somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মাহফুজ
আমি হচ্ছি কানা কলসির মতো। যতোই পানি ঢালা হোক পরিপূর্ণ হয় না। জীবনে যা যা চেয়েছি তার সবই পেয়েছি বললে ভুল হবে না কিন্তু কিছুই ধরে রাখতে পারিনি। পেয়ে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে।

বাস্তব প্রেমের অদ্ভুত পরিণতি

২৪ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জীবনে আমরা সবাই কমবেশী প্রেমের গল্প নিয়ে তৈরী নাটক সিনেমা দেখেছি, উপন্যাস পড়েছি।
বাস্তবে ঘটে যাওয়া অনেক প্রেমকাহিনীর প্রত্যক্ষদর্শীও আছি অনেকেই। হতে পারে সেটা নিজের কিংবা কাছের মানুষের।

আমি আজ বাস্তবে দেখা বিরল এক আসলে দুইটি প্রেমকাহিনীর কথা বলবো যা শুনে হয়তো ভাবনেন আরেকটি নিচক প্রেমের গল্প যদিও গল্পের প্রতিটি লাইন কিংবা শব্দাবলীতে মিশে আছে চরম বাস্তবতার অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস।

ঘটনাটি আমার-ই খুব কাছের এক মানুষের যার ফলে অনেক কিছুই চাক্ষুষ দেখা এবং শুনা। তাহলে শুরু করি গল্পটি। তবে তাড়াহুড়োর লেখাটিতে যথেষ্ট সাহিত্যরস এবং দক্ষতার অভাব পরিলক্ষিত হবে বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

একটা মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে উচ্চবিত্ত এক মেয়ের। ছেলেটা সব দিক দিয়ে মেয়েটার থেকে অযোগ্য শুধু সামাজিক মানসম্মানের ক্ষেত্রে ছেলেটি ছিল সমাজের ১০টি পরিবারের একটি। অর্থসম্পদ, শিক্ষাদিক্ষায় মেয়েটি ছিলো অনেকাংশে এগিয়ে। মেয়েটির প্রেমের সংকেত ছেলেটা বারবার মেয়েটিকে ফেরানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু মেয়েটার শক্ত প্রেমের বাঁধন আর আত্মবিশ্বাস দেখে একসময় ছেলেটাও ঝুকে পড়ে মেয়েটার দিকে। মেয়েটার চাইতে ছেলেটাই মেয়েটাকে আরো বেশী ভালোবাসতে শুরু করে। ভালোবাসার ই কথা কারণ ছেলেটার প্রতি মেয়েটার মায়ামমতা এবং পরিবারে ছেলেটাকে নিয়ে যুদ্ধের কথা সবাই জানতো। একটা সময় সবার মাঝেই বদ্ধমূল ধারণা হলো যে, এই প্রেমের একটা পরিণতি ঘটবেই। একজনের প্রতি আরেকজনের গাঢ় ভালোবাসা দেখে হিংসেও করতো অনেকে। প্রতিটা সম্পর্কের মতো তাদের সম্পর্কেও ছিল মান অভিমান রাগ অনুরাগ সন্দেহ ভুল বুঝাবুঝি ইত্যাদি। কোনো কিছুই অবশ্য তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারেনি।


