somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কাহিনীময় পরীক্ষা B-)

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্যে পরীক্ষা নিয়ে গত দুই বছর যাবত যেই নাটক শুরু হয়েছে তা আর কাউকে বলার না। মানুষ শুনলেও অবাক হয়ে যায়! যা হোক গত বছরের কাহিনী এখানে বলেছিলাম।
এই বছরও কাহিনী কম হয়নি বা হচ্ছেনা! আগেই জানতাম পরীক্ষার সময় দেশ উল্টে পাল্টে পাতালে, চাঁদে বা মঙ্গল-বুধে যেখানেই যাক না কেন পরীক্ষা হবেই হবে। তাই সেভাবেই মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম। চলে এলো পরীক্ষা। অন্য সব ইয়ারের পরীক্ষা শুক্রবার করে পরেছে কিন্তু আমাদের-ই ভিন্ন! পরীক্ষার দিন হরতাল-অবরোধে যাবো কিভাবে। তাও পরীক্ষা সকাল ৯টায়! কি আর করা বহুত কাহিনী-টাহিনী করে ঠিক করলাম আপাতত এক বান্ধবীর বাসায় যাবো। এক বান্ধবী আজিমপুর পলাশী কলোনিতে সাবলেটে থাকে। ও আগেও বলেছিলো ওর রুমে বেড খালি আছে পরীক্ষার জন্যে যাতে একমাস থাকি। বান্ধবী ফোন করে বললো যাতে ওর রুমে উঠি। ৩তারিখ পরীক্ষা, দিশা না পেয়ে ভাবলাম আপাতত পলাশীতে যেয়েই উঠি। পরের পরীক্ষায় দেখা যাবে।
দুপুরে গোছগাছ করে রেডী হচ্ছিলাম আর মনে হচ্ছিলো না গেলেই পারতাম। কেন যেনো যেতে ইচ্ছে করছিল না। মনে হচ্ছিলো আমি যেনো কতদিনের জন্যে বাসা ছেড়ে চলে যাচ্ছি, তাই খুব খারাপ লাগছিলো। অনেক কষ্টে কোনমতে বিদায় নিয়ে বের হলাম। সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে দরদর করে চোখ দিয়ে পানি পড়ছিলো!! আমি প্রচন্ড ভাবে অবাক। ভেবেই পাচ্ছিলাম না কেন এরকম হচ্ছে। খুব বিরক্তও হয়েছিলাম।

যাইহোক আরেক বান্ধবী তন্বী উঠেছে ঐ কলোনীতেই অন্য একটি বিল্ডিংয়ে। তন্বীর রুমমেটরা বলছিলো আজিমপুর ছাপড়া মসজিদের পাশে "ভূতের আস্তানা" নামে এক রেস্টুরেন্ট খুলেছে, ঐদিন ই (২ ডিসেম্বর) শুরু করেছে। তো সেখানে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০% ছাড় খাবারে। ঠিক হলো যাবো সেখানে (পরীক্ষা গেলে পরীক্ষা আসবে এমন সন্ধ্যা তো জীবনে বার বার আসবেনা) ;) B-) । যাইহোক পরদিন পরীক্ষা দিয়ে ফিরলাম বাসায়। মনে হচ্ছিলো কতদিন পরে আমার ঘরে ফিরলাম। :D
তার পরে ১১ তারিখ পরীক্ষা। সেদিনও অবরোধ। কি আর করা ঠিক হলো যে রুমে ছিলাম সে রুমেই দুই বেড ভাড়া নিবো ৩ বান্ধবী মিলে থাকবো। এবার চার বান্ধবী মিলে এক বাসায়। এক জন পাশের রুমে থাকলেও তিন জন ছিলাম এক বেডে। উল্লেখ্য আগের বারের মতন বাসা থেকে আসার সময় এবার আর তেমন খারাপ লাগেনি (বড় হয়েছিনা? ;) ) B-) । সন্ধ্যায় তিনজন আজিমপুর বাসস্ট্যান্ড মোড়ের হোটেলে বসে খেলাম ভেজিটেবল রোল আর চিকেন ফ্রাই। রোল টা খুব ভাল লেগেছে, কেউ চাইলে টেস্ট করে দেখতে পারেন ;) । পড়া কেমন হয়েছে সেটা নাই-বা বলি! আমাদের হাসাহাসি-হৈহুল্লোড়ে অন্য রুমমেট ঘুমাতে গিয়েও কম্বলের তলা থেকে উঁকি মেরে দেখছিলো। :P । মাঝে কাদের মোল্লার ফাঁসি হবে তাই পরীক্ষা হবেনা, এই ভেবে ভেবে নিজেরাই জল্পনাকল্পনা করলাম কতক্ষন। এর মাঝেই ১১.১২.১৩ সেলিব্রেট করতে গিয়ে বাঁশ খাওয়া, একজনের প্রেম কাহিনী শুনে আরেকজনের দুঃখে মন ভেসে যাওয়া এসবের মাঝেই রাত পার। ;) :P

যাইহোক পরদিন পরীক্ষায় সেইরকম বাঁশ খেয়ে রুমে ফিরলাম। রুমমেট সেই ছোটবোন আমাদের চেহারা দেখে জিজ্ঞেস করে কেমন পরীক্ষা হলো। ভাল না বলাতে বলে, "ভাল হইসে পরীক্ষার আগে বেশী হাসাহাসি করছেন যে না পড়ে...." :| ছোট বইনের কাছ থিকা পাওয়া এই লজ্জা কই রাখুঊউমমমমমমম :((

পরের পরীক্ষায় অবরোধ না থাকায় বাসায় থেকেই দিয়েছি। সামনে কী হয় কে জানে তবে যাইহোক কিচ্ছু আসে যায় না তেমন। অবরোধ থাকলে আগের দিন পলাশী না থাকলে বাসা থেকেই এই যা। বাসায় ফেরার পথে ভালই লাগে। রাস্তা-বাস ফাঁকা থাকে। তবে একটু ভয় লাগে কোন দিক থেকে পেট্রোল বোমা পরে কিনা এই ভেবে।

সবাই নিরাপদ থাকুক, ভাল থাকুক। আর কোন মার কোল যাতে খালি না হয়, এইকামনা ছাড়া আর কিছু করার নাই হয়ত আমার মতন সাধারন ভাত খাওয়া পাবলিকের পক্ষে! মগের মুল্লুকে বাস করি যে...
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×