আজকাল ব্লগের পাতা খুললেই বিভিন্ন ইস্যুতে ব্লগে হৃদয় স্পর্শী লিখা দেখতে পাওয়া যায়। লিখাগুলোতে অনেকসময় বিভিন্ন বিষয়ে আন্দলোনের ডাক দেওয়া হয়। বিষেশত বিভিন্ন বিষয়ে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার আহবান এখন হরহামেশায় দেখা যায়। তাছাড়া, ব্লগের মাধ্যমে সমাজ, রাষ্ট্র, সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন, সমাজের অনাচার, সরকারের দুর্ণীতি, ব্যর্থতা থেকে শুরু করে এমন কোন বিষয় নেই যা নিয়ে ব্লগে আলোচনা হয় না। নিজে মানুক আর নাই মানুক নিজেকে মহান হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য শত চেষ্টার নজির এই ব্লগে দেখতে পাওয়া যায়। আবার অন্যের চরিত্রে কালিমা লেপন করতেও ব্লগের কোন জুড়ি নেই।
গত কয়েক দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নির্যাতন, তেল গ্যাস বিদ্যুৎ রক্ষা কমিটির ডাকা হরতাল, ভিকারুন নেছা স্কুলের শিক্ষক কতৃক ছাত্রী ধর্ষন ও কলেজ অধ্যক্ষ কতৃক ধর্ষণকারীকে বাঁচানোর চেষ্টার প্রতিবাদে এই ব্লগে বিভিন্ন ধরনের জালাময়ী লিখা এসেছে। বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনের আহবান এসেছে। এসব আহবানে সারা দিয়ে অনেকেই বিভিন্ন মন্তব্য করেছে। নিজেদের সমাজ সংস্কারক, দুর্নীতি -অনাচার বিরোধী হিসেবে প্রমান করার আপ্রান চেষ্টা করে ঐসব আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে যোগ দেওয়ার আহবান জানিয়েছে।
কিন্তু আন্দোলনের ঐসব দিনগুলোতে কি দেখা গিয়েছে? যারা আন্দোলন আর সমাজ সংষ্কারের জিগির করে ব্লগের পাতা ভরে তুলেছে, অনেকের প্রশংসা আর বাহবায় নিজেকে অনেক বড় মহান সমাজসেবী হিসেবে নিজেকে ভাবতে শুরু করেছে, সেদিন আন্দোলনের মাঠে গুটিকয়েক চেনা মুখ ছাড়া তাদের টিকিটিরও সন্ধান পাওয়া যায় নাই। তারা ঘরে বসে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে কম্পিউটারের বাটনে আন্দোলন আর সমাজ পরিবর্তনের ঝর তোলে আর স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বাস্তবে মাঠে নামতে ভয় পায়। কারন তারা ব্লগীয় দেওয়ালে সমাজ পরিবর্তনের কথা বলে প্রশংসার বানীতে শিক্ত হলেও বাস্তবে তা বিশ্বাস করে না বা বিশ্বাস করলেও সামনে না থেকে আড়ালে থেকে ভাল ভাল বুলি আওড়াতে বিশ্বাসী।
আমার দেখা অনেক ছাত্র নেতা, যারা অন্যায় আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাছে কথায় ফুলঝরি ছিটিয়ে মানুষের আস্থা অর্জনে সমর্থ হয়েছে। আবার তারায় ক্যাম্পাস থেকে ফিরে ব্যক্তি স্বার্থে দুর্নীতি করতে সমান্যতম পিছপা হয় না । রক্ষনশীলদের কথা বাদ দিলাম এমনসব প্রগতিশীল ছাত্র নেতা দেখেছি যারা সারা রাত বিসিএস এর প্রশ্ন পত্রের খোজে তন্ন হয়ে ঘুরে তা পেয়ে সকালে পরীক্ষা দিয়েছে। আবার পরীক্ষা শেষে সেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সরকারওপিএসসি চেয়ারম্যানের পদতাগের দাবিতে ক্যাপাসে মিটিং, মিছিল জ্বালাময়ী বক্তৃতা, ব্লগে জ্বালাময়ী লিখনের মাধ্যমে নিজেকে মহান হিসেবে প্রতিষ্টা করেছে। আমি তথা কথিত ধর্মের কান্ডারীধারী এমন ছাত্র নেতাকে চিনি, যে সারাদিন মানুষকে ধর্মের বয়ান করে আর সারা রাত ধরে নীল ছবি দর্শন, মোবাইলে মেয়েদের ডিসটার্ব আর স্বমেহনে ব্যস্ত থাকে। যে কিনা পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও কেন্দ্রীর সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ পেয়ে ইসলামের পতাকা উড়ানোর কাজে নিজেকে নি্যোজিত করে।
আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে দেশের সুপরিচিত অনেক সুশিল সমাজের প্রতিনিধির সাথে মেশার সুযোগ হয়েছে যারা সমাজ সংস্কারের ঝান্ডা উড়িয়ে বিদেশ গিয়ে মদ আর ক্যাটালগ দেখে মেয়ে মানুস বাছায় করে তাদের বুকে নিজেদের ডুবিয়ে রেখে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখে। আমি অনেক মানবাধিকার নেতাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, যারা মানবাধিকার রক্ষার নামে বিদেশ থেকে কোটি কোটি টাকা এনে বিলাশবহুল গাড়ি, বাড়ি আর জীবন জাপন করে। এমনকি তাদের অফিস আর ব্যক্তিগত জীবনেও তারা নিয়মিত মানবাধিকার লংঘন করে চলে। শুধু নিজের পকেট ভরানোর জন্য গেল গেল সব গেল, দেশের মানবাধিকার ভুলন্ঠিত হল বলে আষাঢ়ে গল্প ফেদে অন্য দেশের কাছে নিয়মিত হাত পেতে চলে। আমার এ কয়েকদিনে ব্লগে এমন কিছু তথা কথিত সমাজ সংস্কারক, সুশীল অথবা আস্তিক-নাস্তিক ব্লগারের সাথে পরিচয় হবার সুযোগ হয়েছে যারা, ব্লগে মেয়ে নিকের লিখা আসলে হুমরি খেয়ে পড়ে, তাদের সাথে লুলানোর জন্য আপ্রান চেষ্টা করে চলে।এমন কি সারা রাত জেগে চাটিং এ ব্যস্ত থাকে।
তাই, এসব ব্লগীয় চিৎকার, প্রগতিশীলতার মুখোস, সুশিল সমাজের ভন্ডামী আর মানবাধিকারের প্রপাগন্ডায় লাথি মেরে যেখানে অন্যায় সেখানে প্রতিরোধ, সেখানে অবিচার সেখানে প্রতিরোধ, যেখানে অনিয়ম সেখানে প্রতিরোধ, যেখানে দুর্নীতি সেখানেই প্রতিরোধ এই নীতিতে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এতে যদি দেশের তথাকথিত আইন হাতে তুলে নিয়ে সমাজের নিকট অপরাধী হতে হয় তাই হতে হবে। তাতে না হয় দেশদ্রোহী হয়ে মৃত্যু পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পথে পথে ঘুরতে হবে!!! না হয় সারাজীবন জেলের ভিতর পচতে হবে!!! না হয় ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হবে!!! ক্ষতি কি?
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুলাই, ২০১১ ভোর ৫:১৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