একটা সময় মেয়েটার পরিবার অবস্থা বেগতিক দেখে শুরু করলো শারীরিক নির্যাতন সহ বিভিন্নভাবে মেয়েটাকে ছেলেটার কাছ থেকে দূরে সরানোর চেষ্টা। তারা বারবার ব্যর্থ হলো। এক পর্যায়ে মেয়েটা নির্যাতন সইতে না পেরে ছেলেটার বাড়ি পালিয়ে গেলো। পালিয়ে যাবার পর দুই পক্ষের অনেক লোকজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলেন দুজনের কাবিন রেজিস্ট্রি করে দেবেন এবং তারপর সময়ক্ষণ দেখে বিয়ে। যথাযথ নিয়মে কাবিননামা তৈরী হলো। সেখানেই ঘটলো প্রচণ্ড অবাক হবার মতো ঘটনা। ছেলেটা স্বাভাবিক ভাবেই খুশী হয়ে সিগ্নেচার দিলেও মেয়েটা সিগ্নেচার করতে আপত্তি জানালো। মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো সবার। শত চেষ্টা করেও এই মেয়েকে ছেলেটার কাছ থেকে দূরে সরানো যায়নি, শেষ পর্যন্ত পালিয়েও গেলো। তাহলে কেন এমন সুযোগ পেয়ে কাবিননামায় সাইন দিতে চাইছেনা!এত বড় সুযোগ কেন হাতছাড়া করছে! আশ্চর্যজনকভানভাবে সেদিন মেয়েটা সবার অনুরোধ সত্বেও সিগনেচার পরে দিবে বলে বিষয়টা ঘোলাটে করে ফেলে। ছেলেটা বিরাট বড় একটা অপমানের স্বীকার হয়। তার মনে নানা প্রশ্ন উকি দেয় এবং একপর্যায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে সিদ্ধান্ত নেয় যে, আর এই মেয়েকে বিয়ে করবেনা। দুই একদিন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পর মেয়েটা কান্নাকাটি করে ফোন দেয় ছেলেটাকে। ক্ষমা চায় আর কাজী পাঠিয়ে সিগনেচার নেয়ার কথা বলে। ছেলেটি এক কথায় মানা করে দেয়, দুর্ব্যবহার করে। তখন মেয়েটার মা ছেলেটাকে বুঝায় যে সে যদি মেয়েটাকে গ্রহন না করে তবে মেয়ের জীবন নস্ট হয়ে যাবে। এসব কথায়ও ছেলের মন গলেনি। সে সেদিন রাতের কথা মনে করে রাগে ফোন কেটে দিলো। সে রাতে তার ভালোবাসা অপমানিত হয়েছে, তার জন্য বাবা মায়ের মাথা নীচু হয়েছে। সে নিজেও তার বন্ধুবান্ধবদের কাছে খুব লজ্জা পেয়েছে কারণ তারা এই মেয়ের পরিবার সম্পর্কে আগেই তাকে সাবধান করেছিলো। তারা বলতো পরিবারটি পাগল আর মেয়েটার কোথাও সম্পর্ক ছিলো। ছেলেটা কিছু গ্রাহ্য করেনি আবেগের জন্য।

যাইহোক এভাবে প্রায়ই মেয়েটা ফোন করে কান্নাকাটি করে ছেলেটাকে মানসিক ভাবে অশান্তির মাঝে রাখলো। একপর্যায় ছেলেটার ভাবনার পরিবর্তন ঘটে। সে ভাবে এই মেয়েটাই তো তার জন্য পরিবারের আদর আহ্লাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে কিন্তু পরিবারের কথায় তাকে ছেড়ে না গিয়ে পাগলের মতো ভালোবেসেছে। মেয়েটা হয়তো না বুঝে একটা ভুল করেই ফেলেছে কিন্তু ক্ষমার অযোগ্য তো না। তাছাড়া সে তো ভালোবাসে মেয়েটাকে। এইসব ভেবে ছেলেটা আবার ক্ষমা করে দিলো মেয়েটাকে। সম্পর্কটা আবার স্বাভাবিকতা ফিরে পেলো ধীরেধীরে। দেখাসাক্ষাৎ, ঘোরাফেরা, অন্তরঙ্গতা বৃদ্ধি পেল। পরিবারের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা প্রায়ই ছেলেটার বাসায় আড্ডা দিতো মজা করতো। এভাবে আরো বেশকিছুদিন কেটে যাবার পর ছেলেটা মেয়েকে আবার বিয়ের জন্য প্রেসার দিলো কিন্তু নানারকম অজুহাতে মেয়েটা এড়িয়ে গেলো। একসময় ছেলেটার সন্দেহ হতে শুরু করে মেয়েটা হয়তো অন্যকারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে কিংবা কোনো কারণে তাকে বিয়ে করতে চাচ্ছেনা। সে তখন বারবার তাকে বলেছে যদি কোনো কারণে আমাকে আর ভালো না লাগে, বিয়ে করতে না চাও তবে প্লিজ সামনাসামনি বলো আমি তোমাকে আটকাবনা। তবে কোনোদিন আমি যাতে কোনো বেইমানীর স্বীকার না হই আবার।
মেয়েটা তবুও কিছু বললোনা। তবে আচারআচরণ পাল্টাতে লাগলো। ফোনে ব্যস্ততা, মিথ্যা বলার আধিক্যে ছেলেটে অসহ্য হয়ে উঠলো। একদিন প্রচণ্ড রাগে ছেলেটা অনেক কষ্ট নিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিলো আর এলাকা ছেড়েও পালালো অনেক কষ্ট নিয়ে। ছেলেটা নিজেও বিশ্বাস করতে পারেনি সে যোগাযোগ না করে থাকতে পারবে কিন্তু পারলো আরো একজন মানুষের সাহায্য। যে মানুষটি তার প্রেমের সম্পূর্ণ কাহিনী জেনেছিলো। মানুষটা ছিলো সে ছেলের ভার্সিটির বান্ধবী। একজনকে ভুলে যেতে আরেকজনের সাথে ভুল একটা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লো ছেলেটা।


