somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাদিসের ভিত্তিতে সংগ্রহ অভিযানের ইতিহাস -1

২৩ শে মার্চ, ২০০৬ বিকাল ৫:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইয়ামামার যুদ্ধে প্রায় 700 জন নিহত হন, এদের অনেকেই ছিলেন কোরানের হাফেজ। এদের একজন সেলিম। তার নিহত হওয়ার খবর পেয়েই উমর যান আবু বকরের কাছে, তাকে তাগাদা দেন কোরান সংকলনের জন্য।কোরানের সংকলনে আবু বকরের ভুমিকা প্রসঙ্গে আলির বক্তব্য - আবু বকর(ইশ্বর তার উপর শান্তি বর্ষিত করুন) প্রথম ব্যাক্তি যে কোরানকে একটা স্থানে সংকলন করেছেন।
মুসলমান আসলেই মজার এক জাতি, এই কথা হাদিসে থাকলেও এমন কথাও আছে যে আবু বকর বা ওমরের সময় কোরান সম্পুর্ন সংকলিত হয় নি। একটা হাদিস যা আবু বকরকে কোরান সংকলনের কৃতিত্ব দেয় সেখান থেকেই শুরু করি।
যায়েদ এর ভাষ্য পাওয়া যাবে সাহীহ বুখারিতে , কোরান সংকলন প্রসঙ্গে তার বক্তব্য নিম্নরূপ।

ইয়ামামার যুদ্ধের পর আবু বকর আমাকে ডেকে পাঠান। আমি সেখানে পৌছালে উমর বিন আল খাত্তাবকেও দেখি তার সাথে,
আবু বকর বলেন উমর তাকে বলেছেন ইয়ামাম যুদ্ধে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই কুরানের হাফেজ,এবং তাদের মৃতু্যর সাথে সাথে কোরানের বিলুপ্তির একটা সম্ভবনা তৈরি হয়েছে, তাই আমার মতামত আপনি কোরান সংকলনের নির্দেশ দিন।
এর উত্তরে আবু বকর বলেন, নবী যে কাজ করেন নি বেঁচে থাকতে তা এখন করা কি উচিত হবে?
উমর এর উত্তরে বলেন, তা সত্ত্বেও এটা একটা গুরুত্বপুর্ন কাজ হবে।
আবু বকর যায়েদ কে বলেন, তুমি যুবক এবং বুদ্ধিমান এবং তোমার বিপক্ষে তেমন কোনো বাজে প্রচারনা নেই, এছাড়া তুমি মুহাম্মদেরর তত্ত্বাবধানে কোরানের কিছু আয়াত লিপিবদ্ধ করেছিলে, তাই এখন সম্পুর্ন কোরান সংকলনের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করো।
যায়েদ এর উত্তরে যা বলেন টা হলো, আপনি কেমন করে এমন একটা কাজের নির্দেশ দিচ্ছেন যা মহানবী নিজে কখনও করেন নি, এর উত্তরে আবু বকর তাকে আশস্ত করেন এটা অনুমোদিত।
এর পরে আমি কোরান সংগ্রহ অভিযান শুরু করি,
বৃক্ষপাতায়, প্রস্তর ফলকে এবং মানুষের স্মরণে যেখানেই পেয়েছে তা সংকলন করেছি। কোরানের সর্বশেষ আয়াত পেয়েছি , আবু খুযায়ামা আল আনসারির নিকট, যা অন্য কারো কাছে ছিলো না।

যায়েদের সংকলিত এই কোরান প্রথমে ছিলো আবু বকরের জিম্মায়, তার মৃতু্যর পর এটা যায় উমরের জিম্মায় এবং উমরকে হত্যা করার পর এটা চলে আসে তার কন্যা হাফসার জিম্মায়।
এখন আরও কিছু সহায়ক ইতিহাস জানা যাক, জায়েদ আবু বকরকে যে সংকলনটা দিয়েছিলো সেটা ছিলো চামড়া আবং খেজুর পাতার উপর লিখিত,।
যখন যায়েদ োমরকে জানান খুযায়মা আল আনসারির কাছে প্রাপ্ত 2টা আয়াতের কথা, ওমরের প্রতিক্রিয়া ছিলো যদি এটা 3টা আয়াত হতো তবে আমি ওটাকে ভিন্ন একটা সুরা হিসেবে লিপিবদ্ধ করার কথা বলতাম।
এর পরে উমরের তত্ত্ববধানে কোরানের সংগ্রহ শুরু হয়, বিষয়টা আমাকে যথেষ্ট পীড়া দিচ্ছে,ওমর একবার কোরান সংগ্রহের অনুরোধ করেন আবু বকরকে, এবং আবু বকরের উৎসাহে এবং নির্দেশে যায়েদ কোরান সংগ্রহ করেন, এর পর আবার ওমর নির্দেশ দেন জমায়েতে, তোমাদের যার যার কাছে মহানবীর মুখে শোনা কোরানের কোনো আয়াত থাকে তা আমাদের এখানে এসে জমা দাও, অবশ্য 2 জন সাক্ষী না পেলে ওমর কোনো কিছুকেই প্রামান্য মেনে নিতেন না।
এবং ওমরের মৃতু্যর পর উসমানও একই নির্দেশ দেন। এবং উসমানও 2 জন সাক্ষী না হলে কোরানের কোনো বানীকে প্রামান্য স্বীকৃতি দেন নি।
খুযাইমা বিন থাবিত Khuzaima bin thabit বলেন, কোরানের 2টা আয়াত বাদ পড়েছে, এর উত্তরে তাকে বলা হয় কোন কোন আয়াত বাদ পড়েছে, তার উত্তরে তিনি জানান, আমি স্বয়ং মুহাম্মদের কাছে এটা পেয়েছি.........। এবং তার উপদেশ অনুসারে এই 2টি আয়াতকে সুরা তওবার 128 এবং 129 আয়াত হিসেবে কোরানে লিপিবদ্ধ করা হয়।
উসমানের কোরান সংকলনের প্রেক্ষিত এর পরে বিশদ বর্নণা করা হবে। তাই সে পর্যন্ত কৌতুহল সংবরন করতে হবে আগ্রহীদের। তবে কোরান সংকলনে কোন ভাষা ব্যাবহৃত হবে এ নিয়ে বিতর্ক ছিলো। আরবের সবলোকের ভাষা এক ছিলো না, এমন কি মদিনার ভাষা এবং উচ্ছারন রীতি ছিলো মককার তুলনায় পৃথক, এমন কি মককার বিভিন্ন যাযাবরগোষ্ঠির মধ্যেও উচ্চারনের পার্থক্য ছিলো। তাই উমর নির্দেশ দেন যখন কোরান লিপিবদ্ধ করা হবে তখন মুদারের ভাষারীতি ব্যাবহৃত হবে।
সবচেয়ে মজার তথ্য হলো আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ কোরানের প্রায় 90টি সুরা মুখস্ত করেছিলেন, বাকি 14টি সুরা তিনি শিখেছেন মুয়াজ্জামি ইবন যারিয়াহর কাছে।
ক্বাতাদা একবার আনাস বিন মালিক কে প্রশ্ন করেছিলেন -
মহানবীর জিবদ্দশায় কে কে কোরান সংকলন করেছিলো?
এর উত্তরে আনাস বলেন, উবায় বিন ক্বাব, মুয়াদ বিন যাবাল, যায়েদ বিন থাবিত এবং আবু যায়েদ, সবাই আনসারি( মদিনাবাসী) ।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×