somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সুন্দরবন ধ্বংশ হবে না

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


একটি আমেরিকান কয়লা বিদ্যুত প্ল্যান্ট

বাংলাদেশ এখনো বিদ্যুত ঘাটতির দেশ। দেশটির ৪০ ভাগ লোক এখনো বিদ্যুতহিন। গত ৫ বছরে ৩ হাজার মেঃওয়াট থেকে ৮ হাজার মেঃওয়াট বৃদ্ধির পরও ঘাটতি ২ হাজার, দিন দিন চাহিদা বাড়ছে ঘাটতিও বাড়ছে। কারন ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশনের ও নতুন সংযোগের সাথে বিদ্যুত উৎপাদন বাড়িয়েও ঘাটতি কমানো যাচ্ছে না। ৬৩টি নতুন বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরও বিদ্যুত ঘাটতি মেটানো যাচ্ছেনা। ২১ শতকের মধ্যে আমদের দরকার ৩০ হাজার মেঃওয়াট বিদ্যুত। এই জন্য ১হাজার মেঃওয়াটের দুটি পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের চুক্তি হয়েছে রাশিয়ার সাথে। ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র হবে রামপালে। ভারতের সাথে ৫০:৫০ যৌথ ভাবে।
আমরা একাই করতে পারতাম, কিন্তু কয়লা তুলতে গেলে আমাদের মত ঘনবসতির দেশে বিশাল পরিবেশ বিপর্যয় হয়, তাই ভবিষ্বত প্রজন্মের জন্য আমাদের মাটির নীচের কয়লা মাটির নীচেই থাকবে বলে আপাত সিদ্ধান্ত। তাই অপেক্ষাকৃত কম জনবসতি এলাকায় আমদানি করা কয়লাদিয়ে মেইন লোকালয়ের বাইরে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র করার পরিকল্পনা হয়। কিন্তু এখানেও বাধা!



পরিবেশবাদি ও বামদলগুলো শুরু থেকেই এসবের প্রবল বিরোধিতা করে আসছে। প্রধান বিরোধিদল বলেছে তারা ক্ষমতায় আসলে প্রস্তাবিত পারমানবিক ও কয়লা বিদ্যুত প্রকল্পগুলো বাতিল করবে। এদের কথা বলে লাভ নেই এরা ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ৭ বছরে ১ মেগাওয়াট বিদ্যুতও জাতীয় গ্রিডে যোগ করতে পারে নাই। ৫ বছর মেয়াদে টঙ্গিতে একটি ছোট ৩০০ মেগা তৈরি করেছিল ৩দিনেই বিকল হয়ে উৎপাদনে যেতে পারেনাই।

বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতি দেশ, দেশটিতে জমির দাম পৃথিবীর যেকোন দেশের চেয়েই বেশী। এদেশে যেকোন স্থাপনা তৈরি হলেই এর মাধমে দুষনের ইম্পাক্ট যে কোন দেশের চেয়ে বেশী হয়। জলবিদ্যুত ১০০% ধোঁয়া বিহীন, কিন্তু পরিবেশ বিপর্যয় করে সবচেয়ে বেশী। গ্রামের পর গ্রাম, বিশাল বনভুমি তলিয়ে যায় পানির নীচে।
জেমস ওয়াট স্টিমইঞ্জিন আবিষ্কার করার পর বিশ্বের সব বিদ্যুতই কয়লা পুড়িয়ে তৈরি হত। ঢাকা নগর কেন্দ্রেই একটি কয়লা বিদ্যুত চালিত বিশাল পাওয়ার হাউস ছিল হাতিরপুলে ১৯৭৩ পর্যন্ত চালুছিল, স্টিম লোকোমোটিভ টাইপ রেসিপ্রকেটিং steem ইঞ্জিন, উচু দুইটি চিমনি ছিল, এই কেন্দ্র দিয়ে সারা ঢাকার বিদ্যুত চলতো। তখনো ন্যাসানাল গ্রিড হয়নি। পরে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টারবাইন ইঞ্জিন আসলে সকল রেসিপ্রকেটিং কয়লা ইঞ্জিন ডিকমশন করা হয়েছিল। হাতির পুল এখন সুধু কন্ট্রলরুম হিসেবে আছে।


