somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা দিবস সম্পর্কে বিভিন্ন বইয়ের কিছু বর্ননা। ও খুটি-নাটি কিছু কথা।

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৯:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভ্যালেন্টাইন ডে
সম্পর্কে তিনটি ব্যাখ্যা পাওয়া যায় । তবে
বিভিন্ন বইয়ে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনা উদ্ধৃত
হয়েছে । সেগুলো থেকে প্রসিদ্ধ কয়েকটি
ঘটনা পাঠকের সচেতনার্থে নিম্নে তুলে
ধরা হল-
প্রথম বর্ণনা : রোমের সম্রাট দ্বিতীয়
ক্লাডিয়াস এর আমলে ধর্মযাজক সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন ছিলেন শিশু-প্রেমিক,
সামাজিক ও সদালাপী এবং খৃষ্ট ধর্ম-
প্রচারক । অপরদিকে রোম সম্রাট ছিলেন
দেব-দেবীর পূজায় বিশ্বাসী । সম্রাটের
তরফ থেকে ভ্যালেন্টাইনকে দেব-দেবীর
পূজা করতে বলা হলে তিনি তা অস্বীকার
করেন । ফলে ভ্যালেন্টাইনকে কারারুদ্ধ
করা হয় এবং ২৭০ খৃষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী
রাষ্ট্রীয় আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে সম্রাট
ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করে হত্যা
করেন ।
দ্বিতীয় বর্ণনা : সেন্ট ভ্যালেন্টাইন
কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাসক্ত যুবক-
যুবতীরা অনেকেই প্রতিদিন তাকে
কারাঘারে দেখতে আসত এবং ফুল উপহার
দিত । আগন্তুকরা বিভিন্ন উদ্দীপনামূলক
কথা বলে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে উদ্দীপ্ত
রাখত । জনৈক কারারক্ষীর এক অন্ধ মেয়েও
ভ্যালেন্টাইনের সাথে প্রত্যহ সাক্ষাৎ
করতে আসত । অনেক্ষণ ধরে তারা দু’জন
প্রাণ খুলে কথা বলত । এক সময়
ভ্যালেন্টাইন মেয়েটির প্রেমে পড়ে যায় ।
সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আধ্যাত্মিক
চিকৎসায় অন্ধ মেয়েটি দৃষ্টিশক্তি ফিরে
পায় । ভ্যালেন্টাইনের সাথে কারারক্ষীর
মেয়ের সম্পর্ক এবং ভ্যালেন্টাইনের প্রতি
দেশের যুবক-যুবতীদের ভালবাসার কথা
সম্রাটের কানে পৌঁছে । এতে সম্রাট
ক্ষিপ্ত হয়ে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদন্ড
প্রদান করেন । তথ্যমতে, তাকে ফাঁসি দেয়া
হয়েছিল ২৬৯ খৃষ্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারী ।
তৃতীয় বর্ণনা : সমস্ত ইউরোপে যখন খৃষ্টান
ধর্মের জয়জয়কার তখনও বড় আয়োজন করে
পালিত হত রোমীয় একটি রীতি । মধ্য
ফেব্রুয়ারীতে গ্রামের সকল যুবকেরা সমস্ত
মেয়েদের নাম চিরকুটে তুলত, অতপর লটারীর
মাধ্যমে যার হাত যে মেয়ের নাম উঠত, সে
যুবক পূর্ণবৎসর ঐ মেয়ের প্রেমে মগ্ন থাকত ।
আর তাকে চিঠি লিখতে এ বলে যে,
‘প্রতিমা মাতার নামে তোমায় প্রেরণ
করছি’। বৎসর সমাপান্তে এ সম্পর্ক নবায়ণ
বা পরিবর্তন করা হত । এ রীতিটি কতক
