somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সে দিনের বালিকা

১৭ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সে দিনের বালিকা
আজি সাজিত বধু বেশে
শাড়ীর আচরে ঢাকা,
বাধন নেই তার কেশে।

খুকি ডাকের সারা দিয়ে
সেই সেদিনের মেয়ে
অবাক করেন প্রভু,
আজ নাকি তার বিয়ে।

দাদা ভাই ভালো লাগে
তোমার পানে ফিরে
খুকি ভেবে অবহেলায়
দারা তুই বলিস কিরে।

মাছুম চোখের চাহনি পারে
অশ্রুতে সে ভিজে
বুঝিনি হিয়ার উকিতে লুকানো
যৌবন আবেগের সাঝে।

কিশোরীর চোখ পাতে দেখেছিলাম
রাঙ্গিত আবেশ
আজ এই খুকির চোখে
প্রিয়েতে জাগবে ভিনদেশ।
কাঁদবে তুমি বলেছে
খুকির জ্যোতিষী মণ
শেষ পাড়ে খুকি ই জিতে
করল সবি হরণ।

আতুশ বাজির ধোয়াটে আভায়
পরী দেখিনি
নতুন সাজের খুকি আমার
লাগছে যেন হরিণী।

বুকের মাঝে জায়গা তাহার
বুঝিল আজি মণ
কুদরতের কারিশমা
হিয়ার পটতনে জাগিছে দহন।

ওগো উপরওয়ালা,
একি মায়াপোষ ইন্দ্রজাল
দুজনের বিচ্ছেদ দারে
এল অবলার খেয়াল।

কবিতার ভাষা বুঝিনি,
অঙ্কিত বালার বুকে জ্বালা
আহুতি পথের মাঝে মুই,
তাহার গলে পুস্প মালা।

আপনা বুকের আত্মীয়া সে
ধরিছে লুকিয়ে হাত
তোমার মুখে হাসি কই
ওগো পালওয়ান জাত।

খুকির হাতে জোর বেশী,
চল! পিছন দুয়ার পথে
কাঁদো কাঁদো কাজলা সিক্তি
পালাও আমার সাথে।

নীড় ছেড়ে ঝাপটে বুকে
মাফ কর সখা
তোমায় ছেড়ে পিরিতে বসে
সঠিক পথ দেখা।

বাপের মথায় অগ্নি শিখা
এখন কি আর করি
চল তোমার বন্ধু বাড়ি,
বলছে খুকি নামের বুড়ি।

আধা পাগল বন্ধু আমার
দুয়ার খুলে চেয়ে
কত সুখ পেয়েছে সে
মোদের মিলন দেখে।

ছোনের চাল,
গোল পাতার প্রাচি
আমার বাসর কুঠি
একজোড়া পুষ্পে
সাজ্জিত এক চকি
মাঝে আসন গ্রহিতা
মোর সোনা বউটি।

স্বল্প ক্ষণের একটি রাত
স্বর্গ থেকে পাওয়া
বুঝিনি বালিকার গোপনি
সাবেক চাওয়া পাওয়া।

বুদ্ধি একটু কম হলেও
রমণী আদর জানে
ভীরু কম্পিত কায়ার অতলে
ঝাপটে সবি যাচে।

তন্দ্রাকালের সুখ
বক্ষে মোর, বধূয়ার মাথা
চালের নোলক দু'য়েক ছিদ্র
উপছানো জোৎস্না!

পরের দিনের কিরণমালী
ময়ুর সেজে কোঠে
পুতুল সাজে পরীর মেয়ে
এই বুঝি উঠে।

তন্দ্রাতে চোখ ডুবু
মাছুম কল্মি লতা
নিশিতের আদর মনে
কুন্তল খোলা ফিতা।

পাষাণ আমি এত দিনে
একে চিনলাম না
বালিকার গোপনে ঢাকা
পরী দেখলাম না।
পিয়াস বুকে অচিনতলে
নেই কোন তৃষ্ণা
শিয়রে ললিতা ঘুমে
কেউ ডাকিস না।

বন্ধু আমার না বুঝে
এই শালা খোল
ওর চোখে ঘুম গেঁথে,
কি হয়েছে বল!
নিঃশব্দে খাট ছেরে
দার খুলে সংসয়
আমার মায়ের সাদা বুলে
বউমাটা মোর কই?

