somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুল তবু ফুটবেই....(চতুর্থ অংশটুকু)

৩০ শে মে, ২০১১ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ফুল তবু ফুটবেই....(তৃতীয় অংশটুকু)

*******

সালমা ঠিক করলো প্রথম চিঠিটা সে রাশেদ কেই লিখবে। সম্বোধন কি হবে এ নিয়ে কিছুক্ষন ভাবলো । তারপর চিন্তা ঝেড়ে লিখতে শুরু করলো। শেষ বারের মত লেখা চিঠির সম্বোধন নিয়ে ভাবতে নেই।

প্রান প্রিয় স্বামী,
সম্বোধন দেখে নিজেরই খুব হাসি পাচ্ছে। দু'বছর আগে হলে এর চেয়ে আবেগী কোনো সম্বোধন হতে পারে বিশ্বাস করতাম না আমি। তোমাকে দীর্ঘ একটা চিঠি লিখবো ভেবে বসেছি।
ধর আমরা দু'জন মুখোমুখি ঠিক রবীবাবুর কবিতার মত।
''দুজনে মুখোমুখি
গভীর দুখে দুখী
আঁধারে ঢাকিয়া গেছে আর সব।''
লাইনগুলো সম্ভবত ঠিক নেই। আমি এলোমেলো হয়ে আছি বলেই হয়ত সবকিছু এলোমেলো হচ্ছে। দুজন মুখোমুখি বসে আছি। আমার দু'চোখ আর তোমার মুখ ,বাঁধা রয়েছে কালো কাপড়ে। ব্যাপারটা মজার তাইনা? আমি শুধু বলব,তুমি কিছু বলতে পারবেনা।
এমনটা ই হচ্ছে এখন।
তুমি প্রথম যেদিন কলেজে আমাদের ক্লাস নিতে ঢুকলে, আমরা সব মিলিয়ে পাঁচ জন মেয়ে ছিলাম, তোমার হয়ত মনে নেই। বলছি এ কারনে, তুমি কিন্তু একবারের জন্য ও মেয়েদের দিকে তাকাওনি। একপাশ থেকে পাপড়ির ঝোপ দেখলাম আমরা। তোমার ঘন পাপড়ি ,বড় বড় টলটলে চোখ,চোখের ভেতরটা দেখার জন্য অস্থিরতা শুরু আমার সে দিন থেকে।
মানুষ এত সুন্দর হয়! এত সুন্দর! মেয়েলি সুন্দর একটা দেবশিশুর মত মায়াময়। অবশ্য দেবশিশু দেখিনি আমি ,শোনা কথা শোনা উপমা বললাম আর কি! সব বান্ধবীরাই তোমার প্রেমে পড়লাম, অথচ অলিখিত কারনে তারা স্বত্ত্ব ত্যাগ করে তোমাকে দিয়ে দিল।
তোমার ক্লাস মিস করার কোনো মানে হয়না। অথচ তীব্র উপেক্ষা পাবার অভ্যেস আমার ছিলনা। ভালবাসা তাই বাড়তে থাকলো। ঠিক প্রথম দিন যেমন ছিল. একমাস পরেও তেমনি, মাসের পর মাসেও তেমনি, তুমি মেয়েদের বেঞ্চের দিকে ভুল করেও তাকাওনা। যেন ওখানে কেউ বসে নেই। ক্লাস শেষে বিষাদে মন ভরে যেত আমার, আজও তোমার চোখের ভেতর দেখা হলনা ভেবে।
প্রেম কস্তুরীনাভী। সুগন্ধ লুকিয়ে রাখা ঢের মুশকিল।
আমাদের বিয়ে হয়ে গেল। প্রথম দিন কি অদ্ভুত যে লাগছিল। তুমি এত কাছে আমার,চাইলেই ছোঁয়া যায়, দু হাতের পাতায় মুখ ধরে চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা যায়।
প্রথম দিনের কথা মনে আছে তোমার?
-সারাদিন অনেক ধকল গেছে, শুয়ে পড়।
গম্ভীর মুখে বলে উল্টোদিকে ফিরে ঘুমিয়ে পড়লে তুমি।
একটা খাঁ খাঁ নিস্তব্ধ রাত কত দীর্ঘ সেদিন বুঝেছি আমি। আমার নতুন জীবন আর দশটা মেয়ের মত শুরু হয়নি বলেও শেষটাও দশজনের মত হবেনা, এমনটা কখনো ভাবিনি আমি। শহীদ তোমার আশ্রিত ছোটভাই। বিযের পর তোমার বাবা মা কি কেন কোথায়, কিছুই জানালেনা আমাকে, জিজ্ঞেস করলে এড়িয়ে যাও, নিজেই নিজের ভেতর কুঁকড়ে যাই। কিছু না জানাটাই অভ্যেস হয়ে গেল।
শহীদ বাজার,রান্না বাড়িঘর দেখাশোনা সব করে। সবকিছু এত অস্বাভাবিক আমি তখনো জানিনা।
সেদিন তোমার অসুস্থ্যতা প্রথম দেখলাম। তুমি বাড়ি ফিরতে দেরী করলে, বিদ্যুৎ গেল, উঠোনে মোড়া পেতে বসলাম জোৎস্না দেখতে ভাল লাগবে ভেবেই শহীদ হেরিকেন ধরাতে চাইলেও নিষেধ করেছিলাম। তুমি বাড়ি ঢুকলে। তোমার চোখ ধ্বকধ্বক করে জ্বলছিল। সন্দেহ শুরু হল তোমার! তোমার অক্ষমতা তোমাকে হিংস্র করেছিল। একটা সন্তানের ইচ্ছা আমার কখনো পূরন হবেনা। ততদিনে বুঝে গেছি আমি।
সত্যি বলতে কি তোমার সন্দেহ শুরুর পর থেকেই আমার মনে অন্য চিন্তা ঘুরপাক খাওয়া শুরু করলো। মনে হতে লাগলো শহীদ কে বলি আমাকে একটা বাচ্চা দিতে। খুব জঘন্য একটা চিন্তা। তুমি আমার স্বামী। বাচ্চা তোমার কাছে চাইবো। চাওয়া উচিৎ।
এটাই স্বাভাবিক। দেড়বছরে তুমি একবারের জন্য ও আমার সাথে মিলিত হও নাই। অস্বাভাবিকতাটা এখানেই।
বাড়ি ফিরে কিছু কুৎসিত কথা রোজ পাওনা হয়ে গেল। শহীদ কে জড়িয়ে এসব জঘন্য কথার আরেকটা মানে হতে পারে, আসলে তুমিই চাও শহীদ মিশুক আমার সাথে। তা না হলে শহীদ কে চলে যেতে বলতে পারতে তুমি। তার জন্য গায়ে হাত তুলতেনা অন্তত।
তোমার বাইরের সৌন্দর্য্য যতটা ভেতর কি ততটাই বিভৎস না?
একপেশে চিন্তা থেকে আমার মুক্তি নেই। তোমাকে কোনো প্রশ্ন করার মত রুচি আমার তৈরি হচ্ছেনা, হবেওনা কখনো।