পাদ্রীর গোচরীভূত হলে তারা একে সমূলে
উৎপাটন করা অসম্ভব ভেবে শুধু নাম পাল্টে
দিয়ে একে খৃষ্টান ধর্মায়ণ করে দেয় এবং
ঘোষণা করে, এখন থেকে এ পত্রগুলো
প্রতিমা মাতার নামে প্রেরণ না করে
‘সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’ এর নামে প্রেরণ করতে
হবে । কারণ এটা খৃষ্টান নির্দশন, যাতে
কালক্রমে এটা খৃষ্টান ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত
হয়ে যায় ।
চতুর্থ বর্ণনা : প্রাচীন রোমে দেবতাদের
রাণী জুনো (Junno)’র সম্মানে ১৪
ফেব্রুয়ারী ছুটি পালন করা হত । রোমানরা
বিশ্বাস করত যে, জুনোর ইশার-ইঙ্গিত
ছাড়া কোন বিয়ে সফল হয় না । ছুটির
পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারী লুপারকালিয়া ভোজ
উৎসবে হাজারো তরুনের মেলায় র্যাফেল
ড্র্র’র মাধ্যমে পরস্পরের সঙ্গী বাছাই
পক্রিয়া চলত । এ উৎসবে উপস্থিত তরুণীরা
তাদের নামাঙ্কিত কাগজের সিপ
জনসম্মুখে রাখা একটি বড় পাত্রে ফেলত ।
সেখান থেকে যুবকের তোলা সিপের
তরুণীকে কাছে ডেকে নিত । কখনও এ জুটি
সারা বছরের জন্য স্থায়ী হত এবং
ভালবাসার সিঁড়ি বেয়ে বিয়েতে পরিনতি
ঘটত ।
পঞ্চম বর্ণনা : রোমানদের বিশ্বাসে
ব্যবসা, সাহিত্য, পরিকল্পনা ও দস্যুদের প্রভু
‘আতারিত এবং রোমানদের সবচেয়ে বড় প্রভূ
‘জুয়াইবেতার’ সম্পর্কে ভ্যালেনটাইনকে
জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল । এদের সম্পর্কে
ভ্যালেন্টাইন বলেছিল, এগুলো সব মানব
রচিত প্রভূ, প্রকৃত প্রভূ হচ্ছে ‘ঈসা মসীহ’ । এ
কারণে তাকে ১৪ ফ্রেব্রুয়ারীতে হত্যা করা
হয় ।
ষষ্ঠ বর্ণনা : কথিত আছে, খৃষ্টধর্মের প্রথম
দিকে নেতিক চরিত্র বিনষ্টের অপরাধে
রোমের কোন এক গীর্জার ভ্যালেন্টাইন
নামক দু’জন সেন্ট (পাদ্রী) এর মস্তক কর্তন
করা হয় । তাদের মস্তক কর্তনের তারিখ
ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারী । ভক্তেরা তাদের
‘শহীদ’(!) আখ্যা দেয় । রোমান ইতিহাসে
শহীদের তালিকায় এ দু’জন সেন্টের নাম
রয়েছে । একজনকে রোমে এবং অন্যজনকে
রোম থেকে ৬০ মাইল (প্রায় ৯৭ কি.মি)
দূরবর্তী ইন্টরামনায় (বর্তমান Terni) এ
‘শহীদ’ করা হয় । ইতিহাসবিদগণ কর্তৃক এ
ঘটনা স্বীকৃত না হলেও দাবী করা হয যে,
২৬৯ খৃষ্টাব্দে ‘ক্লাইডিয়াস দ্যা গথ’ এর
আমলে নির্যাতনে তাদের মৃত্যু ঘটে । ৩৫০
খৃষ্টাব্দে রোমে তাদের সম্মানে এক
রাজপ্রাসাদ (Basillica) নির্মাণ করা হয় ।
ভূর্গভস্থ সমাধিতে একজনের মৃতদেহ রয়েছে
বলে অনেকের ধারণা ।
সপ্তম বর্ণনা : ৮২৭ খৃষ্টাব্দে সেন্ট
ভ্যালেন্টাইন নামের এক ব্যক্তি রোমের
পোপ নির্বাচিত হয়েছিল । তিনি তার
চারিত্রিক মাধুর্য এবং সুন্দর ব্যবহার দিয়ে
অল্প দিনের মধ্যেই রোমবাসীর মন জয় করে
নিয়েছিল । কিন্তু মাত্র ৪০ দিন দায়িত্ব
পালনের পরেই তার জীবনাবসান ঘটে ।
