somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠান: আসুন চিনে রাখি ও বয়কট করি (মূল লেখক: শওকত মাসুম)

১৮ ই জুন, ২০১২ রাত ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুরু তেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সকল ব্লগার , বিশেষ করে শওকত মাসুমের কাছে । আমি তার সাথে কোনরূপ যোগাযোগ করতে পারি নি যে তার অনুমতি নিব । লেখাটি ২ বছর পুরোনো । অনেকেই হয়তো ভুলে গেছেন এই লেখাটির কথা । কিন্তু মনে করলাম এটা আবার সবাই কে জানানো উচিৎ । আবার আমি ক্ষমাপ্রার্থী সবার কাছে







যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা সরকারের রাজনৈতিক ও নৈতিক দায়িত্ব। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেক তরুণ ভোটারকে আকৃষ্ট করে ক্ষমতায় এসেছে। মাঝে অনেকেই এ নিয়ে হতাশ ছিলেন। এখন বিষয়টি আবার আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। আমরা আবার আশায় বুক বেঁধেছি।
আশা করছি সরকার তার নিজের কাজটি করবেন। সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের কাজ সরকারকে প্রতিশ্রুতির কথা মনে করিয়ে দেওয়া, চাপ অব্যাহত রাখা। একইসঙ্গে সাধারণ এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের আরও একটি দায়িত্ব আছে। আমাদের চারপাশে নানা ভাবে বেড়ে উঠছে জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। আপনার গলির মোড়ের যে ছোট্ট মুদি দোকানটি, সেটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জামাতীদের অর্থে পরিচালিত। সংগ্রাম এসব দোকানে আপনি অবশ্যই পাবেন। আপনি কি বাসার কাছে বলে এই দোকানটির উপরই ভরসা করেন। নিজের অজান্তেই কে মৌলবাদী ও স্বাধীনতা বিরোধীতের হৃষ্টপুষ্ট হতে দিচ্ছেন না? টাকা আয় করে তারা কি কেবল সংসার চালায়, নাকি আরও বড় কোনো নাশকতা বা পরিকল্পনায় শক্তি সঞ্চয় করে। আপনার ভাই বা সন্তান কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছে। কি শিখছে সেখানে। একবার খোঁজ নিয়ে দেখেছেন?
মৌলবাদীদের অর্থনীতি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অধ্যাপক আবুল বারকাত এ নিয়ে ২০০৫ সালে একটি গবেষণা করেছিলেন। বিষয় ছিল: মৌলবাদের রাজনৈতিক-অর্থনীতি। সেখানে তিনি বলেছেন,
মৌলবাদীদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৭ থেকে ৯ ভাগ। তারা প্রতি বছর প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় করে শুধু রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করতে। এর মধ্যে, জঙ্গি কর্মকান্ড ছাড়াও সাংগঠনিক কর্মকান্ড পরিচালনা ব্যয়, রাজনৈতিক কর্মীদের বেতন, জনসভা আয়োজন ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ।
তাদের ১ হাজার ৫শ কোটি টাকা মুনাফার ২৭ শতাংশ আসে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে যার মধ্যে রয়েছে, ব্যাংক, বীমা ও লিজিং কোম্পানি। ২০ দশমিক ৮ শতাংশ আসে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে, ১০ দশমিক ৮ ভাগ আসে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে। ১০ দশমিক ৪ ভাগ আসে ওষুধ শিল্প ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে। ৯.২ শতাংশ আসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে। ৮.৩ শতাংশ আসে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে। যোগাযোগ ব্যবসা থেকে আসে ৭.৫ শতাংশ এবং তথ্য প্রযুক্তি ও সংবাদ মাধ্যম থেকে আসে ৫.৮ শতাংশ। ‌

তাহলে আমাদের দায়িত্ব কি? আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে জামায়াত শিবিরের ব্যবসায়ীক ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বয়কট করা, যাতে এসব প্রতিষ্ঠান আরও ফুলে ফেঁপে বড় হতে না পারে।

১. ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড: এটিই জামায়াতের সবচেয়ে বড় এবং লাভজনক সংগঠন। ধর্মের নাম ব্যবহার করে ব্যবসা করে তারা। এই ব্যাংকটির মূল কাজ হচ্ছে জামাত-শিবির যারা করে তাদের ঋণসহ নানা ধরণের আর্থিক সুবিধা দেওয়া। এখানে যারা চাকরি করেন তারাও পরীক্ষিত জামায়াত কর্মী।
তাহলে আসুন দেখি ইসলামি ব্যাংক কারা চালায়। ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান এখন অধ্যাপক আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের। । একাত্তরের ঘাতক দালাল কে কোথায় বইটিতে আছে ৭১-এ তার ভূমিকার বিবরণ।
এই লোকটি একজন কুখ্যাত রাজাকার-আলবদর। ৭১ সে ছিল আল বদর হাইকমান্ডের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। সে ছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রধান।
এই ব্যাংকের আরেক পরিচালক ছিলেন মোহাম্মদ ইউনুস। এখন মৃত। সেও ছিল আল বদর হাইকমান্ড-এর একজন সদস্য। সে আবার জামাতের মজলিসে সূরার সদস্য ছিল। আরেক পরিচালক ছিল মীর কাশেম আলী। মীর কাশেম আলী প্রথমে চট্টগ্রাম জেলা প্রধান। পরে আল বদর হাই কমান্ডের তিন নম্বর সদস্য হিসাবে স্থান লাভ করে। আর তার স্থানে আসে আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুজ জাহের। মীর কাশেম আলী নয়া দিগন্ত পত্রিকা ও টেলিভিশনের চেয়ারম্যান। সেও একসময় মহানগর জামায়াতের আমীর ছিল। বলা যায় মীর কাশেম আলি জামায়াতের অর্থ ভান্ডার ও রক্ষক।

২. ইবনে সিনা ট্রাস্ট- জামাতের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে আয়ের বড় অংশ আসে। এই ট্রাস্টের নামে আছে ইবনে সিনা হাসপাতাল, ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইবনে সিনা ফার্মাসহ ৬টি প্রতিষ্ঠান। কর্মীদের লালন-পালন করার আরেকটি বড় উদ্যোগ এই ট্রাস্ট। ট্রাষ্টিদের নামগুলো জেনে নেই-
01. Mr. Advocate Mujibur Rahman, Chairman

02. Commodore (Retd.) Md. Ataur Rahman, Member, Ex-chairman TCB

03. Dr. Shamsuddin Ahmed, Member, Professor, International University of Technology

04. Mr. Shah Abdul Hannan, Member, Ex. Secretary. Govt. of Bangladesh

05. Mr. A.N.M.A. Zaher, Member Finance, Chairman, Islami Bank

06. Mr. Mir Quasem Ali, Member Administration

07. Prof. Chowdhury Mahmood Hasan, Member, Professor. Dhaka University.

08. Prof. A.K.M. Sadrul Islam, Member, Professor, International University of Technology.

09. Mr. Nazir Ahmed, Member, Ex-Chairman, Islami Bank

10. Mr. Kazi Harun Al Rashid, Member, Ex-Chairman, Islami Bank

৩. দৈনিক নয়া দিগন্ত, দিগন্ত টেলিভিশন ও সংগ্রাম: তাদের দলীয় পত্রিকা ও টেলিভিশণ মাধ্যম। এর মাধ্যমে তারা সাধারণ মানুষের মধ্যে যেতে চাচ্ছে। বিশেষ করে সংগ্রামের কোনো ধরণের জনপ্রিয়তা বা গ্রহনযোগ্যতা না থাকায় তারা নয়া দিগন্ত পত্রিকা বের করে এবং দিগন্ত টেলিভিশন চালু করে।

৪. বেসরকারি শিক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়: জামায়াতের অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। যেমন চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, ঢাকার মানারত বিশ্ববিদ্যালয়, সাঈদীর বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এর বাইরে আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলোর মুল বা সিংহভাগ মালিক জামাতীরা। যেমন, নর্দান ইউনিভার্সিটি ও ইষ্টার্ণ ইউনিভার্সিটি

৫. কোচিং সেন্টার: বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ‘ফোকাস’, মেডিকেলে ভর্তির জন্য ‘রেটিনা’, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির জন্য ‘কনক্রিট’, ‘কনসেপ্ট’ ও ‘এক্সিলেন্ট’ কোচিং সেন্টারগুলো মূলত জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের নামে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত। এসব কোচিং সেন্টার আবার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গেও জড়িত

৬. ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান: মীর কাশেম আলরি কেয়ারি গ্রুপ রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে জড়িত। সেন্টমার্টিন যেতে যে কেয়ারি সিন্দবাদ নামের ফেরি জাহাজ আছে, সেটিও মীর কাশেম আলীর।
আবুল কাশেম হায়দার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের নেতা ছিলেন। তার ইয়ুথ গ্রুপ থেকে তৈরি হতো ভার্জিন ড্রিংকস। মেট্রো শপিং সেন্টারের মালিকও জামাতী।
রিয়েল এস্টেট মিশন গ্রুপও জামাতীদের।

এখানে সব নাম দেওয়া গেলো না। এটি আপডেট করা যেতে পারে। আপনারাও বলতে পারেন এরকম আরও নাম।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১২ রাত ৮:৪৭
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×