- স্যার, টেকওয়ে প্লীজ। থ্যাংকস ফর ওয়েটিং।
-- ইটস ওকে। ওয়েলকাম, ভাই।
-- ভাই!, আপনি বাঙালি?

মনের উত্তেজনাকে দমিয়ে রাখতে না পেরে জানতে চাইলাম। লন্ডনে অপরিচিত কারো মুখ থেকে বাংলা শুনলে ভীষণ ভালো লাগে। মনে হয় কত বছরের পরিচিত, আপনা লোক। এটাই হয়তো মাতৃভাষার সবচেয়ে বড় শক্তি। রাজনীতি, দূরত্ব আর মানচিত্র মানুষকে কখনো বিভক্ত করতে পারে না, যদি ভাষার সংযোগ থাকে। ভাষার সাথে একটি জাতির আবেগ-অনুভূতি, ইতিহাস, কৃষ্টি-কালচার আর সংস্কৃতি জড়িত।

-- আমি, শান্তনু। শান্তনু দত্ত। কলকাতার বাঙালি। তোমাদের টেকওয়ে থেকে মাঝে মাঝে খাবার নেই। ব্যাচেলর মানুষ, রান্না-বান্না করতে একদম ভালো লাগে না। তুমি নতুন এসেছো এজন্য পরিচয় হয়নি, বাকি সবার সাথে পরিচয় আছে।
-- আপনার সাথে পরিচিত হয়ে ভালো লাগলো, দাদা। বাঙালি কাস্টমার পেলে খুব ভালো লাগে। মন খোলে বাংলা বলা যায়। তবে খুব একটা পাই না।
-- হ্যা, ঠিক বলেছো ভাই। বাংলায় কথা বলে আমারও ভালো লেগেছে। কবে এই টেকওয়েতে জয়েন করেছো?
-- আজ তৃতীয় দিন। আমি মামুন, বাংলাদেশি বাঙালি। বাড়ি সিলেট।
-- সিলেট! লন্ডনে তো বাঙালি মানেই বাংলাদেশি আর বাঙলাদেশি মানেই সিলেটি। সিলেটি ভাষা একটু কঠিন লাগে আমার কাছে। তোমাদের টেকওয়ের মালিক হালিম ভাইয়ের বাড়িও সিলেট। উনার সব কথা ঠিকমতো বুঝতে না পারলেও সমস্যা নেই, ভালো বুঝাপড়া আছে আমাদের মাঝে।
-- দাদা, সিলেটি ভাষা বৈচিত্র্যময় আর এর ইতিহাস খুব সমৃদ্ধ। আপনি নিশ্চয়ই নাগরিলিপি সম্বন্ধে শুনেছেন। একটা সময় সিলেট, কুমিল্লা, ত্রিপুরা আর আসামের একটি অংশে নাগরি ভাষা বেশ প্রচলিত ছিল। নাগরী ভাষায় আলাদা বর্ণমালা আছে। এজন্য সিলেটি ভাষার সাথে পশ্চিমবঙ্গের ভাষার কিছুটা পার্থক্য আছে। সিলেটি ভাষায় 'অহমিয়া' ভাষার প্রভাব স্পষ্ট। আপনাদের যেমন 'উড়িয়া' ভাষার প্রভাব আছে।
-- বাহ, নাগরিলীপি সম্বন্ধে নতুন তত্ত্ব পেলাম। কোন পজিশনে কাজ করো, তুমি?
-- কুক অর্থাৎ শেফের সহযোগী। বলতে পারেন ছোট বাবুর্চি! তবে মাঝে মাঝে টেলিফোনে টেকওয়ে ডেলিভারির অর্ডারও নেই।
-- খুব ভালো। এতে ইংরেজি চর্চাটা হবে, কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সারাদিন খুব খাটুনি গেছে, আজ তাহলে উঠি, ভাই। প্রতিদিনই তো দেখা হবে তোমার সাথে। আরো কথা হবে। আমি টেকওয়ের ঠিক উপরের ফ্ল্যাটে থাকি।
-- দেখা হবে, দাদা। কালকে আসবেন কিন্তু।