প্রিয় পোপের মৃত্যুর পর তাঁর স্মরণে ১৪
ফেব্রুয়ারী রোমবাসী এক অনুষ্ঠানের
আয়োজন করেছিল । অনেকের মতে এভাবেই
‘ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র সূচনা হয় । পশ্চিমা
দেশগুলোতে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে
এ দিনে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, এমনকি
পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও উপহার
বিনিময় হয় । উপহার সামগ্রীর মধ্যে থাকে
পত্র বিনিময়, খাদ্য দ্রব্য, ফুল, বই, ছবি, `Be
my Valentine’(আমার ভ্যালেন্টাইন হও),
প্রেমের কবিতা, গান কার্ড প্রভৃতি ।
গ্রীটিং কার্ডে, উৎসব স্থলে অথবা অন্য
স্থানে প্রেমদেব (Cupid) এর ছবি বা মূর্তি
স্থাপিত হয় । সেটা হল একটি ডানাওয়ালা
শিশু, তার হাতে ধনুক এবং সে প্রেমিকার
হৃদয়ের প্রতি তীর নিশান লাগিয়ে আছে ।
এ দিন স্কুল শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসরুম
সাজায় এবং অনুষ্ঠান করে ।১৮শ’ শতাব্দী
থেকেই শুরু হয়েছে ছাপানো কার্ড প্রেরণ
। এ সব কার্ডে ভাল-মন্দ কথা, ভয়-ভীতি আর
হতাশার কথাও থাকত । ১৮শ’ শতাব্দীর
মধ্যভাগ থেকে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম
দিকে যে সব কার্ড ভ্যালেন্টাইন ডে’তে
বিনিময় হত তাতে অপমানজনক কবিতাও
থাকত । তবে সবচেয়ে যে জঘন্য কাজ এ
দিনে করা হয় তা হল, ১৪ ফেব্রুয়ারী
মিলনাকাঙ্খী অসংখ্য যুগল সবচেয়ে বেশী
সময় চুম্বনাবদ্ধ থাকার প্রতিযোগিতায়
লিপ্ত হয় । আবার কোথাও কোথাও
চুম্বনাবদ্ধ হয়ে ৫ মিনিটি বা তার বেশি
সময় অতিবাহিত করে ঐ দিনের অন্যান্য
আয়োজনে অংশগ্রহন করে ।
বাংলাদেশের ‘যায়যায় দিন’ পত্রিকার
সাবেক সম্পাদক ও বিটিভির এক সময়ের
অত্যন্ত জনপ্রিয় টক’শো “লাল গোলাপ
শুভেচ্ছা” এর পরিচালক ও উপস্থাপক জনাব
শফিক রেহমান বাংলাদেশে ভালবাসা
দিবস চালুর জনক । এ দিবসে ভালবাসায়
মাতোয়ারা থাকে রাজধানী ঢাকাসহ
দেশের বড় বড় শহরগুলো । পার্ক, রোস্তোরাঁ,
ভার্সিটির করিডোর, টিএসসি, ওয়াটার
ফ্রন্ট, ঢাবির চারুকলার বকুলতলা, আশুলিয়া,
কুয়াকাটা এবং কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতসহ-
সর্বত্র থাকে প্রেমিক-প্রেমিকাদের তুমুল
ভীড় । ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে অনেক
দম্পতিও উপস্থিত হয় প্রেমকুঞ্জগুলোতে ।
আমাদের দেশের এক শ্রেণীর তরুণ-তরুণী,
যুবক-যুবতী এমনকি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও
ভালোবাসা দিবসে নাচতে শুরু করে ! তারা
পাঁচতারা হোটেলে, পার্কে, উদ্যানে,
লেকপাড়ে এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়
উপস্থিত হয় ভালবাসা বিলোতে, অথচ
তাদের নিজেদের ঘর-সংসারে এক ফোঁটাও
ভালবাসার উপস্থিতি নাই । আমাদের
বাংলাদেশী ভ্যালেন্টাইনরা যাদের
