somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

***সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকেই নিতে হবে!!!***

০৫ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



যুক্তরাষ্ট্রের এ্যারিজোনা, ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসের ভোর, হাইওয়ে দিয়ে ছুটে চলছে সারি সারি গাড়ি। ফটোগ্রাফার থমাস ইওক্সেল সেপথে যাবার সময় লক্ষ্য করে একজন পুলিশ অফিসারকে মাটিতে চেপে ধরে আঘাতের পর আঘাত করে যাচ্ছে এক দুর্বৃত্ত। প্রায় সাড়ে তিনশত মাইল পথের দীর্ঘ যাত্রার প্রায় শুরুতেই এমন দৃশ্য, তারপরও গাড়ি থামিয়ে কাছে গিয়ে দুর্বৃত্তকে আক্রমণ বন্ধ করতে বলে। তাতে সাড়া না পেয়ে শুধু পুলিশ অফিসার এ্যান্ডারসনের কাছে জানতে চায়, তাঁর সাহায্যের প্রয়োজন আছে কিনা! অফিসার সন্মতি জানাতেই দ্বিতীয়বার না ভেবে থমাস তার গাড়িতে আত্মরক্ষার জন্য রাখা পিস্তলটি নিয়ে এসে গুলি করে সেই দুর্বৃত্তকে নিবৃত্ত করে, আহত অফিসার এ্যান্ডারসনকে প্রায় অবধারিত মৃত্যুর হাত হতে রক্ষায় সাহায্য করে।
পুলিশের প্রতি কতোখানি ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা থাকলে একজন অতি সাধারণ মানুষ তাঁদের জন্য হত্যা করতেও দ্বিধাবোধ করেনা, তা সহজে অনুমেয়।

আমেরিকায় জনমানুষের সবচেয়ে ভরসা, ভালোবাসা আর আস্থার বাহিনীটির নাম "পুলিশ বাহিনী"। দিবারাত্রির ২৪ ঘন্টার যেকোন সময় যাঁদের কাছে নিশ্চিন্তে সমস্যার কথা বলা যায়, তাঁরা আমেরিকার পুলিশফোর্স। আর সব পেশার মতো পুলিশের মাঝেও দু চারটি কালোভেড়া আছে তবে সৎ আর নিষ্ঠাবান পুলিশের তুলনায় তাদের সংখ্যাটি নগণ্য। এ কারনেই আমেরিকার পুলিশের দ্বারা সংঘটিত যেকোন অন্যায় সংবাদ শিরোনামে চলে আসে, নিমেষে ছড়িয়ে পড়ে সারাবিশ্বে।

এই ব্যাপারটির মাঝে সবচেয়ে ইতিবাচক দিকটি সকলের চোখ এড়িয়ে যায় তা হলো, মানুষ জানে পুলিশবাহিনীর মাঝে সৎ অফিসারের সংখ্যা বেশি, তাঁদের উপর ভরসা করা যায় এবং তাঁদের কাছে অন্যায়ের প্রতিকার দাবী করা যায়। পুলিশের গুলিতে নিহত কৃষ্ণাঙ্গ ছেলেটির পক্ষে বিচারের দাবীতে নামা মিছিল যদি উগ্ররূপ ধারন করে, আর সেই মিছিল থেকে পুলিশের দিকে ছুঁড়ে দেয়া লাঠি হাতে ছেলেটি পরদিন তার পরিবারের কোন বিপদে সবচেয়ে আগে পুলিশকে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারে, কারণ এদেশের পুলিশের এক এবং অভিন্ন লক্ষ্য জনগণের সেবা, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

পাশাপাশি বাংলাদেশের চিত্রটি দেখা যায়...

সব চেয়ে অপ্রিয় না হলেও জনগণের সবচেয়ে অনাস্থার বাহিনীটির নাম অনুমানে কারো সময়ের প্রয়োজন নেই!
অশ্রদ্ধা, অনাস্থা, অবিশ্বাস আর বিতৃষ্ণা - এসকল অনুভূতি বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের প্রতি জনমানুষের অনুভূতি, আর সাধারণ মানুষের অনাস্থা, অবিশ্বাস আর ভীতি একটি বিশেষ বাহিনীর প্রতি!! বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কি সৎ আর নিষ্ঠাবান অফিসার বা সদস্য নেই? আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি, অবশ্যই আছে এবং বহুল সংখ্যায় আছে। সমস্যা হলো আমাদের পুলিশ বাহিনীর দুর্নীতিপরায়নদের ভীড়ে সেসব সৎ কর্মকর্তা সদস্যদের উপস্থিতি ম্লান হয়ে যায়।

