somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিটিজেন মিডিয়া সামিট ২০১০ - লাইভ ব্লগিং ফ্রম সান্তিয়াগো

০৬ ই মে, ২০১০ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বসেছি। ইটস লাভলী। এটুকু বলা যায়। প্রায় আড়াইশ জিভিয়ারস। জিভি মানে গ্লোবাল ভয়েস এবং এদেরকে সংক্ষেপে আমরা বলছি জিভিআরস। সোলানা লারসেন এক্সিকিউটিভ এডিটর সবাইকে ওয়েলকাম জানালেন। বললেন এখানে প্রায় ৪০/৪৫ ঘন্টা ভ্রমণ করেও অনেকে এসেছেন। অবশ্য এজন্য আমাকে স্মরণ করতে হবে। কারণ বাসা থেকে বের হবার পরে ৪৬ ঘন্টা লেগেছে সান্তিয়াগো এয়ারপোর্ট পৌছুতে।

সিটিজিন মিডিয়া সামিটে বিশ্বের সবকটি মহাদেশ থেকে পার্টিসিপেন্ট এসেছে। ইরান, চায়না যেখানে ব্লগস্ফিয়ারের উপরে নানাবিধ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয় সেখান থেকেও এসেছে। আমার পাশে আছে পাকিস্থানের সানা - ডন পত্রিকায় লেখে। জিভিতে লিখছে। ডান পাশে ইন্দোনেশিয়ান ওযান্ডি। সে অবাধ তথ্য সরবরাহ পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়োজিত একটা এনজিওতে কাজ করে।

গ্লোবাল ভয়েসের এই ইভেন্টকে সামনে রেখে চিলিতে একটা ব্লগিং কম্পিটিশন এরেঞ্জ করেছিলো ওসিডি। ওসিডি একটা আমেরিকান প্রতিষ্ঠান যারা সিটিজেন মিডিয়াকে প্রমোট করছে ল্যাটিন আমেরিকায়। ব্লগিং কম্পিটিশনের ফলাফল এখন জানানো হবে। চিলিয়ান ইসাবেলা বেস্ট ব্লগার নির্বাচিত হয়েছে।

এবারের বিষয় হলো পরবর্তী প্রজন্মের সিটিজেন মিডিয়া, সবার জন্য সুবিধা প্রদান ও সিটিজেন অংশগ্রহণ। মূলত সিটিজন মিডিয়া বলতে বোঝানো হয় ইন্টারনেটের তথ্যপ্রবাহের অবাধ সুযোগ নিয়ে সাধারণ নাগরিক যখন নিজরাই তুলে ধরে বিষয় বৈচিত্রের অভিনবত্ব, সাংবাদিকের মত, কখনও ছবিতে, ভিডিওতে, লেখায়। তুলে ধরে সেসব বিষয় যা প্রচলিত মিডিয়া তুলে ধরায় সাহসী হয়ে ওঠে না। সিটিজেন মিডিয়া হয়ে উঠছে আগামীদিনের শক্তিশালী মিডিয়া - প্রচলিত তথ্যপ্রবাহের প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো নানাধরণের আরোপিত নিয়ন্ত্রণের মুখোমুখি হয়, সিটিজেন মিডিয়া সেদিক থেকে মুক্ত। গ্লোবাল ভয়েসই প্রথম সংস্থা যারা সিটিজেন মিডিয়াকে বিশ্বব্যাপী পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

এ পর্যায়ের বিষয় হলো চিলি - চিলিতে সিটিজেন মিডিয়া, সোশাল নেটওয়ার্ক এবং বিকল্প মিডিয়ার অবস্থা কেমন সেটা নিয়ে একটা আলোচনা মানে চিলির সিটিজেন মিডিয়া কেমন মূলত সেটাই জানানো। এ মুহূর্তে কথা বলেছেন পালোমা বেটিলম্যান, সোশ্যাল মিডিয়া কনসালটেন্ট। সে বলছেন ২৭ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে আমরা দেখেছি টুইটারের গুরুত্ব। মূহূর্তের মধ্যে কয়েক হাজার টুইটার মেসেজ মানুষকে সতর্ক করেছে। চিলিয়ানরা মনে করে তারা বিচ্ছি্ন্ন আমেরিকার থেকে। একটা দ্বীপের মত। কারণ চিলি পাহাড়ে ঘেরা। এবং এখানে খুব কম মানুষই আসে। এবং অনেক দিনই এটা আসলে বিচ্ছিন্ন ছিলো বহিবিশ্বের থেকে। ফলে এখানের মানুষ কিছুটা সংকোচিত থাকে। (আমিও এটা দেখেছি। ফরেনার দেখলে এরা একটু অবাক হয়। খুব কম মানুষই আসে অন্য দেশ থেকে। তবে চাইনজিরা ঠিকই আছে, লোল)। তাছাড়া অনেক বেশী সময় কাজ করে বলে এদেশের মানুষ কিছুটা বোরিংও হয়। ফলে তাদের বেশীরভাগ সময় নির্ভর করতে হয় যান্ত্রিক যোগাযোগের উপরে। কিন্তু একটা বিষয় ইন্টারেস্টিং তা হলো আমরা চাই একই সাথে ফেমাস হতে আবার আইসোলোটেট থাকতে। এসব কারণেই মূলত ডিজিটাল মিডিয়া এখন ব্যাপকভাবে বিকশিত ও ব্যবহৃত।

