somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের ভিআইপি সংস্কৃতি ও নাগরিক অধিকার (ফিচার)

২৪ শে মে, ২০১৮ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কয়েকদি আগে দেশের জনপ্রিয় একটি জাতীয় পত্রিকায় নিউজ পড়ে আৎকে উঠলাম। সংবাদটি এরকম; আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, জরুরী সেবার যানবাহন ও ভিআইপিদের চলাচলের জন্য রাজধানীর রাজপথে আলাদা লেন করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। তবে আইনটি এখনো যাচাই বাচাই পর্যায়ে আছে। চূড়ান্ত হতে প্রয়োজনে আরো আলোচনা ও নীতিমালার সংযোজন-বিয়োজন করা হবে। সংবাদটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জরুরী সেবার যানবাহনের জন্য হলে আপত্তি থাকার কথা নয়। সরকারের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতাম। কিন্তু সমস্যা হলো এর সাথে ভিআইপি শব্দটি জুড়ে দেওয়ায়; এখানেই আমার যত আপত্তি।

পলিটিক্স ও ভিআইপি শব্দ দু'টি আমাদের সমাজে নেগেটিভ অর্থে বহুল প্রচলিত। এর পেছনে উপযুক্ত কারণ ও সাম্যক যুক্তি আছে। যদিও বাংলায় শব্দ দু'টি তর্জমা করলে খারাপ শুনায় না। ঠিক তেমনি মীর জাফর নামটি অনেক সুন্দর হলেও পলাশী যুদ্ধে নবাব সিরাজুদ্দৌলার সাথে প্রধান সেনাপতি মীর জাফর বিশ্বাস ঘাতকতা করায় নামটি এখন আমাদের সমাজে গালি হিসাবে প্রচলিত।

যাক, এবার আসি ভিআইপি রাস্তা প্রসঙ্গে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে পাবলিক সার্ভিসের জন্য রাস্তায় আলাদা লেন থাকে। যাতে যানজটের সময়ও পাবলিক সার্ভিস এবং ইমার্জেন্সি সেবা দিতে কোন সমস্যা না হয়। লন্ডনের বেশিরভাগ রাস্তায় পাবলিক বাসের জন্য আলাদা লেন আছে। এসব লেন দিয়ে শুধুমাত্র বাস চলাচল করে। তবে প্রয়োজন হলে সরকারী সেবা সমূহ যেমন- পুলিশ, এম্ভুলেন্স ও ফায়ারসার্ভিসও লেনটি ব্যবহার করতে পারে। প্রাইভেট গাড়ি, মন্ত্রী/এমপির বহনকারী বাহন, সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারির গাড়ি, প্রাইভেট ট্যাক্সি, লরি/ভ্যান ইত্যাদি গাড়ির বাস লেন ব্যবহার করা নিষেধ। এমনও দেখছি পিক আওয়ারে অনেক দীর্ঘ যানজটে গাড়িগুলো আটকে আছে কিন্তু বাস লেন একেবারে ফাঁকা, তারপরও অনঅনুমোদিত কোন গাড়ি বাস লেন দিয়ে চলে না। প্রতিটি লেনে ক্যামেরা বসানো থাকে; ফলে ভুল করেও কেউ বাস লেনে ঢুকলে জরিমানা গুনতে হয়।

পাবলিক পরিবহণে নেই কোন ব্যক্তি মালিকানা, এটা পুরোপুরি সরকারি। চালকদের প্রাইভেট গাড়ি চালানোর লাইসেন্স থাকলেও পাবলিক বাস চালাতে আলাদা টেস্ট দিয়ে উত্তীর্ণ হতে হয়। কোন চালক পূর্বে কোন মামলায় আদালত কর্তৃক ক্রিমিনাল হিসাবে অভিযুক্ত হলে পাবলিক পরিবহণের চালক হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হবেন। বাসগুলো পৃথিবীর সর্বোচ্ছ প্রযুক্তি দিয়ে তৈরী, আরামদায়ক ও বিলাসবহুল।

চলার পথে সামান্যতম কোন ত্রুটি দেখা দিলে চালক বাস থামিয়ে যাত্রীদেরকে অন্য বাসে তুলে দেন, কোন প্রকার রিস্কের সুযোগ নেই। আর বাস ওভারটেকের নজির সেখানে নেই। একটু পর পর বাস স্টপেজ থাকে, প্রতিটি স্টপেজে ডিজিটাল বোর্ডে দেখা যায় কোন বাস কত মিনিট পর আসছে। বাস থেকে নামতে জায়গায় বসে সুইচ টিপলে ড্রাইভার পরের স্টপে বাস থামায়। বাসের সামনে মনিটর থাকে, যাতে পরের স্টপেজের নাম দেখানো হয় আবার অটোমেটিক সিস্টেমে স্টেশনের নামটি স্পিকারে বলতে থাকে। এসব বাসে কোন হেল্পার নেই। ড্রাইভার কোন ক্যাশ ভাড়া নেয় না। যাত্রীরা বেশিরভাগ সময় সাপ্তাহিক/মাসিক 'ওয়েস্টার কার্ড' (Oyster Card) ব্যবহার করে।