মানুষের মনোভাব যেমনই হোক, আমরা জানি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী চৌকষ, দক্ষ আর তাঁরা ইচ্ছে করলে খুঁজে বের করতে পারেনা এমন আসামীর অস্তিত্ব নেই। অথচ নিষ্পাপ শিশু আয়েশাকে বলাৎকারের প্রচেষ্টার পর সেই কুলাঙ্গার যৌননির্যাতক ফারুক সম্প্রতি গ্রেফ্তার হয়েছে দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় পর! আইন বিচারের সুযোগ থেকে বন্চিত করে আয়েশার বাবা হজরত আলীকে আত্মহননে উস্কানীদানের জন্য ইউনিয়ন মেম্বারকে তাৎক্ষণিক ভাবে গ্রেফ্তার করা নিঃসন্দেহে আরেকটি মহৎ কাজ। তবে পরক্ষণেই এর বিপরীত চিত্র-

ময়মনসিহের গৌরিপুর থানার এসআই মিজানুল কনস্টেবল হালিমা বেগমকে ধর্ষণ করার পর হালিমা যখন ওসি দেলোয়ার হোসেনের কাছে অভিযোগ করে সুবিচার না পেয়ে অপমানে আত্মহনন করেন, তখন ধর্ষক মিজানুল গ্রেফ্তার হলেও আত্মহননে প্ররোচনা দানের জন্য ওসি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফ্তার করা হয়নি আজও।


একজন সাদা এ্যাপ্রন পরিহীতা চিকিৎসকের বাবা যেদিন তাকে প্রথম স্টেথোস্কোপ হাতে হাসপাতালে যেতে দেখেন, সেদিন তাঁর চোখে যে আনন্দ আর গর্বের স্পার্কল থাকে আমার বিশ্বাস ঠিক তেমন অথবা তারচেয়েও বহুগুনে বেশী আনন্দের ঝিলিক খেলে যায় যখন কোন পিতা তাঁর আদরের মেয়েটির পরনে প্রথমবারের মতো পুলিশের ইউনিফর্ম দেখেন- বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে। এক ধরনের স্বস্তি, আস্থা আর গর্ব থাকে সেই দৃষ্টিতে, ঠিক যেমন ছিলো ময়মনসিংহের হালিমার বাবার চোখেও।



মেয়ের পুলিশে জয়েন করার অর্থ শুধু মেয়েটি আত্মনির্ভরশীল হওয়া নয় সেই সাথে নিজেদের নিরাপত্তা আর মেয়েটির নিরাপত্তা সম্পর্কে এক প্রকার নিশ্চিন্ত হওয়া। পুলিশ মানেই প্রচন্ড টাফ একজন মানুষ, তা শারিরীক এবং মানসিক দুদিক থেকে- যার মাথায় পিস্তল ধরে জীবননাশের হুমকি দিলেও তাঁর নাড়ির গণনায় এতোটুকু হেরফের হবেনা।

হালিমা বেগম ঠিক একই স্বপ্ন নিয়ে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। তারপর? লম্পট সহকর্মীর লোলুপ দৃষ্টি এসে পড়ে তাঁর উপর, ঠিক আর দশটি পেশার মতো পুলিশ বাহীনিতে দু একজন চরিত্রহীণ লম্পটের উপস্থিতি খুব অস্বাভাবিক নয়। দুঃখজনক ভাবে সংখ্যাটি হয়তো আমাদের মতো সাধারণ জনগণের কল্পণা বা ভাবনার সীমার চেয়ে ঢের বেশী। আর তাই হয়তো শত অভিযোগেও সে লম্পটকে প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি।



রেখে যাওয়া সুইসাইড নোটটি অনুযায়ী- ২০১৭ সালের ১৭ই মার্চ রাত ২টায় ময়মনসিহের গৌরীপুর পুলিশ স্টেশনের এসআই মিজানুল ইসলাম তার লালসা চরিতার্থে ধর্ষন করে কনস্টেবল হালিমা বেগমকে, এক নিমেষে ভূলুন্ঠিত করে হালিমা খাতুনে সকল গৌরব, আত্মবিশ্বাস আর ছিনিয়ে নেয় তার সম্ভ্রম। হালিমা দমে যায়না, মাথা উঁচু করে উঠে দাঁড়িয়ে নিজ বাহিনীর মাঝের ক্লেদাক্ত কীটের বিরুদ্ধে যুদ্ধটি চালিয়ে যেতে লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি দেলোয়ার হোসেনের কাছে। ওসি কুলাঙ্গার মিজানুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায়।

