রাস্তাঘাটে উত্তেজিত জনতা যখন কাউকে দোষী সাব্যস্ত করে ও বিচার বহির্ভূতভাবে পিটিয়ে মারে তখন সে বিষয়টিকে বলা হয lynching। মনে আছে, এ ঢাকা শহরে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক ঘটনার কথা? ছেলে ধরা সন্দেহে ভাটারা এলাকায়, উত্তেজিত জনতা কর্তৃক মাঝ বয়সী এক নারীকে পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা? রূপান্তর নাটকটি নিয়ে যে ঘটনা ঘটে গেলো, তা lynching এর সাথে তুলনা করা যায়।
/এখানে খোদ "রূপান্তর" নাটকটিই উত্তেজিত জনতার দৃষ্টিতে "ট্রান্সজেন্ডার" নামক অপরাধের সমার্থক অথবা যারা ট্রান্সজেন্ডার জীবনাচরণকে উৎসাহিত করে যা ইসলামিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক।
/নাটকের অভিনেতা, পরিচালক এরা উত্তেজিত জনতার বিচারে অভিযুক্ত, দোষী সাব্যস্ত।
/ইতোমধ্যে ইউটিউব থেকে নাটকটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অভিনেতাও জনতার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
/তাহলে বলা যায় যে জনতা কর্তৃক বির্তকিত নাটক ও নাটক সংশ্লিষ্ঠদের lynching সুসম্পন্ন হয়েছে।
অথচ মূল নাটকের ঘটনা অনুযায়ী নায়কের ছিল হরমোন জনিত প্রকৃতিগত সাস্হ্য সমস্যা। নায়ক নিজে থেকে হরমোন নেয়নি বা স্বেচ্ছায় রূপান্তর প্রক্রিয়া সংঘটনের জন্য কোন প্রকার অস্ত্রোপচারও করেনি। প্রাকৃতিকভাবে প্রদত্ত শরীরে ট্রান্সজেন্ডার মানুষ স্বেচ্ছায় অনেক কিছু পরিবর্তন করে নেন (হরমোন থেরাপী, অস্ত্রপ্রচার, প্রভৃতি....) যা নাটকের নায়ক করেনি।
অধিকাংশ উত্তেজিত জনতা নাটকটি না দেখে থাকলেও অধিকাংশেরই মনে প্রানে বিশ্বাস (অন্ধ বিশ্বাস) যে রুপান্তর নাটকের রূপান্তরের ঘটনাটা সম্পূর্ণরূপে মানব সৃষ্ট। যেকোনো মূল্যেই হোক, উত্তেজিত জনতা এটা বিশ্বাস করতে চায় (বা কোন পক্ষ সজ্ঞানে জনতাকে বিশ্বাস করাতে চায়) যে নাটকটি "মানব সৃষ্ট রূপান্তর" প্রক্রিয়াকে প্রমোট করছে, বাজারজাতকরন করছে।
নেট ফলাফল যা তা হল,
ঐ lynching অভিযুক্ত ব্যক্তিটর মতো পুরো নাটক ও তার সাথে সংস্লিস্ট মানুষজন আহত কিংবা নিহত হলো। আহত বা নিহত হল এমন এক অপরাধের জন্য, যে অপরাধ কখনো করা হয়নি। না করা অপরাধের জন্যও ক্ষমা চাইতে হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জনতা হারিয়েছে তার সততা ও বিশ্বাস যোগ্যতা। কারণ সে বাস্তবে প্রমাণ করেছে যে, "প্রকৃত সত্য সেটাই যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিশ্বাস করে, এমন কি মিথ্যাও যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে, তবে মিথ্যার সত্য হিসেবে "রূপান্তর" ঘটে এবং এই ইচ্ছাকৃত রূপান্তর কোনভাবেই অপরাধ নয়"।
নোট:
উত্তেজিত জনতার মাঝেই ছোট্ট একটা গ্রুপ আছে, যারা প্রকৃত সত্যকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব বয়ান প্রতিষ্ঠায় অসম্ভব রকমের উৎসাহী । কারণ সত্য বা যেটা fact, তা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে গুজব বলে তো কিছু থাকবে না। আর গুজবের খড়ে আগুন না দিলে বা আগুনে হাওয়া না দিলে লক্ষ মাত্রা অনুযায়ী viral হওয়া যাবে না, reach/view কমে যাবে। ফলশ্রুতিতে আনুপাতিক হারে Online এর বিজ্ঞাপন থেকেও উপার্জন যাবে কমে। At the end of the day, it ends up to how much money you can make by spreading rumors effectively among the stupid mass people.