সপ্তম শ্রেনীতে যখন পড়ি, তখন হঠাৎ ই একটু বড় হয়ে গেলাম।
মা বাবা সবসময় কেমন যেন আগলে আগলে রাখতে শুরু করল।
ফ্রক কিনে না দিয়ে আব্বা দরজির দোকানে নিয়ে গেলেন।
মিষ্টি গোলাপী একটা থ্রিপিছ বানিয়ে দিলেন।
আমার স্পষ্ট মনে আছে জামার নাম ছিল রুমানা।
যেদিন প্রথম জামাটা পড়লাম আব্বা ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখছিলেন।
হয়ত ভাবছিলেন আমার ছোট্ট পুতুলটা কত বড় হয়ে গেছে!!
বড় ভাইয়ার সাথে পিঠেপিঠি হওয়ায় খুব লেগে থাকতাম।
একসময় দেখলাম ও আমাকে আর মারছে না!!
আমি চড়, কিল দিলেও আমাকে পাল্টা মার দিচ্ছে না!!
বুঝলাম বড় হয়ে গেছি।
আট দশটা মেয়ের মত কোন চেঞ্জ আসল না আমার জীবনে।
সবকিছু যেন একটু দেরীতেই বুঝতাম আমি।
প্রায়ই বিভিন্ন সমস্যায় পড়তাম,
কিন্তু কোন বোন না থাকার কারনে কারো কাছে কোন কথা শেয়ার করতাম না।
আমার আম্মা অনেক রাগী হওয়ায় খুব বেশি ফ্রি ছিলাম না ওনার সাথে।
একা একা বড় হতে লাগলাম। অনেক প্রশ্ন থেকে যেত রোজ আমার মনে।
খুব চাপা স্বভাবের ছিলাম। মায়ের অতিরিক্ত শাসনে সব সময় গুটিয়ে রাখতাম নিজেকে।
তাই হয়ত জীবনের অনেক জানা অজানা রয়ে গিয়েছিল।
অনেক শেখার বাকি রয়ে গিয়েছিল।
আজ আমি আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে আমার মেয়ের জীবনটা ভরিয়ে দিতে চাই।
আমার মত বন্দী ঘরে নয়, ইসলামী অনুশাসন মেনেই ওকে মুক্ত আকাশে উড়তে দিতে চাই।
চোখের সামনে বেড়ে উঠা আমার নাড়ী ছেড়া ধন, মনি মানিক্যকে সবথেকে নিরাপদ,
সুন্দর জীবন উপহার দিতে চাই।
অনেক কষ্ট যন্ত্রনা সহ্য করে একটি মা তার সন্তানকে বড় করেন,
কিন্তু তার নিরাপত্তার কথা ভেবে চার দেয়ালে বন্দী করে রাখেন।
জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে।
একটি মেয়েকে কখনই মানুষ ভাবা হয় না।
সবার কাছে একটি অনুরোধ,
“একটি মেয়েকে মানুষ ভাবুন, মাংসের পিন্ড নয়।”