somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশে কি চলছে?? আইনের শাসন নাকি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস???

০৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৃটিশ ও পাকিস্থানী শাসকদের অতিরিক্ত শোষণ-নিপিড়ন-নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সমস্ত বাঙ্গালী জাতী একত্রিত হয়েছিল। একটু শান্তিতে, স্বাধীনভাবে ও নিশ্চিন্তে বসবাস করার আশায় জীবনযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এদেশকে স্বাধীন করেছে। এ জাতী অনেক আশা করেছিল একটু সুখে-শান্তিতে জীবনযাপন করার। স্বপ্ন দেখেছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশের যেখানে কোন হানাহানি-মারামারি থাকবে না। শোষকের শাসন ও জালিমের জুলুম থেকে মুক্ত থাকবে সকলে। নাগরিকদের সকল অধিকার সঠিকভাবে ভোগ করার নিশ্চয়তা থাকবে। জনগণের স্বাধীনতায় সরকারের কোন হস্তক্ষেপ থাকবে না। কিন্তু “আশা! সে তো মরীচীকা”- এদেশের মুক্তিকামী মানুষের ভাগ্যে মুক্তি কোথায়???
মুক্তিযুদ্ধের ঘা শুকাতে না শুকাতেই সমস্ত স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে এ জাতীর উপর বাকশালের খড়গ নেমে এসেছিল। রক্ষীবাহিনী নামের হিংস্র হায়েনারা মানুষের উপর চালিয়েছিল অমানবিক অত্যাচার, ভয়ঙ্কর জুলুম ও নির্যাতন। মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক গঠিত রক্ষীবাহিনী মানুষের শান্তি কেরে নিয়ে বাঁচার স্বপ্নকে ধ্বংস করে দিয়েছিল অথচ তিনিই ১৯৭১ সালে ৭ ই মার্চ বলেছিল, “আজ বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ শান্তিতে বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তার অধিকার চায়।”
দুঃখ জনক হলেও সত্য পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে এ দেশের মানুষ আজও বের হতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পরেও যেন এ জাতী বন্দী হয়ে আছে শাসক গোষ্ঠির হাতে। সাংবিধানিকভাবে বর্তমানে এদেশ স্বাধীন ও গণতান্ত্রীক হলেও বাস্তবতা তার উল্টো। কারন এদেশের মানুষ এখনও তাদের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারে না, স্বাধীনভাবে চলাফেরাও করতে পারে না। পুনরায় এদেশের জনগনের উপর ৫ জানুয়ারী অবৈধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ডিজিটাল ভাবে ফিরে এসেছে বাকশাল!! ৭২-৭৫ এর বাকশাল ছিল ঘোষনা দিয়ে প্রকাশে আর এবারের বাকশাল হচ্ছে গনতন্ত্রের আড়ালে। সেই সময় বাকশাল কায়েম রাখতে তৈরী করা হয়েছিল রক্ষী বাহিনী ্আর এবার কৌশল করে বৈধ রাষ্ট্রীয় পুলিশ ও বিজিবি দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে এতটাই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত করা হয়েছে যে তারা বিনা কারনে সম্পুর্ন স্বপ্রনোদিত হয়ে বিরোধীদলের বিভিন্ন কর্মসূচীতে হামলা করছে। মিছিল-মিটিংয়ে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা করছে। শুধু তাই নয় দলীয় সন্ত্রাসীদের রক্ষা করতেও পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
অথচ জনগনের কর্মচারী হিসাবে তাদের উচিত ছিল জনগনের নিরাপত্তা দেওয়া। দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা কিন্তু তারা তা না করে প্রতিনিয়ত যৌথ অভিযানের নামে পাড়া-মহল্লা, শহর-বন্দর সব জায়গা থেকে নিরীহ-নিরপরাধ মানুষকে গ্রেফতার করছে। শুধু তাই নয় অনেককে বন্ধুক যুদ্ধের নামে হত্যাও করছে আবার রাতের আধারে তুলে নিয়ে গিয়ে গুমও করছে। অর্থাৎ তারা একটি দলকে ক্ষমতায় টিকে রাখার জন্য দেশে আইনের শাসনের পরিবর্তে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস শুরু করে দিয়েছে। তাইতো জনগনকে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়, “খুন হবে নাকি গুম হবে” এই ভয়ে!!
