একটা কচ্ছপের পিঠে চড়ে সমুদ্রে ভেসে বেড়াচ্ছিলাম অনেকক্ষন ধরে। কচ্ছপটার নাম সাইফুর । হঠাৎ এটা ব্রেকফেইল করল। আর আমি ডুবতে শুরু করলাম। আমার কোলে থাকা ক্যান্ডি পুতুলটাও যেন কোথায় হারিয়ে গেল। হঠাৎ কে যেন ধরে ফেলে আমাকে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করল। তাকিয়ে দেখি মায়া মায়া চেহারার একটা মেয়ে। বলল, "আমি সমুদ্র কন্যা । এই সমুদ্রই আমার ঠিকানা।" আমাকে বাঁচানোর জন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানালাম। সাথে সাথে মনে পড়ল আমার ক্যান্ডির কথা। জানতে চাইলাম সে দেখেছে কিনা! আকুল করা ভালবাসা মাখা কন্ঠে সে জানাল, "না, বন্ধু আমি দেখিনি! তবে তুমি আমাদের রাজ্যের এক গবেষকের কাছে যেতে পারো। তার নাম তায়েফ আহমেদ ।সে হয়তো বলতে পারে কোথায় আছে তোমার ক্যান্ডি!"
সমুদ্র কন্যাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি গেলাম সেই গবেষকের কাছে। কিন্তু তিনি তার গবেষণা নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলেন যে আমার জন্য কিছুই করতে পারলেন না। তবে তিনি তার এক বন্ধু আহমেদ রাকিব এর ঠিকানা দিয়ে বললেন, "তার কাছে শুনে দেখতে পারো কোথায় আছে তোমার ক্যান্ডি!"
তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি গেলাম আহমেদ রাকিবের বাড়ি। গিয়ে দেখি সেখানে কোন কথা নেই, কোন শব্দ নেই, শুনশান নিরবতা সবখানে। আহমেদ রাকিবকে খুঁজে পেয়ে জানতে চাইলাম আমার ক্যান্ডির কথা। তিনি বললেন, "কিছু বলার নাই। ভাল মন্দ কোনো কথাই আজকাল আর বলতে ইচ্ছে করে না। কথাই বলতে ইচ্ছে করে না।" তবে সে আমাকে জানালো সিউল রায়হান এর কথা। সে নাকি একজন নিভে যাওয়া আলোর পূজারী। সে হয়তো দিতে পারে হারিয়ে যাওয়া ক্যান্ডির খোঁজ! কিন্তু সকাল রাত্রী খুঁজেও তিনি কোন সন্ধান দিতে পারলেন না। তবে তিনি ফাহাদ চৌধুরী এবং অমিত চক্রবর্তী নামে দুজন মিস্ত্রীর
আবার হাটতে শুরু করলাম বোহেমিয়ানের মত। রাস্তায় দেখা হয়ে গেল আরেক বোহেমিয়ানের সাথে। তাকেও জানালাম আমার দুঃখের কথা। কিন্তু জবাবে সে যা বললো তা বোহেমিয়ান কথকতা ছাড়া আর কিছুই না। তবে তার কাছ থেকে সন্ধান পেলাম এক কালপুরুষএর। শুনলাম তিনি নাকি এক দুরন্ত স্বপ্নচারী । স্বপ্নে স্বপ্নে খুঁজে পান হারানো জিনিস! আর স্বপ্নকথক-এর মতই বলে যান তার স্বপ্নের কথা।
এক শ্রাবনসন্ধ্যায় গেলাম সেই কালপুরুষের কাছে। তার ব্যাপারে যা শুনেছিলাম তা আসলেই ঠিক। তিনি স্বপ্ন দেখে বলে দিলেন, ক্যান্ডি আছে এক ফুলবাগানে। এবার গেলাম সেই ফুলবাগানে। কত্ত ফুল যে ফুটে আছে সেই বাগানে! আরে সবার প্রিয় ফুল করবিও যে আছে দেখছি! কি সুন্দর দেখতে ফুলটা! কাছে গিয়ে জানতে চাইলাম সে আমার ক্যান্ডি পুতুলটা দেখেছে কিনা! সে বললো সে নাকি এক বাবুনিকে এখানে খেলতে দেখেছে। খুঁজতে খুঁজতে পেয়েও গেলাম তাকে। তবে সে আমার ক্যান্ডি পুতুলটা না। তার নাম বাবুনি সুপ্তি । অভিমানী বাবুনিটা নাকি শুধু হারিয়ে যেতে চায়! আর হারাতে ইচ্ছে হলেই সে আসে এই ফুলবাগানে। সে জানাল সে নাকি এখানে আরো একজনকে দেখেছে। খুঁজে পেলাম তাকেও। তবে সেও আমার পুতুলটা নয়। তার নাম অদ্বিতীয়া সিমু, একজন লেখক। সে এইফুলবাগানে বসে লেখালেখি করে।
আমার ক্যান্ডিটাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে মন খারাপ করে এদিকসেদিক ঘোরাঘুরি করছিলাম। মন খারাপ করে ভাবছিলাম লেখাজোকা শামীম-এর কাছে গিয়ে বলি পত্রিকায় একটা হারানো বিজ্ঞপ্তি লিখে দিতে। তিনি তো পত্রিকায় লেখালেখি করেন। ভাবতে ভাবতে আর ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ দেখি একটা কাঠের খাঁচা । আর সেই খাঁচায় বন্দী এক অতিথি পাখি । কাছে যেতেই পাখিটা বললো, "আমাকে খাঁচা থেকে বের করে দাও। আমি ক্যান্ডিকে খুঁজে দেব। আমি জানি সে কোথায় আছে!" আমি খাঁচার দরজা খুলে দিলাম। পাখিটা বের হয়ে ডানা ঝাপটাল। আর আমি অবাক হয়ে দেখলাম, আমার ক্যান্ডি পুতুলটা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে পাখির ডানার ভাজে! আমি তাড়াতাড়ি ওকে কোলে তুলে নিলাম। আমার কোলে এসে সে হেসে দিল।
হঠাৎ মিষ্টি একটা হাসির আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। তাকিয়ে দেখি আমার জ্যান্ত পুতুলটা আমার কোলে শুয়ে স্বপ্ন দেখছে আর হাসছে!
প্রথম যেদিন হারিয়ে গেছিলাম
(এটা নিছকই একটা স্বপ্নে পাওয়া গল্প। কেউ সিরিয়াসলি নিয়েন না প্লিজ।)
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ২:৩৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



