আমার এক ইন্দোনেশিয়ান কলিগ/বন্ধু আছে,ও সবসময় একটা ইন্দোনেশিয়ান ব্রান্ডের সিগারেট খায় যার স্বাদ হুবুহু "গুদাং গ্রাম" সিগারেটের মতন! উল্লেখ্য যে,গুদাং গ্রামও ইন্দোনেশিয়ান সিগারেট।তো ও মাঝেমধ্যে আমাকে জোর করে ওর প্যাকেট থেকে সিগারেট দেয়।আমি যখনই সেই সিগারেটটা টানি আমার স্মৃতিতে কেবল ফিরে আসে গবর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল,স্কুলের সেই বন্ধুরা,আনোয়ার কাকুর চায়ের দোকান,নিউ মার্কেট আর ধানমন্ডি লেক!!!
মানুষের জিহ্বা ও স্বাদের স্মৃতিশক্তি যে কতটা প্রকট এটা হয়তো তারই প্রমান। শুধু এই বিশেষ সিগারেটই নয়,আমি যখনই তরমুজ খাই আমার প্রথমেই মনে পরে ছোটবেলার রমজান মাসের ইফতারির কথা।কারন আমার ছোট বয়সের রোজার মাস আসতো গ্রীষ্মে! পাতলা আলুর হোমমেইড চিপ্স খেলেই মনে পরে বলাকা সিনেমা হলের সেই অন্ধকার ঘর। দেশি চাইনিজ খেলেই মনে পতে টুংকিং কিংবা চাংপাই রেস্টুরেন্ট। শশা লবন মরিচের গুড়া দিয়ে খেলেই মনে পড়ে ঢাকা স্টেডিয়ামের ফ্লাড লাইটে মোহামেডানের চকচকে সাদা-কালো জার্সি।চকলেট মিল্ক খেলেই মনে পরে সেই ছয় টাকার চকলেট মিল্কভিটার কথা।ঘরে বানানো মিষ্টি দই আর লেবুর বানানো লাচ্ছি খেলেই মনে পরে নানাবাড়ি মুন্সিগঞ্জের নগরকসবার কথা। ফুচকা খেলে মনে পরে আলী মামার সেই ভ্যানের কথা।এরকম প্রায় প্রতিটা খাবারের সাথেই হয়তো মিশে আছে আমাদের এরকম ছোটছোট কতশত মিষ্টি মধুর স্মৃতি।
আফসোস আমাদের এই চেতনাধারি দ্বিতীয় প্রজন্ম ৭১ এর ৭ই মার্চের জয় বাংলার পর জিয়ে পাকিস্তানের স্বাদ পায়নি।আফসোস এরা ৭২-৭৫ এর বাকশাল আর রক্ষী বাহিনীর স্বাদ পায়নি।আফসোস এরা ৮৬'র জাতীয় বেইমানের স্বাদ পায়নি।আফসোস এরা ৯৪-৯৫ তে আওয়ামী - জামাত জোটের আন্দোলনের স্বাদ পায়নি।আফসোস এরা লগি-বৈঠার স্বাদ পায়নি...পেলে হয়তো আজকের প্রজন্ম এতটা মগজ ধোলাই হতোনা!
তাই তারা আজও চেতনার উত্থিত দন্ডে মেশিন চালিয়ে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলে।নিজের দেশে ভোট দিতে না পারলেও ইংল্যান্ডের নির্বাচনে অনলাইন প্রচারনায় মুখর থাকে সকাল সন্ধ্যা রাত!
একটাই আশা এখন... যেন অন্ধরা আবার চোখে দেখে,বোবারা যেন আবার বলতে পারে, বধিরেরা যেন আবার শুনতে পায়।নির্লজ্জদের যেন লজ্জাবোধ আবার ফিরে আসে!!!
সে পর্যন্ত তোমার জন্য শুভ কামনা বাংলাদেশ!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুন, ২০১৫ রাত ১০:৫৫