বেশ কিছু দিন চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে পুলিশেরই এক পরিত্যাক্ত ব্যারাকে ২রা এপ্রিল হতাশা, অপমান আর লজ্জায় নিজের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

হালিমার এই দুঃখজনক পরিণতির পর ওসি অভিযোগের ব্যাপারটি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে।ওসি দেলোয়ার হোসেন জানেনা তার এই অস্বীকৃতির চেয়ে এমন অন্যায়ের পর যে নিজের জীবন দিয়ে অন্যায়, অনাচার আর নিজ পেশার মাঝে বিচরণ করা কীটদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে গেছেন, তাঁর মৃত্যু আমাদের কাছে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য!!!

জনগণের মনে কৌতুহল হালিমার অভিযোগপত্র গ্রহনে অস্বীকারের কি কারণ হতে পারে!!! কি হতে পারে কন্সটেবল হালিমা বেগমের এই মর্মান্তিক মৃত্যুর পরও পুলিশবাহিনীরর ওসি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফ্তার না করার কারণ(তদন্ত কমিটি গঠন করে দুমাসের অধিক সময় অতিবাহিত হবার পরও ওসি গ্রেফ্তার হয়নি অথচ হজরত আলীকের আত্মহননে প্ররোচণার জন্য মেম্বারকে তাৎক্ষণিক ভাবে গ্রেফ্তার করা হয়েছে)!!

অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয় হলো, হালিমার এই আত্মাহুতির ব্যাপারে মিডিয়া, প্রশাসন সবখানে পিনপতন নিঃস্তব্ধতা! কিছু কিছু নিরবতার গর্জন হঠাৎ বজ্রপাতের হুংকারকে কে ছাড়িয়ে যায়।। প্রশাসনের এই ঔদাসিন্য, মিডিয়ার এই পিনপতন নিস্তব্ধতা কন্সটেবল হালিমার আর্তনাদ হয়ে বেজে চলেছে সাধারণ মানুষের মনে।

মিডিয়ার মৌনতা বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে বোধগম্য। প্রচন্ড সাহসী, সৎ, নির্ভীক সাংবাদিকদেরও হাত পা বাঁধা থাকে মিডিয়া হাউজের বেনিয়া মালিক পক্ষের কাছে। আর তারপরও কেউ কেউ খুব সাহসী হয়ে উঠতে চাইলে তাঁদের জন্যও সামনে রাখা আছে সাগর সারোয়ার আর তাঁর স্ত্রী রুনীর উদাহরন। সুদি মহাজনের নষ্ট লালসা যেভাবে নিরীহ আব্দুর রশিদদের লাশ ঝুলিয়ে দৃষ্টান্ত রেখে দেয় সকল ঋনগ্রহীতাদের জন্য।

আমাদের বাংলাদেশের পুলিশবাহিনীর হাতে ছিনতাইকারি, চাাঁদাবাজ, মাস্তান এমনকি ধর্ষকেরা যতোখানি শারীরিক ভাবে লান্ছিত হয়েছে তার চেয়ে পুলিশ দ্বারা লান্ছিত সাংবাদিকদের সংখ্যাটাই বেশি না কম নিশ্চিত নই!
তাই আশা করছিনা এবং চাইছিনা কোন সাংবাদিক তাঁর/তাঁদের নিরাপত্তা হুমকীর মুখে ফেলে হালিমার পক্ষে কলম ধরবেন, ওসি দেলোয়ারের গ্রেফ্তারের দাবী জানাবেন। মাস্তান চাঁদাবাজ হত্যাকারীর হাতের অস্ত্রটি গুঁড়িয়ে দিতে না জানলেও কেউ কেউ যত্নের সাথে সাংবাদিকের কলম গুড়িয়ে দিতে জানেন!

বিভিন্ন গণমাধ্যমের বেনিয়া মালিকেরা অর্থের ঝনঝনানির কাছে জিন্মী। আর এখন যেহেতু তাদের সুযোগ হয়েছে শুধু অর্থ নয়, রীতিমতো স্বর্নের ঝংকার শোনার তাই সব ফেলে তারা ব্যস্ত হয়ে আছে বনানীর জোড়া ধর্ষন নিয়ে, ভুল হলো.... তারা ব্যস্ত হয়ে আছে রেনট্রি হোটেলের ধর্ষক আপন জুয়েলার্সের মালিক পক্ষ নিয়ে। ক্ষণে ক্ষণে প্রচারে এদের যতো কোনঠাসা করে রাখা যায় তাতে ভিক্টিম দুজনের পক্ষে বিচার সুনিশ্চিত করা যাক বা না যাক, মুখ বন্ধ করার লক্ষ্যে দুচার সেট (?)উপঢৌকণ পাবার সম্ভাবনা বেশি। তাই দিবারাত্রী শুধু স্বর্ণালংকারের দোকানের মালিক পক্ষদের খবর!!!

