somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রী যা বললেন

২৭ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় স্পিকার, আজকে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিল মীর জাফরের বেইমানির ফলে। আর ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সেই আওয়ামী লীগই এই বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতা এনে দেয়। কাজেই আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলার স্বাধীনতার সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটা যোগসূত্র রয়েছে।

মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখন ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শামসুল হক সাহেব ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু তখন রাজবন্দি, তিনি যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশের ইতিহাস যদি আমরা দেখি- কিছুক্ষণ আগে আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব আমির হোসেন আমু সাহেব অত্যন্ত চমৎকারভাবে সেই ইতিহাস তুলে ধরেছেন যে, বাঙালির যা কিছু অর্জন তা কিন্তু আওয়ামী লীগের হাতেই হয়েছে। ১৯৪৮ সালে জাতির পিতা প্রথম ভাষা আন্দোলন শুরু করেন। ’৪৮ সালের ১১ মার্চ থেকে ভাষা আন্দোলন শুরু হয় এবং ’৫২ সালে এসে তা পরিণতি লাভ করে। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে তিনি ৬ দফা দেন। এই ৬ দফা বাংলার মানুষের মুক্তি সনদ। ৬ দফা নিয়ে যখন তিনি সমগ্র বাংলাদেশ সফর শুরু করেন তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দিয়ে তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলানোর ষড়যন্ত্র করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সংগ্রাম করে তাকে মুক্ত করেন। তারই ভিত্তিতে ১৯৭০ সালে যে নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনে সমগ্র পাকিস্তানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন অর্জন করে। কিন্তু মিলিটারি জান্তা আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন এবং সেই সঙ্গে ৭ই মার্চ-এর ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এরপর মূলত এই ভূখণ্ডের নাম ‘বাংলাদেশ’, এটিও বঙ্গবন্ধুর দেয়া। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত কী হবে সেটাও তিনি ঠিক করে রেখেছিলেন। এমনকি আমাদের পতাকা কী ধরনের, কী ডিজাইনের হবে, সেই সবুজের ভেতরে যে লাল সূর্য থাকবে, সবুজ জমিনে লাল সূর্য উঠবে তাও কিন্তু জাতির পিতারই করে দেয়া। সেই নির্দেশনাই তিনি দিয়েছিলেন এবং সেভাবেই তার সব প্রস্তুতি ছিল স্বাধীনতার। ২৫শে মার্চ যখন পাক হানাদার বাহিনী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তখনই ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। এই মুক্তিযুদ্ধের সব প্রস্তুতি- কোথায় গেরিলাদের ট্রেনিং হবে, কীভাবে অস্ত্র আসবে, কীভাবে যুদ্ধ হবে, সব পরিকল্পনাই তিনি করে গিয়েছিলেন। কোনো কিছুই তিনি বাদ দেননি। এরপর সেই যুদ্ধ শুরু হল, আমরা বিজয় অর্জন করলাম।

মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ। একটি স্বাধীন দেশে কী কী প্রয়োজন, যদি গভীরভাবে একটু ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখেন, প্রতিটি পদক্ষেপ কিন্তু তিনি নিয়ে গেছেন। মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তিনি সংবিধান দিয়েছেন। সেই সংবিধানে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা যেমন বলেছেন, মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা বলা আছে এবং আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রের নীতিমালাগুলো স্পষ্টভাবে দেয়া হয়ে গেছে। সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে একটা সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ অর্জন করা, যা জাতিসংঘ, ওআইসি, কমনওয়েলথ থেকে শুরু করে প্রতিটি সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন বঙ্গবন্ধুই করে গিয়েছেন। আমাদের যে বিশাল সমুদ্রসীমা এবং এই সীমায় আমাদের যে অধিকার, সেই অধিকারও জাতির পিতা করে দিয়ে গেছেন, সেই সমুদ্র আইনও তিনি করে দিয়ে গেছেন। স্থল সীমানা চুক্তি আইনও তিনি করে গেছেন। আমরা যদি ইতিহাসের ধারাবাহিকতা দেখি, ’৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম। এরপর যে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচনেও কিন্তু আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। কিন্তু যুক্তফ্রন্ট সরকার যখন গঠন হয়, পাকিস্তানি শাসকরা অল্পদিনের মধ্যেই সেই সরকার ভেঙে দেয়। এরপর ’৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। ’৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পাকিস্তানের যে শাসনতন্ত্র সেটাও কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারই প্রণয়ন করেছিল। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশ তো বটেই, আমি যদি পাকিস্তানের ইতিহাস ধরি, তাহলে বারবার দেখা যায় সেখানে কখনও গণতন্ত্র চর্চা হতে দেয়নি। বারবার মিলিটারি ডিকটেটর আসছে। আর আওয়ামী লীগ ৪টি মিলিটারি ডিকটেটরের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে এর পরবর্তী সংগ্রামও আমরা করেছি আরেকটি সরকারের বিরুদ্ধে। আমি সেই কথায় আসব। এই ৪টি মিলিটারি সরকার একটা প্রথম আইয়ুব খান ’৫৮ সালে মার্শাল ল’ দেয়, তার বিরুদ্ধে যে আন্দোলন সেটাও কিন্তু আওয়ামী লীগই গড়ে তুলেছিল। ’৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যখন আইয়ুব খানের পতন হয়, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে বঙ্গবন্ধু যখন মুক্তি পান, এরপর ’৭০-এর নির্বাচন, ইয়াহিয়া খান তখন ক্ষমতায় আসে, ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধেও এ দেশের মানুষ আন্দোলন করে এবং যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করে। একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের ক্ষমতা হাতে নিয়েছিলেন, তখন একটা টাকাও রিজার্ভ মানি নেই। গোলায় একটুও খাদ্যশস্য নেই। রাস্তা-ঘাট-পুল-ব্রিজ সবই ধ্বংসপ্রাপ্ত। ১ কোটির ওপর মানুষ শরণার্থী, লাখো মা-বোন যারা ইজ্জত হারায়, শহীদ পরিবারসহ সবার কথা তিনি চিন্তা করেছেন। প্রত্যেককে তিনি সহযোগিতা করেছেন। তখন কিন্তু রাস্তা-ঘাট ছিল না। এই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নৌকায় করে গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রত্যেক ঘরে ঘরে রিলিফ পৌঁছে দিত, যেন মানুষ না খেয়ে কষ্ট না পায়। বন্ধুপ্রতিম দেশগুলো সহযোগিতা করেছে। এভাবে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে তিনি গড়ে তুলেছিলেন। আজকে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগ অর্জিত হয়েছে। এ ৭ ভাগ প্রবৃদ্ধি কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আমলেই প্রথম অর্জিত হয়েছিল। কিন্তু এরপর আর হয়নি। তিনি এ দেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতির জন্য জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন, সেগুলো তখন বাস্তবায়িত করা গেলে আমরা বহু আগেই মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে পারতাম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ হত্যার পর আওয়ামী লীগের ওপর আবার নির্যাতন নেমে আসে। অর্থাৎ সেই আইয়ুব খানের নির্যাতন, এর আগের যুক্তফ্রন্টের পর ইস্কান্দার মির্জার নির্যাতন, ১৯৭১ সালে মক্তিযুদ্ধের সময়ে ইয়াহিয়া খানের নির্যাতন এরপরে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা ইত্যাদি নির্যাতন বারবার করা হয়।

মাননীয় স্পিকার, আপনার মাধ্যমে দেশবাসীকে লক্ষ্য করতে বলব, এ হত্যাকাণ্ডের পরে ক্ষমতায় কারা আসে। ঠিক যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাক এটা যারা চায়নি, তারাই মূলত ক্ষমতায় এসেছিল। তারা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের নিধন করতে শুরু করে। সেই সঙ্গে আওয়ামী লীগের ওপর নির্যাতন। প্রতিটি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার। বছরের পর বছর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জেল খেটেছে। এ অবস্থা চলেছে এবং এর মধ্য দিয়েই আওয়ামী লীগ টিকে থেকেছে। বারবার আঘাত এসেছে, কিন্তু আওয়ামী লীগ সংগঠনটি সুসংগঠিত রয়েছে। এ বিষয়ে আমি অবশ্যই দ্ব্যর্থহীনভাবে বলব, বঙ্গবন্ধু যেভাবে আওয়ামী লীগ সংগঠনটি গড়ে তুলেছেন সেই তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই আওয়ামী লীগ সংগঠনটিকে সব সময় শক্তিশালী করেছে সুসংগঠিত করে রেখেছে।

মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশের মানুষকে বারবারই এক একটি ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করেছে, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছে। এ দেশের মানুষ যতটুকু পেয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে তখনই পেয়েছে। এছাড়া সব সময় জনগণ বঞ্চিত হয়েছে। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের সময়ে বঙ্গবন্ধু যে কয়টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন, তখন শিল্পায়ন থেকে শুরু করে যতটুকু কাজ হয়েছে তার আমলেই হয়েছে। ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় তখন ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস ঘোষণা করাসহ শহীদ মিনার নির্মাণ ও বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এছাড়া শিল্পায়ন, কৃষির উৎপাদন, শিক্ষাব্যবস্থা সবকিছু ওই আমলেই হয়েছে। অন্যরা কিন্তু জনগণের কথা ভেবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেনি। আবার স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। এ সময়ের মধ্যে তিনি এ যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। ’৭০-এর নির্বাচনে যখন ইয়াহিয়া ক্ষমতা দেয়নি ’৭১ সালে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিলেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু হল। তখন আওয়ামী লীগের যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ছিলেন, তারাই স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম সরকার গঠন করেন। ১৯৭১ সালের ১০ই এপ্রিল সরকার গঠন করা হয় এবং ১৭ই এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে এ সরকার শপথ গ্রহণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী করা হয় তাজউদ্দীন আহমদকে। বঙ্গবন্ধু যেহেতু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন, সেহেতু সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করি। বঙ্গবন্ধু ১০ই জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের শাসন ভার হাতে নেন। শাসনভার হাতে নিয়েই তিনি পার্লামেন্টে প্রথম সংবিধান উপহার দেন।

এই পার্লামেন্টে তিনিই প্রথম সংবিধান উপহার দেন এবং একটি বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলেন। সাড়ে তিন বছরে তিনি যতটুকু উন্নতি করতে পেরেছিলেন কিন্তু ’৭৫ পরবর্তী বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা বছরের পর বছর দেশ শাসন করেছেন, যদি আমরা সেদিকে তাকাই তাহলে দেখব যে, দেশটাকে পিছিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য। দেশের মানুষের কোনো কল্যাণ কেউ করেনি। জনগণ সরকারের কাছ থেকে সেবা পাবে এটা তারা ভুলেই গিয়েছিলেন। এই চিন্তাটাই তাদের ছিল না এবং মানুষের মাঝেও এই চিন্তাটা হারিয়ে গিয়েছিল বরং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার, মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে তাদের হয়রানি করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা, এই কাজগুলো তারা করে গেছে। তারা দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করেনি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে এগোতে হয়েছে। আমাদের ওপর বারবার আঘাত এসেছে কিন্তু এই দেশের জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সব সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব দিয়েছে। শহীদের তালিকাও যদি আমরা দেখি তাহলে দেখব যে, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ নেতাকর্মীরাই জীবন দিয়ে গেছে এ দেশের মানুষের প্রতিটি সংগ্রাম, আন্দোলন, অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান এরপর জেনারেল জিয়ার অবৈধ ক্ষমতা দখল, এরপর জেনারেল এরশাদের অবৈধ ক্ষমতা দখল, তারপর বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষমতা দখল আমরা দেখেছি। বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরই ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করেন, যে নির্বাচন জনগণ মেনে নেয়নি। জনগণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে পদত্যাগে বাধ্য করে। ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি ইলেকশন হয়, ৩০ মার্চ বেগম খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হন। অর্থাৎ প্রতিটি মিলিটারি ডিকটেটর এবং সেই এক মিলিটারি ডিকটেটরের এক স্ত্রী ক্ষমতায় ছিলেন। প্রত্যেকটি সরকারের যেসব গণবিরোধী কর্মকাণ্ড তার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল আওয়ামী লীগ এবং প্রতিটি আন্দোলনে জয়লাভ করেছে, জনগণের বিজয় এনে দিয়েছে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে তুলে দিয়েছে। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে।

