somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাকুরি করবেন নাকি দেবেন?

১০ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমরা তো বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায়ই ‘জীবনের লক্ষ্য’ নিয়ে রচনা লিখি। অবশ্য ডাক্তার, প্রকৌশলী, পাইলট বা ব্যারিস্টার ছাড়া আমাদের আর কোন লক্ষ্যও থাকে না। কিন্তু কতজনে তার লক্ষ্য মতো জীবনকে গড়তে পারে? তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে যে বিষয়ে পড়া হয়, সেবিষয়ে কি সকলেরই চাকরি হয়? মাঝে মাঝে ভাবি আসলেই কি পেশা নির্বাচন করার ক্ষমতা আমাদের আছে? ডাক্তার, আইনজীবি আর প্রকৌশলী ছাড়া, আর কোন বিষয়ে কি ‘নিজের পছন্দমতো’ চাকরি হয়? এখন তো মনে হয় ডাক্তার-উকিল-প্রকৌশলীদেরও সে সুযোগ কমে যাচ্ছে। প্রতি বছর হাজার হাজার ডাক্তার বের হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে।

এমন পরিস্থিতিতে আমাদের জন্য মাত্র দু’টিই পথ: নিজের পছন্দের বিষয়ে সর্বোচ্চ দখল, না হয় যেকোন বিষয়ে কাজ করার মতো ‘অনুকূল’ মানসিকতা। হয় যেকোন চাকরিতে নিজেকে মানিয়ে চলতে হয়, না হয় নিজের বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। হয় চাকরি করো, না হয় চাকুরি সৃষ্টি করো। মাঝের জায়গাটি বড়ই ‘আরামহীন’: অনেকে একে ‘বেকার’ নামে চেনেন!



মানুষ দু’প্রকার: চাকুরি প্রার্থী এবং চাকুরি দাতা

আগেই বলে রাখা ভালো ‘লেখক হওয়া’ কিন্তু একটি আত্মকর্মসংস্থানের নাম। তবে কর্মজগৎকে বিবেচনায় আনলে দু’রকমের কর্মজীবি আছে: নির্ধারক nominator এবং নির্ধারিত nominee । এক দল চাকরি দেয়, আরেক দল চাকরি করে। অথবা বলা যায়, এক দল পরিচালনা দেয়, আরেক দল ‘পরিচালিত হয়’।

যারা বিচক্ষণ, দূরদর্শী এবং নেতৃত্বদানে দক্ষ, তারা সাধারণত ‘নির্ধারকের’ ক্ষমতা ও সম্মান লাভ করেন। তারা অনেকটা প্রাকৃতিকভাবেই মেধাবী এবং স্বাধীনচেতা। চাকরি হোক অথবা ব্যবসায়, তারা হলেন নিজ বিষয়ের ওস্তাদ এবং চাকুরিদাতা। এখানে প্রধান চ্যালেন্জ হলো মানুষকে পরিচালনা দেওয়া। তবে তারা সাধারণত চ্যালেন্জ-পিপাসু হয়। তারা নিয়তি বা ভাগ্যে খুব একটা বিশ্বাসী নয় – নিজেই নিজের ভাগ্যের নির্মাতা। নিজের পথের নির্দেশ নিজেই বের করে। গাড়ির ড্রাইভারের মতো।

পক্ষান্তরে ‘নির্ধারিতদের’ ভাগ্য লেখা থাকে ‘নির্ধারকদের’ হাতে। প্রতিশ্রুতিহীন এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষাহীন মনোভাব তাদের এপরিস্থিতির জন্য দায়ি। তারা কখনও সৃজনশীল হতে পারে না, যেমন পারে না দায়িত্বশীল হতে। নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে আর থাকে বসের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। অনেকে একে নিজের নিয়তির সাথে মিলিয়ে নেয়। তারা যেমন জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে পারেন না, তেমনি পারেন না পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে। এখানে চ্যালেন্জের সীমা নেই, মানিয়ে চলতে পারলে উত্তম কর্মী। যেভাবে চালানো যায়, সেভাবেই তারা চলে। গাড়ির যাত্রীর মতো।



“Never depend on single income. Make investment to create a second source.” -Warren Buffet, the World’s Richest Man

কর্মজগৎ মূলত দু’টি জনগোষ্ঠির হাতে আটকে আছে: নির্ধারক এবং নির্ধারিত। অনেকেই আত্মসচেতনতা আর ‘ব্যক্তিগত জেদের’ শক্তিতে এগিয়ে আসে। Success is a matter of choice – সময় থাকতে যারা টের পেয়ে যায়, তারা মাইগ্রেট করতে পারেন দ্রুত।

কর্মসংস্থান একটি সার্বজনীন সমস্যা। এসব বিষয়ে উন্নয়ন করার জন্য অভিজ্ঞ বা আগ্রহী পাঠক আলোচনা করতে পারেন, মতামত দিয়ে সমৃদ্ধ করতে পারেন বর্তমান লেখাটিকে। আলোচনায় অনেক বিষয় বের হয়ে আসে, যা দেশের কর্মসংস্থানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে।
.

.

*কর্মসংস্থান নিয়ে প্রাসঙ্গিক আরেকটি লেখা

___________________________________________________

পুনশ্চ: প্রায় ন’টি বছর প্রতিষ্ঠানের ‘অপারেশন’ বিভাগে থাকার পর এবছরের শুরুতে ‘এডমিনিস্ট্রেশন’ বিভাগে স্থানান্তরিত হই। অর্থ, সম্পদ ও কর্মী সম্পর্কে অর্জিত হয় বিরল অভিজ্ঞতা। মানুষের কর্মক্ষমতা সম্পর্কে অনেক সংকীর্ণ ধারণা বিস্তৃত করার সুযোগ পাই। মানুষ পারে না, এমন কাজ পৃথিবীতে কমই আছে। শুধু একটু অন্তর্মুখী রাগের প্রয়োজন!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×