সান্তনুদার সাথে এভাবেই কথা শুরু। প্রায় প্রতিদিন সন্ধায় দাদা টেকওয়ে নিতে আসেন। ভেজিটারিয়ান বলে বেশিরভাগ সময় তার সবচেয়ে প্রিয় এগ ফ্রাইড রাইসের অর্ডার দিতেন। মাঝে মাঝে মাশরুম রাইস, ভেজিটেবল রাইসও নিতেন। তবে একটার বেশি অর্ডার দিতেন না। সন্ধায় লাঞ্চ, ডিনার একসাথে সারতেন। দিনের বেলা আলুর দমের সাথে ডিমপুচ নিজেই তৈরী করতেন। কখনো কখনো কফির সাথে টেস্কো থেকে কেনা প্যাকেটের পরোটা, আটা রুটি আর লাঠির মতো লম্বা এক ধরনের শক্ত ব্রেড কলার সাথে মিশিয়ে খেতেন। চাকরির ব্যস্থতা না থাকলেও সফটওয়্যার বিষয়ক বই আর ল্যাপটপ নিয়ে পড়ে থাকতেন সারাদিন। পাশাপাশি, নতুন চাকরির জন্য আবেদন করা এবং অনলাইনে চাকরির সাক্ষাতকার নিয়ে ব্যস্ততায় কেটে যেতো দিনের একটা বড় সময়।

দাদার চাপাচাপিতে দীর্ঘ বাস ভ্রমন করে একদিন ছুটির দিনে ফ্লাটে উপস্থিত হই। সাথে ছোট এক বক্স আপেল, ফ্রাইড চিকেন উইংসের সাথে পটেটো চিপস এবং দাদার পছন্দের কিছু দেশি খাবার।

-- স্বাগতম।
-- দুঃখিত দাদা, একটু দেরী হয়ে গেল।
-- আরে এটা কোনো ব্যাপার? এতো দূরের পথ একটু দেরী তো হবেই। তুমি কী বাসে এসেছ?
-- হ্যা, দাদা। প্রথমে ওয়ান জিরো এইট বাসে লুইসাম স্টেশন, তারপর ওয়ান এইট ফাইভ বাসে এ পর্যন্ত আসলাম। পাক্কা একঘন্টা বিশ মিনিটের জার্নি।
-- ওভার গ্রাউন্ড ট্রেনে আসলে তো বিশ-পঁচিশ মিনিটে লাগতো।
-- তা পারতাম, ঠিক। তবে দ্বিগুণ ভাড়া থেকে রেহাই পেতে দীর্ঘ বাস যাত্রা। দুই পাউন্ড মানে দু'শো বিশ টাকা সাশ্রয় হলো।
-- ঠিক আছে। স্টুডেন্ট মানুষ টাকা-পয়সার দরকার আছে।
-- দাদা, টেকওয়েতে কাজ করে যে বেতন পাই তা দিয়ে পকেট খরছ, যাতায়ত খরছ আর থাকা-খাওয়ার পর তেমন কিছু অবশিষ্ট থাকে না। মাঝে মাঝে দেশেও টাকা পাঠাতে হয়। আর ইউনিভার্সিটির টিউশন ফি তো আছেই।
-- অনেক স্ট্রাগল করছো, তাহলে? মন খারাপ করো না।
-- এতে আমি অভ্যস্ত, দাদা। দেশেও নিজে টিউশনি করে খরছ চালাতাম। কষ্ট হলেও ম্যানেজ করতে পারি আমরা। এমন অবস্থা মোকাবেলা করতে হবে তা জেনেই এ দেশে আসা। লন্ডনের মতো একটি ব্যয়বহুল শহরে আমাদের মত হত দরিদ্র মানুষদের জীবিকা নির্বাহ করা যে কতটুকু কষ্টসাধ্য তা ভোক্তভুগী ছাড়া কেউ বুঝবে না।
-- অনেকে তো দেখলাম দেশ থেকে টাকা এনে এখানে পড়াশুনা করছে।
-- দেশের সবাই কি আর আমার মতো? কেউ শিল্পপতির ছেলে, কেউ সচিব, জজ, ব্যারিস্টারের ছেলে। অনেক ঘুষখোর দূর্ণীতিবাজের ছেলে-মেয়েরাও আছে। আমি এসব ক্যাটাগরির বাইরে। দেশের সাধারন ভোটার। যারা সংসদ নির্বাচনে নিজের ভোট দিয়ে গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালন করি প্রতিনিয়ত।
-- পশ্চিমবঙ্গের অবস্থাও একই।
-- হতে পারে। কখনো যাওয়া হয়নি, ওপারে।
-- অন্যান্য দিন কিভাবে কাজে আসো?
-- বসের গাড়ি দিয়ে আসি। আসার সময় তিনি আমাকে বাসা থেকে নিয়ে আসেন।
-- অনেক কথা হলো, এবার একটু ওয়েট করো, ভাই। তোমার জন্য কিছু আপ্যায়নের ব্যাবস্থা করিছি।
-- লাগবে না, দাদা। পেট ভরা আছে। শীতের দেশ, পেটের খাবার সহজে পঁচতে চায় না।
-- ভাইয়ের বাড়িতে এসেছো, কোন কথা নেই চুপচাপ বসো, আমি আসছি।

