ইয়ারমুকের যুদ্ধ। যুদ্ধের সময় হুযায়ফা
(রাঃ) আহতদের মধ্যে তার
চাচাতো ভাইকে খুঁজতে শুরু করলেন।
তার সাথে ছিল সামান্য পানি।
হুযায়ফার চাচাতো ভাইয়ের শরীর
দিয়ে রক্ত ঝরছিল। তার অবস্থা ছিল
আশংকাজনক। হুযায়ফা (রাঃ)
তাকে বললেন, তুমি কি পানি পান
করবে? সে তার কথার কোন উত্তর
দিতে সক্ষম না হয়ে হ্যা সূচক ইঙ্গিত
করল। আহত ব্যক্তি হুযায়ফার কাছ
থেকে পানি পান করার জন্য হাতে
নিতেই তার পাশে এক সৈন্যকে
পানি পানি বলে চিৎকার করতে
শুনল। পিপাসার্ত ঐ সৈনিকের
বুকফাটা আর্তনাদ শুনে তার পূর্বে
তাকে পানি পান করানোর জন্য
হুযায়ফাকে ইঙ্গিত দিলেন।
হুযায়ফা তার নিকট গিয়ে বললেন,
আপনি কি পানি পান করতে চান?
তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি পান
করার জন্য পাত্র উপরে তুলে ধরতেই
পানির জন্য অন্য একজন সৈন্যের
চিৎকার শুনতে পেলেন। তিনি
পানি পান না করে হুযায়ফা
(রাঃ)-কে বললেন, তার দিকে দ্রুত
ছুটে যাও এবং সে পানি পান করার
পর কিছু অবশিষ্ট থাকলে আমাকে
দিয়ো। হুযায়ফা আহত সৈন্যটির
কাছে গিয়ে দেখলেন, সে মারা
গেছে। অতঃপর দ্বিতীয় জনের
কাছে এসে দেখলেন সেও মারা
গেছে। অতঃপর চাচাতো ভাইয়ের
কাছে ফিরে আসলে দেখেন
তিনিও শাহাদাতের অমীয় সুধা
পান করে জান্নাতবাসী হয়েছেন।
পানির পাত্রটি তখনও হুযায়ফার
হাতে। এতটুকু পানি। অথচ তা পান
করার মত এখন আর কেউ বেঁচে নেই।
যাদের পানির প্রয়োজন ছিল তারা
আরেক জনের পানির পিপাসা
মেটাবার জন্য এতই পাগলপরা
ছিলেন যে, অবশেষে কেউ সে
পানি পান করতে পারেননি। সবারই
প্রাণ ছিল ওষ্ঠাগত। অসামান্য
ভ্রাতৃত্ব ও মমত্ববোধের কারণে সবাই
একে অপরের জন্য পানি ফিরিয়ে
দিয়েছেন। কি অপূর্ব এ ভ্রাতৃত্ব!