লন্ডন সহ ইউরোপ আমেরিকার বেশিরভাগ বড় শহরে বাসের পাশাপাশি থাকে সাইকেল লেন। এসব শহরে বাসের যাত্রী ও বাইসাইকেল চালকরাই ভিআইপি। আর কারো জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা নেই।

পাবলিক বাস সার্ভিস উন্নত দেশগুলোর বেশিরভাগ স্বল্পআয়ের মানুষের চলাচলের অন্যতম বাহন। তবে এসব বাস আমাদের দেশের লক্কর ঝক্কর মার্কা গাড়ির মতো নয়। পৃথিবীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে তৈরী আরামদায়ক, চকচকে তকতকে ও সুন্দর ডিজাইনে তৈরী। ধনীদের জন্য আছে আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেন, কার ও ট্যাক্সি। একটি দেশের সরকার কতটুকু সাধারন জনগনকে মূল্যায়ন করে এটি থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগন হলো সকল ক্ষমতার উৎস। এরাই ভিআইপি। এজন্য উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারন জনগনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে। এসব দেশে ভিআইপি নামধারী অতি সুবিধাভোগী কোন শ্রেণী নেই। সবাই সমান।

কিছুদিন আগে পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশের অনেক ভিআইপি রাজধানী ঢাকায় ব্যস্ততম রাস্তায় উল্টা দিক দিয়ে গাড়ি চালিয়ে জরিমানা দিয়েছেন। অনেকে আবার নিজেদের পদ পদবী দেখিয়ে পুলিশকে হুমকি ধামকি দিতে দেখলাম। পুলিশের হঠাৎ এমন বেয়াদবী মেনে না নিতে পেরে তারা রাগে অপমানে ফু্ঁসেছেন। আচ্ছা দেখা যাক আমাদের দেশে প্রচলিত ধ্যান ধারনায় ভিআইপি কারা। অনেকের মতে এমপি/মন্ত্রী, বড় শিল্পপতি, রাজনৈতিক নেতা/নেত্রী, সরকারী আমলা/কর্মকর্তা, ডিসি/সচিব, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, পুলিশ/আর্মির পদস্থ অফিসার, বিভিন্ন দেশের কুটনৈতিক ইত্যাদি পদবীর লোকজন। এদের বেশিরভাগের নিজস্ব অথবা সরকার প্রদত্ত দামি গাড়ি থাকে। উনারা নিজে ড্রাইভ করেন না, আছে নিজস্ব/সরকারি ড্রাইভার।

সাধারন জনগন নামক আবুলরা প্রতিদিন প্রতিনিয়ত লক্কর ঝক্কর মার্কা গাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে, দাঁড়িয়ে, হ্যান্ডেলে ঝুঁলে, চাপাচাপিতে চ্যাপ্টা হয়ে ঘামে ভিজে গন্তব্য পৌছান। তাঁদের নেই কোন ক্ষোভ, নেই কোন অভিযোগ। আবুলরা এই নিয়তি মেনেই নিয়েছেন উপায় না দেখে। ভিআইপি আর আবুলরা কি সমান? হতেই পারেনা। অতএব আবুলদের যাত্রা প্রয়োজনে আরো দীর্ঘ করে সাঁ সাঁ করে ভিআইপিদের ভিআইপি এসি গাড়িগুলো যাতে ম্যারাথন দৌড় দিতে পারে সেজন্য রাস্তায় আলাদা লেন করা হোক। হাজার হোক এরাইতো দেশের বিবেক, দেশের মাথা। জনগনের কল্যাণে প্রতিনিয়ত রকেটের গতিতে তাদের ছুটতে হয়।

প্রশ্ন হলো গণতান্ত্রীক প্রক্রিয়ায় জনগনের ভোটে নির্বাচি একজন এমপি/মন্ত্রী ভিআইপি হন কিভাবে? ভোটাররাই তো সকল ক্ষমতার উৎস হওয়ার কথা, তাই না? আবার সরকারী কর্মকর্তা/কর্মচারিরা হলেন দেশের সাধারন জনগনের সেবক। এজন্য প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী ভিআইপি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। পুলিশ/আর্মির বেলায়ও একই নিয়ম প্রযোজ্য। বড় ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক নেতারাও আইনের উর্ধ্বে নয়। বিদেশী কুটনৈতিক ও ব্যবসায়ীরাও যে দেশে বসবাস করেন সে দেশের প্রচলিত আইন মানতে বাধ্য থাকেন। ফলে কুটনৈতিকদেরও ভিআইপি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। আর আমাদের সংবিধানে তো স্পষ্ট করে বলে দেওয়া আছে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। বলা হয়নি ভিআইপিরাই সকল ক্ষমতার উৎস।