ছেলেটার সাথে মেয়েটা কোনো যোগাযোগের চেষ্টা করলোনা তাই ছেলেটাও ভাবলো সেই মেয়ে আসলে হয়তো এটাই চাইছিলো সে সরে আসুক নিজ থেকে। এই ভাবনা থেকে ছেলেটাও অনেক অভিমান চাপা নিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলোনা। যোগাযোগের প্রয়োজনও পড়েনি কারণ নতুন মেয়েটা তাকে প্রচণ্ড ভালোবাসতো। ছেলেটাকে একেবারে শিশুর মতো আগলে রাখতো যেকোনো বিপদে আপদে জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়তো। পুরাতন প্রেমের ৮-৯ বছরের দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে ছেলেটা অনেকটাই মুক্তি পেলেও তার মনজুড়ে সেই মেয়েটার একটা অবস্থান ছিলো।
নতুন মেয়েটাকে পৃথিবীর যে কেউ ভালোবাসবে ছেলেটাও ভালোবেসেছিলো কিন্তু মেয়েটা যেরকম চাইতো সেরকম ভালো সে কখনোই বাসতে পারেনি। ৮-৯ বছরের দীর্ঘ প্রেমের সম্পর্ক ভুলে কাউকে আবারো হৃদয় উজাড় করে ভালোবাসা কঠিন। নতুন প্রেমের কিছুদিন যেতে না যেতেই পুরাতন প্রেমের উদয় হলো আবার। সেই মেয়েটা যোগাযোগের চেষ্টা করলো কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো দ্বিতীয় প্রেমিকা। ছেলেটা পড়ে গেলো দুটানায়। সিদ্ধান্তহীনতা গ্রাস করলো তাকে। জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে এসে আরো চরম অসুন্দর করে ফেললো। সে না পারছে পুরনোকে গ্রহন করতে না পারছে নতুনকে বিবেকের তাড়নায় ছেড়ে যেতে কারণ দ্বিতীয়জন তাকে নতুন জীবন দিয়েছে। দুর্বিষহ জীবন থেকে উদ্ধার করে এনেছে আর শত বিপদে আগলে রেখেছে। সে কিভাবে পারে অকৃতজ্ঞের মতো চলে যেতে! এমন পরিস্থিতে পুরাতন প্রেমিকা মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে ছেলেটা পুরাতন রাগ আর দ্বিতীয়জনের কষ্টের কথা চিন্তা করে অপমান করে দিত। দ্বিতীয় প্রেমিকাও অপমান করতো প্রথমজনকে আবার প্রথমজনও সুযোগ পেলে অপমান করতো ছেলেটার দ্বিতীয় প্রেমিকাকে। ছেলেটা তার বিবেকের আদালতে কখনোই অপরাধী ছিলনা কারণ সে কোনোদিন দ্বিতীয়ার অলক্ষ্যে প্রথমার সাথে যোগাযোগ বা কথা বলার চেষ্টা করেনি। এখন থেকে আমরা প্রথমা এবং দ্বিতীয়া বলেই সম্বোধন করবো।

দ্বিতীয়ার কষ্টের কথা ভেবে ছেলেটা প্রথমাকে কোনো সুযোগ না দিলেও দ্বিতীয়ার সন্দেহ চরম আকার ধারণ করলো ছেলেটার প্রতি। প্রথমাকে নিয়ে সন্দেহ করতে করতে সেই সন্দেহ ক্রমশ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তার লাভ করলো। বিনাকারণে সন্দেহ করে ছেলেটার জীবনটাকে বিপর্যস্ত করে তুললো। দ্বিতীয়ার ভালোবাসার গভীরতা আর খুব কষ্ট পাবে ভেবে ছেলেটা প্রথমার সাথে যোগাযোগ না করলেও দ্বিতীয়ার নানা অপবাদে জর্জরিত হতে লাগলো ছেলেটা।

প্রতিনিয়ত অশান্তি, ঝগড়া সইতে না পেরে সে হয়ে গেলো মাদকাসক্ত। মাদক গ্রহন করলে সে দ্বিতীয়ার মানসিক নির্যাতন টা সহ্য করতে পারতো। প্রথমার কথা ভুলে থাকতে আর দ্বিতীয়ার সাথে স্বাভাবিক ভাবে সম্পর্ক ধরে রাখতে সে দিনদিন মাদকের আরো সান্নিধ্যে গেলো। তারপরেও থামলোনা দ্বিতীয়ার নির্যাতন।

