somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের সন্তানেরাই শুধু ডাক্তার ইন্জিনিয়ার হবে

০৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই ছোটকাল থেকেই প্রতিটি শিশুর কাধে বিশাল স্কুলের ব্যাগ চাপিয়ে দেয়া হয়, আশা থেকে প্রতিটি অভিভাবকের এই যে বড় হয়ে তার সন্তান ডাক্তার কিংবা ইন্জিনিয়ার হয়ে অধিক উপার্জন করবে। অন্তর্ভুক্ত হবে সেই এলিট সমাজের যারা, দেশ সমাজের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিকরাও চায় না তার সন্তানেরা তাদের মত একই পেশা বেছে নিয়ে, সমাজের নিচু তলায় দিনানিপাত করবে।
তাই পড়াশুনার মূল উদ্দেশ্য হয় আলোকিত মানুষের লালন পালন নয়, এলিট সমাজের অন্তর্ভুক্তি।

সামান্য গাড়ি বাড়ি, সুন্দরী বৌয়ের জন্য, একজন মানুষকে তার জীবনের বিশ বছরের অধিককাল বইয়ের বোঝা টানতে হয় ইচ্ছায় অনিচ্ছায়। কতই না ক্ষুদ্র এই জীবন, আবার তার কোনও গ্যারান্টিও নেই। মানুষ অনৈতিক হয়ে পড়ছে এই ক্ষুদ্র সময়ের আরাম আয়েশের জন্য, যা বড় অন্য একটি অংশের জন্য সাগর সমান কষ্টের কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে।

কিন্তু এধরনের একটি সংকীর্ণ বৃত্তে সমাজ আটকে পড়লে তা কখনোই সমাজের জন্য মংগলজনক হবে না।

কয়েক কোটি কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিকরা যদি ক্রমশ:ই কোনঠাসা হয়ে পড়ে, অর্থ বৈষম্য যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে সমাজে অস্থিরতা বাড়তেই থাকবে।

নৈতিকতার শিক্ষাটি যদি অনবরত অবহেলা করা হতেই থাকে তাহলে এলিট সমাজের একটি অংশও অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠবে। দেশ সমাজের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে থাকায় তাদের বেপরোয়া হয়ে উঠা সমাজের অবক্ষয়কে ত্বরান্বিত করবে।

এর থেকে মুক্তির উপায় নৈতিকতার শিক্ষা সহ সবধরণের শিক্ষাকে সব কয়টি ঘরে পৌছে দেয়া। পাবলিক স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বৃদ্ধি পেলে শিক্ষা গ্রহণ সব শ্রেনীর জন্য সহজতর হবে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রমরমা ব্যবসায় কিছুটা হলেও ভাটা পড়বে।

অর্থ বৈষম্য কমানোর জন্য নিম্নতম মজুরির বৃদ্ধি ছাড়াও অন্যান্য সব ব্যবস্থা গ্রহনের প্রয়োজন, যেমন ক্ষুদ্র ব্যবসা ইত্যাদিকে উতসাহিত করা।

এলিট সমাজের ক্ষমতা হ্রাস করা না গেলে, এগুলোর কোনটাই সম্ভব নয়। এটি সম্ভব বিচার ব্যবস্থা, সরকার ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তনের মাধ্যমে।

কোটি কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিকদের বড় অংশই এ পর্যন্ত অল্পতেই তুষ্ট ছিল। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরে নৈতিকতা যদি ক্রমশ:ই অধ:পতিত হতে থাকে তাহলে এসময় তারাও অসহিস্ষু হয়ে উঠবে। মিডিয়ায় (টেলিভিশন, সিনেমা, পত্রিকা ইত্যাদি) যেভাবে পুরো জাতির সামনে মেকি রংগিন জগতকে রাংগিয়ে তুলা হচ্ছে, বাস্তব হয়ে উঠছে দিনকে দিন আরো কঠিন।

মুনাফা অর্জনের জন্য দেশ, মা, শিশু, নারী (প্রধানত:) স্বাধীনতা সবকিছুকেই পন্য করা হচ্ছে, পণ্যের প্রচারে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এসব কিছু আড়াল করতেই সৃষ্টি করা হচ্ছে, সংবেদনশীল ইস্যুর, যার প্রধান উপাদান হল ধর্ম, স্বাধীনতার যুদ্ধ, নারী স্বাধীনতা ইত্যাদি। মজার ব্যপারে কোটি কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিকদের বড় অংশই যে কোন বিপর্যয়েই আশ্রয় নেয় তাদের ধর্মেই সান্ত্বনা পাওয়ার জন্য।

নারী স্বাধীনতার কথা সবচাইতে উচ্চারিত হয় এলিট সমাজেই। সেই সমাজেরই একজন নারী মডেল কয়েক ঘন্টায় যে অর্থ উপার্জন করে, তা একজন নারী শ্রমিক সারা জীবন পরিশ্রম করেও উপার্জন করতে পারেন না।

এলিট সমাজের একজন তারকার, সে মডেল হউক, হউক কিংবা খেলোয়ার, অভিনেতা, একজন বুদ্ধীজীবির হোক সে সাহিত্যিক কিংবা সাংবাদিক, একজন চাকুরীজীবির গত একযুগে পারিশ্রামিক বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে, অথচ কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিকদের জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে।পারিশ্রামিক বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ না করার মতই।

প্রত্যেকটি শিশু যথার্থ নৈতিক শিক্ষা পেলে, এধরণের অসংগতিতে সোচ্চার হয়ে উঠত, সক্রিয় হত সমাজের পরিশুদ্ধি নিয়ে আসার জন্য।


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১৭ রাত ১১:১১
৮টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×