চিঠি শেষ করতে ইচ্ছে করছেনা সালমার। এ চিঠিতো কখনো পাঠানো হবেনা। কাগজটা হাতে নিয়ে টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলছে সে। একেকটা লাইনে অশুচি কিছু, হাতে লাগলেও ঘেন্ন। টুকরো গুলো গ্লাস ভর্তি পানির ভেতর নিয়ে অনেকক্ষন তাকিয়ে থাকলো সালমা। পানির ভেতর টুকরো কাগজ ফুলে উঠছে মৃত মানুষের মত। কালি ছড়িয়ে যাচ্ছে, মুগ্ধতা নিয়ে তাকিয়ে আছে সে।

এখন সালমা মার সাথে দেখা করবে, শেষ চিঠিটা লিখবে তারপর।

*******

হাসান সাহেবের মেজাজ তিতা। বাজারের গদিতে গাঁট হয়ে বসে আছেন তিনি । কর্মচারীরা তটস্থ। সামনে রাখা চায়ের কাপে সাদাসাদা সর আর একপাশে একটা কালো পিঁপড়া ঠ্যাং উপরে তুলে ভাসছে। হাতের ইশারায় সবুর কে ডাক দিলেন তিনি।

- সবুর মিয়া, তোমার ঘটি বাটি যা আছে, চুরি চামারি করে যা মারতে পারিসো সব একখানে জড়ো করো। এক কইরা বস্তার মধ্যি বাঁধবা। তারপর দুপুরের খানা খাইবা আমার বাড়িতে, গিন্নীর কাছে গিয়া বলবা, মা জননী আমারে বিদায় দেন, গিরাম টানতেসে, পুলাপাইন রে বহুদিন দেখিনাই। বাড়িত যাব।

- হুজুর আমারে মাফ কইরা দেন। কি অপরাধ কিছুই জানলাম না হুজুর। জানতে চাইয়োনা। গরীবের প‌্যাটে লাত্থি মাইরেন না হুজুর। আপনে এতিমের বাপ হুজুর। মাফ কইরা দেন হুজুর এইবারের মত। হুজুর...