দ্বীতিয়া আসলে ছেলেটাকে এত্ত বেশী ভালোবাসতো যে তা ব্যাখা করা কঠিন। অত্যধিক ভালোবাসার নির্যাতনে ছেলেটা অসহায় হয়ে পড়লো। দ্বিতীয়ার পাগলামি আর অত্যাচার এক সময় ছেলেটাকে ছাড়িয়ে তার পরিবারে পড়লো। যখন তখন ছেলেটার উপর রাগ মেটাতে সে তার মাবাবাকে ফোন দিতো, তাদের বিভিন্ন কথা বলতো। ছেলেটা একসময়য় জীবনের ব্যস্ততা, মাবাবার অসুস্থতা এবং একান্ত মনোবলে মাদক ছাড়লেও দ্বিতীয়ার অত্যাচার আর পাগলামি কমলোনা। দ্বিতীয়ার অত্যাচারে ছেলেটার মা ছেলের দুশ্চিন্তায় অসুস্থ হয়ে গেলেন, সুস্থ হতে নিতে হয়েছিলো দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল চিকিৎসা।

বিপদের সময় ছেলেটাকে দ্বিতীয়া টাকাপয়সা দিয়ে যে সাহায্য করেছিলো সেই টকাপয়সা চেয়ে ক্রমাগত ছেলে আর তার বাবা মাকে অপমান করতো দ্বিতীয়া। তবে টাকার প্রয়োজনে অপমান না, অপমান করতো তখন যখন ছেলেটার প্রতি তার রাগ থাকতো।
শুধু এই না দ্বিতীয়ার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ছেলেটার কাছ থেকে তার বন্ধুবান্ধব দূরে সরে যায়, আত্মীয়স্বজন অনেকে চরম ভুল বুঝে। বাবা মা এবং একমাত্র বোনের সামনে তার চেহারা দেখাবারই কোনো উপায় রইলোনা। ছেলেটা টুকটাক ব্যবসা এবং চাকরিবাকরি করতো সেইসব জায়গায়ও দ্বিতীয়া তাকে লজ্জিত করেছে বিভিন্ন সময়। ছেলেটার কাছে দ্বিতীয়া একপর্যায় আতঙ্কে পরিণত হলো। মোবাইল বেজে উঠলেই সে ভয়ে কেপে উঠতো। কথা বলতে না চাইলেও দ্বিতীয়া তাকে নানারকম হুমকিধামকি দিয়ে কথা বলাতো। ছেলেটা যে দ্বিতীয়াকে ভালোবাসতো না তা কিন্তু না। সে ভালোবাসতো, দ্বিতীয়ার কষ্টের কথা ভেবে সে কিন্তু প্রথমাকেই এড়িয়ে গিয়েছিলো। দ্বিতীয়া মেয়েটা ভয়াবহ পাগলামি ছাড়া ছিলো অসীম মমতাময়ী ও লক্ষী। অযথা রাগ, সন্দেহ, ছেলেটার কাছ থেকে মনের মতো ভালোবাসা না পেয়ে সেও কি রকম মানসিক বিকারগ্রস্ত মেয়ের মত কাণ্ডকারখানা ঘটাতো। মাথা গরম হলে সে বুঝতইনা ছেলেটাকে কি ভয়ানক মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন সে করছে। তাই ছেলেটার মা বাবাকে অপমান সহ যেকোনো পাগলামি করতে সে সামান্য সংকোচ করতোনা।

দ্বিতীয়ার নির্যাতনে অসহ্য ছেলেটা প্রচণ্ড ক্রোধান্বিত হয়ে সব মিলিয়ে এক লক্ষ্য টাকার চাইতে বেশী মূল্যের প্রায় ১২-১৩ টি মোবাইল ফোন ছুড়ে ফেলে ভেঙেছে মাত্র দেড় বছরে। নিজের মাথা দিয়ে নিজেই কত সজোরে যে ঘরের দরোজা বা দেয়ালে আঘাত করেছে তা বলার মতো নয়।প্রতিটা মোবাইল ভাঙ্গা এবং নিজেকে আঘাত করার মুহূর্তে দ্বিতীয়া উপস্থিত ছিলো। দ্বিতীয়ার সন্দেহের কারণে রাগ মেটাতে গিয়ে প্রতিবারই মোবাইল ভেঙ্গেছে ছেলেটা কিন্তু পরে দ্বিতীয়ার কাছে ঠিকই প্রমাণ করেছে সন্দেহটা অমূলক। তাতে তো কোনো লাভ হতোনা আর দ্বিতীয়ার কোনো ক্ষতিও হতোনা। যা সর্বনাশ হবার হতো ছেলেটার। তাকে আরেকটা নতুন মোবাইল কিনতে হতো ধারদেনা করে। কারণ শুধু বিনোদন না স্মার্টফোন তার কাজের জন্য ছিলো গুরুত্বপূর্ণ।