টেকওয়েতে কাজ করলেও দুই তলায় উঠা হয়নি কখনো। তিন বেডরুমের ফ্ল্যাট এটি। দাদা থাকেন মাঝারি মানের একটি রুমে। আছে শেয়ারে একটি ডাইনিং, কিচেন ও বাথরুম। কোন সিটিংরুম নেই। দাদার ঠিক পাশের রুমে একটি পোলিশ কাপল থাকে। অন্য সিঙ্গেল রুমটিতে রুমানিয়ান একটি মেয়ে থাকে। দাদার রুমটা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হলেও অগোছালো। দেশি-বিদেশি প্রচুর বইয়ে টাসা। সব বই ইংরেজিতে লেখা আইটি বিষয়ের। আছে আইবিএমের একটি পুরাতন ল্যাপটপ। ছোট একটি টেবিল, সাথে ছোট একটি চেয়ার। একটি সিঙ্গেল সোফাও আছে দেখলাম।

-- কফি নাও, এটকটু দেরী করে ফেললাম বোধহয়।
-- না না, দেরী হবে কেন? ধন্যবাদ, দাদা।
-- আমি ব্যাচেলর মানুষ। এজন্য বাসায় তেমন কিছু নেই। রান্না তেমন একটা পারি না, তাই করা হয় না। সন্ধায় তোমাদের টেকওয়ে থেকে যে খাবার আনি তা দিয়েই উদরপূর্তি হয়।
-- জানি, বলতে হবে না। বিয়ে-সাদী করে বৌদিকে নিয়ে আসলে তো এতো কষ্ট করতে হতো না। আর বিদশি বধু পছন্দ হলে পাশের রুমের মিস রুমানিয়াকে কবুল করে নিতে পারেন!
-- কিযে বলো, তুমি! এসব মেয়েরা কী আমাদের মা-বোনদের মতো। বিয়ে-সংসার এগুলোর প্রতি তাদের তেমন আগ্রহ নেই। সারাদিন টাকার পেছনে ছুঁটে। স্বাধীনভাবে খায়-দায়-ঘুরে। কাউকে মনে ধরলে যতদিন ভালো লাগবে এক ছাদের নীচে থাকবে। মতের অমিল হলেই ছুটি। এরা আবেগী নয়, বাস্তববাদী। এজন্য জীবনকে উপভোগ করে। যাক, বাদ দাও প্রসঙ্গটি। এই যে ছবি দেখছো এরা সবাই আমার ক্লাসমেট। রুরকি আইটিতে একসাথে গ্রেজুয়েশন করেছি। এদের অনেকেই এখন গুগল, মাইক্রোসফট, এ্যাপল আর ফেইসবুকে কাজ করে। বিশেষ করে অর্পিতা ব্যানার্জি; সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট আর প্রগ্রামিং এর উপর লেখা তিনটি বই সারা বিশ্বে সমাদৃত।