- যা বলছি তাই করবি। তরে মাফ করসি বইলায় জীবন নিযা ফিরা যাবি গ্রামে। জলিল সাহেব রে আমার ঘরের তথ্য সাপ্লাই দেও তুমি। তোমার মুখে কথা বেশি হইছে। পাছা টিপ্যা দিলে হাগুর সাথে কথা বাইরাইবে। চাইলে জলিল সাহেবের বাড়িত কাম নিতে পারতা। তোমার মত ছুছুন্দররে কাম দিবেনা এইটাই যা সমস্যা।
মিরজাফরের জাইত অলটাইম লাথি খায়। তোমার দাদার বাড়ি মুর্শিদাবাদ না?

- হুজুর আপনার পায়ে পড়ি হুজুর। এবারের মত মাফ করে দেন হুজুর। আমারে পথে ফালাইয়েন না। পোলাপান নিয়া না খায়া মরবো হুজুর!

- এই রসূল, মদীনারে খবর দে আইজ রাইতে আমি মদিনার ঘরে যাব। বলেই উঠলেন হাসান সাহেব। এ বিষয়ে আর বাহাসের কিছু নাই। ঘরের মইধ্যে কালসাপ যে সবুর সেটা বুঝতেই যা একটু টাইম লাগছে। এখন সব আন্ডার কন্ট্রোল।
স্বস্তি নিয়া বাড়ির পথে পা বাড়াইলেন হাসান সাহেব।
দুপুরে কাচকি মাছ পিঁয়াজ বেশি দিয়া রানতে বলেছেন তিনি। খেতে বসার আগে টাটকা লেবু গাছ থেকে পেড়ে নিতে হবে। ঘন মসুর ডালের সাথে লেবু। লেবু না থাকলে কচি লেবুর পাতা সালাদের সাথে দিয়ে খাওয়ার অভ্যেস হাসান সাহেবের।
সালমার ব্যাপারটা নিয়েও ভাবতে হবে। দুপুরে খাওয়ার পর ঘুম দিবেন একটা। রাতে মদিনার কাছে আসবেন। মাথা ঠান্ডা কইরা তারপর সালমারে নিয়া সিদ্ধান্ত নিবেন।
হারামজাদী ভাল ঝামেলা পাকায়া আসছে মনে হয়।
কথা হইসে কিন্তু কিছুই বাইর করতে পারেন নাই। কিছু জিগাইলে মুখ কঠিন কইরা রাখে। তাঁরে বেশ পছন্দ করেন দেখে কিছু বলেন নাই, হাসিনা খাতুন হইলে চোপা ভাইঙা হাতে ধরাই দিতেন হাসান সাহেব। মেয়ে মানুষের জেদ দেখলে রক্ত গরম হয়ে যায় তার।

*******

সালমা তাঁর মায়ের সাথে দেখা করার জন্য ঘরে ঢুকেছে। দরজা থেকে মুখ বাড়িয়ে সালমা জিজ্ঞেস করলো,

- কি করছো মা?

- তুই গত কাইল এই বাড়িত আসছিস, আর এতক্ষনে আসলি আমারে দেখতে? কি পোলাপান যে প‌্যাটে ধরসিলাম আল্লাহ। হাড়ে হাড়ে টের পাইতেসি এখন।

-কত মানুষের হাড্ডি চুইষা খাইসো। এখন হাড়ে হাড়ে ঠুকাঠুকি হইতেসে না মা? হি হি

- কুহুক করিস নাতো গেদি। কার হাড্ডি আবার চুষে খাইসি? যতসব মাথা পাকাইন্যা কতা।

- আমার আব্বারে সারাজীবন যে কষ্ট দিছো মা তাতে তার শরীরে তো কোনো হাড্ডি থাকারই কথা না।

- দেখ ফেনাইসনা সালমা। তর কি প‌্যাটে বাচ্চা নিকিরে? শরীর এত খারাপ হইসে কেন?

- হ্যাঁ মা।
লজ্জা কন্ঠে বলেই কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে মাকে।
-উম মা কতদিন তোমার গায়ের গন্ধ শুঁকিনা। মা জানো তোমার গায়ে ঠিক বকুল ফুলের মত গন্ধ!

সালমার চোখ ভরে যাচ্ছে, কোথা থেকে যে এত জল আসে।

- মা উঠি। বমি লাগতেছে।

একছুটে বের হয়ে নিজেকে সামলে নিল সে। তারপর আয়নাবিবির ঘরে ঢুকলো
সালমা। এই মহিলাকে দেখলে এত মায়া লাগে। কত দীর্ঘদিন ধরে বাইরের আলো দেখেনা আয়না বিবি। হাত ধরে কিছুক্ষন বসে থাকে সে। আয়না বিবি মমতার স্পর্শ টের পায়। তার দু চোখ থেকে ক' ফোটা জল ঝরে পড়ে ধীরে।

চলবে ....

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:১৯
৩৬টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কওমী মাদ্রাসায় আলেম তৈরী হয় না

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৫১



সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×