রামপাল প্রস্তাবিত বিদ্যুতকেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের দক্ষিন দিকে দুরত্ত ২১.২৫ কিমি, যা নিরাপদ দুরত্ত্ব 25 km এর খুব কাছাকাছি। যা কিনা প্রকৃতি বা সুন্দরবনের উপর তেমন কোন বড় প্রভাব পরবারই কথা নয়।
যারা এইটা নিয়ে সমালোচনা করেন তারা বলেন সুন্দরবন নাকি মাত্র ১০ কিমির মধ্যে। অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ প্রথম আলো তে লিখেছেন সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংরক্ষিত বনভূমি ও বসতির ১৫ কিলোমিটারের মধ্যে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয় না। ভারতের ‘ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৭২’ অনুযায়ী, বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয় না। তিনি ও দুজন ভিআইপি ব্লগার দাবি করছেন আলোচিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুরত্ব ১০-১৫ কিমি। অতচ একুরেট দুরত্ব 21.25 km. গুগল ম্যাপের নিখুত স্যাটেলাইট ম্যাপের মাপ।
মানচিত্রটি দেখুন। গুগল ম্যাপ এটা স্যাটেলাইট ভিউ।

যারা বিরোধিতা করছে

বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ পর্যায়ে কৃষি ও পরিবেশের উপর প্রভাব:
ক্ষতিকর সালফার ও নাইট্রোজেন গ্যাস: কার্বন ডাই অক্সাইড এর প্রভাব: পশুর নদী থেকে পানি প্রত্যাহার: পানি দূষণ, বায়ুর তাপমাত্রা বৃদ্ধি: বিষাক্ত ছাই শব্দ দূষণ: পশুর নদি দিয়ে কয়লা পরিবহনের দুষন। কয়লাবাহি জাহাজের সার্চ লাইটের আলো ইত্যাদি।



মংলা পোর্ট থেকে রামপাল আরও ১৪.৬৯ কিমির মতো উত্তরে। বিশাল ৩ কিলোমিটার চওড়া পশুর নদি যেখান দিয়ে বন্দরের সকল জাহাজ আসা যাওয়া করে সেই ব্রীটিষ আমল থেকেই। আলচিত বিদ্যুতকেন্দ্রটির জালানি কয়লাও এই নদী দিয়েই পরিবহন করা হবে মংলা পোর্টের শতশত জাহাজ পশুর নদী দিয়ে মুলত সুন্দরবনের বিশাল চওড়া পশুর নদি দিয়ে যাওয়া আসা করছে, হরিন, বাঘ, কুমির ডলফিন ভয় পায় না কারন অনেক চওড়া নদী। যাতায়াত করে অন্যান্ন ছোটবড় নৌজান। এতে গত ৬০ বছরে নৌ চলাচলে পানি দুষিত হয় নি। পরিবেশ যদি ক্ষতিই হয় জাহাজ চলাচলের জন্য নয়। বনে বসতি হওয়ার জন্য, বনখেকো পাবলিক সার্ভেন্টদের জন্য, দুর্নিতিবাজ রাজনিতিক ও কাঠচোরদের জন্য।