এখন কথা বলছেন চিলির ডায়ারিওস সিউডাডানোস নামে একটা সংস্থার জর্জি ডমিনগুয়েজ। তিনি বলছেন তাদের সংগঠন মানুষকে ইন্টারনেটের সাথে পরিচিত করার চেষ্টা করছেন। ডেমোক্লাসিয়া ডেসারোলো নামে একটা সংস্থার এনজো আবাগ্লিআটি বললেন, চিলি সরকার ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক শক্তিশালি করার জন্য ব্যাপকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে। কিছুটা জটিল ভৌগলিক অবস্থানের কারণে। মস্কো থেকে লিসবন যত দূর চিলির দক্ষিণ থেকে উত্তর সীমান্তে পৌছুতেও ততটা পথ পাড়ি দিতে হয়। (ইন্টারেস্টিং হলো তারা কথা বলছেন স্প্যানিস, আমাদেরকে ইন্টারপ্রেটিং ডিভাইস দেয়া হয়েছে। ফলে স্প‌্যানিস থেকে ইংরেজী হয়ে বাংলায় লিখছি, বক্তব্য অনেক মিস হয়ে যাচ্ছে)। ই-গভার্মেন্ট সরকারের প্রধান একটা কাজ যা এ মুহূর্তে করছেন। এখানে রাজনীতিও ডিজিটাল মিডিয়ার সাথে সেজন্য জড়িয়ে গেছে।

প‌্যানেল বক্তাদের আলোচনায় চিলির আর্থসামাজিক পরিপ্রেক্ষিতে ডিজিটাল মিডিয়ার প্রভাব ফুটে ওঠে। এবং সেটা প্রায় নেতৃত্বস্থানীয়। পাবলিক প্রাইভেট সহযোগিতামূলক আচরণ চোখে পড়ে। ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য স্প‌্যানিশভাষী দেশের মধ্যে কলম্বিয়া, বলিভিয়ায় সিটিজেন মিডিয়ার ব্যাপক কাঠামো এখন তেমন তৈরী হয়নি জানালেন কয়েকজন জিভিয়ার।

দক্ষিণ আমেরিকার বেশীরভাগ দেশ সম্মন্ধে আমাদের ধারণা বিচিত্র। ল্যাটিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা বলতে আসলে আমরা কি বুঝি সেটা বোধহয় বেশ স্পষ্ট না। ল্যাটিন আমেরিকা আসলে বলা হয় সে সব অঞ্চলে বৃহত্তর অর্থে যেখানে রোমান্স ল্যাংগুয়েজে মানুষ কথা বলে। যেমন পর্তুগীজ, স্প‌্যানিশ এবং ফ্রেঞ্চ একটা ক্ষুদ্র অংশে। এবং একমাত্র ব্রাজিল ছাড়া প্রায় সব কটা দেশেই স্প‌্যানিশ রাষ্ট্রভাষা বা বেশিরভাগ মানুষের মুখের ভাষা। তারমানে ল্যাটিন আমেরিকার লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা স্প‌্যানিশ।

এরপরে ন্যাট বায়জায় এবং রুথি আকারম্যান আফ্রিকার লাইবেরিয়ার উপরে একটা প্রেজেন্টেশন করলো। লাইবেরিয়া পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট একটা দেশ। জাতিগত সংঘর্ষে জর্জরিত। আক্রান্ত মানুষের দুরাবস্থার চিত্র কিভাবে সিটিজেন মিডিয়ায় উঠে এসেছে সেসব নিয়ে। সিজফায়ার নামে একটা সংগঠনকে সে প্রতিনিধিত্ব করছে।

চিলিয়ান টাইম দুপুর ১টা

অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে চারটা গ্রুপে বিভক্ত হয়ে এখন স্থানীয় পর্যায়ের সিটিজেন মিডিয়া বিষয়ে গ্রুপ ডিসকাশন শুরু হয়েছে। আমি যে গ্রুপটাতে আছি সেখানে চিলি, বলিভিয়া, ম্যাসিডোনিয়া, আর্জেন্টিনা এবং প্লাস্টাইন রয়েছে। প‌্যালেস্টাইনী ব্লগার আয়েশা জানালেন আরবীতে ব্লগিং প‌্যালেস্টাইনীদের মধ্যে কম দেখা যায়, বেশীরভাগ ইংরেজীতেই ব্লগ লিখে থাকেন। তবে ব্লগিং খুব সহজ না গাজাতে। বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই তাছাড়া নেট কানেকশনও কম। তবে লেবানন বেইজড প‌্যালেস্টানিদের একটা গ্রুপ আছে যেখানে সমস্যা সংকুল ফিলিস্তিনের নানাচিত্র তুলে ধরা হয়। লীনা নামে ফিলিস্থিনের এক ছাত্রীর কথা বললো আয়েশা যে নানা প্রতিকূলতা স্বত্ত্বেও কিভাবে ব্লগে নিজের ও দেশের কথা প্রকাশ করে যাচ্ছে। চিলির একজন জানালো সে কিভাবে ব্লগিং শুরু করলো। ২০০৪ এ ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখে তার শুরু, কিন্তু কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পের সময় সিটিজন মিডিয়ার শক্তি বোঝা গেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০১০ রাত ১২:৩৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×