অনুরণে এ দিবস পালন করে, তাদের
ভালবাসা জীবন-জ্বালা আর জীবন
জটিলতার নাম; মা-বাবা, ভাই-বোন
হারাবার নাম, নৈতিকতার বন্ধন মুক্ত
হওয়ার নাম । তাদের ভালবাসার লক্ষ্যই ‘ধর-
ছাড়’ আর ‘ছাড়-ধর’ নতুন নতুন সঙ্গী । ১৪
ফেব্রুয়ারী শুরু হলেও তাদের ধরা-ছাড়ার
বেলেল্লাপনা চলতে থাকে সমগ্র
জীবনব্যাপী ।
যে সকল যুবক-যুবতী, তরুণ-তরুণী ও ছাত্র-
ছাত্রীরা আগামী বাংলাদেশের কর্ণধর
সেই তারাই যদি এমন বিপথগামী ও
চরিত্রহননকারী দিবস পালনে অভ্যস্থ হয়ে
যায় তবে দেশের ভবিষ্যত চির অন্ধকারে
ছেয়ে যাবে । তাই নিজ ও দেশের
ভবিষ্যতের স্বার্থে অভিভাবকদেরকে ১৪
ফেব্রুয়ারী এবং এ জাতীয় ক্ষতিকর দিবস
পালনের ব্যাপারে সন্তানদের দিকে আরও
বেশি মনোযোগী ও সচেতন হতে হবে ।
সন্তান-বিপথে গেলে অভিভাবকের
ক্ষতিটাই সবচেয়ে বেশি । অনেক আধুনিক
বাবা-মা বলেন, আমরা আমাদের
সন্তানদেরকে স্বাধীনতা দিয়েছি । এ সব
অভিভাবকরা এ কথা বলে পাড় পেয়ে যেতে
পারেন না । আপনাদের আবেগপ্রবন,
অপ্রাপ্ত বয়সের সন্তানেরা আপনাদের
দেয়া স্বাধীনতাকে অপব্যবহার করে যা
ইচ্ছা তা করে বেড়ালে সমাজে
আপনাদেরকেই অপদস্থ এবং খেসারত দিতে
হবে । সুতরাং আসন্ন ভালোবাসা দিবসের
পূর্বেই সাবধান হোন । দরকার হলে কঠোরতা
প্রদর্শণ করুণ । আপনার কঠোরতায় যদি
আপনার স্নেহধন্য সন্তানের মঙ্গল হয় তাতে
আপনার চেয়ে বেশি উপকৃত কেউ হবে না ।
সন্তান যাতে এ দিনে বাইরে গিয়ে
অনৈতিক ও অন্যায় কিছুর সাথে জড়িত না
হতে পারে তার জন্য প্রয়োজনে পরিবারের
সকল সদস্য মিলে বাসায় বসে সামাজিক
পরিবেশে আনন্দ করুন অথবা সবাই মিলে
কোথাও বেড়িয়ে আসুন । এতে সন্তানের
মারাত্মক ক্ষতি থেকে যেভাবে তাদেরকে
রক্ষা করতে পারবেন তেমনি পারিবারিক
বন্ধন আরও দৃঢ় হবে । আর যে সকল ছাত্র-
ছাত্রী এবং তরুন-তরুনীরা বাবা-মা বা
অভিভাবকদের ছেড়ে দূরে আছেন তার
সংযমী হোন । মনে রাখতে হবে, আমার
ভবিষ্যত আমার উপকারার্থে । আমি যত
সভ্য-ভদ্র হতে পারব সমাজে আমার স্থান
তত উর্ধ্বে হবে । খেয়াল রাখতে হবে, দেশি
সংস্কৃতিকে ভূলে বিজাতীয় সংস্কৃতি গ্রহন
করতে গিয়ে আমরা যেন ‘বাঁদুড়ে’
রুপান্তরিত না হই । বাঁদুড়ের স্বভাব হলো,
সে একূলেও থাকতে পারে না আবার ওকূলেও
যেতে পারে না । আমরা সভ্যতার
উষালগ্নে দাঁড়িয়ে আছি । উন্নত জীবন
আমাদেরকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে ।
আমাদের নিজেদের ঐতিহ্য, সভ্যতা এবং
স্বতন্ত্র সংস্কৃতি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সংস্কৃতি
। সুতরাং বিদেশী সংস্কৃতির পিছে না
ছুটে আমাদের সংস্কৃতিকে শক্তভাবে ধারন
এবং পালন করি । তাতে আমরা যেমন উপকৃত
হব তেমনি আমাদের দেশটাও বিশ্বের
দরবারে নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে পরিচিতি
পাবে । বাংলাদেশেকে সোনার দেশ,