ন্যাসানাল হাইওয়ে N7 এসে মিলিত হয়েছে মংলা পোর্ট এ। এর পাশে বিশাল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল এরিয়া মংলা ইপিজেড চালুহয়ে গেছে কয়েক বছর আগেই, অনেক ফ্যাক্ট্রি বিদ্যুত-গ্যাসের অভাবে চালু হতে পারছেনা। N7 হাইওয়ের পাসে গড়ে উঠছে ছোট বড় ম্যানুফাকচারিং ইন্ডাষ্ট্রি, ৮-৯ টি সিমেন্ট ফ্যাক্ট্রি, একটি বিশাল LPG গ্যাস প্ল্যান্ট। এলাকাটি মোটামোটি ইন্ডাষ্ট্রিয়াল জোন হয়ে গেছে। এসবের কারনে কাছের সুন্দর বন বা কারখানার ধোঁয়ার কারনে আসেপাশের কোন গাছ-গাছালির কোন ক্ষতি হয়নি। সুন্দরবনের তো দুরের কথা। আলোচিত বিদ্যুত কেন্দ্রটি চালু হলেও ক্ষতি হবে না। কোন বিদ্যুত প্লান্টের ঘাস গাছগাছালি মরেগেছে এমন কথা কেউ শুনেনি।
আমাদের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির সংলগ্ন বিদ্যুত প্লান্টের কারনে দুষন হয়েছে সত্য। তার কারন কয়লাখনির দুষন, বিদ্যুত প্লান্টের না। তবে দুষন এমন না যে পার্শবর্তি বসতি এলাকার হাস-মুরগি গাছগাছালি মরে গেছে। ক্ষতি কিছু হবে অবস্যই সেটা কার্বন এমিশন, গ্লোবাল ক্ষতি।

বিদ্যুতকেন্দ্র কুলিং এর জন্য পানি ব্যাবহার করলে বিশাল পশুর নদীর পানি কমে যাবে এটা ভাবাই হাস্যকর। বায়ুর তাপমাত্রা বৃধি আরেকটি হাস্যকর! তাহলে এত পরিবেশ সচেতন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার অর্ধেক বিদ্যুত কয়লা পুড়িয়ে করত না।
সুন্দরবন অঞ্চলে ৯ মাস বাতাস উত্তর মুখি প্রবাহ থাকে, শীতের মাত্র ৩ মাস দক্ষিনা প্রবাহ থাকে, এই মাত্র ৩ মাস 21 km দূরের সুন্দরবনের কি এমন ক্ষতি হয়ে যাবে বুঝি না। এটা তো নিরাপদ দুরত্ব ১৫ কিলোমিটার থেকে অনেক দূরে!

কয়লা একটি প্রাচিন জালানি হলেও এজাবৎ সবচেয়ে কার্যকর সাশ্রয়ি জালানি হিসেবে প্রমানিত। কয়লায় উৎপাদিত বিদ্যুত মুল্য হবে মাত্র ৩ টাকা ইউনিট। দেশের অতি মুল্যবান গ্যাস না পুড়িয়ে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত অনেক দিনের দাবি। কয়লা সবদেশেই একটি নিরাপদ জালানি। ভারতে ব্যায়বহুল নিউক্লিয়ার বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধ করে কয়লা বিদ্যুতে ফিরে যেতে পরামর্শ দিয়েছে বিশেষজ্ঞ মহল। জাপানও ভুমিকম্প-সুনামি বিপর্যয়ের পর তার কয়েকটি বিপদজনক নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ করে নিরাপদ কয়লা ভিত্তিকে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের দেশেও গ্যাসের উপর চাপ কমাতে বার বার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল কয়লা তুলে বড় বড় বিদ্যুত কেন্দ্র বানাতে। কিন্তু কয়লা উঠাতে দিলে বাধা। পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি। তাই কয়লা আমদানি করাই ভাল। আমাদের ডলারের অভাব নেই, পরিবেশের তেমন ক্ষতি নেই।



ভারতের 60% বিদ্যুত কয়লা চালিত,
চীনের 70% ভাগ,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 44.9% ,
বাংলাদেশ মাত্র .02 % যা বড়পুকুরিয়ায়, রামপাল চালু হলে 3% হবে মাত্র।