মানুষ আরও ভয়ের মধ্যে পড়েছে যখন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী (বিনা ভোটে নির্বাচিত), পুলিশের মহাপরিদর্শক, র‌্যাব ও বিজিবির মহাপরিচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলরা কোন তথ্য-প্রমাণ এবং তদন্ত ছাড়াই রাজনৈতিক কারনে দেশের সকল সহিংসতার দায় বিরোধী দলের উপর চাপিয়ে নির্বিচারে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে। আর এটাকে পুঁজি করে অনেক দুর্নীতিবাজ পুলিশ অফিসার নিজেদের আখের গোছাচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে ৫ লাখ টাকার জন্য ঢাকায় নাহিদ নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনে রিপোর্ট হয়েছে।
অন্যদিকে নিরপেক্ষ এবং সব দলের অংশ গ্রহনে একটি সুন্দর নির্বাচনের দাবীতে সম্প্রতি বিরোধীদলের ডাকা অনীর্দিষ্টকালের অবরোধের মধ্যে গাইবান্ধায় মোস্তফা মঞ্জিল, রাজশাহীতে মেধাবী ছাত্র শাহাবুদ্দিন, ঢাকায় জসিম উদ্দিন, কুমিল্লায় শাহাব উদ্দিনসহ গত দুই মাসে বিরোধীদলের নেতা-কর্মীসহ প্রায় ৮১ জন কথিত বন্ধুক যুদ্ধ, ক্রসফায়ার ও ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন নির্দলীয় এবং বাকি ৫৫ জন বিরোধীদলের নেতা-কর্মী (সূত্র : ০৬/০৩/২০১৫ দৈনিক নয়াদিগন্ত) এবং মিঠাপুকুরের উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল বাছেত মারযান, আলামিন এবং বিউটি বেগম এবং গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর শমীমসহ অনেককেই গ্রেফতারের পর গুম করা হয়েছে যা এদেশের ইতিহাসে নজীরবিহীন।
এছাড়া বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন কর্তৃক প্রদত্ত ৫ জানুয়ারী ২০১৪ সালের অবৈধ, অনিরপেক্ষ এবং একতরফা নির্বাচনকে ঘিরে বিরোধীদলের আন্দোলন দমন করতে বর্তমান প্রশাসন কর্তৃক বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের নিম্নোক্ত পরিশংখ্যান দেখলে বোঝা যায় যে বর্তমান প্রশাসন কতটা বেপোরোয়া।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকার এর রিপোর্ট অনুসারে দেখা যায, ৫ জানুয়ারী ২০১৪ এর নির্বাচনের পর বিরোধী জোটের কোন আন্দোলন কর্মসূচী না থাকার পরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ১৭২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের হাতে ১১৯ জন, র‌্যাবের হাতে ২৯ জন, যৌথ বাহিনীর হাতে ১১ জন, বিজিবির হাতে ৫ জন, সেনাবাহিনীর হাতে ২ জন, আনসারের হাতে ১ জন, র‌্যাব ও বিজিবির হাতে ২ জন ও কোস্টগার্ডের হাতে ৩ জন মারা গিয়েছে।”
(সূত্র: অধিকারের রিপোর্ট)
আর মানবধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুসারে ১৫৪ জনের মত বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে র‌্যাবের হাতে ৩৭ জন, পুলিশের হাতে ৯১ জন, বিজিবির হাতে ১ জন, র‌্যাব ও পুলিশের হাতে ১ জন, র‌্যাব ও বিজিবির হাতে ০৪ জন, ডিবি পুলিশের হাতে ০৯ জন, যৌথ বাহিনীর হাতে ৭ জন, কোস্ট গার্ড এর হাতে ৩ জন এবং সেনা বাহিনীর হাতে ১ জন।
(সূত্র: আইন ও শালিশ কেন্দ্র)
এবং ২০১৩ (জানুয়ারী-ডিসেম্বর) সালে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ক্রসফায়ার ও থানা হাজতে নির্যাতনসহ বিভিন্ন কারনে ২০৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে র‌্যাবের হাতে ২৯ জন, পুলিশের হাতে ১২৩ জন আর অধিকারের রিপোর্ট অনুসারে হয়েছে ৩২৯ জন। যা একদমই মেনে নেয়ার মত নয়।
অপরদিকে ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত অর্থাৎ এ সরকারের গত পাঁচ বছর মেয়াদে সর্বোমোট ৭৬৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে এবং ১১১ জনের মত গুম হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠন গুলো তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে র‌্যাবের হাতে ৫১ জন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে ৩৬ জন, পুলিশের হাতে পাঁচজন, র‌্যাব ও পুলিশের হাতে দুইজন, শিল্প পুলিশের হাতে একজন এবং অন্যান্য ভাবে ১৬ জন গুম হয়েছে। (সুত্র: অধিকারের রিপোর্ট)
শুধুমাত্র ২০১৩ সালে ৩৫ জন গুমের তথ্য পাওয়া গেছে এর মধ্যে মৃতদেহ পাওয়া গেছে দুইজনের, জীবিত ফেরত এসেছে ১৬ জন এবং এখনো নিখোজ রয়েছেন ১৭ জন। (সুত্র: অধিকারের রিপোর্ট)
এটাতো গেল শুধুমাত্র আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক ঘটিত হত্যাকান্ড, গুম ও অপহরনের ঘটনা। এছাড়া দলীয় সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক হত্যাকান্ড, পিলখানা ট্রাজেডি, শাপলা চত্তরে হেফাজত ট্রাজেডি, রানা প্লাজা ধ্বস, তাজরীন ফ্যাসনে আগুন, রাজনৈতিক সহিংসতায়, লঞ্চ-ফেরী, রেল-বাস দুর্ঘটনায় ঘটা হাজার হাজার অস্বাভাবিক মৃত্যু গুলোতো আছেই। সবকিছু মিলিয়ে মনে হয় যেন এদেশ এখন সাক্ষাৎ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। যেদিকেই তাকান শুধু লাশ আর লাশ!!