মিডিয়ার মুখ বন্ধ করতে এসব উপঢৌকন এক এক করে বিভিন্ন ধাপ ছাড়িয়ে ক্রমেই উর্ধ্বগামী হয়ে কোথায় যে পৌঁছে সে বিষয়টি অনুমাণ করা খুব কঠিন কিছু নয়।
যেহেতু স্বর্ণের সুরেলা ঝংকার দূরের কথা সামান্য অর্থের ঝনঝনানির কোন আশা নেই তাই চাপা পরে যায় নিষ্পাপ শিশু আয়শাকে যৌণহয়রানির বিচারের দাবী, স্তব্ধ হয়ে থাকে কন্যা আয়শাকে নিয়ে এক পরাজিত হতাশ পিতা হজরত আলীকে আত্মহণনে বাধ্য করা কুলাঙ্গারদের বিচারের কথা। র‍্যাববাহিনীকে ধন্যবাদ তারপরও আয়েশার যৌন নির্যাতককে গ্রেফ্তারের জন্য
তবে কন্সটেবল হালিমা বেগমের নামটি নেয়া যাবেনা, কোনভাবেই না- এটা মিডিয়ায় নিষিদ্ধ শব্দ।

মিডিয়ায় প্রচার হোক আর না হোক দেশের জনগণের মনে ঠিকই একটি ক্ষতের মতো দগদগে ঘা হয়ে আছে কন্সটেবল হালিমা বেগমের আত্মহনন।
বাংলাদেশ পুলিশবাহিনী, এই মেয়েটি আপনাদেরই একজন ছিলো। সাধারণ একজন ওসি দেলোয়ারকে আত্মহত্যায় প্ররোচণা দানের জন্য গ্রেফ্তার না করায় আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হয় আপনারা মেয়েটিকে আবর্জনার মতো ছুড়ে ফেলেছেন হয়তো শুধুই একজন "মেয়েমানুষ" বলে!

আপনাদের এখন সিদ্ধান্ত নেবার পালা
- আপনারা আর সব মাধ্যমের মতো হেনস্থা, নাজেহাল দিয়ে অনলাইন মিডিয়ার টুঁটি চেপে ধরতে সচেষ্ট হবেন
- আর দশটি ধর্ষিতার মতো কন্সটেবল হালিমা খাতুনকেও "খারাপ মেয়ে" ট্যাগ দিয়ে কুলাঙ্গার ধর্ষক আর তার প্রশ্রয়দাতাদের রক্ষা করবেন।
না আমাদের এই আশংকা মিথ্যা প্রমানিত করে অবিলম্বে ওসি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফ্তার এবং এসআই মিজানুলের বিরুদ্ধে মামলার বর্তমান অবস্থা জানিয়ে একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপণ করবেন।
দেশের সকল নারী পুরুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যেখানে পুলিশবাহিনীর দায়িত্ব সেখানে খোদ পুলিশবাহিনীর মাঝেই মেয়েরা নিরাপদ নয়- এই বিষয়টির ভয়বহতা আর গুরুত্ব অনুধাবনের মতো সুস্থ মস্তিস্ক আজও বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীতে অনেকে আছেন বলেই বিশ্বাস করি।

মিডিয়ার মুখ বন্ধ সম্ভব হলেও জনগণের মন রুদ্ধ করা সম্ভব নয়, সম্ভব নয় মানুষের ভাবনার চাকা স্তম্ভিত করে দেয়া। আর তাই মানুষ ভুলেনা ফুলবাড়িয়ার মানুষ গড়ার কারিগর অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ আর মাছ বিক্রেতা ছফর আলীর নির্মম মৃত্যুর কথা- নষ্ট ক্ষমতার পুঁতি দুর্গন্ধময় কালোথাবার প্রভাব যেদিন রক্ষককে ভক্ষকে পরিণত করেছিলো। মিডিয়ায় যখন কোন ধর্ষণের সংবাদ, কোন অপরাধের সংবাদ প্রচারিত হয়- বিবেকবোধ সম্পন্ন মানুষের মনে তখন প্রশ্ন জাগে কন্সটেবল হালিমা বেগমের ধর্ষন আর আত্মহননের প্ররোচনাকারীর কথা!

