!পতিতা,পতিতালয় সমাজকে স্থিতিশীল রাখে??
মুল কথায় যাওয়ার আগে যাওয়ার আগে আপনাদের আমার লাইফের একটা ঘটনা বলি!
২০১২ সাল,তখন আমি ভার্সিটির প্রথম বা দ্বিতীয় সেমিস্টারে আছি। বনানী-কাকলি ওভারপাস পার হওয়ার সময় প্রায়ই কিছু লোক আমাকে ডাকত। ভাই আসেন,আসেন আসেন।
এখানে আবার অনেকগুলা আবাসিক হোটেল আছে। আমি ভাবলাম হয়ত গ্রাম থেকে লোক আসে তাই তাদের হোটেলে থাকার জন্য হাক ছেড়ে ডাকছে। যারা গুলিস্তান, ফার্মগেট, মহাখালী, গাবতলি বাস টার্মিনালে গেছেন তারা বুঝবেন যাত্রীর জন্য তারা কিভাবে ডাকে, ঠিক সেই ভাবেই তারা ডাকে।
প্রথমে আমি তেমন পাত্তা দেই নাই। এর কিছুদিন পর একটা লোক ওভার ব্রিজের খানিক দূর থেকেই আমার পিছু নিয়েছে।
-ভাই আসেন,আসেন…..
--না না আমার বাসা এখানেই,আমার হোটেলে উঠা দরকার নাই…
-আরে ভাই আসেন,আপনি দেখেন আমাদের সেম্পল...পছন্দ হলে কইরেন না হয়ে চলে যায়েন….
--ধুর মিয়া….
লোকটাকে ঝাড়ি দিয়েই চলে আসলাম,ভার্সিটিতে যেয়ে দেখলাম দুই বন্ধু কথা বলতেছে এসব নিয়ে। তাদের কাছেই জানলাম এগুলায় আসলে হোটেলের আড়ালে পতিতাবৃত্তি করা হয়।
এর পর নিজের কাছেই খারাপ লাগতে ছিলো আর তাদের ব্যপারটাও মেনে নিতে পারলাম। আমি কি এসব করি? আর আমার চেহারা দেখেই কি তাদের মনে হলো আমি এসব করি। তারা কেন আমাকেই ডাকল
মন খারাপ ছিলো এসব নিয়ে,পরে ২/৪ জন বন্ধু জানালো তাদেরকেও নাকি এমন অফার করা হয়েছিলো। পরের দিন দেখলাম ঘটনা সত্য,যারে দেখে তারেই তারা ডাকে। নিশ্চিন্ত হলাম আমার চেহারা দেখে ডাকে নাই। আমার চেহারায় অমন কিছু নাই।
পাশেই ছিলো পুলিশবক্স,র্যাবের গাড়ি। খুব অবাক হলাম,দিনের বেলায় তারা এমন করছে সন্ধ্যার পর আরও বেশি। কেউ বাধা দিচ্ছে না। পুলিশ,র্যাব কেউ না!