স্বতন্ত্র ও সমৃদ্ধশালী সংস্কৃতির, সভ্যতার
এবং স্বতন্ত্র ঐতিহ্যের দেশ হিসেবে
বিশ্বের দরবারে পরিচিত করি ।
ভালবাসা দিবসটি ভালবাসার আদান-
প্রদানের নামে সূচনা হলেও এই দিবসটি
সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে ।
দিবসটি সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা এবং
নৈতিকতা ধ্বংস করে সমাজকে বিশৃঙ্খল
এবং যুবক-যুবতীদের অনৈতিক কর্মকান্ডে
জড়িত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে । এ দিনটি
পালনের অনেকগুলো অপকারীতা রয়েছে ।
যার মধ্যে থেকে কয়েকটি বিধৃত হল-
ভালবাসা দিবস পালনের ফলে সমাজের
যুবক-যুবতীরা বিপথগামী হচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে যুবক-যুবতীরা
ধর্মীয় শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ।
এই দিনটির দরুন খৃষ্টান-নাসারারা
তাদের উদ্দেশ্যকে সফল করতে পারছে ।
তারা ইসলামী চেতনায় আঘাত হানছে ।
এই দিনটির ফলে অনেক তরুণীরা তাদের
মহামূল্যবান সতীত্ব বিসর্জন দিচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে অনেক নারী-
পুরুষ প্রেমে ব্যর্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ
বেছে নিচ্ছে ।
এই দিনটি পালনের ফলে নারী-পুরুষের
অবাধ যৌন মিলনের ফলে এইডসের মত
নানা ধরনের জটিল রোগব্যধি ছড়াচ্ছে ।
এই দিনটিতে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অবাধ
মেলা-মেশার মাধ্যমে সমাজে জন্ম নেয়
অসংখ্য পিতৃ পরিচয়হীন (জারজ) সন্তান

ভালোবাসা দিবস সম্পর্কিত এসব জানা-
অজানা তথ্য জানার পরেও বাংলাদেশী
ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে লালিত কোন নারী
কিংবা পুরুষ কি এইদিনে তার প্রিয়জন
থেকে কোন চিরকুট, প্রেমপত্র, লাল গোলাপ,
ভ্যালেন্টাইন্স ডে কার্ড বা কোন উপহার
পাওয়ার অপেক্ষায় থাকবে ? কিংবা এ
দিনে তথাকথিত ভালবাসা বিনিময়ের
জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে । এরপরেও কেউ
যদি এ দিবসকে ‍ঘিরে এমন কিছু করে তবে
তা সামাজিক মূল্যবোধ ও নিজ দেশের
মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি বিসর্জন দিয়ে
আত্ম-বিস্মৃতির চরম দেউলিয়াপনা ছাড়া
আর কি হতে পারে ? নিশ্চিতভাবে বলা
যায় ভ্যালেন্টাইনের সাথে ভালবাসার
কোন সম্পর্ক নাই । আমাদের ভালোবাসা
নির্দিষ্ট একদিনে সীমাবদ্ধ নয় বরং সারা
বছরের, গোটা জীবনের । আবেগের চেয়ে
বিবেককে বেশি প্রধান্য দিতে শিখলেই
আমাদের মঙ্গল হবে । পরবর্তী প্রজন্মকে
সুস্থ-সংস্কৃতি চর্চার মানসিকতায় গড়ে
তোলার জন্য ভালোবাসা দিবসের মত
ক্ষতিকর উৎসব বর্জন করা আমাদের জন্য
সময়ের দাবী । যতদ্রুত তা অনুধাবন করতে
পারব, কল্যানও ঠিক ততোদ্রুত আমাদের
দ্বারে এসে দাঁড়াবে ।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×