somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একদিন বিশ্ব মানচিত্র থেকে ইসরাঈলের নাম মুছে যাবে

২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯১৮ সালে ব্রিটেনের সহযোগিতায় ইসরাঈলের গুপ্ত ইহুদী বাহিনী “হাগানাহ” গঠিত হয়। এ বাহিনী ইহুদীবাদীদের অবৈধ রাষ্ট্র তৈরির কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকে।
১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইঙ্গ মার্কিন চাপে জাতিসংঘে ভোট গ্রহণ হয় তাতে ৩৩ টি রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ টি বিরুদ্ধে এবং ১০ টি ভোট দানে বিরত থাকে। প্রস্তাব অনুযায়ী মোট জনসংখ্যার এক-চর্তুথাংশ হয়ে ও ইহুদীরা পেল ভূমির ৫৭% আর ফিলিস্তিনিরা পেল ৪৩%। ইসরাঈল প্রতিষ্ঠা চূড়ান্ত হলেও উপেক্ষিত থেকে যায় ফিলিস্তিন। যে জাতিসংঘ আমেরিকার কথায় উঠাবসা করে সেই জাতিসংঘের মাধ্যমে পাশ হয়ে যায় একটি অবৈধ ও অযৌক্তিক প্রস্তাব। প্রহসনে জিতে গিয়ে ইহুদীরা হয়ে উঠে আরো হিংস্র। তারা হত্যা সন্ত্রাসের পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে রাতে তাদের বাড়ি -ঘরে হ্যান্ড-গ্রেনেড নিক্ষেপ, জোর করে জমি দখল এবং বিভিন্ন ভাবে নারী নির্যাতন করে মৃত্যু বিভিষিকা সৃষ্টি করতে লাগলো। ফলে লাখ লাখ মানুষ বাধ্য হলো দেশ ত্যাগ করতে। এরপরই ১৯৪৮ সালের ১২ মে রাত ১২ টা এক মিনিটে ইসরাঈল রাষ্ট্র ঘোষণা করলো ইহুদীরা। ১০ মিনিটের ভেতর স্বীকৃতি দিল আমেরিকা, অতঃপর সোভিয়েত ইউনিয়ন,ব্রিটেন।

Palestine অর্থ আল্লাহ্র ভূমির রক্ষক (ইসলামী বিশ্বকোষ ১৫তম খন্ড, পৃঃ ১৫৩)। এশিয়ার পশ্চিম প্রান্ত সীমা ও ভূমধ্যসাগরের পূর্ব সীমানা বরাবর ফিলিস্তীন রাষ্ট্রটি অবস্থিত। ফিলিস্তীনের মোট আয়তন ৬৩৩৫ বর্গ কিলোমিটার। ফিলিস্তিনি সেন্ট্রাল ব্যুরো (PCBs) এর মতে - "Palestinians at mid year 2009 as 10.7 million persons as follows: 3.9million in the Palestinian Territory (36.6%), 1.2 million (11.5%) in Israel; 5.0 million in Arab countries (46.2%), 0.6 million in foreign countries (5.7%). [Palestinian Central Bureau of Statistics May 2010; p. 11]" ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের আয়তন ছিলো ২৬,৩২৩ বর্গ কিলোমিটার। মোট জনসংখ্যা ৪০ লাখ। ১৯৪৮ সালে ছিল ১ কোটি। তন্মধ্যে পশ্চিম তীরে বাস করে ২৫ লাখ, গাজায় ১৫ লাখ, ইসরাঈলে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক ১১ লাখ, জর্ডানে ২৮ লাখ, অন্যান্য আরব দেশে ১৭ লাখ এবং সারা পৃথিবীতে ১ লাখ। প্রায় ১ কোটি মানুষের একটি জাতিগোষ্ঠী এমনই ভাবে আজ স্বদেশ থেকে বিতাড়িত, ভাগ্য বিড়ম্বিত এবং নির্যাতনে জর্জরিত। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সীমান্ত। সীমান্তের এক প্রান্তে ক্ষিপ্ত ইসরায়েলীরা, অন্য প্রান্তে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিরা। যুদ্ধের সাজ-পোশাকে তৈরী সবাই। প্রতিদিন, বা বলা যায় প্রতি মুহূর্তে-বেসামরিক ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েল সরকার নির্বিচারে ছুড়ে দিচ্ছে শত শত গ্রেনেড। ফিলিস্তিনিরাও হঠাৎ হঠাৎ পাল্টা জবাব দেয়ার চেষ্টা করছে। ফল স্বরূপ ইসরাঈল-ফিলিস্তিনের অবিচ্ছিন্ন আকাশে প্রায় সর্বক্ষণ লেগে রয়েছে গ্রেনেডের ছোড়াছুড়ি। কী ভয়ংকর দৃশ্য! বারুদ ভর্তি এক একেকটি গ্রেনেড নিমিষেই ধ্বংস করে দিচ্ছে শত শত স্বপ্ন। ইসরাঈলের বর্বর হামলায় আহত হয়েছেন এক হাজারের বেশি মানুষ। ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি। এছাড়া, ধ্বংস হয়ে গেছে দুটি মসজিদ এবং একটি প্রতিবন্ধী চিকিৎসা কেন্দ্র। গাজার বিদ্যুৎ, পানি ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে- গাজায় এ পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনী ১ হাজার ৩০০ বার বিমান হামলা করেছে। জাতিসংঘসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ গাজায় আগ্রাসন বন্ধ করতে ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানালেও তিনি তা অগ্রাহ্য করেছেন। গাজার শিশুরা রয়েছে সবচেয়ে ভয়াবহ খারাপ অবস্থার মধ্যে। ইসরাইলের এসব হামলার কারণে তাদের মধ্যে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে॥