এতদিন শুনেছি বাংলাদেশের এসব ভিআইপিরা নিজেদের শান শওকত বাড়াতে সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নেন। তারা প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ট্যাক্স ফ্রি গাড়ি আনেন, বিনামূল্যে সরকারি প্লট নেন, প্রয়োজনে/অপ্রয়োজনে সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমন করেন, সরকারি বিলাসবহুল বাসা/বাড়িতে থাকেন, সরকরী রেস্ট হাউজ ব্যবহার করেন। এছাড়া আয়া, বুয়া, কুলি, মালি, ড্রাইভার, সুইপার সরকারি খরছে নিজেদের আরাম আয়েশের জন্যও পেয়ে থাকেন। এসব বাড়তি সুবিধার সাথে এখন নতুন করে যোগ হবে ভিআইপিদের গাড়ির জন্য প্রাইভেট লেনের সুবিধা।

আচ্ছা একজন ইয়াবা/ফেন্সিডিল ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারী এমপি হলে তিনিও কী ভিআইপি? একজন মন্ত্রী পরিবহন চাঁদাবাজ হলে তিনিও ভিআইপি? গডফাদার, মাদকসেবী, সন্ত্রাসী, ঘোষখোর আমলা/কর্মচারী হলেও তিনি ভিআইপি? কালো টাকার মালিক ব্যবসায়ীরাও ভিআইপি? যারা বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে তারাও ভিআইপি? যারা ব্যাংক থেকে শত শত, হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তারাও ভিআইপি?

সত্যি বলতে কী সাধারন জনগন নয়, বাংলাদেশের এসব ভিআইপিরা হলো সকল ক্ষমতার উৎস। দেশের আইনগুলোও ভিআইপিদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে তৈরী হয়। এজন্য দেশের অতি সুবিধাভোগী এ শ্রেণী যেসকল সুবিধা পায় সাধারণ জনগন তার ছিটে ফুঁটোও পায় না।

ঢাকা শহরে পাবলিকের জন্য বরাদ্দ আছে লক্কর ঝক্কর বাস ও অটো রিক্সা। তবে ভিআইপি আমলারা সরকারি খরছে একাধিক দামী গাড়ি দৌড়ান। বউ বাচ্চার জন্যও আছে সরকারি পাজারো/জীপ। এমপি/মন্ত্রীরাও সমান সুযোগ সুবিধা পান। যেহেতু এসব ভিআইপিরা একাধিক দামী গাড়ি দৌড়ান, বউদের শপিং ও বাচ্চাদের দামী স্কুল/কলেজ ও প্রাইভেট টিউশনিতে শিক্ষকদের বাসায় বাসায় সারাদিন বিরামহীন ভাবে ছুটেন সেহেতু যুক্তিযুক্ত ভাবেই তাদের জন্য রাস্তায় আলাদা লেনের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন। দেশটা তো ভিআইপিদের বাপদাদার জমিদারী। সবচেয়ে ভাল হয় জনগনের জন্য সব পাবলিক বাস পরিসেবা বন্ধ করে দিলে। রাস্তায় শুধু ভিআইপিদের মার্সিডিজ/পাজারো চলবে। জনগন শুধু হেঁটে হেঁটে চলাচল করবে, তারপরও কোন অভিযোগ করবে না। এত শহরের যানজট লাঘব হবে, শব্দ দূষণও কমবে।

জাতীয় জীবনের মতো ভয়ানক বৈষম্য আর রেষারেষিতে ভরা রাজধানীর রাজপথ। রাস্তায় আধুনিক গণতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের রাজা/রাণী হলেন মন্ত্রী/এমপি/ভিআইপিরা; তারপর তাদের উজির নাজির; তিন নাম্বারে তাদের শুভাকাঙ্খী, সুবিধাভোগী আমলা, সমর্থক, খাঁটি চাটুকার আর দালালরা। এই শ্রেণীবিন্যাসে কোটাবিহীন সাধারন যাত্রীরা হলেন সবার নিচে। যেদিন ভিআইপিদের দৌড় ঝাঁপ বেশি সেদিন ফার্মের মুরগীর মতো ছাল বাকল হীন, ঘসা লাগা খাঁচায় চোখ কান খোলা রেখে গলা টান টান করে দীর্ঘ শ্বাস নিতে নিতে গরমে হাঁসফাঁস করতে করতে অসহায় দৃষ্টিতে ভিআইপিদের এসিতে বসা চকচকে চেহারা, দামী পাজারুর সারি দেখে দেখে গণতন্ত্রের চৌদ্দগোষ্টী উদ্ধার করে এরা নীরবে।