আমেরিকার কোন পুলিশের জীবন বিপন্ন দেখলে আরো অনেকের মতো আমি নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে যাবো। এদেশের মানুষ জানে আত্মীয়, বন্ধু এমনকি পরিবার আমার বিপদে নিজের জীবন বিপন্ন করবে কিনা নিশ্চিত না হলেও একজন পুলিশ অফিসার বিনা দ্বিধায় আমাকে রক্ষা করতে নিজের বুকে বুলেট গেঁথে নিবেন। যে কাজটি তাঁরা অ্হরহ করছেন, কিছুদিন পর পর সাধারণ মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে আমেরিকার পুলিশ নিহত হচ্ছেন দুর্বৃত্তের হাতে অথবা দুর্ঘটনায়, সেই মৃত্যু বীরের মৃত্যু- মৃত্যুর পরও অক্ষয় অমর হয়ে থাকার বলিদান! হাজার হাজার মাইল দূরের তৃতীয় বিশ্বের এক হতদরিদ্র দেশের মেয়ে যে এদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর একজন, সেই আমার মনে যদি এদেশের পুলিশের প্রতি এধরনের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা আর আস্থা থাকে তাহলে অনুমান করা যায় এখানে আজন্ম লালিত আমেরিকানদের মনে কি প্রবল ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা তাঁদের প্রতি।

এই ভালোবাসা তাঁরা অর্জন করেছেন নিজেদের সততা আর নিষ্ঠা দিয়ে। সাধারণ মানুষের যেকোন বিপদে মুহুর্তে পাশে দাঁড়িয়ে!
বাংলাদেশ পুলিশবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যদি মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন কোন নারী, এমনকি সন্ধ্যায় সোডিয়াম আলোর নীচে লুকিয়ে অপেক্ষারত বারবনিতাকেও তার অনুমতি ছাড়া স্পর্শের অধিকার কারো নেই, তাহলে এদেশে কোন কুলাঙ্গার আর কোন নারীকে লান্ছিত করার স্পর্ধা দেখাবেনা। নারী শিশুকে ভোগ করার মাঝে নয়, প্রকৃত পৌরষ আর শৌর্য্য সকল অবস্থায় নারী শিশুদের নিরাপদবোধ করানোর মাঝে- এই সত্য পুলিশ বাহিনী যদি মানে এবং গভীরভাবে বিশ্বাস করে তাহলে বাংলাদেশের সকল কুলাঙ্গারের পাল কোন নারীর সম্ভ্রম নষ্টের ধৃষ্টতা দেখাবর আগে হাজার বার ভেবে দেখবে।

আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি আমাদের দেশের দক্ষ, চৌকষ পুলিশবাহিনী একসময় মানুষের এই আস্থা অর্জন করবে। জনগণের যেকোন বিপদে আপোষহীণ ভাবে তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশের পুলিশ, বিপদগ্রস্থ একজন মানুষের সবচেয়ে বড় বন্ধু হবে পুলিশ। একজন নারী, সে প্রতি সন্ধ্যায় রাজপথের ল্যাম্পপোস্টের নিচে খদ্দেরের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা কেউ হলেও ধর্ষন বা হয়রানীর অভিযোগ করলে পুলিশ মুহুর্তে সেই ঘৃণ্য ধর্ষককে গ্রেফ্তার করে শাস্তি দিতে উদ্যত হবে। পুলিশ স্টেশনে ধর্ষন হয়রানির অভিযোগ জানাতে হলে কোন নারীকে নিজের চরিত্রের মৌখিক সনদপত্র দিতে হবেনা।

আমরা স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশের পুলিশ একদিন চাঁদাবাজ দুর্বৃত্ত, কালোবাজারী, অপরাধী আর অসৎ রাজনীতিবিদদের ভীতির কারণ হবে, ত্রাস হবে দুর্নীতিবাজদের আর হবে সাধারণ মানুষের পরম আস্থার বন্ধু!!!!

সিদ্ধান্তটা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে নিতে হবে তাঁরা জনগণের বিতৃষ্ণা, অনাস্থা আর সন্দেহের বাহিনী আর দুর্নীতিবাজ অপরাধীদের আস্থাভাজন বন্ধু হবেন না আমাদের মতো সাধারণ জনগণের স্বপ্ন পূরণ করবেন!


তথ্য ও ছবি সুত্র: ইন্টারনেট

**** ব্লগে যদি কোন ব্লগার বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সৎ সদস্য হয়ে থাকেন, তাঁদের অনুরোধ করবো পোস্টটি বাহিনীর সৎ সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে****

সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫
৩২টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×