ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত জনসাধারণের প্রাণ জুড়াচ্ছে ফলগুলো।
বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য ফলের চেয়ে এসব ফলের বিক্রি এখন বেশি।
দেখা গেছে, স্থায়ী অথবা ভাসমান ফল বিক্রেতারা সাধারণ ফলের সাথে মৌসুমী ফলের পসরা সাজিয়েছেন সবচেয়ে বেশি। প্রায় প্রত্যেক ফলের দোকানে তরমুজ, বেল সাজিয়ে রাখা আছে। বাঙ্গি, কাঁঠাল বাজারে এলেও অতিমূল্যের কারণে স্থানবিশেষে দোকানে এসব ফল দেখা গেছে। তবে তরমুজ, বেল, আতাফল, সরিফা বেশিরভাগ দোকান এবং ভাসমান বিক্রেতাদের কাছে পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ ক্রেতারা নিজেদের সামর্থ্যানুযায়ী কিনে নিচ্ছেন এসব মৌসুমী ফল।
বাঁশখালী, চন্দনাইশ-সাতকানিয়ার চরাঞ্চল, পটিয়ার চক্রশালা, কেলিশহর, বোয়ালখালীর করলডেঙ্গা পাহাড়ি এলাকা, চকরিয়া, মায়ানী, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু কিছু পাহাড়ি অঞ্চলে তরমুজের চাষ হয়। এসব এলাকা থেকে পাইকাররা নগরে সরবরাহ করে তরমুজ। আবার বরিশাল, ভোলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও চট্টগ্রামে তরমুজ আসে। এই মৌসুমে এখনো বৃষ্টি না হওয়ায় এবার তরমুজের ফলনও ভাল হয়েছে। স্টেশন রোডের আড়তগুলোর বেশির ভাগই ব্যস্ত তরমুজ আর বেল বিকিকিনিতে। আড়তদার মো. সাইফুদ্দিন জানান, সারা বছর কিছু কিছু সাধারণ ফলের ব্যবসা চললেও আমাদের ব্যবসা মূলত মৌসুমী ফলভিত্তিক। ফাল্গুন-চৈত্র থেকে শুরু করে ভাদ্র-আশ্বিন পর্যন্ত এ সময়টা আমাদের ব্যবসার মূল মৌসুম। তরমুজ, বাঙ্গি, আম, লিচু, জাম, জাম্বুরা, কাঁঠালসহ বিভিন্ন গ্রীষ্মকালীন ফল দেশের জেলাগুলো থেকে এখানে আসে।
বর্তমানে মৌসুমী ফলের মধ্যে তরমুজ, কাঁঠাল আর বাঙ্গি আসা শুরু হয়েছে। সাধারণত আড়তদারদের কাছ থেকে খুচরা বিক্রেতারা শত হিসাবে কিনে এনে বিক্রি করেন। আকারভেদে একেকটি তরমুজ ২০/৩০ টাকা থেকে শুরু করে ২শ/আড়াইশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে এমন ভরা মৌসুমে তরমুজের দাম তুলনামূলক বেশি বলে ক্রেতাদের আক্ষেপ রয়েছে।
জনৈক ক্রেতা মো. জাহেদ উল্লাহ বলেন, ৪০/৫০ টাকায় কেনা তরমুজের রঙ আপাত লাল, তবে মিষ্টতা নেই। আর ২’শ/আড়াইশ টাকা মূল্যের তরমুজ এ বাজারে ক’জনে কিনতে পারছে ? জানা গেছে, দু’একটা চাষ এলাকা থেকে বাঙ্গি সবে আসা শুরু হয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের কারণে তা এখনো সাধারণের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
তবে বেশ কয়েকটি আড়তে বেলের সংগ্রহ দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি বেল আসে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ থেকে। ২০/৩০ টাকা জোড়ায় খুচরো বেল বিক্রি হচ্ছে। বেল বিক্রেতা মো. মতি মিয়া জানান, গরমে সবাই কম বেশি বেলের শরবত খেতে ভালবাসে। তাই বেল বিক্রি করে মোটামুটি লাভ ভাল ।
একটু আগাম হলেও স্টেশন রোডের ফলের আড়তে কাঁঠাল দেখা গেছে। তবে তা সীমিত সংখ্যক। কাঁঠালের আড়তদার মো. সুমনের কাছ থেকে জানা যায়, রাঙামাটি অঞ্চলের কোথাও কোথাও আগাম কাঁঠাল পাকে। পাইকাররা চাষিদের কাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করেন। আগাম ফলনের কারণে দামও বেশ চড়া। আকারভেদে কাঁঠাল ১শ ৫০ টাকা থেকে ৩শ/সাড়ে ৩শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রেয়াজুদ্দিন বাজার, জিইসি মোড়, কাজীর দেউড়ির ফল বিক্রেতারা এসব কাঁঠাল কিনে নেয় বলে জানান আড়তদার শরীফউদ্দিন। তবে কাঁঠাল কাঁচা অবস্থায় সংগ্রহ করে বাগানেই বিষাক্ত ইথিলিন দিয়ে পাকানো হয় বলে অভিযোগ আছে।
তবুও মধু ফল বলে কথা। মধু সময়ের মধু ফলে বাঙালির চিরকালীন দুর্বলতা। তাপদাহের যন্ত্রণায় জনমনে একটুুু শীতলতার পরশ ও প্রশান্তি মধুমাসের এই মধু ফলে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:৪৪