তবে কথা হলো অবৈধভাবে দখল করে রাখার পরও পশ্চিমা দেশগুলো ইসরায়েলের এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। উল্টো যাদের উপর এই যজ্ঞ চালানো হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধেই যেন অবস্থান নিয়েছে তারা। বলছে, হামাস রকেট নিক্ষেপ বন্ধ করলেই এই যুদ্ধের আপাত অবসান হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তো এরই মধ্যে ঘোষণাই দিয়ে ফেলেছেন, "পৃথিবীর কোনো দেশই তার নিজের ভূখণ্ডে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপকে সহ্য করবে না। [বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম - ১৯ / ২০১৪ ]"

"ওবামা গাজায় অভিযানরত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে অভিযান এমন ভাবে পরিচালনা করতে বলেছেন যেন 'বেসামরিক নিহতের সংখ্যা কম হয়।' ওবামা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্ররা লড়াইয়ের তীব্রতা আরো বৃদ্ধি পাওয়া এবং আরো নিরপরাধ মানুষ হারানোর ঝুঁকিতে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন।[বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম - ১৯/ ২০১৪]"

ওবামার কথাগুলো এতই হাস্যকর যে,'চোরকে বলছে চুরি কর আর বাড়ির মালিককে বলছে সাবধান!' অথচ আমেরিকা চাইলে এক মুহূর্তেই এই সমস্যা সমাধান করতে পারবে! কিন্তু আমেরিকা তা করবে না। কারণ আমেরিকার জারজ রাস্ট ইসরাঈল তো আমেরিকার সাহসেই অনেক দিন থেকে ফিলিস্তিনে গনহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। দুঃখ জনক হলেও সত্য, ফিলিস্তিনে গনহত্যা বন্ধে আরব দেশের কোনো ভুমিকা নাই॥
আরব বিশ্বের অনেক দেশে ঈসরাইল দূতাবাস আছে যেমন তিউনিশিয়া, জরডান॥ আরবরাই প্রকাশ্যে গোপনে ইসরাঈলের কাছে তেল বিক্রি করে॥ আর সেই তেল দ্বারাই ফিলিস্তিন মুসলিমদেরকে হত্যা গণহত্যা করা হচ্ছে॥ সিরিয়া ইরাক ও লেবালনের শিয়া আসাদ মালেকী ও শিয়া হিজবুল্লাহদের কে টাকা অস্ত্র ও সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া আমেরিকা আর ইসরাঈল ইহুদিরা কারণ সুন্নী মুসলমানদের কে হত্যা ও আরব বিশ্ব ঐক্য নষ্ট করার জন্য এরা সফল॥ আরবরা একদিন পানি না পান করে থাকতে পারবে কিছু কোকাকোলা আর পেপসি ছাড়া নয়! ইসরাঈলের অধিকাংশ ব্যবসার আয়য়ের বড় অংশ আসে আরব বিশ্ব থেকে! যদি আরবরা ইসরাঈলের পণ্য বর্জন করে ,তেল বিক্রি বন্ধ করে, সকল আরব দেশ থেকে ইসরাঈল দূতাবাস বন্ধ করে দেয় তবে সারা দুনিয়ার কিছু করতে হবে না সমস্যার ৮০-৯০ ভাগ সমাধান আররাই করতে পারবে। এসব এর কিছুই তারা করবে না॥

"সম্রাজ্যবাদী অপশক্তির সহযোগিতায় অবৈধভাবে ইসরাইল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনিদের উপর বর্বর গণহত্যা চালিয়ে আসছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এ বর্বরতা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো খুনি ইসরাঈলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। যা ইসরাঈলের বর্বরতাকে আরো উস্কে দিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক দিনে গাজায় দখলদার ইসরাইলের কাপুরুষোচিত হামলায় নারী, শিশুসহ শতাধিক মুসলমান নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি। এখনো এমন ববর্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু লজ্জাজনক ভাবে তাদের অসহায় ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করতে বিশ্ববাসী এখন পর্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি॥ ফিলিস্তিনে ইসরাঈলের গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, ওআইসি এবং আরব লীগের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই ।" তবে একদিন ইসরাঈল ধ্বংস হবেই, সেই দিনটি হয়তোবা খুব দুরে নয়॥
" আল্লাহর নবীও বলে দিয়েছেন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে না ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না মুসলমানেরা ইহুদীদের সাথে লড়াই করবে। তারা ইহুদীদের হত্যা করবে। ইহুদীরা পাথর খন্ড ও গাছের আড়ালে লুকাবে। তখন পাথর ও গাছগুলি বলবে হে মুসলিম! এই যে ইহুদী আমার পিছনে। এস, ওকে হত্যা কর (মুসলিম হা/৮২, মিশকাত হা/৫১৪৪)।"

একদিন বিশ্ব মানচিত্র থেকে ইসরাঈলের নাম মুছে যাবে। তাই হতে পারে ফিলিস্তীনে তাদের জমা হওয়াটা চূড়ান্ত ধ্বংসের পূর্ব আলামত।
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×