somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ঢাকা উত্তরের আওয়ামী মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক নামাঃ

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশির দশকে আনিসুল হক ছিলেন সাবেক সচিব নূরুল কাদেরের দেশ গার্মেন্টের কর্মচারী, আর ফাঁকে ফাঁকে বিটিভিতে প্রোগ্রাম করতেন। পরে চাকুরীতে যোগ দেন মোহাম্মদী গ্রুপে। এর পরের কাহিনী যেন বাংলা সিনেমার গল্প।

আনিসুল হঠাৎ করে এত পয়সা করলো কিভাবে?
প্রথমত, নিজের কূটকৌশল দিয়ে চাকুরীতে থাকাকালীন সময়ে মোহাম্মদী গ্রুপ থেকে বিশাল চুরি, তারপরে ঝোপবুঝে কোপ মেরে কোম্পানীকে নিজের মালিকানায় নিয়ে হয়েছেন মোহাম্মদী গ্রুপ এর চেয়ারম্যান। দ্বিতীয়ত, তার কাজিন আল আমিন চৌধুরী ছিল শিল্প ঋন সংস্থার চেয়ারম্যান, পরে শিল্প মন্ত্রনালয়ের সচিব। আনিস তার এই কাজিনকে ব্যবহার করে বহু অবৈধ সুবিধা/ঋন নিয়ে নিজেকে করেছে কোটি কোটিপতি। এখানে উল্লেখ্য যে মোহাম্মদী গ্রুপ-এ অনেক বড় স্কান্ডাল করে প্রচুর টাকা মেরে প্রথমে বের হয়ে আসে সে। পরবর্তীতে ওই গ্রুপের ব্যবসা দখল করেন আনিসুল। এরপরে গার্মেন্ট খাতের উত্থানের সময় চতুর আনিসুল প্রায় ১২ বছর যুক্ত থাকে বিজিএমইএ-র নির্বাহী পরিষদে, শেষে হয় বিজিএমইএ-র সভাপতি। এ সময়ে নানা ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা, অবৈধ কায়কারবার করে ফুলে ফেঁপে ধীরে ধীরে আনিসুল হক হয়ে ওঠে বিশাল বটগাছ। এখানে আরও বলে রাখা ভালো,- বিজিএমইএ-র সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ইউরোপ, আমেরিকার ব্যবসায়িদের কাছে এই চতুর আনিসুল বিএনপি ঘরনার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে বিদেশীদের কাছ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছেন যা বর্তমানে বেড়িয়ে এসেছে।

দেশ গার্মেন্ট ও পরে মোহাম্মদী গ্রুপ-এ চাকুরীরত থাকাকালীনই আনিসুল বিটিভিতে বিভিন্ন প্রোগামে অ্যাংকরিং করতেন। সেই সুবাদে তখন পরিচয় হয় ঢাকা ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট Andre Kemal Rahim- এর স্ত্রী রুবানা কামালের সাথে। রুবানা ছিলেন একজন ভালো তার্কিক। পরিচয়ের পর নিজের বদকৌশল দিয়ে চতুর আনিসুল রুবানা কামালকে এক মেয়ে সহ Andre Kemal Rahim-এর থেকে তালাক দিয়ে ছাড়িয়ে এনে নিজের বউ করে বানান রুবানা কামাল থেকে রুবানা হক।

তারপর বছর খানেকের মধ্যেই আনিসুলের ওপর থেকে নেশার ঘোর কেটে যায় রুবানার। ক্লাব হাউজের সুবাদে রুবানা তখন সম্পর্ক তৈরী করে তৎকালীন ঢাকাস্থ কানাডিয়ান হাহকমিশনারের সাথে। আনিসুলকে ছেড়ে রুবানা উঠে রাষ্ট্রদূতের বাড়িতে। অবশ্য হিজ এক্সিলেন্সি রুবানাকে ব্যবহার করলেও সেখানে টিকে থাকতে পারেনি, রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব পালন শেষে ঢাকা ছাড়ার সময় রুবানার সাথে প্রচন্ড ঝামেলার সৃষ্টি হয়। রুবানা আবার ফেরত আসে আনিসের কাছে। এখন সমাজে রুবানার পরিচয় হলো আনিসুলের ২য় স্ত্রী। এখন খবরে বেড়িয়ে এসেছে যে, এই রুবানা প্রবীণ ব্যারিস্টার রফিকুল হকের মেয়ে।