বাংলাদেশই একমাত্র দেশ হবে যারা ১০০% আমদানি করা কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্রের দেশ। কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুত তৈরি করার চেয়ে কয়লা খনি অনেক বেশী দুষন ও বিপর্যয় শৃষ্টি করে, আমরা মাগনা পেয়েও কয়লা না উঠিয়ে বিশাল বিপর্যয় এড়াতে পেরেছি।
পরিবেশবাদিরা ক্ষয়ক্ষতির যে কথা বলে সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলে কি কি উন্নতি হবে তার কথা একবারও বলে না।

কয়লা বিদ্যুতের একটি বড় সমস্যা ছাই বর্জ, বড়পুকুরিয়ার বর্জ্য বিপুল ছাই দেশের সিমেন্ট কারখানাগুলো কিনে নেয়। এই বিদ্যুতকেন্দ্রটির ছাই বর্জ্য উৎপন্ন হবে বড়পুকুরিয়ার প্রায় চারগুন। এখানে চীন ভারত ব্রীটেন যে ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করে সেভাবেই করা হবে। এই উচ্চমানের ছাই ব্যাবহারপযোগী করে সাবানের বিকল্প হতে পারে।
তাই এই বিদ্যুত প্ল্যান্টটি সুন্দরবন বা এলাকার পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে যে দাবি করা হচ্ছে তা ভিত্তিহিন বলেই আমার ধারনা।

* সংযোজন - ২০১৬

বিদ্যুতকেন্দ্রের জন্য নিরাপদ দুরত্বে একটা বিকল্প স্থান খুঁজে পাওয়া আমার কাছে একটু কঠিন বলেই মনে হয়।
এই কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হতে হবে পশ্চিম জোনে। কারন দেশের বেশিরভাগ বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুর্ব জোনে অবস্থিত। ন্যাসানাল গ্রিড পুর্ব থেকে দির্ঘ পথ ট্রান্সমিশনে সিস্টেম লস হচ্ছে দির্ঘদিন। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে কোন বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়েই হবে।
বড় কয়লাবাহি জাহাজ এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পৌছাতে দরকার চর বিহীন চালু বড় নদী, যার পাড়ে হতে হবে এই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সাথে ভারি ট্রাক চলার জন্য ন্যাসানাল হাইওয়ে কানেক্ট থাকাও জরুরি।
কাওরাকান্দিতে করা যাবেনা কারন চর পরা নদী, চাঁদপুরের পশ্চিমে শরিয়তপুরে করা যায়, কিন্তু চওড়া হাইওয়ে নেই, গোয়ালন্দ একই অবস্থা নদীতে চর। পিরোজপুর বা বরগুনার কাছেও করা যাতে পারে, আবার এতে কটকা (পুর্ব সুন্দরবন) আক্রান্ত হবে বলে আন্দলন শুরু হয়ে যেতে পারে।
মংলা বন্দরের কাছে হলেই সবচেয়ে কমখরচে অষ্ট্রেলিয়া বা দ:আফ্রিকা থেকে কয়লা এনে বিদ্যুত মুল্য কম রাখা সম্ভব বলেই হয়ত রামপালকে সিলেক্ট করা হয়েছিল ।