বৈশাখী টেলিভিশনের কয়েকজন সাংবাদিক আমার খুব কাছের লোক। তাদের কাছে ঘটনা বললাম,এখানে এগুলা হচ্ছে,আপনারা কিছু করেন।
সে আমাকে যা শুনালো,শুনে আমি চিন্তায় পরেগেলাম! কিভাবে সম্ভব? “”পতিতারা থাকার কারনেই আমাদের দেশ স্থিতিশীল আছে,ধর্ষন কম হচ্ছে।
আরেক বড় ভাইকে বললাম,এত ওপেনে এগুলা চলে,পত্রিকায় দেখলাম দৌলতদিয়া সহ আরও কোথায় যেন এগুলার পল্লি আছে। সবাই গোপনে করলেও এরা ত দেখি হাকডাক পিটিয়ে করে। পুলিশ এদের ধরে গ্রেপ্তার করতে পারে না? তারা চাইলে ২/৩ ঘন্টায় সব বন্ধ করে দিতে পারে।
সেই বড় ভাই আমারে শুধাইলো “”এগুলা বন্ধ হলে সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে পরবে। এগুলা বন্ধ করলে ঐ সব লোকেরা কি করবে! সমাজে ধর্ষণ বেড়ে যাবে।””
বর্তমানে বাংলা সিনেমা ত ধ্বংস্তুপ থেকে উঠে আসার চেষ্টা করছে। আর আমাদের বাংলা নাটক আস্তে আস্তে ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে,অশালীনতা, আইটেম সং নাটকে যুক্ত হচ্ছে। পরিবার নিয়ে বিনোদনের আর সুযোগ বুঝি থাকল না।
সেই নাটকে কনডমের ব্রান্ড এম্বাসেডর খ্যাত এক অভিনেত্রী যিনি পতিতা চরিত্রে ছিলেন তিনিও তার ডায়লগে একই কথা বলেছেন!
এসব শুনার পর আমার মাথায় একটাই চিন্তা এসেছে
“”চরিত্রহীন, লুইচ্চারা আজ সমাজের বড় বড় মাথা,নেতা। এরা নিজেদের কুকর্ম করার জন্য কিছু স্ট্যাইটমেন্ট দেয় আর আমরাও তা বাচবিচার না করে গ্রহন করি,কারন আমরাও নিজেদের কুকর্ম হাসীল করতে চাই””
এবার আসুন মুল কথায়! দেশে পতিতালয় বাড়ছে না কমছে? বাড়ছে, মানুষ এখন বিদেশী টেষ্ট করার জন্য বিদেশ পর্যন্ত যায়।
আমার দেশে কি ধর্ষণ বন্ধ হয়েছে?? কমছে?
না উল্ট আরও বেড়েছে। আগে ত মহিলা ধর্ষন হতো এখন শিশু ছেলে শুরু করে ৫০/৬০ বছরের বুড়িও ধর্ষিত হয়। তাহলে এত এত পতিতালয় থেকে কি লাভ হলো?
চায়নারা বৃটিশদের এবং বৃটিশরা এদেশে চায়ের নেশা কিভাবে ধরিয়ে ছিল তা ত সবারই জানা। প্রথমে ফ্রিতে চা খাইয়ে নেশা ধরাইছে পরে নিজেদের কিনে খেতে হয়েছে ফলাফল সিলেটে অনেক চা বাগান।
আপনি যখন পতিতালয়ে যাবেন নিজেকে ঠান্ডা করতে,যখন আপনার কাছে টাকা থাকবে না? তখন কি করবেন? চা খাইতে খাইতে নেশা ধরে গেছে,ফ্রেশ চা চাই,একদম ফ্রেশ….
তখনই ত ধর্ষণটা হয়। আপনার কাছে পতিতালয়ের ঘটনা শুনে পাশের কিশোর ছেলেও চাইবে যেতে,সে ভয়ানক যৌন বিকারগ্রস্থ হয়েগেছে,শুধু সুযোগ পাইলেই হয়,সর্বনাশ। তাহলে পতিতালয় ধর্ষণ বন্ধ করতে ভুমিকা রাখল না ধর্ষণ বাড়াল?
আর আপনি বিবাহিত হয়ে পতিতালয়ে যাবেন কার ধর্ষণ বন্ধ করতে? ঐ দিকে আপনার বউ আপনার সঙ্গ না পেয়ে বিপথে যাচ্ছে,কেউ আবার পতিতালয়ে না যেয়ে ফ্রীতেই পরকিয়ার নামে আপনার অনুপুস্থিতে তাকে সঙ্গ দিচ্ছে। এই বিষয়টা তারাই ভালো বুঝবেন যারা নতুন বিয়ে করে বউ রেখে বিদেশ গেছেন। সমাজ যে কতটা পচে গেছে চিন্তাও করতে পারবেন না!