কফির সাথে ব্রেড আর ডিমপুচ খেতে খেতে প্রশ্ন করলাম-
-- দাদা, মা ছাড়া পরিবারে আর কে কে আছেন?
-- পরিবার? আমার জন্ম দিল্লিতে। বাবা ছিলেন মধ্যপ্রদেশের ভূপালের বাসিন্দা, হিন্দিবাসী। তবে মা বাঙালি। পোস্ট অফিসে চাকরি ছিলো মায়ের। এক সাথে কাজ করতে গিয়ে তাদের পরিচয়, তারপর বিয়ে। আমার জন্মের ছয়মাস আগে মাকে ছেড় বাবা চলে যান, মা পরে অনেক খোজাখুজি করেও কোন সন্ধান পাননি। কয়েক বছর পর জেনেছেন বাবা অন্য একজনকে নিয়ে সুখের সংসার পেতেছেন। পরবর্তী সময় আমাকে নিয়ে মা পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় নানা বাড়িতে চলে আসেন। আমার ম্যাট্রিকুলেশন, ইন্টার সব এখানেই।
-- শুনে কষ্ট পেলাম, দাদা।
-- মাকে বড় হওয়ার পর কোনদিন জিজ্ঞেস করিনি। মাও এ বিষয়টি চেপে গেছেন। আন্টি আর নানীর কাছ থেকে সব শুনেছি পরে। মাকে কখনো জিজ্ঞেস করিনি। আমি চাইনি মায়ের কষ্ট আরো বাড়ুক। মায়ের একমাত্র স্বপ্ন ছিল আমাকে ঘিরে। সারা জীবনের সব স্বাদ-আহ্লাদ ভুলে আমাকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতেন। এই যে আমার ক্রেডিট কার্ড, এটা মায়ের। পেনশনের টাকায় কেনা সঞ্চয় পত্রের বিপরীতে আনা ক্রেডিট কার্ডটি আমার কাছে থাকে, লন্ডনে আসার সময় দিয়ে আসতে চেয়েছিলাম, শুনেনি। বুঝলে, মা খুব একরোখা স্বভাবের। নিজের জন্য পেনশনের একটা টাকাও খরছ করেননি। মা একটি কথা সব সময় বলেন, 'নিজের চাকরির বেতনের টাকাটা কখনো প্রয়োজনের বেশি খরছ করবি না, ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করবে, চাকরি না থাকলে কিংবা হঠাৎ কোন সমস্যায় পড়লে জমানো টাকা খরছ করবে। আর বাড়তি কোন খরছ প্রয়োজন হলে আমার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করবে।'

চোখ দু'টি ছলছল করছে, তবুও প্রাণপণে চেষ্টা করছেন আটকে রাখতে। বৃষ্টির ফোঁটা আর চোখের ফোঁটার মধ্যে পার্থক্য বোধহয় এখানে। আবেগে গলে যাওয়া চোখের ফোঁটায় মানুষের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও আবেগহীন মেঘ আর তার চোখ নিঃসৃত জলের ফোঁটায় কোন নিয়ন্ত্রণরেখা নেই। দাদার চোখের কোণে জমানো পানিটুকু শিশিরের মুক্তার দানার মতো চিকচিক করছে। চশমার ফাঁক দিয়ে তা স্পস্ট দেখা যাচ্ছে। এ কান্না একজন দুখিনী মায়ের প্রতি ভালবাসার, কৃতজ্ঞতাবোধের।