পালকি লয়ে ছোট চাচু
বাহির উঠান দখল
কুঁড়ে বাসরে রাত,
ছেড়ে সোনার মহল

আদুরে সখি আমার
লাজ-মরি, মার আঁচর
ইস! সারা রাত কষ্ট
বউটার এমন বাসর।

মন্দিরের দেবীর সনে
পুঁজে যেমনে ঠাকুর মশাই
পত্নী আমার তেমন সাঁজে
বাড়ির পথের রশায় ।

পুত্রের বউ দেখে
স্বয়ং বাবার চোখে খুশী
ঘরোয়া দাওয়াত আকাশ তুঙ্গ
এগাও-ওগাও মিশি ।

ঘরের লক্ষ্মী দুয়ারে রাখ
পালকীতে তনয়া,
শ্রবণে জানিয়ে দাও
বকুলের মা !

কপল চুমে কালো টিপে
নতুন সাঁজে বধুর বেশে
আসন তটে
উঠোন পটে
নোয়া ভাবির রশা
ভুলি কেমনে
সেই সে দিনের দশা ।

হৃদয়ের বাসরে দিবা সাজ পূর্ণিমা
জ্যোৎস্না বেশে দেবী নয়
আলেয়া রেশ প্রতিমা ।

মায়ের আসন দখল ছলে
রান্না ঘর, স্থিত ভামিনী
ধোঁয়ার আঁচ, জল জল চোখ
ঘাবরিয়ে মা, নেই তার শোক
রাধে বাপ কুঠের আদরিনি।

ঘর-দুয়ারে সাজন ছাপ
হিমায়ী তার নেই পাপ
ভোর বেলা
যায়না পাওয়া
মোর সঙ্গি কায়া
ফজরের ডাক, তন্দ্রা মুছে,
প্রভুর তরে নিত্য মায়া।

নামাজ শেষ, কুরআন রেশ
জান্নাতি গড় আবেশ ।
উঠান ঝেড়ে, বাশেঁর ছোপে
খোপ খুলে দানা হাতে
টি টি সূরের গান
কক-ককানি মুরগি রোল
থমকে যায় সব বান ।

গোয়ালের বলদ জোড়া
করুণ দৃষ্টে চেয়ে
এ বাড়ির ছোট মেয়ে
এই বুঝি আসে।
অদূর গাঁয়ের পায়রা দোলা
বনিতার মায়া জানে
ডানা ভেঙ্গে টিনের চালায়
বিহানি সূর রচে।

মেয়েলি স্বভাব কোমরের দোল
পেক পেক সূরানি ক্রন্দ রোল
বউয়ের রাখা পান্তা আমার
এ যেন হাসের খামার
মূখোর দাওয়াত নিত্য সাবার ।

এমনি ভাবে কেটে গেলো
কত দিনের আসর
আজ ও রাঙ্গিত সৃতির পাতে
প্রথম রাণীর বাসর।

বুঝবেনা তুমি হাকিম
আজ ও কত লক্ষ্মী মোর বউটি
বুড়ি হলেও ভালোবাসি
বুড়া হইনি দু জনার মনটি।

বুড়া আমি কই হইছি ?
বলে কানে কানে
সবার চোখে বুড়ি সেও
মানি বল কেমনে ?
আমি জানি আসলে সে
সেই সে দিনের মেয়ে।

দেখ পাখা হাতে
তোমার রাঙ্গা ভাবী
ভুরু কুঁচকে তাকার ভঙ্গীটা ছার
মাতাল হব রানি।

যাহ! তুমি না!
বেহায়া পনি রসিক
ভাইসাপ কি ভাবে,
ওরে পাগল প্রেমিক।

আজ তবে উঠি,
দেখে চল মিয়া ভাই
জোয়ানির বাহাদুরি ভাইসাপ,
দেখে চলেনা তাই।

অনেক গুণের কথা শুনছি
দেইখা রাইখেন তারে
বউয়ের সুখে সংসার পূর্ণ রুপে বাড়ে।

এই জীবনের আপন যে জন
সেইত এই বুড়া
ভাই নেই বোন নেই,
চলে গেছেন তারা।

বাকি দিনের আগাম পথে
থাকে যেন প্রিতি
হটাৎ যদি একা হই
লাগে সেই ভীতি।
দোয়া করি ভালো রবেন
চলবে সুখের ধারা
ভাইসাপের সংগ দিবেন
হয়ে সুখের পায়রা।

কাব্যগ্রন্থ: চৈতালী দারোয়ান

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১০
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তোমাকে লিখলাম প্রিয়

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০২ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০১


ছবি : নেট

আবার ফিরে আসি তোমাতে
আমার প্রকৃতি তুমি,
যার ভাঁজে আমার বসবাস,
প্রতিটি খাঁজে আমার নিশ্বাস,
আমার কবিতা তুমি,
যাকে বারবার পড়ি,
বারবার লিখি,
বারবার সাজাই নতুন ছন্দে,
অমিল গদ্যে, হাজার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

×