somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশে উচ্চশিক্ষা: অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা (পর্ব-১) :-B

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১০ সকাল ১০:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই বিষয়টা নিয়ে লেখার অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল। আজ শুরু করলাম।
আমি আমার লেখায় অ্যামেরিকা আর কানাডা সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতাগুলো বলব। ইউরোপ সম্পর্কে আমার জ্ঞান কম, তবুও যতটুকু জানি বলব। কোন জ্ঞানী ব্লগার কমেন্ট দিয়ে গেলে সেই পয়েন্টও অ্যাড করার চেষ্টা করব।

১। অ্যামেরিকা নাকি কানাডা? : খুব কঠিন প্রশ্ন। তবে আমি যথাসাধ্য নিরপেক্ষভাবে কিছু পয়েন্ট দেবার চেষ্টা করব। আপনি বেছে নিন।

# অ্যামেরিকায় অনেক ভাল ভাল ইউনিভার্সিটি আছে। তাই, তাদের কোয়ালটির পাশাপাশি কোয়ান্টিটিও ভাল। কেউ যদি পরবর্তিতে এখানে সেটেল হতে চান, কানাডের চেয়ে জব অপর্চুনিটি ভাল। আবহাওয়া একটা প্লাস পয়েন্ট, খুব নর্থের দিকে না গেলে আবহাওয়া কানাডার চেয়ে ভাল। আরো অনেক আছে।

* অ্যামেরিকায় কম্পিটিশনও বেশি হয় বিশেয করে প্রতিটা ইউনিতে চাইনিজ আর ভারতীয়দের সাথে কঠিন ফাইট দিতে হবে আপনাকে। এই দুই দেশের প্রফেসররা ছড়িয়ে আছে সবখানে। কানাডার কাছাকাছি ঠান্ডাও পরে অনেক জায়গায়। আইন শৃঙ্খলার ব্যাপারটাও একটু নাজুক। অ্যামেরিকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটা বিরাট আজব বস্তু, বহুত ক্যাচাল। :|

আরেকটা জিনিস হল, অ্যামেরিকাতে গ্রাজুয়েট স্টাডিতে রিসার্চ ছাড়াও অনেক কোর্স নিতে হয়। (এটা ভালও না আবার খারাপও না)

আরো বহু কিছু আছে যেটা অ্যামেরিকার চেয়ে কানডায় ভাল।

# কানাডার বেশ ভালো ভালো কয়েকটা ইউনি আছে। কানাডায় অ্যাডমিশন হলে ফান্ডসহই সাধারণত হয়। কানাডায় সাধারণত কোর্সওয়ার্কের লোড কম চাপানো হয়। কানাডায় ভাল করলে অনেকে টিচার হিসেবে জয়েন করতে পারেন। ইউএসএতেও অনেকে টিচিং করেন, তবে তুলানমূলক হার কানাডায় বেশি। কানাডায় নিরপত্তা কিছুটা ভাল। কানাডার স্বাস্থ্যসেবা অনেক ফ্রেন্ডলি। কানাডার ওভারঅল স্টেবিলিটি বেশি।

কানাডায় কম্পিটিশন কিছুটা কম ভাববেন না। ওখানে ইরানিদের বিশাল স্টুডেন্ট + ফ্যাকাল্টি বেজ আছে। কানাডার ঠান্ডা সবাই মানিয়ে নিতে পারে না।

আরো বহু কিছু আছে যেটা কানডার চেয়ে অ্যামেরিকায় সুবিধাজনক।

ইউএসএ তে জিআরই লাগবেই, টোফেলও লাগবে। X(( কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আর টরেন্টো, (ক্যালগেরি? মনে নাই ঠিক) ছাড়া জিআরই চায় না এবং অনেক জায়গায় টোফেল/আইইএলটিএস যে কোন একটা হলেই হয়।
ইদানিং আইইএলটিএস ইউএসএর কিছু কিছু জায়গায়ও চলছে।

কানাডায় ব্যাচেলর ডিগ্রীর পর মাস্টার্স করে তারপর পিএইচডি শুরু করতে হয়, ইউএসএতে ব্যাচেলর ডিগ্রীর পর সরাসরি পিএইচডি অ্যাপ্লাই করা যায়। (অনেক ইউনিতে ব্যতিক্রম আছে)