-- জানো মামুন, এত লম্বা সময় মাকে ছাড়া কখনো থাকিনি। স্কাইপে প্রতিদিন দেখি, দীর্ঘ সময় কথা বলি, মাকে লন্ডনের গল্প শুনাই।
-- মা, কলকাতায় একা থাকেন?
-- না। মামাদের সাথে থাকেন। তাদের একান্নবর্তী পরিবার। মাকে খুব যত্ন করেন।
-- স্যরি দাদা, কষ্ট দিলাম না বুঝে।
-- আরে না, কষ্ট কিসের? আপনজনের সাথে শেয়ার করলে মনটা হালকা হয়। তুই তো আমার ভাই-ই। আর শোন, সামনের দিনগুলোতে আমি তোকে ওয়েবসাইট ডিজাইন করা শেখাবো।
-- ঠিক আছে, দাদা।

সেদিন আমার একটু তাড়া থাকায় চলে আসতে হয়েছিল। দাদা চাচ্ছিলেন আরো কিছু সময় বসে আলাপ করি। আরেক দিন সময় নিয়ে এসে কথা বলবো এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে আসি। এরপর আরো কতবার যে দাদার ফ্ল্যাটে গেছি তার কোন হিসাব নেই। প্রতিবারই সমান আন্তরিকতা।

২.
নিরোস মানিয়া। বাড়ি দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই। স্টুডেন্ট ভিসায় লন্ডনে আছে বেশ ক'বছর হলো। টেকওয়েতে সন্ধায় মোটরবাইকে খাবার ডেলিভারির কাজ করে। বয়সে আমার চেয়ে একটু বড় হলেও খুব বন্ধুত্ত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল আমাদের। সপ্তাহে দু'দিন পেট্রোল পাম্পের ক্যাশ কাউন্টারে কাজ করতো। রবিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতে বিকাল পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত কাজের শিডিউল তার। আদর করে সবাই নাম দিয়েছিল 'নিরু'। ভালো ইংরেজি বলতে পারলেও হিন্দি কিংবা বাংলা মোটেও বুঝতো না। ফলে ভারতীয় হয়েও সান্তনুদার সাথে কথা কম হতো।

একদিন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, 'যতটুকু জানি, ভারতে সবচেয়ে প্রচলিত ভাষা হিন্দি, এছাড়া মধ্য ও উত্তর ভারতের বেশিরভাগ মানুষ হিন্দিভাষী, তোমাদের পার্লামেন্টেও হিন্দি বহুল প্রচলিত, অথচ তুমি হিন্দির কিছুই জানো না! ব্যাপারটা আমাকে অনাক করেছে।'
নিরু উত্তরে বলেছিল, 'তুমি হয়তো জানো না, তামিলনাডু রাজ্যে শিক্ষার মাধ্যম হলো তামিল ও ইংরেজি। বড়জোর আমরা কন্নড়, মাল্লায়লাম ও তেলেগু ভাষা শিখি। স্কুলে হিন্দি বিষয়ে কোন কোর্স নেই। এমনকি স্কুলে হিন্দি বর্ণমালাও কোনদিন শিখিনি। এজন্য হিন্দি ভাষার প্রতি আমাদের কোন আগ্রহ তৈরী হয়নি।
-- বলো কী? জানতাম না তো। অবাক হওয়ার বিষয় এটি।
-- শুধু তামিলনাডু কেন? দক্ষিণের কেরালা, ব্যাঙ্গালুরু, তেলেঙ্গনা, ঊড়িষ্যা রাজ্যেও হিন্দির কোন প্রচলন নেই। এসব রাজ্যে মাল্লায়লাম, কন্নড়, তেলেগু ও ঊড়িয়া ভাষায় শিক্ষা দেওয়া হয়; পাশাপাশি ইংরেজিও আছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মনিপুর, মিজোরাম, গুজরাট, পাঞ্জাব ইত্যাদি প্রদেশেও হিন্দির প্রচলন তেমন একটা নেই। তবে চাইলে যে কেউ হিন্দি নিয়ে পড়াশুনা করতে পারে। সে সুযোগ আছে।
-- নতুন একটি তথ্য জানলাম। ইন্টারেস্টিং। আমি তো এতোদিন ভাবতাম ভারতের সব স্কুলে পাঠ্য হিসেবে হিন্দি বাধ্যতামূলক। অথচ..............!!