পত্রিকা খুলতেই আর টিভি চালু করতেই কোন না কোন হত্যাকান্ডের খবর পাওয়া যায়। এভাবে কি মানুষ বাঁচতে পারে?? এমন অবস্থা হয়েছে যে, “কেউ বাসা থেকে বের হয়ে পুনরায় সুস্থভাবে বাসায় ফিরতে পারবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা নেই??
অর্থাৎ এ সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের অভ্যন্তরীন ও সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে যেমন ধ্বংস করেছে তেমনি নিরাপত্তা বাহিনীকেও নানা প্রশ্নের সম্মুখীনে দাড় করিয়েছে। ঘটেছে বিডিআর বিদ্রোহের মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা।
অথচ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের পঞ্চম বিষয় “সুশাসন প্রতিষ্ঠা”-এর
৫.৭-এ বলেছিল, “জনজীবনে নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সমুহকে রাজনীতির প্রভাবমুক্ত, আধুনিক ও যুগোপযুগী করে গড়ে তোলা হবে। (আংশিক)
এবং ২০১৪ সালের গণবিচ্ছিন্ন একদলীয় নির্বাচনের ইশতেহারেও তারা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১.১-এ বলেছে, “শান্তি-স্থিতিশীলতাঃ জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্রদায়িকতা দুর করে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান, তাদের কাজের ও চলাফেরার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।”
যদিও জঙ্গিবাদ ও সাম্রদায়িকতা আওয়ামী লীগের একটি রাজনৈতিক ইস্যু। এখন প্রশ্ন হলো এ সরকার প্রতিশ্রুতি অনুসারে সন্ত্রাস নির্মুল, সমাজ জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান, তাদের চলাফেরা ও কাজের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমুহকে কতটুকু রাজনীতির প্রভাবমুক্ত করে আধুনিক ও যুগোপযুগী করে গড়ে তুলতে পেরেছে??
এক বাক্যে বলা যায় এতটুকুও পারেনি বরং দেশের পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দলীয় একটি বাহিনীতে পরিণত করেছে।
ফলে দেশ এখন সন্ত্রাসীদের অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশে অপহরন, গুম ও খুনের রাজত্ব চলছে। প্রতিদিন মিডিয়াতে অহরহ সাধারন খুন ও অপহরনের খবরতো থাকছেই সেই সাথে সপ্তাহে অথবা মাসে বোনাস হিসাবে ইলিয়াছ আলী, চৌধুরী আলম ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দু জন শিবির নেতা সহ অসংখ্য বিরোধী নেতা-কমী নিখোজসহ সাগর-রুনী, ব্লগার রাজীব, নাটোরের চেয়ারম্যান, নরসিংদির লোকমান, গোপীবাগের সিক্স মার্ডার, নারায়নগঞ্জের ত্বকীসহ প্রায় ২০ জন শিশু, নজরুল-চন্দনসহ সাতজন এবং ফুলগাজি উপজেলা চেয়ারম্যান একরাম হত্যার মত আলোচিত, চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস হত্যাকান্ডের অন্তত একটি খবরতো থাকছেই। এছাড়া রাজনৈতিক ইস্যুকে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বলে নিরীহ-নিরাপরাধ মেধাবী ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, ডাক্তার এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদসহ অনেককেই বন্ধুকযুদ্ধের নামে হত্যা এবং গ্রেফতারের নামে অপহরণ করে গুমতো আছেই।
দুঃখজনক হলেও সত্য আজ পর্যন্ত একটি হত্যাকান্ডেরও সঠিক বিচার এদেশে হয়নি। বিচারতো দুরের কথা সাগর-রুনী, গোপীবাগের সিক্স মার্ডার, নারায়নগঞ্জের সাত খুনসহ অনেক হত্যাকান্ডের মূল আসামীরা এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।
দেশের পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে একটি চাঞ্চল্যকর খবরের নীচে চাপা পরে আরেক চাঞ্চল্যকর খবর। সবকটি মামলা তদন্তেই ঝুলে থাকে, না হয় বিচার, না ধরা পড়ে আসামী!!
