হত্যাকান্ডের ডেডবডির সুরতহালেই লুকানো থাকে হত্যার প্রকৃত রহস্য।কারন খুনির মোটিভেশন তার কর্মের দৃশ্যে থাকাই স্বাভাবিক। ১ নং এ দেখুন রক্তাক্ত দেহ দুটির পাশে একটা সিগেরেটের গোড়া পরে আছে, পা গুলো কিভাবে বাঁধা, রক্ত জমে থাকা একটা স্লিপার দেখুন, রুনির কমোরে ছুরি চালানোর আংশটা দেখুন, ৫ নংয়ে বাঁচার শেষ চেষ্টায় রক্তে আঁকা সাগরের ভাষাটা বুঝুন, ৬ এ কি যেন একটা দেখুন, ৭'তে রক্তে জুতার ছাপ আর রাষ্ট্রের মুখ দেখুন।সুরতহালে আরও অনেক কিছু দেখার আছে।কতটা নিশংস ভাবে আয়েস করে খুনির খুন করেছে দুইটি মানুষকে ? কোন জন্তু জানোয়ারকে এভাবে জবাই করা হয় এমন বর্ননা কোন গল্পেও পড়িনি।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ জানিয়েছেন, সাগরের বুকের ডান পাশে বাঁটবিহীন অবস্থায় একটি ছুরির ফলা বিঁধেছিল। তার পিঠে ১১টি, বুকে পাঁচ-ছয়টি, গলার দুই পাশে পাঁচটি, হাতে ও মাথায় একটি করে গভীর ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। আর রুনির পেটে দুটি বড় আকারের ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। চোখের পাতার ওপর আঘাতের দুটি চিহ্ন ছিল। তিনি জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষত দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া মৃত্যু নিশ্চিত করতে তাদের শ্বাসনালীও কেটে দেয়া হয়েছিল।
এদিকে আমাদের ইডিয়ট সাংঘাতীক ভাইয়েরা এখানে আবিষ্কার করছে পরকিয়া। আপনাদের কি মনে হয় সামান্য পারিবারিক কোন কারনে ৩৬ ও ৩২ বছর বয়সের এক জোড়া নর নারীর এমন বিভৎস ভাবে খুন হওয়া কোন যুক্তি বা কারন বা আবেগ থাকতে পারে, এই সমজে ? অবাস্তব ! প্রেমের জন্য প্রায় ৪০ বছর বয়সের দান্দাল বাঙ্গাল এতটা মাথা খারাপ হবে তা এ্যাবসার্ড।আর রুনি'কে হত্যাকরার মাধ্যমে খুনি তো প্রেমের চিহ্নই রাখেনি।তাহলে দ্বিতীয় প্রপজিশনে বলা যায়, প্রেম না, তেমন কিছু থাকলে তা দেহ গত।বাঙালীকে কি এত উন্মাদ বা আহাম্মক মনে হয় আপনাদের, যে এরকম একটা বিভৎস হত্যাকান্ডের মোটিভেশন হবে দেহের মত তুচ্ছ একটা বিষয়, কত দেহ চাই এই বয়সের কারো ? না, কোন উন্মাদও এত সামান্য বিষয়ে এত বড় ঝুকি নেবে না। এরকম পাইলে খবর দিয়েন, ওরে মিউজিয়ামে রাখা হবে।বাংঙালী খুবই চতুর, মূর্খ, ধান্দাবাজ একটি জাতি, এ সব সময় কর্মের সমরুপ কার্যকারন বা স্বার্থ ছাড়া ঐ মাত্রায় কাজটি করে না।
গোয়েন্দা পুলিশের বরাত দিয়ে বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম বলছে, মেহেরুন রুনির সঙ্গে তার এক সহকর্মীর সম্পর্ক ছিল। তার স্বামী রাত দুইটায় বাসায় ফিরে রুনিকে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। এরপর কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রুনির সাংবাদিক বন্ধু রান্নাঘর থেকে বটি এনে সরওয়ারের ওপর আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে সরওয়ার নিহত হয়। সরওয়ার নিহত হওয়ার পর ঘটনার স্বাক্ষী না রাখার কৌশল হিসেবেই রুনিকে হত্যা করা হয়।