আমরা বীরের জাতি। বড়ই তেজ আমাদের, তবে তা বিদ্যায় ও দেশপ্রেমে নয়। এ তেজ ল্যাং মেরে, কনুইয়ের গুতায় অন্যকে ভূপাতিত করে এগিয়ে যাওয়ার। অন্যের অধিকার হরণ করে, অন্যের স্বপ্নগুলোকে ব্লেকমেল করে নিজের করে নেওয়ার। এই কনুইয়ের গুতা, ল্যাং মারা আর স্বপ্ন চুরি করা চলে দিনের ফকফকা আলোয়, গণতন্ত্র নামক এক রক্ষা কবচের রক্ষক হয়ে। এখানে স্বপ্ন দেখা অন্যায়, গণতন্ত্র বোঝা অন্যায়, অধিকার চাওয়া অন্যায়, প্রতিবাদ করা অন্যায়। শুধু করা যাবে তোষামোদ আর উন্নয়নের গল্প।

উন্নত অনেক দেশে রাজা/রানী আছে কেতাবে, বাস্তবে তাদের কোন দাপট নেই। আর আমাদের দেশে কেতাবে কোন রাজা/রাণীর অস্তিত্ব নেই কিন্তু বাস্তবে আছে। শুধু আছে বল্লে ভুল হবে। বহাল তবিয়তে বিশাল পরিষদ নিয়েই আছে। এরা সবাই রাজা! এদেশে শুধু নির্বাচন আসলে ভোটে দাঁড়ানো, ভোট চাওয়া আর ভোটারদের ভোট দেওয়াটাই গণতন্ত্র! যদিও ভোটের প্রসেস শুরু হওয়া থেকে শুরু করে, নির্বাচিত হওয়ার পর পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম অগণতান্ত্রিক হয়।

-- আমাকে চিনস!!
-- এক্কেরে হিলটেক্স পাঠায়া দিমু!!

এগুলো হলো আমাদের ভিআইপিদের কমন ডায়লগ। শুধু ভিআইপি কেন? এই ডায়লগ হতে পারে ক্ষমতার ছোঁয়া লাগা তাদের ভাই-বন্ধু-ভাতিজা-ভাগ্না-জামাই-শালী-চেলা-শাগরেদ যে কারো। এটা একটা ভয়ানক ছোয়াচে রোগ, এই রোগ ভিআইপি রোগ। ভিআইপি কারা? যাঁরা ইচ্ছা করলে আইন ভঙ্গ করতে পারেন। ভিআইপি কারা? আইন যাদের ধরতে পারে না। যাদের কলমের খোঁচায় বা মুখের অমর বাণীতে সাগর হয় পাহাড়, নদী হয় সমতল, বিষাক্ত খাদ্য হয় উপকারী, খুনি হয় সাধু। ভিআইপি কারা? যারা যেখানেই যান না কেন সেখানে প্রশাসন ও পুলিশ অন্য সব কাজ ফেলে তাদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, আরাম-আয়েশ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।

এদেশে ফারমার্স ব্যাঙ্কে কোন কৃষক নেই। লুটপাট করার জন্য কৃষকদের ফটো দেখিয়ে উজির নাজিররা কোটিকাটি টাকা লোপাট করে, বিদেশে পাচার করে। মন্ত্রী হয়েও পরিবহণ নেতা হয়। এমপি/মন্ত্রী হতে শিক্ষাগত যোগ্যতা লাগে না। গলাবাজি, অস্ত্রবাজি, বোমাবাজি, দখলবাজি আর খুণ খারাপি জানলেই নমিনেশন কনফার্ম হয়। গণতন্ত্র বানান করতে না পারলেও এমপি হতে সমস্যা নেই। টাকা থাকলে গণতন্ত্র কেনা যায়। পৃথিবী বিখ্যাত দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন; রাষ্ট্রে বিদ্বান, পন্ডিত আর যোগ্য লোকের সংখ্যার চেয়ে বিপরীত অংশটা অনেক বেশি বলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তাদের প্রতিনিধিত্বটাও করে এই মার্কা মারা ভিআইপিরা। এটাই গণতন্ত্র। অন্ততঃ বাংলাদেশের জন্য তা শতভাগ প্রযোজ্য।।

আজকের ভিআইপি সংস্কৃতি ছোটবেলায় পড়া উপমহাদেশীয় জমিদারি প্রথার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। একবিংশ শতাব্দীতে এসে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু নব্য মহা প্রতাপশালী ভিআইপিরা অত্যাচারি জমিদারদের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। ভিআইপিরাই আজ আমাদের জমিদার, আর আমরা আবুলরা হলাম তাদের খাস গোলাম।।



ফটো ক্রেডিট,
গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৩
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×