বাংলাদেশ একটি কাটাতারেঘেরা জলবায়ু বিপর্যস্ত অপর্যাপ্ত অবকাঠমো নিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ।
এই দেশটিকে বাচাতে হলে আগামি দশ বছরের ভেতর বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪ গুন বাড়িয়ে ৪০ হাজার মেগাওয়াটে আনতে হবে, শিল্পউৎপাদন বাড়িয়ে দারিদ্র দুরকরে শক্তহয়ে নিজের পায়ে দাড়াতে হবে, এতে কোথাও বা কোথাও 'কিছু ক্ষতি' মেনে নিতে হবেই। ৫০ বছর পর সমদ্রউচ্চতা বেড়ে সুন্দরবন এমনিতেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে, আয়তন কমে ঘণবসতি প্রকট হবে, তার আগেই দেশটিকে মাথা তুলে দাড়াতে হবে।
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি দরকার ছিল ২০০০ একর। বাংলাদেশ পৃথিবীর সবচাইতে ঘণবসতির দেশ
বাংলাদেশের ৯০% খালি জমিই তিন ফসলি জমি। সমতল ভূমি এবং উর্বরতা বিবেচনায় ২০০০ একর জমি দেশের অন্য কোথাও একযোগে অধিগ্রহন করার তেমন সুযোগ ছিল না। ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় ভুমি থেকে উচ্ছেদ সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল, এর উদাহরন আড়িয়াল বিল। আমাদের বাস্তবতা বোঝা উচিত, ঘনবসতিপূর্ণ দেশের ৩ ফসলি আবাদি ভুমি অধিগ্রহন করা আত্মঘাতী । দিনে ১২ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পরিবহন করার ব্যায়, যোগাযোগ , পরিবেশ দুষণ, এসব বিষয় মাথায় রেখেই তখনই খাসজমিবহুল রামপালকে সঠিক জায়গা বলে মতামত দেওয়া হয়েছিল।

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে পৃথিবীর অনেক নীচু অঞ্চলের মত বাংলাদেশের প্রায় তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকা সমুদ্র তলে ডুবে যাবে। রামপাল না হলেও ডুবে যাবে। সুন্দরবনও বিলুপ্ত হবে। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণার ফলাফল হতে এই লক্ষণ এখনই দেখতে পাচ্ছেন । তাই আমাদেরকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে এই ভয়াবহ দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচার জন্য । দুই ভাবে তা করা যায়, ১) পৃথিবীরসব দেশ মিলে এক সাথে গ্রিন হউস গ্যাস কমানর মাধ্যমে, বা ২) বাংলাদেশ দ্রুত উন্নত হওয়ার মাধ্য দিয়ে অর্থনীতিক সামর্থ্য দিয়ে ।
প্রথম উপায়ে (কার্বন এমিশন কমানো) উদ্যোগ, যা ১৯৯০ সনে নেওয়া হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে ব্যর্থ হয়েছে । ১৯৯০ সালের উদ্যোগের মত ২০১৫ সালে প্যারিস সম্মেলনের মাধ্যমে নেওয়া উদ্যোগ আংসিক সফল। তাহলে আমাদের কাছে একটিই পথই খোলা আছে অর্থাৎ দ্রুত উন্নত হওয়া যাতে আমাদের হাতে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ও সম্পদ থাকে । এই ক্ষেত্রে আমাদের উন্নত বিশ্বের উন্নয়নের ইতিহাস অর্থাৎ শুধুমাত্র অর্থনীতিক লাভকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে ।
আমাদের দেশের বিপুল জনসংখ্যা ও দক্ষীনাঞ্চল ডুবেযাওয়া বিবেচনায় রাখলে এ যুক্তি আরও দৃঢ় হয় যে, শুধুমাত্র উন্নয়ন ও অর্থনীতিক সামর্থ্য অর্জন আমাদের একমাত্র প্রধান লক্ষ হওয়া উচিত।
অর্থনৈতিক ভাবেও এই 'রামপাল' বাংলাদেশের পক্ষে লাভজনক।
বাংলাদেশের নগদ বিনিয়োগ শুন্য হলেও মালিকানা ৫০:৫০। এ সকল বিবেচনায় এটি বাংলাদেশের জন্য লাভ জনক চুক্তি বলা যায়। এই প্রকল্প থেকে ২৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে যোগ হলে এর ইমপ্যাক্ট হবে হিউজ। অনেক অর্থনীতিবিদ বলছেন - মাথাপিছু আয় আরো ৫০০ ডলার বেড়ে যাবে। পদ্মা সেতুর মতই এটির ফলে ১% বাড়তি জিডিপি যোগ হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৩
৬২টি মন্তব্য ৬৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×