মানুষের সম্পর্কের গভীরতা নির্ভর করে তার কৃষ্টি-কালচার, ভাষা-সংস্কৃতির নৈকট্যের উপর। মানুষের আচার-ব্যবহার, ভাল লাগা-মন্দ লাগা এমনকি খাওয়া-পরার সংস্কৃতির মিল থাকলে মানুষে মানুষে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। দেশ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিন্নতার পরও মনে হয় অতি আপনজন, আত্মার আত্মীয়। এজন্য একই দেশের বাসিন্দা হয়েও সান্তনুদা ছিলেন আমাদের আত্মার আত্মীয়, তার স্বদেশী নিরুর নয়। তিনি নিরুর সাথে যখন কথা বলতেন তখন স্পষ্টত একটা দূরত্ব রেখা ফুটে উঠতো। দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোর সাথে মধ্য ও উত্তর ভারতের মানুষের অভ্যাস আর সংস্কৃতির অনেক অমিল আছে।

আমি সপ্তাহে দু'দিন ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচরের একটি পরিবারের দু'টি বাচ্চাকে ম্যাথমেটিক্স পড়াতাম। তিন দশক আগে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য এরা লন্ডনে স্বপরিবারে আসে। অবাকের বিষয় হলো, এরা যে ভারতীয় তা কখনো মনে হয়নি আমার। ভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস আর চলাফেরায় যতটুকু না ভারতীয় তার চেয়ে অনেক বেশি বাংলাদেশি। আরো নির্দিষ্ট করে বললে, সিলেটি। ভারতের করিমগঞ্জ, হাইল্যাকান্দি আর কাছাড় জেলার মানুষের ভাষা অহমিয়া নয়, সিলেটি।

নিরু আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছিল, যা এখনো আমাকে ভাবায়। তার কথায়, 'আমাদের দক্ষিণ ভারতে এতো এতো আইটি কোম্পানি, আইটি ইন্সটিটিউট আর অটোমোবাইল কোম্পানী গড়ে উঠার মূল কারণ হলো দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলোর বাসিন্দারা হিন্দি শিখতে সময় ব্যয় না করে ঐ সময়টায় আইটি শিখে। একটা কথা মনে রাখবে, নিজের মায়ের ভাষায় শিক্ষা অর্জন না করলে কোন বিষয়ের উপর গভীর জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব নয়। তুমি যে ভাষাতেই শিক্ষা গ্রহণ করো না কেন বিষয়টি বুঝতে হবে নিজের ভাষায়। গবেষণা করতেও মাতৃভাষার গভীর জ্ঞানের প্রয়োজন।'

ভাষার সাদৃশ্য থাকলে কাঁটাতার কিংবা উঁচু দেয়ালের ওপাশ থেকেও নিজের অনুভূতি আর ভাবনাগুলো শেয়ার করা যায় সহজেই; মিলিটারী, ট্যাংক আর এটমিক বোমার কোন শক্তি নেই এই আওয়াজকে গলা টিপে দমিয়ে রাখার। এটি এতই শক্তিশালী যে, ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই সশব্দে সীমান্ত অতিক্রম করে। অথচ, খুব কাছাকাছি দীর্ঘদিন বসবাস করার পরও ভাষা আর ভাবনার ফারাকের কারণে অদৃশ্য অভেদ্য দেয়াল তৈরী হয় গোপনে।