মাননীয় স্পিকার, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এই সময়টা যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশের জনগণের জন্য এটা ছিল স্বর্ণযুগ। বাংলাদেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে যে, সরকার জনগণের সেবক এবং সেই সেবক হিসেবেই আমরা কাজ করি। বাংলাদেশের মানুষ একটি সুখের মুখ দেখতে শুরু করে। কিন্তু আবার সেই দুর্ভাগ্য যে, ২০০১ সালের নির্বাচনে একটি ষড়যন্ত্র হয়েছিল, এটা শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয় আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র এর সঙ্গে জড়িত ছিল কারণ আমার অপরাধ ছিল আমি দেশের সম্পদ গ্যাস অন্য দেশের কাছে বিক্রি করতে চাইনি। যেহেতু আমার দেশের সম্পদ অন্যের হাতে তুলে দিতে চাইনি, আর অপরদিকে বেগম খালেদা জিয়া এই গ্যাস দিতে মুচলেকাও দিয়েছিলেন। যার ফলে আমরা সরকারে আসতে পারিনি। ভোট বেশি পেয়েছিলাম, সিট পেলাম না, সরকার গঠন করতে পারলাম না। এরপর ৭টি বছর যে অত্যাচার, নির্যাতন এ দেশের মানুষের ওপর চলেছে, আমার ২১ হাজার নেতাকর্মী জীবন দিয়েছে। ঠিক ’৭১ সালে যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, লাখ লাখ মা-বোনের ইজ্জত নিয়েছে, একই কায়দায় ২০০১ থেকে ২০০৬ এ দেশে যেন সেই গণহত্যারই আরেকটি রূপ আমরা দেখেছি। দুর্নীতি, হত্যাকাণ্ড, নানা ধরনের ঘটনা, যার ফলাফল আবার ইমার্জেন্সি। এর বিরুদ্ধেও কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বসে থাকেনি। এ দেশের শিক্ষক সমাজ, ছাত্র সমাজ থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তি কিন্তু আন্দোলন করেছে। যার ফলে আবার আমরা গণতন্ত্র ফিরে পেয়েছি।

মাননীয় স্পিকার, আজকে বাংলাদেশ বিশ্বে একটি উন্নয়নের রোল মডেল। এক একটা দলের একটি নীতি থাকে। আওয়ামী লীগের নীতি হচ্ছে- জাতির পিতা যে পথ দেখিয়ে গেছেন- বাংলাদেশের মানুষকে তিনি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত করে একটি উন্নত জীবন দেবেন, এটাই ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন। আমরা সরকারে থাকি বা বিরোধী দলে থাকি না কেন, জনগণের কল্যাণ কীভাবে করব, সব সময় সেই পরিকল্পনাই নিয়ে আমরা কাজ করছি। সেখানে যখন আন্দোলন-সংগ্রামের প্রয়োজন হয়, তখন আন্দোলন-সংগ্রাম করি। আবার যখন আমরা সরকারে থাকি, তখন জনগণের উন্নয়নে যেভাবে কাজ করা দরকার, আমরা সেভাবেই কাজ করি। আমরা যেহেতু ২০১৪ সালের নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবার ক্ষমতায় এসেছি, সেহেতু আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা আছে বলেই সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি। যে কারণে আজকে বাংলাদেশে আমরা দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি করেছি, মানুষের আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পেয়েছে, শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের জনগণ এখন উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখছে, যেটা ছিল জাতির পিতার স্বপ্ন।

মাননীয় স্পিকার, জাতির পিতা যে কাজগুলো হাতে নিয়েছিলেন তার মধ্যে স্থলসীমানা চুক্তি আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের বিশাল সমুদ্রসীমা নিয়ে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সমস্যার সমাধান করেছি। আমরা একে একে সব সমস্যার সমাধান করে যাচ্ছি। পাশাপাশি, আমাদের দেশ আর্থসামাজিক দিক দিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি উন্নয়নের রোল মডেল। ১৯৭৫-এর পর বাংলাদেশের মানুষকে দেশের বাইরে গেলে শুনতে হতো বাংলাদেশ মানে দরিদ্র দেশ, দুর্ভিক্ষের দেশ, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর দুর্বিপাকের দেশ। আগে বাংলাদেশকে অন্যের কাছে হাত পেতে চলতে হতো। ইনশাআল্লাহ, আজকে অন্যের কাছে হাত পেতে চলতে হয় না। আমরা বাজেটের ৯০ ভাগই ব্যয় করি নিজস্ব অর্থায়নে। এই সক্ষমতা আমরা অর্জন করতে পেরেছি। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। কারণ আমাদের নীতিই হচ্ছে জনসেবা, আমাদের নীতিই হচ্ছে জনগণের কল্যাণ করা। আমাদের নীতিই হচ্ছে জনগণের আর্থসামাজিক উন্নতি করা, সেই উন্নতির পথেই আজকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