রাত দুইটায় পরকিয়া জনিত আপত্তিকর অবস্থা, খুনির জীবনে কি ঐ রাইতেই শেষ রাইত ছিল নাকি ? আর দ্বিতীয় বন্ধুটি কি ছাগলের তিন নম্বরের মত পাহারা দিতে গেছিল ? ৪০ বছরের এত ডেডিকেটেড বন্ধু ! আচ্ছা, সাগর অফিসে থাকা অবস্থায়ই রুনির মোবাইল বন্ধ ছিল, পুলিশ সকালে মোবাইলটি কি বন্ধ পেয়েছিল ? এটা একটা বড় প্রশ্ন। তাহলে কি খুনিরা রুনিকে আগেই হত্যা করে ফেলেছিল, এবং সাগরের অপেক্ষায় রুনির মোবাইল বন্ধ করে বসেছিল ? তানা হলে দুইজন খুনির পক্ষে সাগর রুনির মত শক্ত সমর্থ দুইজন কে এরকম নিশংস্ব দীর্ঘ সময় ধরে এ ভাবে, বন্দুকের গুলি খরচ না করে, হত্যা করা অসম্ভব - বাঁচার শেষ চেষ্টায় মানুষ নাকি হাতির শক্তি অর্জন করে।তাছাড়া প্রাথমিক তদন্তে রুনি আগে খুন হয়েছেন বলেও ধারণা করা হয়েছিল। কারণ লাশ উদ্ধারের সময় রুনির শরীর (ঘাড়) শক্ত ছিল। রক্তও জমাটবাঁধা ছিল।তবে এক্ষেত্রে একটি দুর্বল পয়েন্ট সাগর থ্রী কোর্টার পরা ছিল। আরএকটি বিষয় হচ্ছে সাগরের পা এবং মুখ বাঁধা ছিল, রুনির মুখ বাঁধা ছিল।এখন প্রশ্ন মুখ বাঁধলো কি ভাবে ? প্রথম আঘাতটি করার আগে যদি মুখ না বাঁধা থাকতো তাহলে ফ্লাট তথা সমগ্র এলাকা একটি বিকট চিৎকার কি শুনতো না ? হতে পারে দুজন না ঘাতকের সংখ্যা ছলি আরও বেশি, এবং হত্যার সংগঠনটি হয়েছিল খুবই পরিকল্পিত।ঐ বিল্ডিংয়ের অন্য কোন ফ্লাটে ওৎপেতে ছিল ঘাতকরা।
যা হউক, এর পেছনে কিছু না কিছু, কারো না কারো, কোন না কোন বড় স্বার্থ আছে - ঠিক হত্যাকান্ডটির বিভৎসতা ও আলোড়নের সমান।ছবিটার দিকে তাকিয়ে দেখুন! মানুষের ইন্টুশন বলে একটা ইনস্টিংন্ট আছে, যা দিয়ে প্রথম দর্শনেই ঘটনা সম্পর্কে তার মনে একটা সিদ্ধান্ত তৈরী হয়, যা পরে হয়তো ইতস্ততায় হারিয়ে যায়।কিন্তু সত্য লুকানো থাকে সেই প্রথমে মনে হওয়ার মধ্যেই, যদিও প্রতিষ্টিত হয় মাথার সাজানো যুক্তি বা অন্য কিছু।এই খুনের দৃষ্যটিই বলছে, এর গভীরতা অনেক।খেয়াল করুন হত্যাকান্ডটি কতটুকু চাঞ্চলকর ? সাগর রুনি এখানে বলির পাঠাও হতে পারে অথবা সাগর রুনি কঠোর গোপনীয় কিছু জেনে গিয়েছিল ? অথবা খেয়াল করুন ঘটনাটি থেকে কেউ বা কোন গোষ্ঠি লাভবান হচ্ছে কিনা ? এমন অনেক পয়েন্ট ভাবুন! বাংলাদেশের মানুষ কখনও এতটা বোকা ছিল না, নেই যে পরকিয়ার মত কারনে এমন একটা রিস্ক নেবে।এদের কর্মের প্রকাশ স্বার্থের উপর নির্ভর করে প্রকাশ পায়।এই খুনের ডেমন্সট্রেশনটি দেখুন, কত গভীর হতে পারে এর অন্ত কারন ?
উপরের ছবিটি নিয়ে অনেকের কনফিউশন হচ্ছে তাই পুরাটা দিলাম।আমারদেশ থেকে নেয়া।
ব্লগার্স তদন্ত পাতা - সাগর রুমী কেইস
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১২:২৬