৩.
একদিনের ঘটনা; টেকওয়েতে আমার মন খারাপ দেখে সান্তনুদা কাজের শেষে ডেকে নিয়ে অনেক্ষণ গল্প করলেন। দাদার মূল উদ্দেশ্য ছিলো আমার মন খারাপের কারণটি জানা। আমাকে বিদায় দেওয়ার সময় ক্যাশ মেশিন থেকে নিজের ক্রেডিট কার্ড দিয়ে একশত পাউন্ড তুলে জোর করে আমার পকেটে দিয়ে বললেন, 'টাকাটা রাখ, সময়-সুযোগ হলে পরে ফেরৎ দিবি।' যদিও মন খারাপের কারণটি আমি শেয়ার করিনি তার সাথে। পরে যতবার টাকাটা ফেরৎ দিতে চেষ্টা করেছি প্রতিবারই এক কথা, 'তোর বেতনটা আরেকটু বাড়ুক, তখন দেবে।' অথচ, তার নিজেরই চাকরি নেই! আমার বেতন বাড়লেও দাদাকে টাকাটা ফেরৎ দিতে পারিনি। বেশি জোরাজুরি করায় একদিন তো বলেই দিলেন, 'দূর পাগল, আমি কি এই টাকা ফেরৎ নেওয়ার জন্য তোকে দিয়েছি? আমার তো কোন ভাই-বোন নেই, থাকলে তো তাদেরকেও দিতাম। তাই না? জীবনে যেখানেই থাকিস না কেন মনে রাখিস এই দাদাটাকে।'

টেকওয়ের মালিকও দাদাকে খুব পছন্দ করতেন। এজন্য অনেক সময় টেকওয়ের টাকা নিতেন না। তিনি বলতেন, 'আমরা দুই দেশের মানুষ ঠিক আছে; কিন্তু আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি এক। আমাদের একটাই পরিচয় আমরা বাঙালি।'

একদিন দাদার ফোন পেলাম-
-- মামুন, কেমন আছিস, ভাই? তোর জন্য একটি খুশির খবর আছে। নতুন একটি চাকরি হয়েছে আমার?
-- কনগ্রেচুলেশন, দাদা। কোথায়? সুযোগ-সুবিধা কেমন?
-- সাউথ এন্ডে। লন্ডনের খুব কাছেই এক ঘন্টার ট্রেন জার্নি।
-- আমি অবশ্যই যাব, দাদা। বাসা চেঞ্জ করতে কোন হেল্প লাগলে জানাবেন কিন্তু।
-- ধন্যবাদ, ভাই। আমি আগামী কাল বাসা চেঞ্জ করবো। নতুন বাসায় উঠে ঠিকানাটা জানিয়ে দেব। তুই অবশ্যই আসবে। লন্ডন লিভারপুল স্ট্রিট স্টেশন থেকে সিটুসি ট্রেনে মাত্র পঞ্চান্ন মিনিটের জার্নি।
-- যাব মানে? অবশ্যই যাব!

ততোদিনে আমি টেকওয়ের চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি। থাকি ইস্ট লন্ডনের স্ট্রাটফুডে। এজন্য দাদার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ কমে গেছে আগের তুলনায়। তবে সময়-সুযোগে ঠিকই দেখা হয়। তবে আমার ব্যস্থতার জন্য ওয়েবসাইট ডিজাইন আর শেখা হয়নি।

নতুন চাকরিতে যোগদান করে প্রথম মাসের বেতন থেকে মিষ্টি কিনে খাওয়ার জন্য বিশটা পাউন্ড আমার একাউন্টে দিয়েছিলেন দাদা। ভাল চাকরি হওয়ায় চার-পাঁচ মাসের মাথায় মাকেও কলকাতা থেকে নিয়ে আসেন। সারাদিন একা বাসায় থাকতে কষ্ট হচ্ছিল মায়ের তারপরও একমাত্র ছেলের সাথে থাকতে পারছেন এটাই ছিল তার সান্তনা। মায়ের প্রতি দাদার ভালবাসা, শ্রদ্ধাবোধ আর দায়িত্বজ্ঞান দেখে আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছিলাম। মা-ই ছিলেন তার একমাত্র পৃথিবী।

একদিন হঠাৎ দাদার ফোন 'আমেরিকার বিখ্যাত গুগল কোম্পানি আমার জব ইন্টারভিউ নিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে জানাবে বলেছে। আমার জন্য দোয়া করিস। চাকরিটা আমার খুব দরকার। এছাড়া আমি চাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রে সেটেল হতে।'