মাননীয় স্পিকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৬৭ বছরের যে ইতিহাস, সেখানে একদিকে সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের ইতিহাস রয়েছে, অন্যদিকে একটি দেশ স্বাধীন করা এবং সেই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ইতিহাস রয়েছে। আমি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এজন্য যে, তারা সব সময় আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছে, আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে এবং আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে আমাদের সরকার গঠন করার সুযোগ করে দিয়েছে। এ কারণেই আমরা আজকে দেশের উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের সঙ্গে যারা মিত্ররা রয়েছেন, তাদেরও আমি ধন্যবাদ জানাই।

আমি আর একটি কথা বলে বক্তব্য শেষ করব। আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে জাতির পিতা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন সেটাও পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত। পৃথিবীর কোনো দেশে যখন কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে এবং সেখানে যেসব মিত্রশক্তি সহযোগিতা করেছে, তারা কিন্তু সেসব দেশে ঘাঁটি বানিয়ে থেকে গেছে। বাংলাদেশ হচ্ছে একমাত্র ব্যতিক্রম দেশ। বঙ্গবন্ধুর মতো স্বাধীনচেতা নেতা আমাদের ছিল বলেই আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেই সেই মিত্র বাহিনীকে ফেরত পাঠাতে তিনি সক্ষম হয়েছিলেন। ভারতের যে সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহযোগিতা করেছিল, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, ‘আপনার সেনাবাহিনী কবে ফিরিয়ে নেবেন?’ ইন্দিরা গান্ধীও একজন স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তিনি রাজি হয়ে গেলেন এবং তার মিত্র বাহিনীকে তিনি তার দেশে ফেরত নিয়ে গেলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটা কিন্তু কখনও হয়নি। পশ্চিম জার্মানিকে যুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা সাহায্য করেছিল। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরেও সেখানে বহুদিন আমেরিকান সৈন্যের ঘাঁটি ছিল। পূর্ব জার্মানিকে সাহায্য করেছিল রাশিয়ান সৈন্য এবং সেখানেও রাশিয়ার ঘাঁটি ছিল। জাপানে এখনও আমেরিকার ঘাঁটি রয়ে গেছে। এ রকম বহু দৃষ্টান্ত পৃথিবীতে আছে যে, যারা মিত্রশক্তি হিসেবে কোনো দেশে একবার ঢুকেছে তারা কখনও ফেরত যায়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো দৃঢ়চেতা ও স্বাধীনচেতা নেতা ছিলেন বলেই স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বাংলাদেশ থেকে সেই মিত্রশক্তি তার দেশে ফিরে গেছে।