ছেলেটা সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ধবংস হয়ে গিয়েছিলো বলা যায়। মা বাবার অসুস্থতা, টাকাপয়সা নস্ট করে ঋণ করা, বন্ধুবান্ধব দূরে সরে যাওয়া, পড়ালেখা নস্ট হওয়ার মতো বড়বড় সমস্যা নিয়েও ছেলেটা আত্মহত্যা করেনি বলে নিজেই অবাক হতো। অবশ্য আত্মহত্যার কথা ভাবেনি তা না কিন্তু সাহস পায়নি।

এভাবে দ্বিতীয়ার সাথে প্রায় চার বছর কাটার পর প্রথমার পরিবার ছেলেটার পরিবারকে হঠাৎ চাপ দিলো সেই আগের কাবিননামা বাতিল করার জন্য। ছেলেটার এক আত্মীয় যে কাবিননামা তৈরীর সময় ছিলেন তিনি তাকে জরুরী তলবে একদিন ডেকে নিয়ে কিছু কাগজে সিগনেচার করালেন। সিগনেচার করার সময় সে দেখলো প্রথমার সিগনেচার আগেই দেয়া। সে ভাবলো কাবিননামা বাতিলসংক্রান্ত কিছু হবে। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তাই সে কিসে সিগনেচার দিচ্ছে তা পড়ার প্রয়োজনবোধ করেনি। পরে সে জানতে পারে ঐ ডকুমেন্ট একটা তালাকনামা ছিলো। অর্থাৎ অদ্ভুত বিষয় হলো, সে বিয়ে করেনি, সংসার করেনি কিন্তু তালাক ঠিকই দিয়েছে ভালোবাসার মানুষটিকে। জানলে কখনোই সে প্রথমাকে অপমান করতোনা। তালাকনামা তৈরি করে সিগনেচার করানোর প্রয়োজন কি ছিলো কে জানে! সে তো আগেই সবকিছু ছেড়েছুড়ে ফেলে এসেছে। সে প্রথমার কোনো অমঙ্গল কামনা করেনা কারণ প্রথমা তার সাথে যতোই অন্যায় করুক সেতো সত্যিই ভালবাসতো। ছেলেটার ইচ্ছা জীবনে কোনোদিন প্রথমার সাথে দেখা হলে জিজ্ঞেস করবে- কোন সে রহস্যময় কারণে তার জীবনের ৮-৯ টা বছরের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলো যদি ভালো নাই বাসতো কিংবা বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলনা। কেন সুযোগ দেবার পরেও হোক কষ্টের তবুও প্রত্যাশিত ভাবে সম্পর্ক ছিন্ন না করে দিনের পর দিন লুকোচুরি খেলেছিলো প্রথমা?

যাইহোক তালাকনামায় সিগনেচারের কিছুদিন পরেই প্রথমার ধুমধাম করে বিয়ে হয়ে যায় কোনো এক প্রচুর ধনসম্পদসালীর সাথে। অন্যদিকে দ্বিতীয়াও প্রায় ছেড়ে দিয়েছে ছেলেটাকে। চরম সুখে সময় কাটাচ্ছে বন্ধুবান্ধব আর পড়াশুনা নিয়ে। কিছু পাওনা টাকার জন্য মাঝেমধ্যে শুধু ফোন দিয়ে রিমাইন্ড করে ছেলেটাকে।

ছেলেটার অনেক ধারদেনা, চলতিপথে হাজারটা সমস্যা, দ্বিতীয়ার টাকা পরিশোধের চিন্তা। দ্বিতীয়াকে যদিও হিসেবের বাইরে অনেক টাকা ছেলেটা সময়ে অসময়ে দিয়েছিলো কিন্তু দ্বিতীয়া সেগুলোকে হিসেবে না রেখে তার পাইপাই পাওনা ফেরত চাচ্ছে।

এমন অবস্থায় অসহায় ছেলেটার ভাগ্যে কি আছে তা বিধাতা জানেন। তার পরিণতি জানানোর সুযোগ পেলে অবশ্যই জানাবো অন্য আরেকদিন।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:০৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×