না, কষ্ট করে দাদাকে এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়নি; ঠিক চারদিন পরই সুখবর আসল গুগল থেকে। ক্যালিফোরনিয়ার হেড অফিসে যোগদান করতে হবে এক মাসের মধ্যে। সপ্তাহখানেক পরে ফোন দিলে জানালেন, 'আমেরিকার ভিসার জন্য কাগজ জমা দিয়েছেন। ভিসা পেতে দু'সপ্তাহ লাগবে। মা, আমার সাথে যাবেন। তুই এরই মধ্যে একবার দেখা করে যাবি। আমি আগামী সপ্তাহে একবার লন্ডনে আসবো। কিছু শপিং আছে, হাতে সময় রাখিস।'

আমার সাথে দাদার শেষ বিদায়টা ছিল খুব আবেগপূর্ণ। দু'জনেরই চোখ ছলছল করছিল। আর কবে দেখা হবে ঠিক নেই। কাঁটাতারের বেড়ায় দু'টি দেশ আলাদা হওয়ায় শংকা ছিলো বেশি।

একদিন কথা প্রসঙ্গে দাদা বলেছিলেন, 'এ পর্যন্ত পৃথিবীর যত কিছু মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি হয়েছে তার অধিকাংশই সহজ-সরল সৃষ্টিশীল মানুষদের তৈরী। পৃথিবীকে সুন্দর করে বসবাসযোগ্য করে রাখছে এসব মানুষ। কুটিল আর অতি চালাক মানুষেরা সব সময় ধ্বংসে লিপ্ত থাকে, মানুষে মানুষে বিবাদ লাগায়। মনে রাখবে, কখনো মানুষকে আঘাত করে সমাজ পরিবর্তন করা যায় না। সমাজ পরিবর্তন করতে হয় ভালবাসা দিয়ে। যুদ্ধ-বিগ্রহ, হিংসা-ঘৃণা আর বৈষম্য দিয়ে পৃথিবীকে কেউ পরিবর্তন করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।'

দাদা, আটলান্টিক পার হয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় স্থায়ী আবাস গড়লেও আমাদের মধ্যে যোগাযোগ এতটুকু কমেনি। গুগলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে পদোন্নতি পেলেও ভাই-ভাই সম্পর্কে আজও অটুট। কলকাতায় ফিরে বিয়ে করার সময় অনেক অনুরোধ করেছিলেন যাওয়ার জন্য। কিন্তু লন্ডনে থাকায় যাওয়া হয়নি। বৌদি আর দাদার জন্য কুরিয়ার করে চমৎকার একটা গিফট পাঠিয়েছিলাম। শুনেছি গিফট নাকি বৌদির খুব পছন্দ হয়েছিল।

বৌদির ছবিটা দেখে আক্কেল গুড়ুম অবস্থা। লন্ডনে দাদার ফ্লাটে যেদিন সহপাঠীদের ছবি দেখেছিলাম সেখানে নিশ্চিতভাবে বৌদির ছবিটাও ছিলো। ধরা খেয়ে দাদার লাজুক জবাব, 'তোকে সারপ্রাইজ দেব বলে এতোদিন গোপন রেখেছিলাম। অর্পিতা আমার ইউনিভার্সিটির ক্লাসমেট। উত্তরখন্ডে পরিবারের সাথে বসবাস করলেও কলকাতার বাঙালি। আমি লন্ডনে আসার বছরখানেক আগে গুগলে ওর চাকরি হয়। আমেরিকায় চাকরি পেতে ওর প্রত্যক্ষ সাপোর্ট না থাকলেও পরোক্ষ প্রেরণা ছিলো, বারবার ইন্টারভিউ দেওয়ার পরও চাকরি না হওয়ায় মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছে, আমাকে ভেঙে পড়তে দেয়নি। দু'জনেই চেয়েছিলাম একটি জায়গায় থিতু হতে। একদিন অর্পিতার সাথে তোকে কথা বলিয়ে দেব। এবার তাহলে সংসার শুরু করা যায়! কি বলিস, মামুন?'



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ৩:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×