এসবের কারন কি?? আমাদের দেশের গোয়েন্দা বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনতো এতটা দুর্বুল নয়?? তাহলে ঘটে যাওয়া হত্যাকান্ডগুলোর কোন বিচার করতে পারে না কেন?? কেন অনেক আসামীকে আজ পর্যন্ত চিহ্নিতই করতে পারছে না??
আসলে বর্তমান পুলিশ দেশের জনগনের নিরাপত্তা বিধান ও দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে কাজ করার পরিবর্তে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রটোকল ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দমন করতেই বেশি সময় দিচ্ছে। অর্থাৎ সরকার তাদের ক্ষমতাকে স্থায়ী করতে প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। ফলে এসব হত্যাকান্ড তদন্তের জন্য পুলিশ পর্যাপ্ত সময় ও লোকবল দিতে পারছে না বলে বিশিষ্টজনরা মনে করেন।
তাছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ থাকবে না কেন?? অভিযোগ থাকারতো যুক্তিসঙ্গত কারন রয়েছেই।।
সম্প্রতি পুলিশের আইজি জনাব শহিদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বে-নজীর আহমেদ, বিজিবি মহাপরিচালক আব্দুল আজিজ সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পদমর্যাদায় দায়িত্বপ্রাপ্তদের বক্তব্য শুনলে মনে হয় তারা জনগনের জন্য নয় বরং একটি রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে।
অথচ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিল, “বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হবে। বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করা হবে..............আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, স্বাধীন মানবধিকার কমিশন গঠন ও ন্যায়পাল নিয়োগ করা হবে। মানবধিকার লঙ্ঘন কঠোরভাবে বন্ধ করা হবে।”
কিন্তু আজ সরকার কি সে প্রতিশ্রুতি রাখতে পেরেছে?? দেশে কি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে?? আজ প্রতিটি মুহুর্তে দেশে মানবধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কেন??

দেশে কোন হত্যাকান্ড বা দুর্ঘটনার ঘটার সাথে সাথে সুষ্ঠ তদন্ত হওয়ার পুর্বেই বিরোধীদলকে দায়ী করে সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে। ফলে মুল আসামীরা ধোরা ছোয়ার বাহিরে থেকে যাচ্ছে। সরকারের ইচ্ছামত যে কাউকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে আবার জামীনও দেয়া হচ্ছে।
মুলত এসব কারনেই আজ এদেশের পুলিশ প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার উপর থেকে জনগন তাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। ফলে দেশ গুম, খুন ও অপহরনের কবলে পতিত হয়েছে।
দেশের শান্তিকামী জনগনের এখন একটাই দাবী দেশকে গুম ও খুনের কবল থেকে মুক্ত করতে হবে।
আর এ কাজটি বাস্তবায়ন করতে হলে অতি দ্রুত প্রশাসনকে দলীয়প্রভাবমুক্ত করে তাদেরকে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। জনগনের স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহনে দ্রুত অবাধ, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে যেখানে সব দলের অংশগ্রহন থাকবে। সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলকে একত্রিত হতে হবে। প্রশাসনের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা সকল দুনীতিবাজ কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সর্বপরি স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, অর্থমন্ত্রনালয়সহ অন্যান্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান সমুহের গুরুত্বপূর্ন জায়গাগুলোতে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক যোগ্যতা সম্পূর্ন ব্যক্তিদেরকে পদায়ন করতে হবে। এবং দেশের সকল রাজনীতিবিদদের প্রতিহিংসা পরায়ন মনোভাব পরিহার করে দেশের উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করতে হবে তাহলেই দেশকে এমন মৃত্যপুরী থেকে স্বাভাবিক ও সুন্দর পরিবেশে ফিরেয়ে আনা সম্ভব তা না হলে নয়।।


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×