সমাজ পতিদের তাহলে কথার কি প্রামান পাইলো আমাদের সমাজ? না তার উলটা ফল পাইলো?
আমার গ্রামে ধর্ষণ কি সেটাই বুঝাতে আপনার ১ ঘন্টা লাগত ১০/১২ আগে। গত কয়েকবছর পোলাপান যারা সুযগপায় তারা ঢাকায় আর যারা পায় না গল্প শুনে কিন্তু ইচ্ছা এবং সাধ্য আছে তারা হুন্ডা নিয়ে মাদারীপুর পতিতালয়ে যায়। কিছুদিন আগে শুনলাম দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পাশের পাটক্ষেতে ধর্ষনের পর হত্যার অভিযোগ(আমার ওয়ালে এটা নিয়ে একটা ভিডিও আছে,দেখতে পারেন)
তাহলে ধর্ষণ কমল কই? উলটো এসবের কারনে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে সন্দেহ বাড়ছে। স্বামী ঢাকা,স্ত্রী গ্রামে,স্বামীকে বিশ্বাস করে না। তুমি না ঢাকায় কই কই না যাও। এদিকে স্ত্রীও পরকিয়ায় জড়ায়!! লাভ কই?? সব ত দেখি লোকসান!!
আমাদের সমাজপতিরা ধর্ষণ রোধ করার জন্য,এক মন্ত্রী ত বিদেশ থেকে মেশিন এনে হারানো শক্তি মেশিনের মাধ্যমে করে নাইকা,শিল্পীদের সাথে সাভারের বাগান বাড়িতে মিলিত হন! কই কোন লাভ নেই ত। উলটা পত্রিকায় প্রতিদিন ধর্ষনের নিউজ। এমন কোন দিন কি আছে যে পত্রিকায় ধর্ষনের নিউজ ছাপা হয় নাই।
পতিতা,পতিতালয় যদি সমাজ স্থিতিশীল করতে পারত,ধর্ষণ বন্ধ করতে পারত,প্রতিটা বাজারে বাজারে পতিতালয় খোলা উচিৎ ছিলো তাইলে। কারন এটায় আমাদের মা-বোনদের রক্ষা করে। কিন্তু উলটো আমরা দেখি এই পতিলয়ে আমার দেশের মা-বোনরা টাকার কাছে বিক্রি হয়। প্রতিনিয়ত। সমাজের ভদ্রবেশি লোকদের লালসা মিটাতে।
যাদের এমন সমাজ উদ্ধার করার ইচ্ছা আছে,তাদের বিয়ে করিয়ে দিন। বিয়ের পরেও যদি সমাজ স্থিতিশীল করতে চায়। তাকে যেন আইনের আওতায় এনে স্থিতিশীল করা হয়। ধর্ষন কমবে অনেক। পতিতালয় যেয়ে কেউ সুস্থ যৌন সুখ পায় না। শিখে আসে বিকৃত যৌন ব্যবস্থা,মাদকতা,নারীর প্রতি অসম্মান, জুয়া সহ অসংখ্য অপরাধ। সাথে এইডস সহ বিভিন্ন যৌন রোগ।
পতিতালয়ে বন্ধ হলে দেশে মাদক,ধর্ষণ সহ অনেক অপরাধের সংখ্যা কমে যাবে। এক একটা পতিতালয় একএকটা মাদকের এবং জুয়ার আখড়া। এগুলা সমাজের বিষফোঁড়া! সমাজ পতিদের সমাজ স্থিতিশীল করার নামে নিজেদের কুকর্ম করার একটা বাহানা মাত্র।
ধর্ষণ বন্ধ করতে হলে ধর্মীয়, পারিবারিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্ষনের সাজা মৃত্যুদণ্ড করাহোক। প্রকাশ্যে কার্যকর করা হলে অটো সব কমেযাবে।