মাননীয় স্পিকার, আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম একটি দেশ। আমাদের প্রচেষ্টা সব সময় এভাবেই থাকবে যে, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা বিজয়ী জাতি। এ বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বসভায় সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে চাই। আমি এটুকু বিশ্বাস করি আমরা সরকার গঠনের পর থেকে যেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি, শুধু তাই না বঙ্গবন্ধু যে পররাষ্ট্রনীতি আমাদেও শিখিয়ে গিয়েছিলেন যে, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়।’ আমরা সেই নীতি সম্পূর্ণভাবে মেনে চলছি বলে পৃথিবীর সব দেশের সঙ্গে আমাদেও একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে আমরা সক্ষম হয়েছি। এটিও কিন্তু খুব কম দেশই পারে। এমনকি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে আমরা যে সমস্যাবলীর সমাধান করেছি, সেটিও কিন্তু বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই। আমাদেও সমুদ্রসীমা, স্থলসীমা সবকিছু আমরা সমাধান করেছি। গঙ্গা পানিচুক্তিও আমরা করেছি। অর্থাৎ সব দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশকে আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে কীভাবে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব, সেটিই আমাদেও একমাত্র চিন্তা। সেই চিন্তা নিয়েই আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। যার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে। আমরা কী পেলাম না পেলাম সেই চিন্তা আমি করি না। শুধু একটিই চিন্তা যে এ দেশ আমার পিতা স্বাধীন করে গেছেন। তিনি এ দেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখে সারাজীবন তিনি ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং এ দেশের মানুষকে কীভাবে তাদের দু’বেলা ভাতের ব্যবস্থা করবেন, তাদের একটু বাসস্থানের ব্যবস্থা করবেন, তারা যেন ছিন্নবস্ত্রে না থাকে তার সমাধান করবেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবকিছু তিনি কীভাবে দেবেন এই চিন্তাটাই সব সময় তার মাথায়। কাজেই তার কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি, সেটিই চেষ্টা করেছি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজে লাগাতে। আজকে বাংলাদেশের মানুষ অন্তত পেটভরে খেতে পারছে, হতদরিদ্র যারা, আমরা বিনা পয়সায় তাদেও খাদ্য সাহায্য দিচ্ছি। রমজান মাসে এবং ঈদ সামনে রেখে আমরা হতদরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য বিতরণ করে থাকি। যারা গৃহহারা আমরা তাদেও ঘরবাড়ি তৈরি করে দিচ্ছি। আমাদেও এটিই লক্ষ্য। গুচ্ছগ্রাম করে ভূমিহীন, গৃহহীনদেও বাসস্থান এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা জাতির পিতাই শুরু করেছিলেন। কাজেই আমাদের লক্ষ্য যে বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহারা থাকবে না। প্রতিটি মানুষের ঘরবাড়ি থাকবে। প্রতিটি মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২৩ প্রকার ওষুধ বিতরণের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। ফলে মাতৃমৃত্যু হার কমেছে, শিশুমৃত্যু হার কমেছে। আমরা দেখেছি যে ক্ষুদ্রঋণ থেকে সপ্তাহে সপ্তাহে সুদ দিতে গিয়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। সেজন্য আমরা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের পথে গেছি। গতকালকে আমরা ১০০টি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা উদ্বোধন করেছি। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পেও মাধ্যমে আমরা গ্রামের মানুষকে দারিদ্র্যের হাত থেকে ধীরে ধীরে তুলে নিয়ে এসে তাদেও মধ্যম আয়ের পরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াস পেয়েছি। যার সুফল দেশবাসী পাচ্ছে। আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এবং আমাদের সরকারের সব কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ ভালো থাকবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে, প্রতিটি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখবে, চিকিৎসা পাবে, উন্নত জীবন পাবে, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবে, মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ, এখন সমগ্র বাংলাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিস। সবার হাতে মোবাইল। প্রযুক্তিও ব্যবহারে আমরা বহুদূর এগিয়ে গেছি। এটি জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল, এই বাংলাদেশকে নিয়ে যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলবে, আমি বিশ্বাস করি যে সেদিন বেশি দূরে নয় যে আমরা ২০২১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার একটি উন্নত দেশ। একই সঙ্গে আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদবিরোধী যে কার্যক্রম নিচ্ছি, তার ফলে বাংলাদেশে আজকে একটি শান্তিপূর্ণ অবস্থা যাতে বিরাজ করে সেই পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করছি। সেখানে দেশবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন। কারণ কিছুলোক সব সময় একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ যেভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে, সুরক্ষিত করেছে এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা যেন দেশকে এভাবে এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটিই কামনা করি। আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেন এভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে জাতির পিতার সোনার বাংলা করতে পারি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এটিই কামনা করে দেশবাসীর সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি। আমরা যেন দেশের মানুষের সেবা করে যেতে পারি এবং মানুষকে যেন উন্নত জীবন দিতে পারি, শান্তিপূর্ণ জীবন দিতে পারি, সেটুকুই আমাদের কামনা।

মাননীয় স্পিকার, আমি মহান সংসদের মাধ্যমে আমাদের সব সংসদ-সদস্য যারা আছেন, তারা আওয়ামী লীগের সদস্য অথবা স্বতন্ত্র সদস্য অথবা অন্যান্য দলের সব সদস্যকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। তাদেও সবার সহযোগিতায় আমরা গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে পেরেছি এবং দেশের অর্থনীতিকে উন্নত করতে পারছি। তাই আমি সব সংসদ সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমি দেশবাসীকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে বলেই দেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলব। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:১৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×