আনিসুলের উত্থানের পুরো বিষয়টি জানা ছিল সরকারী গোয়েন্দা সংস্থার। ১/১১-এর সময় ডিজিএফআই আনিসুলকে ধরে নিয়ে যায়, এবং তার দুর্বলতা ব্যবহার করে ব্রিগেডিয়ার বারীরা কোটি কোটি টাকার দাও মারে। ১/১১-এর সেনাঅফিসারদের কাছে শেখ হাসিনার অনেক দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রচুর সাক্ষ্য দেয় আনিসুল। শেষে তার ভাই ব্রিগেডিয়ার বেলাল ম্যানেজ করে আনিসুলকে মুক্ত করে।

আনিসের সেই আপন ছোটভাই ব্রিগেডিয়ার বেলাল এখন লে. জেনারেল বেলাল। সিরিয়ালে আছে পরবর্তী সেনাপ্রধান হবেন। আর তাই চতুর হাসিনা এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঢাকায় নিজের দলের অসংখ্য ত্যাগী নেতা থাকা সত্ত্বেও নিজের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে বেছে নেয় চতুর ব্যবসায়ি আনিসুল হককে।

শেখ হাসিনার আনুগত্য পেয়েই নিজের আসল চরিত্র প্রকাশ করতে থাকেন আনিসুল। রাজনীতিতে নেমেই সর্ব প্রথম নিজের ব্যাপারে জনতার কাছে করলেন মিথ্যাচার। সাংবাদিকদের কাছে আনিসুল হক বলেছেন তার বাড়ি নেই, পরিবারের কারো গাড়িও নেই।

আনিসুল নির্বাচনী হলফ নামায় করেছেন আরও বড় মিথ্যাচার। হলফ নামায় নিজের সম্পদের ৯০ভাগই গোপন করে আনিস বলেন, ‘রাজধানীর বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮০ নম্বর বাড়িটিতে আমি থাকি। বাড়িটি বছরখানেক আগে তিন সন্তানের নামে লিখে দিয়েছি।’ আনিস বলেন তার দুই মেয়ের মাত্র ২০ হাজার টাকার গয়না আছে।
মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিসুল হক আরও বলেন, গ্রুপের অধীনে ২২টি কোম্পানি আছে। যেখানে প্রায় ১৫ হাজার লোক কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের সাধারণ কর্মকর্তাও সব সময়ের জন্য গাড়ি পান। চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি কোম্পানি থেকে সব সময়ের জন্য একাধিক গাড়ির সুবিধা পান। সারা জীবনের সব উপার্জন দিয়েই এসব কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন বলেও জানান এ ব্যবসায়ী নেতা।

আনিসের এই তথ্য সত্যিই অনেক হাস্যকর! মানুষ রীতিমত অবাক তার রাজনীতির শুরুতে এতো বড় মিথ্যাচার দেখে।

নিজের বাড়ি মেয়েদের নামে লিখে দিছে, নিজের কোম্পানি থেকে একাধিক গাড়ি পান। তাই নিজের গাড়ি, বাড়ি কিছুই নেই। এর চেয়ে হাস্যকর তথ্য কি হতে পারে?

আনিসের আওয়ামী রাজনীতি শুরু মিথ্যা ও প্রতারণা দিয়ে। এখন দেখার বিষয় ঢাকার মানুষ এই মিথ্যুক ও প্রতারককে ঢাকা উত্তরের নগর পিতা হিসেবে পাশ করান কিনা। আর ভোটের পরই বুঝা যাবে কতোজন প্রতারক বাটপার এই আনিস বাটপারকে ভোট দিয়েছেন। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করি।

( ধোলাই পেইজ থেকে )
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×