২। কোথায় অ্যাপ্লাই করব? :|

কানাডারটা আগে বলি কারণ ওটা অনেক সহজে বলা যাবে। কানাডার বেশিরভাগ গ্র্যাড অ্যাডমিশনই হয় প্রফেসরের হাত দিয়ে। আপনি আগে প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করুন, যদি তিনি পজিটিভ কিছু বলেন তাহলে অ্যাপ্লাই করুন। কানাডার নীতি হল যার সত্যিকারের আগ্রহ আছে তারাই যেন অ্যাপ্লাই করে। তাই ওদের অ্যাপ্লিকেশন ফি অনেক বেশি। তবে মনে রাখবেন: ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আর অ্যালবার্টা বাংলাদেশের অ্যাপ্লিক্যান্টদের থেকে ফি নেয় না !:#P !:#P

প্রফেসরের রেকমেন্ডেশন ছাড়া কানাডায় একটা অ্যাপ্লাই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ এবং এর সাকসেস রেট বেশ কম।

ইউএসএতে আপনি প্রফেসরের সরাসরি রেকমেন্ডেশন ছাড়াও ভর্তির আশা রাখতে পারেন। তবে প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ থাকলে তো সোনায় সোহাগা।:):D

- আবেদনের খরচপাতি: ৮০, ১০০ বা ১৫০ ডলারও হয় কানাডায়। ইউএসএতে এটা ২৫ থেকে ১০০ ডলারের মধ্যে হয়। (সাধারণত) টোফেল ও জিআরই স্কোর ফরোয়ার্ড করতে যথাক্রমে ১৭ আর ২৩ মোট ৪০ ডলার লাগত (২০০৯ এ)। কাগজ পাঠাতে কুরিয়াররা ১০০০ (৭ দিন) থেকে ২০০০ টাকা(দ্রুত) নেয়।


আপনি ইউনি নির্বাচনে যেসব মাথায় রাখতে পারেন:
ক. কোন প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ এবং পজিটিভ সারা পাওয়া।
খ. ইউনিভার্সিটির র‌্যাংকিং, (এটা নিয়ে একটা আলাদা পোস্টে বলব)
গ. আপনার সহ্যক্ষমতা (আবহাওয়া)
ঘ. ওখানে বাঙালিদের সাকসেস রেট কেমন?
ঙ. পরিচিত কেউ থাকলে সেটা প্লাস পয়েন্ট।
চ. আপনার সিভি স্ট্রং হলে ভাল স্কুলে ট্রাই করতে পারেন।
ছ. আপনার মনের মত কাজটি যেখানে হচ্ছে সেটা আপনার জন্য সবচেয়ে সেরা জায়গা।

আরো অনেক কিছু......

রুল অভ থাম্ব: আপনার স্ট্যান্ডার্ড বা যোগ্যতা অনুযায়ী ২ বা ৩ টি অ্যাপ্লাই করুন, চান্স হিসেবে আরো উপরের দিকের ২ আর সেফ থাকার জন্য আপনার লেভেলের চেয়ে নিচে ২ টা অ্যাপ্লাই করুন।

পরের পোস্টে প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ, জিআরই, টোফেল, স্টেটমেন্ট, আমার বোকামিগুলো :-& , ভিসা প্রিপারেশন এসব নিয়ে বলার ইচ্ছা থাকল।
দ্বিতীয় পর্ব: GRE

কয়েকটা খুব ভাল লেখার লিংক:
রাগিব ভাইয়ের অসাধারণ কিছু লেখা:
ফান্ডিং
মাস্টার্স না পিএইচডি?
স্টেটমেন্ট অভ পারপাজ নিয়ে খুবই ভাল একটা লেখা

কুম্ভকর্ণ ভাইয়ের লেখা

তানজীর ভাইয়ের একটা লেখা (কানাডা)

আরো অনেক লেখা আছে সেগুলো আমি এখানে দেবার চেষ্টা করব। কারো শোকেসে থাকলেও লিংক দিতে পারেন, পোস্টে যোগ করে নেব ।

সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। সবাই ভাল থাকবেন। :)
বাঙালিরা ছড়িয়ে পড়ুক পুরো পৃথিবীতে।
[লেখাটা মূলত স্নাতোকত্তর পর্যায়ের জন্য

ভ্যানডারবিল্টে অ্যাপ্লিকেশন ফি লাগে না।
সাঈফ শেরিফ বলেছেন: আমেরিকার মিশিগান টেক, ইউনিভার্সিটি অফ ইউটাহর বেশ কিছু প্রোগ্রামে এপ্লিকেশন ফি নেই।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১:৩৩
৪৭টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×