রমজান মাসে বাদাম খাওয়া কি নিষেধ? শহরজুড়ে বাদামওয়ালা গুলো নিরুদ্দেশ হলো কোথায় বুঝলামনা!
আমি এক বাদামখোর, বাদাম না খেলে ভাল্লাগেনা। সন্ধ্যার পর বাদামের সন্ধানে শহরময় ঘুরেও কোনো বাদামওয়ালাকে চোখে পড়লনা। অদ্ভুত বিষয়!
বাদাম তো পাচ্ছিইনা, আচারের ভ্যান একটা সামনে পড়লো। আচার মামারে বললাম, মামা আচার দেন তবে ঝাল একেবারে কম, না দিলেও চলবে।
আচার নিয়ে প্রথমে ভাবলাম বাসায় এনে খাবো কিন্তু আচার হাতে নিয়ে বাসায় আসার মতো সংযমী তো আমি না। বাদাম, আচার ইত্যাদি টাইপের খাবার হাতে নিয়ে সংযমী হওয়া সম্ভবও না। খাওয়া শুরু করলাম, বাহ খুব টেস্ট। টেস্টটা খুব মজার এটা উপলব্ধি করার মুহূর্তকাল পরেই আমি চোখের কোনে জলের অস্তিত্ব টের পেলাম।
আচার মামা ঝাল দিয়ে ফেলেছে। আমি ঝাল সহ্য করতে পারিনা, একদমই না। কি আর করা যা হবার তা তো হয়ে গেছে। টলমল করে পানি পড়ছে আর আমি হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে মুছে ফেলছি আবার একটু আচার মুখে দিচ্ছি।
রিকসার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলাম, কোনোরকম বাসায় পৌঁছাতে পারলেই বাঁচোয়া। নাহ বিধিবাম, রিকসা নাই।
হাঁটা শুরু করলাম। কাঁদছি আর হাঁটছি সেইসাথে অল্প অল্প আচার মুখে দিচ্ছি। না না আমি হেঁটে হেঁটেই কেঁদে চলেছি। কান্নাটা ঝালের জন্য হলেও এখন মনে হচ্ছে কান্নাটা বাদামের জন্যই। বাদাম না পেয়েই তো এই দশা হয়েছে। শহরজুড়ে মানুষে ভরা আর আমার কাছে মনে হলো বাদামওয়ালাবিহীন শহরে কোথাও কেউ নেই। বিলাসবহুল শহরের নানারকম শোরুমের দামী স্ক্রিনে কি সুন্দর সুন্দর দৃশ্যই না দেখা যাচ্ছে আর আমার দুই চোখ খোঁজে চলেছে "কোনো এক বাদামওয়ালা ভ্যানের মাঝে বাদাম ভাজছে আর কুণ্ডলী পাঁকিয়ে ধূয়া উড়ছে। ভ্যান ভর্তি বাদাম আর বাদাম" এমন কোনো স্বর্গীয় দৃশ্য। নাহ কোথাও এমন দৃশ্য চোখে পড়লনা।
বাসায় এসে ঢুকতেই আম্মা অবাক হয়ে সেইসাথে শঙ্কিত মনে জিজ্ঞেস করলেন, কিরে কি হয়েছে তোর!
এত্ত বড় একটা জোয়ান ছেলে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে এলে যেকোনো মায়েরই আশঙ্কা হবে খারাপ কিছুর।
ইচ্ছে করলো আম্মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দিয়ে বলি, আম্মাগো সারা শহরের কোথাও কোনো বাদামওয়ালা নেই, বাদাম নেই। "
ইচ্ছে করলেই সবকিছু করা যায়না, বাদাম খাওয়ার ইচ্ছে করেছিলো কিন্তু খেতে কি পেরেছি? না পারিনি, আম্মাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদতেও তাই পারিনি। শুধু আচারের অবশিষ্ট প্যাকেটটা উনার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে আমি ওয়াশরুমে চলে গেছি
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৮ রাত ২:০৪